এ. কে. এম. শামসুজ্জোহা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(এ কে এম শামসুজ্জোহা থেকে পুনর্নির্দেশিত)
এ. কে. এম. শামসুজ্জোহা
জাতীয় সংসদ
ঢাকা-৩০ আসনের
সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৭৩ – ১৯৭৫
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মআবুল খায়ের মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা
আনু. ১৯২৪
নারায়ণগঞ্জ জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭(1987-02-20) (বয়স ৬২–৬৩)
নাগরিকত্ব
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
দাম্পত্য সঙ্গীনাগিনা জোহা
সন্তান
পিতামাতাখান সাহেব এম. ওসমান আলী, জামিলা ওসমান
প্রাক্তন শিক্ষার্থীঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা যিনি এ কে এম শামসুজ্জোহা  নামে পরিচিত ছিলেন। একজন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য। তার নির্বাচনী এলাকা নারায়ণগঞ্জ। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্ষেত্রে অনন্যসাধারণ ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে ২০১২ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক ২০১১ দেয়া হয়।[১]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

তিনি ১৯২৪ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম খান সাহেব এম. ওসমান আলী এবং মাতার নাম জামিলা ওসমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

কর্ম ও রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

১৯৪২ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ ছাত্র মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক হন ও ১৯৪৫ সালে শিক্ষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৯ সালে তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগে সদস্য হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫২ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ ভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি হিসেবে ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।[২] সেই সময় একটি মিথ্যা মামলায় তাকে ১৮ মাস কারাবন্দী রাখা হয়। ১৯৬৪ সালে নারায়ণগঞ্জ মহকুমা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ১৯৭০-এর নির্বাচনে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ভ্রমণ করে জনমত গঠন ও তহবিল সংগ্রহে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর তিনি মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে প্রথম বেতার ভাষণ প্রদান করেন এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।[২]

তিনি ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন ঢাকা-৩০ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৩] বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর মন্ত্রিত্ব গ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে তাকে ১৮ মাস বন্দী রাখা হয়।[২]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ১৯৫০ সালে নাগিনা জোহাকে বিয়ে করেন।[৪] তার তিন পুত্র সংসদীয় নির্বাচনে জয়লাভ করে ও সাংসদ নির্বাচিত হয়। তাদের মধ্যে সেলিম ওসমাননাসিম ওসমান জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত এবং শামীম ওসমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হন।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

তিনি ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৭ সালে মারা যান।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "ভাষাসৈনিক সামসুজ্জোহার মৃত্যুবার্ষিকী পালিত"দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৭তিনি ছিলেন একাধারে ভাষাসৈনিক, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, গণপরিষদের সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও সংসদ সদস্য। মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় তাকে ২০১২ সালে স্বাধীনতা পদক (মরণোত্তর) দেওয়া হয়। 
  2. মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি"old.cabinet.gov.bd। ৯ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  3. "১ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  4. "শামীম ওসমানের মা নাগিনা জোহা আর নেই"। ৭ মার্চ ২০১৬। ৯ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  5. "শামসুজ্জোহার মৃত্যুবার্ষিকী পালিত"দ্য রিপোর্ট। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৭