এডউইন হাবল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(এডুইন হাবল থেকে পুনর্নির্দেশিত)
এডউইন পাওয়েল হাবল
জন্মনভেম্বর ২৯, ১৮৮৯
মৃত্যুসেপ্টেম্বর ২৮, ১৯৫৩
জাতীয়তা মার্কিন
মাতৃশিক্ষায়তনশিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণমহা বিস্ফোরণ
হাবলের নীতি
লোহিত অপসারণ
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রজ্যোতির্বিজ্ঞান
প্রতিষ্ঠানসমূহশিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়
মাউন্ট উইলসন মানমন্দির

এডউইন হাবল (১৮৮৯ - ১৯৫৩)[১] একজন মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী যিনি ছায়াপথ, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ এবং মহাবিশ্বের আকার-আকৃতি বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। তিনিই প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন যে আমরা পৃথিবী থেকে যে কুণ্ডলাকার নীহারিকাগুলো দেখতাম সেগুলো প্রকৃতপক্ষে আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথের মতই এক ধরনের ছায়াপথ। তবে তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার ছিল মহাবিশ্বের ক্রম সম্প্রসারণ আবিষ্কার।

জীবনী[সম্পাদনা]

শিক্ষা জীবন[সম্পাদনা]

হাবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের অন্তর্গত মার্শফিল্ডে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর তিনি শিকাগো এবং ইলিয়নিসে উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯১০ সালে গণিত এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। স্নাতক ওত্তর পর্যায়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার জন্য তিনি রোড্‌স বৃত্তি পান। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ১৯১২ সালে তিনি আইন শাস্ত্রে একটি ডিগ্রী অর্জন করেন। অক্সফোর্ডের অধ্যয়ন শেষে ১৯১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এসে সপরিবারে কেন্টাকিতে বসবাস শুরু করেন। ১৯১৪ সাল পর্যন্ত তিনি কেন্টাকিইন্ডিয়ানা রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্তরের স্কুলে শিক্ষকতা এবং আইন ব্যবসা করে সময় কাটান। ১৯১৪ সালে উইসকনসিনে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইয়ার্কস মানমন্দিরে একটি গবেষণার পদ লাভ করেন। এই পদে যোগ দেয়ার উদদদেশ্যে তিনি কেন্টাকি ছেড়ে উইসকনসিন যাত্র করেন। ১৯১৭ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের উপর পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ[সম্পাদনা]

এর অব্যবহিত পরেই মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী জর্জ হেল তাকে ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্ট উইলসন মানমন্দিরে কাজ করার জন্য নিমন্ত্রণ জানান। জর্জ হেলের দাওয়াত পাওয়ার সমসাময়িক কালেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এবং এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে (১৯১৪ - ১৯১৮) যোগ দেয়। হাবল দাওয়াত গ্রহণ না করে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দেয়। তার পিএইচডি ডিগ্রী অর্জনের জন্য গৃহীত মৌখিক পরীক্ষা শেষের মাত্র তিন দিনের মাথায় তিনি সেনাবাহিনীতে রিপোর্ট করেন। সেনাবাহিনী প্রথমে তাকে ফ্রান্সে পাঠায় এবং এরপর থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত তিনি জার্মানিতে কর্মরত থাকেন। মেজর পদ নিয়ে তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

মাউন্ট উইলসন মানমন্দির[সম্পাদনা]

অবশেষে ১৯১৯ সালে হাবল মাউন্ট উইলসন মানমন্দিরের নিমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। এই মানমন্দিরে একটি ১০০-ইঞ্চি (২.৫-মিটার) হুকার দূরবীক্ষণ যন্ত্র ছিল। ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত এই দূরবীনটি পৃথিবীর বৃহত্তম হুকার দূরবীন ছিল। কর্মজীবনের বাকি সময়টা তিনি এই মানমন্দিরে কাজ করেই কাটান; এখানেই তিনি জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার ও পর্যবেক্ষণগুলো করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (১৯৩৯ - ১৯৪৫) কারণে তার গবেষণা কর্ম কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়। এই মহাযুদ্ধের সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ বিভাগের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন।

গবেষণাকর্ম[সম্পাদনা]

