এয়ালেত

এয়ালেত (উসমানীয় তুর্কি: ایالت, উচ্চারিত [ejaːˈlet], বাংলা: রাজ্য, যা বেয়লারবেয়লিক বা পাশালিক হিসেবেও পরিচিত), ছিলো উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রাথমিক প্রশাসনিক বিভাগ।
১৪৫৩ সাল থেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরু অবধি উসমানীয় স্থানীয় সরকারের গঠন ব্যবস্থা ছিলো ঢিলেঢালা।[১] সাম্রাজ্যকে প্রথমে এয়ালেত নামক প্রদেশসমূহে বিভক্ত করা হয় যা তিনটি পুচ্ছ (একজন প্রাদেশিক শাসনকর্তার দাপ্তরিক লাঠির উপর বহন করা পালক) ধারণকারী একজন পাশার তত্ত্বাবধানে ছিলো।[১] রাজধানী ও প্রদেশ, ঊভয়স্থানেই রাজ্যের সকল উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে মনোনীত করার জন্য উজিরে আজম দায়ী ছিলেন।[১] ১৮৬১ এবং ১৮৬৬ সালের মধ্যে এসব এয়ালেত সমূহ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল এবং প্রশাসনিক অভিপ্রায়ে এই অঞ্চলগুলো ভিয়ালেতসমূহে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল।[১]
এয়ালেতগুলো লিভা (জেলা) অথবা সানজাকে বিভক্ত ছিলো[২], যেগুলোর প্রত্যেকটি মিরা-লিরা বা সানজাক-বে নামক উপাধি বহনকারী এক পুচ্ছ ধারণকারী পাশার অধীনে ছিলো।[৩] সাধারণত ইউরোপীয়রা এসব প্রদেশেগুলো পাশালিক নামে ডাকতো।[৩] পাশা তার প্রদেশের মধ্যে পূর্ণ সরকারের ক্ষমতাপ্রাপ্তি এবং সামরিক ও আর্থিক বিভাগের প্রধান হওয়ার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ফৌজদারি বিচার বিভাগেরও প্রধান ছিলেন।[৩]
দাপ্তরিক কার্যক্রমে অগ্রাধিকারের বিন্যাস ছিল মিশর এয়ালেত, বাগদাদ এয়ালেত, হাবেশ এয়ালেত, বুদিন এয়ালেত, আনাতোলিয়া এয়ালেত, মেরা'ইশ এবং এশিয়া ও বুদা'য় কাপুদান পাশা, ইউরোপে মিশর, আবিসিনিয়া, বাগদাদ এবং রুমেলিয়া এয়ালেত ও অবশিষ্টাংশ তাদের বিজয়ের ক্রমবর্ধমান ক্রম অনুযায়ী সাজানো ছিলো।[৪]
নাম
[সম্পাদনা]এয়ালেত শব্দটি কখনও কখনও প্রদেশ বা গভর্নোরেট হিসেবেও অনূদিত হয়। প্রশাসকদের পদমর্যাদা অনুযায়ী এয়ালেতগুলো কখনও কখনও পাশালিক (পাশা দ্বারা শাসিত), বেয়লারবেয়লিক (বে অথবা বেয়লারবে দ্বারা শাসিত) এবং কাপুদানলিক (কাপুদান দ্বারা শাসিত) নামেও অভিহিত হতো।
পাশালুক বা পাশালিক (তুর্কি: paşalık) হলো পাশা হতে উদ্ভূত একটি ভাবমূলক শব্দ যা দ্বারা একজন পাশা বা তার দ্বারা পরিচালিত অঞ্চলটির গুণমান, দপ্তর বা অধিক্ষেত্র নির্দেশিত হয়। ইউরোপীয় উৎসসমূহে, পাশালিক শব্দটি দ্বারা সাধারণত এয়ালেতগুলোকেই বুঝানো হতো।[৩]
