এ কে আব্দুল মোমেন
ডক্টর এ কে আব্দুল মোমেন | |
|---|---|
২০২৩ সালে আব্দুল মোমেন | |
| বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী | |
| কাজের মেয়াদ ৭ জানুয়ারি ২০১৯ – ১১ জানুয়ারি ২০২৪ | |
| প্রধানমন্ত্রী | শেখ হাসিনা |
| পূর্বসূরী | আবুল হাসান মাহমুদ আলী |
| উত্তরসূরী | ড. হাছান মাহমুদ |
| সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য | |
| কাজের মেয়াদ ৭ জানুয়ারি ২০১৯ – ৬ আগস্ট ২০২৪ | |
| পূর্বসূরী | আবুল মাল আবদুল মুহিত |
| উত্তরসূরী | পদশূন্য |
| জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি | |
| কাজের মেয়াদ ২৬ আগস্ট ২০০৯ – ৩০ অক্টোবর ২০১৫ | |
| পূর্বসূরী | ইসমাত জাহান |
| উত্তরসূরী | মাসুদ বিন মোমেন |
| ইউনিসেফের প্রেসিডেন্ট | |
| কাজের মেয়াদ ২০১০ – ২০১০ | |
| পূর্বসূরী | উমার দাউ |
| উত্তরসূরী | সাঞ্জা স্টিগ্লিক |
| ব্যক্তিগত বিবরণ | |
| জন্ম | আবুল কালাম আব্দুল মোমেন ২৩ আগস্ট ১৯৪৭ সিলেট, বাংলাদেশ |
| নাগরিকত্ব | |
| জাতীয়তা | বাংলাদেশ |
| দাম্পত্য সঙ্গী | সেলিনা মোমেন নাসিম পারভীন |
| সন্তান | ৩ মেয়ে এবং ২ ছেলে |
| পিতামাতা | আবু আহমদ আব্দুল হাফিজ (পিতা) সৈয়দা শাহার বানু (মাতা) |
| আত্মীয়স্বজন | আবুল মাল আবদুল মুহিত (ভাই) শাহলা খাঁতুন (বোন) মৌলভী আব্দুল করীম (দাদীর চাচা) আব্দুল হামীদ (দাদীর ভাই) |
| জীবিকা | রাজনীতিবিদ, কূটনীতিবিদ |
আবুল কালাম আব্দুল মোমেন (জন্ম ২৩ আগস্ট ১৯৪৭), যিনি এ কে আব্দুল মোমেন নামে বেশী পরিচিত (অনেকে তাকে আলগা মোমেন হিসেবে চিনেন), হলেন একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ এবং কূটনীতিবিদ। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আগস্ট ২০০৯ থেকে অক্টোবর ২০১৫ পর্যন্ত জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১][২][৩]
প্রাথমিক ও পারিবারিক জীবন
[সম্পাদনা]এ কে আব্দুল মোমেন ১৯৪৭ সালের ২৩ আগস্ট সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবু আহমদ আব্দুল হাফিজ ছিলেন সিলেট শহরের আইনজীবী, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা ও তৎকালীন সিলেট জেলা মুসলিম লীগের নেতা। তার মা সৈয়দা শাহার বানু ছিলেন ভাষা আন্দোলনের সংগঠক, আমৃত্যু সিলেট মহিলা সমিতির সভানেত্রী এবং সিলেট মুসলিম মহিলা লীগের নেত্রী। তার ভাই আবুল মাল আব্দুল মুহিত বাংলাদেশের সাবেক অর্থমন্ত্রী।[৪][৫] তার তার দাদা খান বাহাদুর আব্দুর রহিম ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের আসাম সিভিল সার্ভিসের কর্মকর্তা। তার পিতার মামা আব্দুল হামিদ ব্রিটিশ ভারতের আসাম ব্যবস্থাপক সভার সদস্য-সভাপতি ও শিক্ষা মন্ত্রী ছিলেন। তার স্ত্রী সেলিনা মোমেন। এই দম্পতির তিন মেয়ে এবং দুই ছেলে, সবাই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।[৬]
শিক্ষা জীবন
[সম্পাদনা]এ কে আব্দুল মোমেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে বি.এ এবং ১৯৭১ সালে উন্নয়ন অর্থনীতিতে এম.এ পাশ করেন।[৭] তিনি ১৯৭৯ সালে হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে এমবিএ পাস করেন।[৮] এরপর ১৯৭৬ সালে ঢাকার সেন্ট্রাল কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৮ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রী সম্পন্ন করেন।[৭]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]এ কে আব্দুল মোমেন সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৪ পর্যন্ত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব এবং ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত শিল্প ও বাণিজ্য এবং খনিজ সপম্পদ ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।[৭]
তিনি মেরীম্যাক কলেজ, সালেম স্টেট কলেজ, নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়, এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি স্কুল অফ গভর্নমেন্ট এ অর্থনীতি ও ব্যবসায় প্রশাসন পড়িয়েছেন।[৯]
১৯৯৮ সালে তিনি সৌদি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (এসআইডিএফ) এর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালে রিয়াদ কম্পাউন্ড বোমাহামলার সময় তিনি সৌদি আরব ত্যাগ করে ম্যাসাচুসেটসে এ ফিরে আসেন। সেখানে তিনি ফ্রেমিংহ্যাম স্টেট কলেজের অর্থনীতি ও ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে পড়াতেন। ২০০৯ সালের আগস্ট মাসে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি নিযুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি সেখানে শিক্ষকতা চালিয়ে যান।[৭] তিনি বাংলাদেশের আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ ও শিক্ষকতা করেছেন।[১০]
২০১০ সালে তিনি ইউনিসেফ কার্যনির্বাহী পরিষদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১১][১২] তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৭ তম অধিবেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন।[১৩] তিনি ২০১৪ সালে জাতিসংঘের দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সভাপতি ছিলেন।[১৩]
রাজনৈতিক জীবন