ইয়ার্কস মানমন্দিরে কাজ করার সময় হাবল আকাশে কিছু কুণ্ডলাকার বস্তু খুব নিবিঢ়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। এই কুণ্ডলীগুলো ছিল পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান নীহারিকা। অবশ্য বর্তমানে একে আর নীহারিকা বলা যায় না। বর্তমানে একটি ছায়াপথের অভ্যন্তরে ধূলি এবং গ্যাসের মেঘকে নীহারিকা বলা হয়। হাবল যখন এই পর্যবেক্ষণ করেছিলেন তখন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নীহারিকা ও দূরবর্তী ছায়াপথসমূহের মধ্যে পার্থক্য করতে পারতেন না। কারণ উভয়কেই কুণ্ডলীত বস্তুর মত দেখাতো।

হাবল বিশেষত দুইটি নীহারিকার আচরণ নিয়ে উৎসাহী হয়ে উঠেন। এই দুইটি ছিল বৃহৎ ম্যাজেলানিয় মেঘপুঞ্জ এবং ক্ষুদ্র ম্যাজেলানিয় মেঘপুঞ্জ (Magellanic Clouds)। ১৯১২ সালে মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী হেনরিয়েটা লিভিট ম্যাজেলানিয় মেঘপুঞ্জের দুটি তারার উজ্জ্বলতা নির্ণয় করে পৃথিবী থেকে তাদের দূরত্ব বের করার চেষ্টা করেছিলেন। এই পর্যবেক্ষণ করতে যেয়ে তিনি বিষম তারা এবং হলুদ তারা নিয়েছিলেন কারণ এদের উজ্জ্বলতা পরিবর্তিত হয়। বিষম তারার একটি পূর্ণ চক্র সম্পন্ন করতে যত বেশি সময় লাগে এর উজ্জ্বলতাও তত বেশি হয়। অর্থাৎ এর গড় পরম মান তত বেশি হয়। একটি তারার প্রকৃত উজ্জ্বলতা এবং পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান উজ্জ্বলতার তুলনা করে তিনি পৃথিবী থেকে তারাটির দূরত্ব পরিমাপ করেন। তারা বা নীহারিকাটির একটি পূর্ণ চক্রের দৈর্ঘ্য পরিমাপ করার মাধ্যমে তিনি তার প্রকৃত উজ্জ্বলতা নির্ণয় করেছিলেন। লিভিট এবং তৎকালীন অন্যান্য বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছিলেন যে ম্যাজেলানিয় মেঘপুঞ্জ আকাশগঙ্গা ছায়াপথের সীমানার বাইরে অবস্থিত।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর মানমন্দিরের হুকার দূরবীনটি ব্যবহার করে হাবল নীহারিকা সম্বন্ধে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি প্রথমেই আকাশগঙ্গার বাইরে অবস্থিত বলে ধারণা করা হতো এমন সব নীহারিকার অভ্যন্তরে কোন বিষম তারা আছে কিনা তা খুঁজতে লাগলেন। ১৯২৩ সালে তিনি অ্যান্ড্রোমিডা নীহারিকার (বর্তমানে যা গ্রেট অ্যান্ড্রোমিডা কুণ্ডলাকার ছায়াপথ নামে পরিচিত) অভ্যন্তরে একটি বিষম তারা আবিষ্কার করেন। এর মাত্র এক বছরের মধ্যে অ্যান্ড্রোমিডা নীহারিকার ভিতরে তিনি ১২ টি বিষম তারা আবিষ্কার করেন। এই বিষম তারাগুলোকে বিভিন্নভাবে পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে তিনি বের করেন যে, পৃথিবী থেকে অ্যান্ড্রোমিডা নীহারিকার দূরত্ব প্রায় ৯০০,০০০ আলোক বর্ষ। আকাশগঙ্গার ব্যাস প্রায় ১০০,০০০ আলোক বর্ষ। সুতরাং হাবলের পর্যবেক্ষণ প্রমাণ করে যে অ্যান্ড্রোমিডা নীহারিকা পৃথিবীর ছায়াপথের বাইরে এবং এ থেকে অনেক দূরে অবস্থিত।