বেগলারবেগলিক (বা বেয়লারবেয়লিক) এর পরিবর্তে উসমানীয় সাম্রাজ্যের বৃহৎ প্রশাসনিক এককের ক্ষেত্রে 'এয়ালেত' শব্দটির ব্যবহার ব্যবহার শুরু হয় ১৫৯০ সালের পর থেকে এবং এর ব্যবহার ১৮৬৭ সাল পর্যন্ত চলমান থাকে।[৫]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]
প্রথম মুরাদ আনুমানিক ১৩৬৫ সালে সালতানাতকে রুমেলিয়া এয়ালেত এবং আনাতোলিয়া এয়ালেত, এ দুটি বেয়লারবেয়লিকে বিভাজন করেন।[৬] ১৩৯০-এর দশকে প্রথম বায়েজীদের শাসনকালে পূর্বদিকে সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণের সাথে সাথে রুম এয়ালেত নামক তৃতীয় একটি এয়ালেত অস্তিত্ব লাভ করে যেখানে আমাসিয়া এর প্রধান শহর ছিলো। এটি বায়েজিদের সবচেয়ে ছোট ছেলে দ্বিতীয় মেহেমেদের রাজধানী হয়ে উঠে এবং ১৬শ শতক পর্যন্ত রাজকীয় প্রশাসকদের বাসস্থান হিসেবেই থাকে।[৭]
১৩৯৫ সালে, প্রথম বায়েজীদ বুলগেরিয়ার শেষ শিশমানিদ তিসারকে মৃত্যুদন্ড দেন এবং তার রাজত্বকে রুমেলিয়া এয়ালেতে সংযুক্ত করেন। ১৪৬১ সালে, দ্বিতীয় মেহমেদ সিনোপ প্রদেশ থেকে ইসফেনদিয়ারিদ রাজবংশের সর্বশেষ শাসককে নির্বাসিত করে, তার উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত ভূখণ্ডের বিনিময়ে বুরসার কাছে তাকে জমি প্রদান করেন। ইসফেনদিয়ারিদ রাজ্য আনাতোলিয়া এয়ালেতের একটি জেলায় পরিণত হয়।[৭] ১৪৬৮ সালে সাবেক স্বাধীন কারামান রাজ্যের বিলুপ্তির পর কারামান এয়ালেত প্রতিষ্ঠিত হয়; দ্বিতীয় মেহমেদ তার ছেলে মুস্তাফার জন্য কোনিয়াকে রাজধানী হিসেবে নির্বাচন এ নতুন এয়ালেতটির শাসক হিসেবে নিযুক্ত করেন।[৭] ১৬শ শতকে উল্লেখযোগ্য হারে এয়ালেতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে প্রথম সেলিম এবং প্রথম সুলাইমানের বিজয় অর্জনের মাধ্যমে, যার ফলে নতুন বিজিত অঞ্চলগুলো সাম্রাজ্যের সীমানার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হলে এয়ালেতের সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়৷ তাছাড়া কিছুসংখ্যক এয়ালেত গঠিত হয়েছিল পূর্বে বিদ্যমান এয়ালেতগুলোর পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে।[৭] ১৫২৭ সালের একটি তালিকায় মোট ৮টি এয়ালেতের কথা বলা হয় যেখানে পূর্বেই বিদ্যমান চারটি এয়ালেতের সঙ্গে নতুন করে মিশর এয়ালেত, দামাস্কাস এয়ালেত, দিয়ারবেকির এয়ালেত এবং কুর্দিস্তান এয়ালেত সংযুক্ত হয়। তবে কুর্দিস্তান এয়ালেত স্বতন্ত্র প্রশাসনিক একক হিসেবে বেশিদিন ছিল না। পূর্ব তুরস্ক, ইরাক এবং হাঙ্গেরীতে সুলেমানের বিজয় অর্জনের ফলস্বরূপ নতুন নতুন এয়ালেত গঠিত হয়।