উয়েফা বর্ষসেরা পুরুষ খেলোয়াড় পুরস্কার
উয়েফা বেস্ট প্লেয়ার ইন ইউরোপ খেতাবটি অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল খেতাব যা একজন ফুটবলারকে দেওয়া হয় যিনি প্রধানত ইউরোপে একটি ফুটবল ক্লাবের হয়ে খেলেন যাকে আগের মরসুমে সেরা বলে বিবেচনা করা হয়। এই খেতাবটি ২০১১ সালে উয়েফা প্রথম চালু করেন, ইউরোপীয় বর্ষসেরা ফুটবলার (বালোঁ দ’অর) পুরস্কারকে আবার নতূন করে পুনরুজ্জীবিত করে তোলার জন্য,[১][২] যেটা ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় খেতাবের সাথে মিশে গিয়ে তৈরি করে এক নতূন খেতাব যেটা হল ফিফা বালোঁ দ’অর[৩] যেটা উয়েফা ক্লাব ফুটবলার অফ দ্য ইয়ার খেতাবকে প্রতিস্থাপন করে।[৪]
প্রথম খেতাবটি পান লিওনেল মেসি ২০১১ সালে।[৫] ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা ও লিওনেল মেসি ২০১২ তে এই খেতাবের জন্য মনোনিত হয়েছিলেন, যেই খেতাব জিতেছিলেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা।[৬][৭] কিন্তু ২০১৩ তে ফ্রাঙ্ক রিবেরি তার প্রতিদ্বন্দী ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসি, যারা শেষ তিনবারের তিনবারই ফাইনালে পৌঁছেছিলেন এদেরকে হারিয়ে জিতেছিলেন।[৮][৯]
২০১৩ সালে উয়েফা ঘোষণা করে উয়েফা বেস্ট ওম্যান প্লেয়ার ইন ইউরোপ খেতাবটি চালু করেন যেটা প্রধানত মহিলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের জন্য নির্দিষ্ট হয়েছে।[১০]
নির্ণায়ক
[সম্পাদনা]উয়েফার মতে "এই পুরস্কার একজন খেলোয়াড়কে চেনায় যে তাঁর জাতীয়তা নির্বিশেষে একটি ক্লাবের হয়ে খেলে এবং যা পূর্ব মরসুমে উয়েফা সদস্য এসোসিয়েশনের সীমানার অন্তর্ভুক্ত।"[১] খেলোয়াড়দের নির্বাচন করা হয় পূর্ব মরসুমে তার দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে। শুধু তাই নয়, এটা ছাড়াও ক্লাবের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে এই খেতাবের জন্য খেলোয়াড়কে নির্বাচন করা হয়।[১]
ভোটিং
[সম্পাদনা]ফিফা বালোঁ দ’অর এর মতন এই খেতাবটিও সাংবাদিকদের দ্বারা নির্বাচিত হয়।[২] ভোটিং এর প্রথম রাউন্ডে ৫৩ জন স্পোর্টস সাংবাদিক, উয়েফার তরফ থেকে যারা প্রতিনিধিত্ব পালন করেন তাদেরকে তিন জন শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়ের একটা তালিকা দেওয়া হয় যেখানে র্যাঙ্ক থাকে ১ থেকে ৩ পর্যন্ত। প্রথম খেলোয়াড় পায় ৫ পয়েন্ট, দ্বিতীয় খেলোয়াড় পায় ৩ পয়েন্ট এবং তৃতীয় খেলোয়াড় পায় ১ পয়েন্ট। এখান থেকেই তিনজন খেলোয়াড় যাঁদের সবথেকে বেশি পয়েন্ট আছে তাদেরকে বাছাই করা হয়।[১] চূড়ান্ত ভোটও হয় প্রখ্যাত সাংবাদিকদের দ্বারা ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রের মাধ্যমে।[১] প্রত্যেক জাতীয় উয়েফা এ্যাসোসিয়েশন থেকে প্রখ্যাত কিছু সাংবাদিকদের দাঁড় করান হয় ভোটিং এর জন্য।[১১]
পুরস্কারের ইতিহাস
[সম্পাদনা]জয়ী
[সম্পাদনা]| বছর | খেলোয়াড় | ক্লাব |
|---|---|---|
| ২০১০-২০১১ |  লিওনেল মেসি
|
 বার্সেলোনা
|
| ২০১১-২০১২ | আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা
|
বার্সেলোনা
|
| ২০১২-২০১৩ |  ফ্রাঙ্ক রিবেরি
|
 বায়ার্ন মিউনিখ
|
| ২০১৩-২০১৪ |  ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো
|
রিয়াল মাদ্রিদ
|
| ২০১৪-২০১৫ | লিওনেল মেসি
|
বার্সেলোনা
|
| ২০১৫-২০১৬ | ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো
|
রিয়াল মাদ্রিদ
|
| উয়েফা মেন্স প্লেয়ার অব দি ইয়ার পুরস্কার | ||
| ২০১৬-২০১৭ | ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো
|
রিয়াল মাদ্রিদ
|
| ২০১৭-২০১৮ |  লুকা মদ্রিচ
|
রিয়াল মাদ্রিদ
|
ফাইনালিস্ট
[সম্পাদনা]জয়ী নির্বাচিত
২০১০-২০১১
[সম্পাদনা]| র্যাঙ্ক | খেলোয়াড় | প্রথম রাউন্ড | ফাইনাল রাউন্ড | দল |
|---|---|---|---|---|
| ১ | লিওনেল মেসি
|
– | ৩৯ | বার্সেলোনা
|
| ২ | জাভি হার্নান্দেজ
|
– | ১১ | বার্সেলোনা
|
| ৩ | ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো
|
– | ৩ | রিয়াল মাদ্রিদ
|
| ৪ | আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা
|
৩৩ | – | বার্সেলোনা