হাবল অ্যান্ড্রোমিডা ছাড়াও আরও অনেকগুলো তারাসমৃদ্ধ নীহারিকা আবিষ্কার করেন যারা আকাশগঙ্গার বাইরে অবস্থিত। এগুলো পর্যবেক্ষণ করে তিনি দেখতে পান যে এদের মধ্যস্থিত উপাদানের সাথে আকাশগঙ্গার অভ্যন্তরস্থ উপাদানের অনেক মিল রয়েছে। এই নীহারিকা নামীয় বস্তুগুলোর মধ্যে তারার গুচ্ছ বিদ্যমান যাদেরকে বর্তুলাকার স্তবক বলা হয়; এছাড়াও এতে আছে নবতারা। নবতারাগুলো হঠাৎ হঠাৎ অত্যন্ত উজ্জল হয়ে উঠে। এসমস্ত পর্যবেক্ষণের সাপেক্ষে ১৯২৪ সালে তিনি প্রস্তাব করেন যে এই নীহারিকাগুলো প্রকৃতপক্ষে আমাদের ছায়াপথের বাইরে অবস্থিত অন্যান্য ছায়াপথ। তার প্রস্তাবিত এই তত্ত্ব দ্বীপ মহাবিশ্ব তত্ত্ব (Island Universe Theory) নামে পরিচিতি লাভ করে। এই ছায়াপথগুলো নিয়ে তার গবেষণা অব্যাহত থাকে। ১৯২৫ সালে তিনি ছায়াপথগুলোকে নিয়মিত এবং অনিয়মিত গঠনের ছায়াপথ নামীয় দুইটি শ্রেণীতে বিভক্ত করেন। মূলত ছায়াপপথগুলোর আকৃতি এবং গাঠনিক ধর্মের ভিত্তিতে এই শ্রেণিবিন্যাস করা হয়। শতকরা ৯৭ ভাগ ছায়াপথই নিয়মিত গঠনের। নিয়মিত গঠনের ছায়াপথগুলো প্রধানত উপবৃত্তাকার বা কুণ্ডলাকার হয়ে থাকে। কুণ্ডলাকার ছায়াপথগুলৌকে আবার হাবল ২ ভাগে ভাগ করেছিলেন: সাধারণ কুণ্ডলাকার ছায়াপথ এবং রেখাঙ্কিত কুণ্ডলাকার ছায়াপথ। কোন নির্দিষ্ট আকৃতি বা গঠন নেই এমন ছায়াপথের সংখ্যা শতকরা মাত্র তিন ভাগ বলে হাবল উল্লেখ করেন।

হাবল তার আবিষ্কৃত এবং শ্রেণিবিন্যাসকৃত ছায়াপথগুলো থেকে পৃথিবীর দূরত্ব বের করা শুরু করেন। এজন্য তিনি মূলত বিষম তারাগুলোর পর্যবেকক্ষণ থেকে প্রাপ্ত মান ব্যবহার করতেন। তার হিসাবকৃত এই দূরত্বসমূহের সাথে তিনি পৃথিবীর সাপেক্ষে ছায়াপথগুলোর গতিবেগের পরিমাপের তুলনা করতে শুরু করেন। অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানীই তার পূর্বে ছায়াপথসমূহের গতিবেগ হিসাব করেছিলেন যখন এগুলো ছায়াপথ হিসেবেই চিহ্নিত হতোনা। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মার্কিননৱ জ্যোতির্বিজ্ঞানী ভেস্টো সিলফার যিনি ১৯১০ এবং ১৯২০-এর দশকে অনেকগুলো ছায়াপথের গতিবেগ হিসাব করেছিলেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ছায়াপথসমূহের লোহিত অপসারণের মান হিসাব করে এদের গতিবেগ বের করতেন। একটি বস্তু যে বিকিরণ প্রদান করে তার ফলেই লোহিত অপসারণের সৃষ্টি হয়। ডপলার ক্রিয়ার কারণে লোহিত অপসারণ হয়। মূলত যখন পর্যবেক্ষক থেকে ক্রমশ পশ্চাদপসরমান বস্তু কর্তৃক বিকীর্ণ রশ্মি তরঙ্গদৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলোর ব্যাপ্তীতে হয় তখন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মান লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সমান হয়। এ থেকেই বোঝা যায় যে জ্যোতিষ্কগুলো ক্রমশ পশ্চাদপসরণ করছে। স্লিফারসহ অন্যান্য জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। হাবল নিজেও এই ফলাফল লাভ করেন।