[৭] ১৫২২ সালে পূর্বতন দুলকাদির রাজ্য বিলুপ্ত হওয়ার কিছু সময় পরে পরে দুলকাদির এয়ালেতে পরিণত হয়। ১৫৩৩-১৫৩৬ সালব্যাপী ইরান অভিযানের পর এরজুরুম, ভান, শারাজর ও নতুন এয়ালেত বাগদাদ, ইরানের সাথে সীমান্তকে সুরক্ষিত রাখে।[৭] ১৫৪১ সালে পুরাতন হাঙ্গেরি রাজ্য হতে বুদিন এয়ালেতের সৃষ্টি হয়।[৭] পূর্বে রুমেলিয়া এয়ালেত, আনাতোলিয়া এয়ালেতের অংশ হিসেবে থাকা এইজিয়ান উপকূল এবং দ্বীপপুঞ্জের জেলাগুলিকে পৃথক করে সেগুলোকে একত্রিত করে প্রথম সুলেয়মান বিশেষভাবে হায়রেদ্দিন বারবারোসার জন্য আর্কিপেলাগো এয়ালেত নামক একটি স্বতন্ত্র এয়ালেত গঠন করেন।[৭]
১৫৮০ সালে, সম্ভবত হাবসবার্গ সীমান্তের সাথে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান প্রত্যক্ষ করে বোসনিয়া নামক একটি সাবেক জেলাকে এয়ালেতে পরিণত করা হয়। অনুরূপ বিবেচনার ফলে কানিজে এয়ালেত তৈরি হয়েছিল যা এই সীমান্ত দুর্গের পাশে জেলাগুলি দ্বারা গঠিত এবং যা ১৬০০ সালে উসমানীয়দের হস্তগত হয়ছিলো। একই সময়ে, নিম্ন দানিউব এবং কৃষ্ণ সাগর উপকূলে অবস্থিত রুমেলীয় জেলাসমূহের দখলদারিত্ব এবং কৃষ্ণসাগর বরাবর দানিউব এবং দানিয়েপার-এ তাদের অঞ্চল অন্তর্ভুক্তির ফলে সিলিস্ত্রা এয়ালেত সৃষ্টি হয়। সেই একই সময়ে কৃষ্ণসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে, ত্রাবিজন্ড এয়ালেত উৎপত্তি লাভ করে। এই পুনর্বিন্যাসের উদ্দেশ্য এবং বিশেষত ওযি এয়ালেতের সৃষ্টি সম্ভবত কোসাকদের বিরুদ্ধে কৃষ্ণসাগরের বন্দরসমূহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য।[৭]
১৬০৯ সাল নাগাদ, আঈন আলীর তালিকানুযায়ী ৩২ টি এয়ালেত ছিলো। এদের মধ্যে কিছু কিছু যেমন ত্রিপোলি, সাইপ্রাস বা তুনিস ছিলো বিজয়ের লুণ্ঠিত মালের স্থান।[৭]

১৭৯৫ সালে সরকার প্রাদেশিক প্রশাসনে বড়সড় পুনর্গঠন শুরু করে, একটি আইন জারি করে যে ২৮ টি প্রদেশ থাকবে, যেগুলোর প্রত্যেকটি একজন উজির দ্বারা পরিচালিত হবে। এগুলো হলো আদানা, আনাতোলিয়া, আলেপ্পো, বাগদাদ, বসরা, বসনিয়া, জিলদির, জ্রিতে, দামাস্কাস, মিশর, দিয়ারবেকির, এরজুরুম, হাবেশ, কারস, দুলকাদির, কারামান, আর্কিপেলাগো, এয়ালেত, মোরিয়া, মসুল, রাক্কা, রুমেলিয়া, সায়দা, শারাজোর, শিভাস, ত্রেবিজোন্ড, সিলিস্ত্রা, ত্রিপোলি, ভান। তবে, এয়ালেতগুলোর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ দুর্বল ছিল এবং উজিরদের পরিবর্তে বেয়লারবেরাই কিছু প্রদেশকে শাসন করা অব্যাহত রেখেছিলেন।[৮]
সরকার
