ঈশানগোপালপুর গণহত্যা

স্থানাঙ্ক: ২৩°৩৮′১০″ উত্তর ৮৯°৪৬′৪৪″ পূর্ব / ২৩.৬৩৬° উত্তর ৮৯.৭৭৯° পূর্ব / 23.636; 89.779
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(ঈশান গোপালপুর গণহত্যা থেকে পুনর্নির্দেশিত)
ঈশানগোপালপুর গণহত্যা
ঈশানগোপালপুর গণহত্যা বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
ঈশানগোপালপুর গণহত্যা
স্থানঈশানগোপালপুর, ফরিদপুর, পূর্ব পাকিস্তান
স্থানাংক২৩°৩৮′১০″ উত্তর ৮৯°৪৬′৪৪″ পূর্ব / ২৩.৬৩৬° উত্তর ৮৯.৭৭৯° পূর্ব / 23.636; 89.779
তারিখ২ মে ১৯৭১ (ইউটিসি+৬:০০)
লক্ষ্যবাঙালি হিন্দু
ব্যবহৃত অস্ত্রহালকা মেশিনগান, সেমি-অটোমেটিক রাইফেল
নিহত২৮
হামলাকারী দলপাকিস্তান সেনাবাহিনী, রাজাকার

ঈশানগোপালপুর গণহত্যা হলো ১৯৭১ সালের ২ মে ফরিদপুর জেলার অদূরবর্তী ঈশানগোপালপুর গ্রামে বাঙালি হিন্দুদের ওপর সংঘটিত একটি গণহত্যা।[১][২] পাকিস্তান সেনাবাহিনী ২৮ বাঙালি হিন্দুকে গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে হত্যা করে।

প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে অপারেশন সার্চলাইট শুরু করে। তারা মূলত পূর্ব পাকিস্তানের হিন্দু সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার লক্ষ্য নেয়। কয়েক সপ্তাহ পর, তারা ফরিদপুর জেলায় প্রবেশ করে এবং সেনাছাউনি স্থাপন করে। এর মধ্যেই স্থানীয় গ্রামবাসীরা পলায়ন করতে থাকে। ফরিদপুরের প্রায় ৬০ জন বাঙালি হিন্দু শহর থেকে ছয়-সাত কিলোমিটার দূরে ঈশানগোপালপুরে আশ্রয় নেয়। গ্রামে প্রয়াত হিন্দু জমিদার ঈশানশঙ্কর সরকারের বাড়ি ছিল। তার নাতি লক্ষ্মণ সেন সেই সময় বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। ২১ এপ্রিল তারিখে ন্যাপ নেতা চিত্তরঞ্জন ঘোষ, তার বড় ভাই জগদীশচন্দ্র ঘোষ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তি তার বাড়িতে আশ্রয় নেন।[১] তাদের মধ্যে কেউ কেউ পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ শুরু করেছিলেন।

হত্যাকাণ্ড[সম্পাদনা]

২রা মে স্থানীয় সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তানি বাহিনী গ্রামের দিকে চলে আসে। তারা লক্ষ্মী দাসের হাট নামক স্থানে তাদের যান থামিয়ে ঈশানশঙ্করের বাড়ির দিকে অগ্রসর হয়। গ্রামবাসীরা পলায়নে উদ্যত হলে সেনাবাহিনী তাদের ওপর গুলি চালায়। বাড়ির বাসিন্দাদের ২৯ জনকে আটক করে স্থানীয় ছোট একটি জলাধারের নিকট নিয়ে যাওয়া হয়।[৩] ধৃতদের প্রহার ও বেয়নেট দিয়ে অত্যাচার করার পর পুরুষ সদস্যদের স্ত্রী ও সন্তানের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়।[১] স্থানটি ত্যাগের পূর্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনী উর্দুতে হুমকি দেয় যে কোনো মুক্তিযোদ্ধা কিংবা হিন্দুদের ছেড়ে দেওয়া হবে না।[২] কেবল একজন ব্যক্তি বুলেটের ক্ষত নিয়ে বেঁঁচে যায়।[৩] মৃতদেহগুলোকে পুকুরের পাশে সমাধিস্থ করা হয়।[১]

ফলাফল[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বধ্যভূমিটি আগের মতোই পরিত্যক্ত হয়ে থাকে। ২০১০ সালে গণহত্যার শিকার ব্যক্তিদের স্বজনেরা গণহত্যার স্থানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে।[২] ২রা মে তারিখে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ করা হয় এবং তাদের বিদেহী আত্মার কল্যাণের জন্য গীতা পাঠ করা হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Khan, Abu Saeed (২০১৩)। মুক্তিযুদ্ধে ফরিদপুর। Dhaka: Sahitya Bikash। পৃষ্ঠা 151। আইএসবিএন 9848320857 
  2. "28 innocent people were killed by Pak army on May 2 in Faridpur"। Bangladesh Sangbad Sangstha। ২ মে ২০১৪। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  3. "ফরিদপুর গণহত্যা দিবস আজ"Jai Jai Din। Location। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৪