১৯২৯ সালে হাবল ছায়াপথসমূহের দূরত্বের সাথে এদের পশ্চাদপসরণের বেগের তুলনা করেন। এর ফলে তিনি অত্যন্ত প্রকট একটি সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হন: একটি ছায়াপথ পৃথিবী থেকে থেকে যত দূরে অবস্থিত তার পশ্চাদপসরণের বেগও তত বেশি। এই নীতিটি হাবল কর্তৃক আবিষ্কৃত ৪৬টি ছায়াপথের ক্ষেত্রেই সত্য প্রমাণিত হয়‌; এমনকি এর পরে হাবল এবং অন্যান্য বিজ্ঞানী কর্তৃক আবিষ্কৃত সবগুলো ছায়াপথের ক্ষেত্রেই এর সত্যতা আবিষ্কৃত হয়। এই নীতিটিকেই বর্তমানে হাবলের নীতি নামে অভিহিত করা হয়। পরিশেষে হাবল বলেন যে বেগ এবং দূরত্বের মধ্যে এই সম্পর্ক নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে যে মহাবিশ্ব ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছে। এর আগে ১৯২৭ সালে বেলজীয় বিজ্ঞানী জর্জেস লেমাইট্‌র মহাবিশ্বের একটি নকশা প্রণয়ন করেছিলেন যা আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বকে একত্রীভূত করেছিল। লেমাইট্‌র একটি সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বের নকশাই করেছিলেন কিন্তু হাবলই প্রথম বিজ্ঞানী যিনি এর সপক্ষে একটি পর্যবেক্ষণমূলক প্রমাণ উপস্থাপন করতে সমর্থ হন।

বেগ এবং দূরত্বের মধ্যে এই সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে যেয়ে হাবল একটি ধ্রুবকের গোড়াপত্তন করেন যা হাবল ধ্রুবক নামে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা হাবল ধ্রুবকের সঠিক মান আজও বের করতে পারেননি। পারলে মহাবিশ্বের সঠিক বয়স এবং মানুষের পক্ষে পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্বের ব্যাসার্ধ্য উভয়টিই জানা যেতো। মহাবিশ্ব অসীম হতে পারে, কিন্তু এর পুরোটা আমরা পর্যবেক্ষ করতে পারবো না। দূরত্বের সাথে সাথে যদি বেগও বাড়তে থাকে তবে এমন ছায়াপথ অবশ্যই থাকবে যার বেগ আলোর বেগের সমান। সেই ছায়াপথ থেকে পৃথিবীর দূরত্বই হবে পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্বের ব্যাসার্ধ্য। কারণ এই ছায়াপথ থেকে আলো কখনোই পৃথিবীতে পৌঁছাতে পারবেনা। আর এর বাইরের কিছু দেখাও তাই অসম্ভব। এই ব্যাসকে হাবল ব্যাসার্ধ্য বলে।

১৯৩০-এর দশকে হাবল ছায়াপথসমূহের বণ্টন নিয়ে গবেষণা করেন। তার পর্যবেক্ষণের ফলাফল হতে দেখা যায় ছায়াপথগুলো মহাকাশে সমসত্বভাবে বিন্যস্ত। হাবল বলেন যে আকাশগঙ্গার তলে এবং এই তলের সাপেক্ষে দৃশ্যমান অঞ্চলে দৃশ্যমান ছায়াপথের সংখ্যা কম হবে। কারণ অতিরিক্ত ধূলির কারণে বাইরের ছায়াপথ থেকে আসা আলো পৃথিবীতে আসতে বাঁধাগ্রস্ত হবে।

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

হাবল আমৃত্যু গবেষণা করেছেন। দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত মাউন্ট পালোমার মানমন্দিরের জন্য ২০০-ইঞ্চি (৫০৮-সে.মি.) দূরবীনের (হেল দূরবীন) নির্মাণের কাজে তিনি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৪৮ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। এই সময় থেকে শুরু করে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এটি ছিল পৃথিবীর সর্ববৃহৎ দূরবীন। এই সালে হাওয়াইয়ে অবস্থিত মাউনা কিয়া মানমন্দিরের জন্য নির্মীত কেক দূরবীন নির্মীত হয়। এরপর থেকে এটিই সর্ববৃহৎ। হাবল মহাকাশ দূরবীন একটি শক্তিশালী দূরবীক্ষণ যন্ত্র যা পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান একটি কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে ১৯৯০ সালে মহাকাশে পাঠানো হয়েছে। এই দূরবীনটির নাম বিজ্ঞানী হাবলের নামে রাখা হয়েছে। এছাড়া তিনি বেশ কিছু পুরস্কার পেয়েছেন:

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Biography of Edwin Hubble (1889–1953)"। NASA। জুন ৩০, ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ২১, ২০১১ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]