[সম্পাদনা]যেসকল বেয়লারবেয়লিকে তিমার শাসনব্যবস্থা প্রযোজ্য ছিলো না যেমন আবিসিনিয়া, আলজিয়ারস, মিশর, বাগদাদ, বাসরা এবং লাশা অন্যগুলোর তুলনায় আরো বেশি স্বায়ত্তশাসিত ছিল। সিপাহীদের মাধ্যমে প্রাদেশিক রাজস্ব আদায় করার পরিবর্তে, বেয়লারবে'রা ইস্তাম্বুলে নির্ধারিত বার্ষিক অর্থের পরিমাণকে পাঠিয়ে দিতো, যা সালিয়েন নামে পরিচিত।[৫]
১৫০০ সাল নাগাদ, সাম্রাজ্যের কেন্দ্রীয় চার এয়ালেত- রুমেলিয়া, আনাতোলিয়া, রুম এবং কারামান প্রত্যক্ষ শাসনাধীন ছিলো। ওয়াল্লাচিয়া, মোলডাভিয়াা এবং ক্রিমীয় খানাত প্রভৃতি যেসব অঞ্চল দ্বিতীয় মেহমেদ তার আধিরাজ্যে নিয়ে এসেছিলেন সেসব অঞ্চল সুলতানের নিকট স্থানীয় রাজবংশের নিয়ন্ত্রণে রয়ে যায়। একই ঘটনা ঘটে হাঙ্গেরি রাজ্যের ক্ষেত্রে মোহাচস্ এর যুদ্ধের পরে।[৭]
মানচিত্র
[সম্পাদনা]তালিকা
[সম্পাদনা]১৪শ শতকের মাঝামাঝি থেকে ১৬শ শতকের শেষের দিকে, শুধুমাত্র একটি নতুন বেয়লারবেয়লিক (কারামান প্রদেশ) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
১৬০৯ সালের পূর্বে বিলুপ্তি
[সম্পাদনা]যেসব এয়ালেত ১৬০৯ সালের পূর্বে বিরাজমান ছিল কিন্তু পরবর্তীতে বিলুপ্ত হয়ে যায় সেগুলো হল[৯]:
প্রদেশ | উসমানীয় তুর্কি নাম এবং প্রতিবর্ণীকরণ (আধুনিক তুর্কি) | অস্তিত্বকাল | সংক্ষিপ্ত বর্ণনা |
---|---|---|---|
আবখাযিয়া | আবহাযিয়া | (১৫৭৮–?) | সুখুম [সুহুমকালে] বা জর্জিয়া [গুরজিস্তান] এবং মিনগ্রেলিয়া ও ইমেরেতিয়ার পাশাপাশি আধুনিক আবখাযিয়া-নামেমাত্র সংযুক্ত কিন্তু পুরোপুরি জয়লাভ করা যায় নি |
আখালতসিখে | আহিস্কা | (১৬০৩–?) | শামত্সখের সহিত সমবিস্তৃত বা বিভক্ত |
দাগেস্তান | দাগিস্তান | (১৫৭৮–?) | দেমিরকাপি নামেও পরিচিত ছিল যেখানে একজন বেয়লারবে'র চাইতে একজন সর্দারকে [প্রধান] নিযুক্ত করা অধিক প্রযোজ্য ছিল |
ডিমানিসি | টুমানিস | (১৫৮৪–?) | |
গানজা | গেনস্ | বছর (১৫৮৮–১৬০৪) | |
গোরি | গোরি | (১৫৮৮–?) | সম্ভবত ১৫৮৪ সালের পরে টিফলিসকে প্রতিস্থাপিত করেছে |
গিয়োর | ইয়ানিক | ৪ বছর (১৫৯৪–১৫৯৮) | |
ইবরিম | ঈবরীম | ১ বছর (১৫৮৪-১৫৮৫) | ইবরিম সানজাকের অস্থায়ী উত্তরণ [১০] |
কাখেতি | কাহেতি | (১৫৭৮–?) | কাখেতীয় রাজা বংশ পরম্পরায় বে হিসেবে নিযুক্ত হন |
লাযিস্তান | বছর (১৫৭৪–?) | ||
লোররি | লোরি | (১৫৮৪–?) | |
নাখিঝেভান | নাহঝিভান | ১ বছর (শুধুমাত্র ১৬০৩) | সম্ভবত ইয়েরেভান হতে কখনোই পৃথক হয়নি[৯] |
পোতি | ফাশ | (১৫৭৯–?) | যথাসম্ভব ত্রাবজনের অন্য একটি নাম |
সানা | সান'অা | ২ বছর (১৫৬৭–১৫৬৯) | ইয়েমেনের অস্থায়ী বিভাজিত স্থান |
শেমাখা | শামাহি | ১ বছর (শুধুমাত্র ১৫৮৩) | সম্ভবত শেরভান এর অন্য নাম হতে পারে |
