বিষয়বস্তুতে চলুন

ইসলামোফ্যাসিবাদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ইসলামোফ্যাসিবাদ হলো ফ্যাসিবাদইসলামবাদ বা ইসলামি মৌলবাদ শব্দের সংমিশ্রণ,[][] যা কর্তৃত্ববাদ ও সহিংস চরমপন্থার মাধ্যমে একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে এবং আক্রমণাত্মক জিহাদ প্রচারের সমর্থক।[] উদাহরণস্বরূপ কুতুববাদকে ইসলামোফ্যাসিবাদী ও ইসলামি সন্ত্রাসবাদী মতাদর্শ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।[]

মুসলিম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে ফ্যাসিবাদের সম্পর্ক ১৯৩৩ সালের শুরুতেই গড়ে উঠতে শুরু করে। কিছু ক্ষেত্রে ফ্যাসিবাদ শব্দটি পাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলন,[] মিশরে গামাল আবদেল নাসেরের আরব জাতীয়তাবাদ,[] ক্ষমতায় টিকে থাকতে আরব একনায়কতন্ত্রগুলোর ধর্মীয় ব্যবহার,[] এবং ইয়ং ইজিপ্ট পার্টির মতো (যা ইতালীয় ফ্যাসিবাদ দ্বারা অনুপ্রাণিত একটি ফ্যাসিবাদী যুগের দল) বিভিন্ন ঘটনা ব্যাখ্যা করতে ব্যবহৃত হয়েছে।[] ইসলামোফ্যাসিবাদ শব্দটির উদ্ভাবন বিভিন্ন সূত্রে খালিদ দুরান, লুলু শোয়ার্জ ও ক্রিস্টোফার হিচেন্সের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।[] ১৯৯০-এর দশক থেকে কিছু গবেষক রুহুল্লাহ খোমেইনীওসামা বিন লাদেনের মতো ব্যক্তিদের সহিংস ইসলামপন্থী আন্দোলনকে ফ্যাসিবাদী প্রভাবের উদাহরণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। ৯/১১ হামলার পর এ ধারণাটি সর্বোচ্চ আলোচনায় পৌঁছায়,[] তবে ২০১৮ সালের মধ্যে এটি নীতিনির্ধারক ও একাডেমিক মহলে প্রায় অপ্রচলিত হয়ে যায়।[]

ইসলামোফ্যাসিবাদ শব্দটি ইসলাম ও ফ্যাসিবাদের পার্থক্য বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত হলেও এটি সমালোচিত হয়েছে, কারণ এর মাধ্যমে ইসলাম ধর্মকে সহিংস মতাদর্শের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে (অর্থাৎ, একে ইসলামের নাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়)।[১০][১১] তবে, কিছু ক্ষেত্রে এটি ইসলামের প্রচলিত রূপের সঙ্গে ইসলামি চরমপন্থী সহিংসতাকে আলাদা করার একটি উপায় হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে (অর্থাৎ, ইসলামবাদের একটি রূপ হিসেবে)।[১২] ২০০৮ সালের এপ্রিলে বুশ প্রশাসনের অধীনে পরিচালিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল কাউন্টারটেররিজম সেন্টারের অধীনে এক্সট্রিমিস্ট মেসেজিং ব্রাঞ্চ একটি পরামর্শ জারি করে। এতে তারা মার্কিন ফেডারেল সরকারের বিভিন্ন শাখাকে ইসলামোফ্যাসিবাদ সহ কিছু নির্দিষ্ট শব্দের ব্যবহার এড়িয়ে চলতে বলে। কারণ এটি মার্কিন প্রশাসনের টার্গেট করা মুসলিম জনগোষ্ঠীর অনেকের কাছে আপত্তিকর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিল।[১৩]

আরো দেখুন

[সম্পাদনা]

উদ্ধৃতি

[সম্পাদনা]
  1. Zuckerman 2012, পৃ. 353.
  2. Falk 2008, পৃ. 122.
  3. Eikmeier, Dale C. (Spring ২০০৭)। "Qutbism: An Ideology of Islamic-Fascism" (PDF)The US Army War College Quarterly: ParametersCarlisle, Pennsylvania: Army War College Foundation Press37 (1): 84–97। আইএসএসএন 0031-1723ডিওআই:10.55540/0031-1723.2340। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ 
  4. Görlach 2011, পৃ. 151.
  5. Ashton, Nigel J. (২০১৩-০২-১৪)। Freedman, Lawrence; Michaels, Jeffrey, সম্পাদকগণ। Hitler on the Nile?: British and American perceptions of the Nasser regime, 1952-70। London, UK: Bloomsbury Academic। আইএসবিএন 978-1-4411-9165-6। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১০ 
  6. Hitchens 2007
  7. "Fascism in Interwar Egypt: Islam, Nationalism and Political Modernization"isnblog.ethz.ch/। ২ নভেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ 
  8. Falk 2008, পৃ. 123
  9. Bar-on, Tamir (১৭ অক্টোবর ২০১৮)। "Islamofascism: Four Competing Discourses on the Islamism-Fascism Comparison"Fascism7 (2): 241–274। ডিওআই:10.1163/22116257-00702005অবাধে প্রবেশযোগ্য। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ 
  10. Ruthven 2002, পৃ. 207–8.
  11. Ruthven 2012, পৃ. x
  12. Safire 2006
  13. Associated Press 2008

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]