|
| ৫ |  রাদেমাল ফ্যালকাও
|
১৭ | – | পোর্তো
|
| ৬ |  ওয়েইন রুনি
|
১৫ | – | ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
|
| ৭ |  নেমানজা ভিডিচ
|
৫ | – | ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
|
| ৮ |  জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ
|
৪ | – |  মিলান
|
| ৯ | হেরার্দ পিকে
|
৪ | – | বার্সেলোনা
|
| ১০ | ম্যানুএল নয়ার
|
৩ | – | শালকে ০৪
|
২০১১-২০১২
[সম্পাদনা]| র্যাঙ্ক | খেলোয়াড় | প্রথম রাউন্ড | ফাইনাল রাউন্ড | দল |
|---|---|---|---|---|
| ১ | আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা
|
– | ১৯ | বার্সেলোনা
|
| ২ | লিওনেল মেসি
|
– | ১৭ | বার্সেলোনা
|
| ৩ | ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো
|
– | ১৭ | রিয়াল মাদ্রিদ
|
| ৪ | আন্দ্রেয়া পিরলো
|
৯০ | – | জুভেন্টাস
|
| ৫ | জাভি হার্নান্দেজ
|
৫৭ | – | বার্সেলোনা
|
| ৬ | ইকার ক্যাসিয়াস
|
৫৩ | – | রিয়াল মাদ্রিদ
|
| ৭ |  দিদিয়ের দ্রগবা
|
৩১ | – | চেলসি
|
| ৮ |  পিটার চেক
|
১৪ | – | চেলসি
|
| ৯ | রাদেমাল ফ্যালকাও
|
১৪ | – | আতলেতিকো মাদ্রিদ
|
| ১০ | মেসুত ওজিল
|
১০ | – | রিয়াল মাদ্রিদ
|
২০১২-২০১৩
[সম্পাদনা]| র্যাঙ্ক | খেলোয়াড় | প্রথম রাউন্ড | ফাইনাল রাউন্ড | দল |
|---|---|---|---|---|
| ১ | ফ্রাঙ্ক রিবেরি
|
– | ৩৬ | বায়ার্ন মিউনিখ
|
| ২ | লিওনেল মেসি
|
– | ১৪ | বার্সেলোনা
|
| ৩ | ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো
|
– | ৩ | রিয়াল মাদ্রিদ
|
| ৪ |  আরিয়েন রোবেন
|
৫৭ | – | বায়ার্ন মিউনিখ
|
| ৫ |  রবের্ত লেওয়ানদস্কি
|
৩৯ | – | বরুসিয়া ডর্টমুন্ড
|
| ৬ | টমাস মুলার
|
৩৮ | – | বায়ার্ন মিউনিখ
|
| ৭ | বাস্তিয়ান শোয়েনস্টেইগার
|
৩২ | – | বায়ার্ন মিউনিখ
|
| ৮ |  গ্যারেথ বেল
|
২৪ | – | টটেনহ্যাম
|
| ৯ | জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ
|
১৪ | – | পারি সাঁ-জের্মাঁ
|
| ১০ | রবিন ভ্যান পার্সি
|
১০ | – | ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
|
একাধিকবার বিজয়
[সম্পাদনা]- ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো - ৩ বার (২০১৪, ২০১৬, ২০১৭)
- লিওনেল মেসি - ২ বার (২০১১, ২০১৫)
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "UEFA Best Player in Europe Award launched"। UEFA। ১৮ জুলাই ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১১।
- ↑ ক খ Landolina, Salvatore (১৮ জুলাই ২০১১)। "Uefa Launches Best Player In Europe Award"। Goal.com। ৩০ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১১।
- ↑ "UEFA announces new award"। ESPNSoccernet। ১৮ জুলাই ২০১১। ২৬ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১১।
- ↑ "UEFA announces Shortlist for UEFA Best Player in Europe"। UEFA। ২৬ জুলাই ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১১।
- ↑ "Messi wins UEFA Best Player in Europe Award"। UEFA। ২৫ আগস্ট ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১১।
- ↑ "Iniesta, Messi, Ronaldo up for Best Player Award"। UEFA। ১৪ আগস্ট ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৯ আগস্ট ২০১২।
- ↑ "Iniesta wins Best Player in Europe Award"। UEFA। ৩০ আগস্ট ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১৩।
- ↑ Matar, Daniella (২৯ আগস্ট ২০১৩)। "Ribery wins UEFA Best Player in Europe award"। Miami Herald। Associated Press। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৩।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Franck Ribéry wins UEFA Best Player in Europe Award 2012/13"। UEFA.com। ২৯ আগস্ট ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০১৩।
- ↑ UEFA Media Services (২২ আগস্ট ২০১৩)। "UEFA launches Best Women's Player in Europe Award"। UEFA। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৩।
- ↑ "The voting panel"। ১৪ আগস্ট ২০১২।