এসযিগেতভার | যিগ | ২৬ বছর (১৫৭৮–১৬০৪) | একজন বেয়লারবে'র চাইতে একজন সর্দার [প্রধান] কর্তৃক প্রশাসিত |
তাবরিজ | তেবরিজ | ১৮ বছর (১৫৮৫–১৬০৩) | |
টিফলিস | টিফলিস | ৮ বছর (১৫৭৮–১৫৮৬) | ১৫৮৬ এর পরে গোরি দ্বারা প্রতিস্থাপিত |
ওয়াল্লাছিয়া | এফলাক | ২ মাস (সেপ্টেম্বর–অক্টোবর ১৫৯৫) | বাকু সময়ে ওয়াল্লাছিয়া ছিলো পৃথক স্বায়ত্তশাসিত রাজ্য |
ইয়েরেভান | এরিভান | ২১ বছর (১৫৮৩–১৬০৪) | কোনো এক সময়ে ভান ও এই প্রদেশের অন্তর্ভূক্ত ছিলো |
যাবিদ | যেবিত | ১৬ বছর (১৫৬৭–১৫৮৩) | ইয়েমেনের অস্থায়ী প্রশাসনিক বিভাগ |
১৬০৯ সালে এয়ালেতসমূহ
[সম্পাদনা]১৬শ শতাব্দীতে প্রথম সেলিম এবং প্রথম সুলেইমানের নতুন নতুন ভূখণ্ড বিজয়ের কারণে প্রশাসনিক একক সমূহের বৃদ্ধি করা জরুরি হয়ে পড়েছিলো। পরবর্তী অর্ধশতাব্দীর শেষদিকে মোটামুটি ৪২ টি এয়ালেত ছিলো যেগুলো বেয়লারবেয়লিক হিসেবে পরিচিত ছিল। নিম্নোক্ত তালিকাটি ১৬০৯ সালের প্রশাসনিক অবস্থা প্রদর্শন করে:
প্রদেশের নাম | উসমানীয় তুর্কি নাম এবং প্রতিবর্ণীকরণ (আধুনিক তুর্কি) | অস্তিত্বকাল | সংক্ষিপ্ত বর্ণনা |
---|---|---|---|
হাবেশ এয়ালেত | হাবেশ | ৩১৩ বছর (১৫৫৪–১৮৬৭) | এই এয়ালেত-এ লোহিত সাগরের ঊভয় উপকূলের এলাকাসমূহ অন্তর্ভূক্ত ছিলো। মক্কা এবং মদিনা নামেও ডাকা হতো |
আদানা এয়ালেত | آضنه আযানা (আদানা) | ৫৭ বছর (১৬০৮–১৮৬৫) | |
অার্কিপেলাগো | جزایر بحر سفید জেযায়ির-ই বাহর-ই সেফিদ | ৩২৯ বছর (১৫৩৫–১৮৬৪) | কাপুদান পাশার (লর্ড অ্যাডমিরাল) রাজ্য; দেনিযি বা দেনিযলি এবং পরবর্তীতে অার্কিপেলাগো ভিলায়েত নামে ডাকা হতো |
এলেপ্পো এয়ালেত | حلب হালেব (হালেপ) | ৩৩০ বছর (১৫৩৪–১৮৬৪) | |
আলজিয়ার্স এয়ালেত | جزایر غرب জেযায়ীর-ই গারব (জেযায়ির গারপ, জেযায়ির) | ৩১৩ বছর (১৫১৭–১৮৩০) | |
আনাতোলিয়া এয়ালেত | আনাদোলু | ৫৪৮ বছর (১৩৯৩–১৮৪১) | দ্বিতীয় এয়ালেত |
বাগদাদ এয়ালেত | بغداد বাগদাদ (বাগদাত) | ৩২৬ বছর (১৫৩৫–১৮৬১) | জুহাবের চুক্তি (১৬৩৯) অবধি উসমানীয় শাসন একীভূত হয়নি। |
বাসরা এয়ালেত | بصره বাসরা (বাসরা) | ৩২৮ বছর (১৫৩৮–১৮৬২) | |
বসনিয়াক এয়ালেত | বসনা | ২৮৪ বছর (১৫৮০–১৮৬৪) | |
বুদিন এয়ালেত | বুদিন | ১৪৫ বছর (১৫৪১–১৬৮৬) | |
কিবরিস এয়ালেত | قبرص কিবরিস | ৯২ বছর (১৫৭১-১৬৬০; ১৭৪৫-১৭৪৮) | |
দিয়ারবেকির এয়ালেত | دیار بكر দিয়ারবেকির (দিয়ারবাকির) | ৩০৫ বছর (১৫৪১–১৮৪৬) | |
এগের এয়ালেত | اكر এগির (এগরি) | ৬৫ বছর (১৫৯৬–১৬৬১) | |
মিশর এয়ালেত | مصر মিশির (মিসির) | ৩০৫ বছর (১৫১৭–১৮৬৭) | |
এরজুরুম এয়ালেত | এরজুরুম | বছর (১৫৩৩–১৮৬৭) | জুহাবের চুক্তি (১৬৩৯) অবধি উসমানীয় শাসন একীভূত হয়নি |