[সম্পাদনা]মোমেনের বড় ভাই আবুল মাল আবদুল মুহিত আর নির্বাচনে না দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে তাকে সিলেট-১ আসনে তার উত্তরসূরি হিসেবে দেখতে চাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। তিনি ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮ তারিখে সিলেট ১ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় লাভ করেন।[১৪][১৫] তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।।[৬]
২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।[১৬]
আগস্ট ২০২২ এ, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে ভারতকে আহ্বান জানিয়েছেন বলে জানান। এতে বাংলাদেশে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় ও তাকে অপসারণের আইনি বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়।[১৭][১৮][১৯] এর অনেক আগে ক্যাবলগেট ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ বিষয়ক তথ্য এর আগেও উঠে আসে, সেসময় ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং আওয়ামী লীগকে ও পাকিস্তানের আইএসআই বিএনপিকে অর্থ যোগান দেয় বলে জানা যায়।[২০]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Masud Momen new Bangladesh's UN envoy"। দ্য ডেইলি স্টার। ৩ নভেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "শপথ নিলেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা"। www.prothomalo.com। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৬ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- 1 2 "পররাষ্ট্র মন্ত্রী, এ কে-আব্দুল মোমেন"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ৬ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০২২।
- 1 2 3 4 "His Excellency Abulkalam Abdul Momen"। The Diplomat। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ https://www.un.org/press/en/2011/bio4320.doc.htm
- ↑ "Dr. A.K. Abdul Momen"। Permanent Mission of the People's Republic of Bangladesh to the United Nations। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "AIUB OFFICIALS PAID A COURTESY VISIT TO THE MINISTER OF FOREIGN AFFAIRS"। www.aiub.edu (মার্কিন ইংরেজি ভাষায়)। ১৮ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০২৫।
{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: বট: মূল ইউআরএলের অবস্থা অজানা (লিঙ্ক) - ↑ Officers of the UNICEF Executive Board 1946–2014, UNICEF
- ↑ Executive Board ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে, UNICEF
- 1 2 "H.E. Abulkalam Abdul Momen"। United Nations Office for South-South Cooperation। ২২ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ http://www.somoynews.tv/pages/details/133400?fbclid=IwAR2y1H3wDBTj95R5rKkOhhVdEvPFGZKk3Pm-Z8adQIFsWcEisy3HWNfHeVk
- ↑ "Muhith wants brother Momen to contest for his Sylhet constituency"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৫ জুন ২০১৬।
- ↑ রিপোর্ট, স্টার অনলাইন (৬ আগস্ট ২০২৪)। "জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত"। দ্য ডেইলি স্টার Bangla (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ "Govt still in power at mercy of India: Fakhrul"। The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ২০ আগস্ট ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০২২।
- ↑ "Ensure PM Hasina govt's survival at any cost, Momen requests India"। The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ আগস্ট ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০২২।
- ↑ নজরুল, আসিফ। "মোমেন 'ঠিকই' বলেছেন"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০২২।
- ↑ উইকিলিকসে বাংলাদেশ : উইকিলিকসে ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের গোপনীয় তারবার্তা সংকলন। মশিউল আলম। ঢাকা। ২০১৩। পৃ. ৭৯। আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৯০২৫২-০-৭। ওসিএলসি 863127885।
{{বই উদ্ধৃতি}}:|শিরোনাম=এর 22 নং অবস্থানে line feed character রয়েছে (সাহায্য)উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অন্যান্য (লিঙ্ক) উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অবস্থানে প্রকাশক অনুপস্থিত (লিঙ্ক)
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
উইকিমিডিয়া কমন্সে এ কে আব্দুল মোমেন সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।
উইকিউক্তিতে এ কে আব্দুল মোমেন সম্পর্কিত উক্তি পড়ুন।
- ১৯৪৭-এ জন্ম
- জীবিত ব্যক্তি
- একাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য
- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য
- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ
- শেখ হাসিনার চতুর্থ মন্ত্রিসভার সদস্য
- সিলেট জেলার রাজনীতিবিদ
- জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি
- বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশের শিক্ষক
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- বাংলাদেশী কূটনীতিবিদ