আল-হাসা এয়ালেত | লাহসা | বছর (১৫৬০–১৬৭০) | খুব কমই সরাসরি শাসিত হয়েছিল |
কেফে এয়ালেত (থিওডোসিয়া) | كفه কেফে | বছর (১৫৮০–১৮৭৫) | জুহাবের চুক্তি (১৬৩৯) অবধি উসমানীয় শাসন একীভূত হয়নি। ১৮৭৫ সালে এরজুরুম এয়ালেতের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। |
দুলকাদির এয়ালেত | মারাশ, দুলকাদির | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৫২২–১৮৬৪) | |
মসুল এয়ালেত | মুসুল | বছর (১৫৩৫–১৮৬৪) | জুহাবের চুক্তি (১৬৩৯) অবধি উসমানীয় শাসন একীভূত হয়নি। |
আর রাক্বাহ | রাক্কা | বছর (১৫৮৬–১৮৬৪) | |
রুমেলিয়া এয়ালেত | রুমেলি | বছর (১৩৬৫–১৮৬৭) | প্রথম এয়ালেত |
ঝিলদির এয়ালেত | জিলদির | বছর (১৫৭৮–১৮৪৫) | মেসখেতি নামেও পরিচিত ছিল, পরবর্তীতে আখালতসসিখে (আহিস্কা) প্রদেশের সহিত সমবিস্তৃত। ১৮২৯ সালে এই এয়ালেতের বেশিরভাগই রাশিয়ার নিকট হস্তান্তর হয়ে যায়। এয়ালেতের বাকি অংশ ১৮৪৫ সালে এরজুরুমের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। |
শাহরিযোর এয়ালেত | শেহরিযোর | বছর (১৫৫৪–১৫৫৪) | শাহরিযোর, শেহেরিযুল, বা কিরকুক। ১৮৩০ সালে, এই এয়ালেত কিরকুক সানজাক হিসেবে মসুলের প্রদেশের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। |
সিলিস্ত্রা এয়ালেত | সিলিস্ত্রে | বছর (১৫৯৩–১৮৬৪) | পরবর্তীতে মাঝেমধ্যে ওছাকিভ (ওযি) নামেও ডাকা হতো; প্রথম বেয়লারবে ছিলেন ক্রিমীয় খান। |
শিভাস এয়ালেত | শিভাস | বছর (১৩৯৮–১৮৬৪) | |
সিরিয়া | شام শাম | বছর (১৫১৭–১৮৬৫) | |
তেমেশভার এয়ালেত | তিমিশভার | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৫৫২–১৭১৬) | |
ত্রেবিজোন্ড এয়ালেত, লাযিস্তান | ত্রাবজোন | { বছর (১৫৭৯–১৮৬৪) | |
ত্রিপোলিতানিয়া এয়ালেত (পশ্চিমাস্থিত ত্রিপোলি) | طرابلس غرب ত্রাবলুস-ই গারব (ত্রাবলুসগারপ) | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৫৫১–১৮৬৪) | |
তুনিস এয়ালেত | তুনুস | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৫২৪–১৮৬৪) | |
ভান এয়ালেত | وان ভান | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৫৪৮–১৮৬৪) | জুহাবের চুক্তি (১৬৩৯) অবধি উসমানীয় শাসন একীভূত হয়নি। |
ইয়েমেন এয়ালেত | یمن ইয়েমেন | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৫১৭–১৬৩৬; ১৮৪৯–১৮৭২) |
উৎসসমূহ:
- Colin Imber. The Ottoman Empire, 1300-1650: The structure of Power. (Houndmills, Basingstoke, Hampshire, UK: Palgrave Macmillan, 2002.)
- Halil Inalcik. The Ottoman Empire: The Classical Age 1300–1600. Trans. Norman Itzkowitz and Colin Imber. (London: Weidenfeld & Nicolson, 1973.)
- Donald Edgar Pitcher. An Historical Geography of the Ottoman Empire (Leiden, Netherlands: E.J.Brill,1972.)
১৬০৯-১৬৮৩ সালে স্থাপিত
[সম্পাদনা]প্রদেশের নাম | উসমানীয় তুর্কি নাম এবং প্রতিবর্ণীকরণ (আধুনিক তুর্কি) | অস্তিত্বকাল | সংক্ষিপ্ত বর্ণনা |
---|---|---|---|
ক্রিট এয়ালেত | গিরিড | বছর (১৬৬৯–১৮৬৭) | |
মোরিয়া এয়ালেত | মোরা | বছর (১৬২০–১৬৮৭) এবং (১৭১৫–১৮২৯) | মূলত এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জ প্রদেশের অংশ |
পোডোলিয়া এয়ালেত | পোডোলিয়া | বছর (১৬৭২–১৬৯৯) | বেইলারবেই (গভর্নর) এর পরিবর্তে বেশ কয়েকজন সর্দার (মার্শাল) দ্বারা তত্ত্বাবধান করা হয়েছিল |
সিডন এয়ালেত | সায়দা | বছর (১৬৬০–১৮৪১) | |
উইভার এয়ালেত | উইভার | বছর (১৬৬৩–১৬৮৫) | |
ভারাদ এয়ালেত | ভারাদ | বছর (১৬৬১–১৬৯২) |
প্রতিষ্ঠিত ১৬৮৩–১৮৬৪
[সম্পাদনা]প্রদেশের নাম | উসমানীয় তুর্কি নাম এবং প্রতিবর্ণীকরণ (আধুনিক তুর্কি) | অস্তিত্বকাল | সংক্ষিপ্ত বর্ণনা |
---|---|---|---|
এদরিয়ানোপোল এয়ালেত | এদিরনে | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৮২৬–১৮৬৪) | |
মোনাসতির এয়ালেত | মোনাসতির | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৮২৬–১৮৬৪) | |
সালোনিকা এয়ালেত | সেলানিক | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৮২৬–১৮৬৪) | |
আইদিব এয়ালেত | আয়দিন | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৮২৬–১৮৬৪) | |
আঙ্কারা এয়ালেত | আঙ্কারা | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৮২৭–১৮৬৪) | |
কাস্তামনু এয়ালেত | কাস্তামনু | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৮২৭–১৮৬৪) | |
হারযেগোভনিয়া এয়ালেত | হেরসেক | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৮৩৩–১৮৫১) | |
হুদাভেনদিগার এয়ালেত | হুদাভেনদিগার | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৮৪১–১৮৬৭) | |
কারাসি এয়ালেত | কারেসি | 0এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৮৪৫–১৮৪৭) | |
নিশ এয়ালেত | নিশ | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৮৪৬–১৮৬৪) | |
কুর্দিস্তান এয়ালেত | কুর্দিস্তান | ২১ বছর (১৮৪৬–১৮৬৭)[১১] | |
ভিদিন এয়ালেত | ভিদিন | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বছর (১৮৪৬–১৮৬৪) |
মানচিত্রসমূহ
[সম্পাদনা]-
১৭শ শতাব্দীতে এয়ালেতসমূহ
-
জোসেফ হাচিনস কোলটন এর এশিয়া অংশের তুরস্কের ১৮৫৫ সালের মানচিত্র
-
১৮৬৪ সালে প্রকাশিত কার্ল রিটার ইউরোপীয় তুর্কির মানচিত্র
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ A handbook of Asia Minor। Naval Staff. Intelligence Department। ১৯১৯। পৃষ্ঠা 203।
- ↑ Raymond Detrez; Barbara Segaert (২০০৮-০১-০১)। Europe and the historical legacies in the Balkans। Peter Lang। পৃষ্ঠা 167। আইএসবিএন 978-90-5201-374-9। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-০১।
- ↑ ক খ গ ঘ The empires and cities of Asia (1873) by Forbes, A. Gruar. Page 188
- ↑ Çelebi, Evliya. Trans. by von Hammer, Joseph. Narrative of travels in Europe, Asia, and Africa in the seventeenth century, Vol. 1, p. 90 ff. Parbury, Allen, & Co. (London), 1834.
- ↑ ক খ Selcuk Aksin Somel (২০১০-০৩-২৩)। The A to Z of the Ottoman Empire। Scarecrow Press। পৃষ্ঠা 88। আইএসবিএন 978-1-4617-3176-4। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-০৩।
- ↑ D. E. Pitcher (১৯৭২)। An Historical Geography of the Ottoman Empire: From Earliest Times to the End of the Sixteenth Century। Brill Archive। পৃষ্ঠা 125। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-০২।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট Imber, Colin (২০০২)। "The Ottoman Empire, 1300-1650: The Structure of Power" (পিডিএফ)। পৃষ্ঠা 177–200। ২০১৪-০৭-২৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ M. Sükrü Hanioglu (২০১০-০৩-০৮)। A Brief History of the Late Ottoman Empire। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 50। আইএসবিএন 978-1-4008-2968-2। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-০১।
- ↑ ক খ D. E. Pitcher (১৯৭২)। An Historical Geography of the Ottoman Empire: From Earliest Times to the End of the Sixteenth Century। Brill Archive। পৃষ্ঠা 128–29। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-০২।
- ↑ V. L. Menage (1988): "The Ottomans and Nubia in the sixteenth century". Annales Islamologiques 24. pp.152-153.
- ↑ Aydın, Suavi; Verheij, Jelle (২০১২)। Jorngerden, Joost; Verheij, Jelle, সম্পাদকগণ। Social Relations in Ottoman Diyarbekir, 1870-1915। Brill। পৃষ্ঠা 18। আইএসবিএন 9789004225183।