ইসলামে মৃত্যুদণ্ড
ফিকহ (ইসলামি আইনশাস্ত্র) |
---|
এর একটি ধারাবাহিক অংশ |
![]() |
ইসলামিক স্টাডিজ |
ইসলাম ও অন্যান্য ধর্ম |
---|
![]() |
ইব্রাহিমীয় ধর্ম |
অন্যান্য ধর্ম |
ইসলাম এবং... |
ইসলামে মৃত্যুদণ্ড ঐতিহ্যগতভাবে ইসলামী আইন (শরীয়াহ) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, যা কুরআন, হাদিসের সংকলন এবং সুন্নাহ (ইসলামী নবী মুহাম্মদের জীবদ্দশায় তাঁর বাণী ও জীবনযাত্রার বিবরণ) থেকে উদ্ভূত।[১] শরীয়াহ আইন অনুযায়ী যেসব অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড হতে পারে তার মধ্যে কয়েকটি হলো: খুন, ধর্ষণ, ব্যভিচার, সমকামিতা,[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ইত্যাদি।[২][৩] বহু মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে মৃত্যুদণ্ডের প্রচলন রয়েছে; সেখানে ধর্ম ত্যাগ, ব্যভিচার, জাদুবিদ্যা, হত্যা, ধর্ষণ এবং পর্নোগ্রাফি প্রকাশের মতো অপরাধের ক্ষেত্রে শরীয়াহ-ভিত্তিক শাস্তি হিসেবে এর প্রয়োগ দেখা যায়।[৪]
প্রাণদণ্ডযোগ্য অপরাধ ও শাস্তি
[সম্পাদনা]হাদিস এবং কুরআন উভয়ই এমন কিছু নির্দিষ্ট অপরাধের কথা উল্লেখ করে যেগুলোর জন্য মৃত্যুদণ্ড একটি বৈধ শাস্তি। সুন্নি ফিকহের (ইসলামী আইনশাস্ত্র) চারটি প্রধান মাযহাব এবং শিয়া ফিকহের দুটি প্রধান মাযহাবে, কিছু বিশেষ ধরণের অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড বাধ্যতামূলক।
কিসাস
[সম্পাদনা]কিসাস হলো শরীয়া আইনে শাস্তি প্রদানের এমন একটি শ্রেণী যেখানে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত উভয় প্রকার হত্যার জন্যই মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।[৫] মৃত্যুর ঘটনায়, শরীয়া মোতাবেক, আদালতের সম্মতি সাপেক্ষে, নিহত ব্যক্তির নিকটাত্মীয় অথবা ওয়ালী (ولي) হত্যাকারীর প্রাণদণ্ড কার্যকর করার অধিকার প্রাপ্ত হন।[৬][৭] হুদুদ হলো এমন অপরাধ যা আল্লাহর বিরুদ্ধে এবং শরীয়া আইনে সবচেয়ে গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য। কুরআনে এই অপরাধগুলোর শাস্তির বিধান দেওয়া আছে। দস্যুতা ও ব্যভিচার এই হুদুদ অপরাধের অন্তর্ভুক্ত:
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায় তাদের শাস্তি কেবল এটাই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে বা ক্রুশবিদ্ধ করা হবে বা বিপরীত দিক থেকে তাদের হাত ও পা কেটে ফেলা হবে বা তাদেরকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে। দুনিয়ায় এটাই তাদের লাঞ্ছনা ও আখেরাতে তাদের জন্য মহাশাস্তি রয়েছে। তবে তারা ছাড়া, যারা তোমাদের আয়ত্তে আসার আগেই তওবা করবে। সুতরাং জেনে রাখ যে, আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
— সূরা মায়িদাহ, আয়াত: ৩৩-৩৪[৮]
দিয়্যা (রক্তপণ/ক্ষতিপূরণ) একটি বিতর্কিত বিষয়, বিশেষ করে যখন এটি হত্যার মতো অপরাধের বিচার এড়ানোর জন্য পরিশোধ করা হয়। এই ব্যবস্থায়, যেখানে দরিদ্র অপরাধীরা বিচারের মুখোমুখি হয় ও শাস্তি পায়, সেখানে ধনীরা কিসাসের (প্রতিশোধ) বদলে ক্ষতিপূরণ দিয়ে আইনি ঝামেলা এড়িয়ে যায়। ২০১২ সালের শাহজেব খান হত্যাকাণ্ড এই সমস্যাটিকে পাকিস্তানে বিশেষভাবে আলোড়িত করে।[৯]
হুদুদ
[সম্পাদনা]কিছু হুদুদ অপরাধ আল্লাহর বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় এবং এর জন্য জনসমক্ষে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।[১০] এর মধ্যে রয়েছে ধর্মত্যাগ (ইসলাম ত্যাগ করে নাস্তিক হওয়া বা অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়া),[১১] ফাসাদ (জমিনে বিশৃঙ্খলা বা আল্লাহর বিরুদ্ধে নৈতিক অবক্ষয়, সামাজিক অস্থিরতা এবং মুসলিম রাষ্ট্রের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি)[১২][১৩] এবং যিনা (ইসলাম দ্বারা অনুমোদিত নয় এমন সম্মতিপূর্ণ বিপরীতলিঙ্গ বা সমকামী সম্পর্ক, বিশেষভাবে বিবাহের পূর্বে বা বিবাহ বহির্ভূত)।
মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধের তালিকা
[সম্পাদনা]- খুন
- বিবাহিত ব্যক্তিদের ব্যভিচার
- ধর্মত্যাগ
- গুপ্তচরবৃত্তি
- ডাকাতি
- জাদুবিদ্যা
- সমকামিতা[১৪]
- নারী অপহরণ
- ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ
- ধর্ষণ
আধুনিক প্রয়োগ
[সম্পাদনা]বিশ্বের অধিকাংশ মৃত্যুদণ্ড মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে সংঘটিত হয়। ২০২০ সালে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিবেদনে দেখা যায় যে নথিভুক্ত মৃত্যুদণ্ডের ৮৮ শতাংশই ইরান, মিশর, ইরাক অথবা সৌদি আরবে হয়েছে। তবে, 'নথিভুক্ত মৃত্যুদণ্ড'-এর মধ্যে চীনের তথ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যেখানে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা গোপনীয় তথ্য হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ।[১৫] সুন্নি অধ্যুষিত সৌদি আরব ও পাকিস্তান এবং শিয়া অধ্যুষিত ইরানসহ কয়েকটি ইসলামী রাষ্ট্রে, হুদুদ ও কিসাস উভয় প্রকার মৃত্যুদণ্ডই আইন ব্যবস্থার অংশ এবং তা প্রচলিত। অন্যান্য দেশে, মৃত্যুদণ্ডের প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভিন্নতা দেখা যায়।
বেশ কয়েকটি মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ কয়েক দশক ধরে কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেনি, যদিও সেখানে এখনও মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হতে পারে। আলজেরিয়া ও তিউনিসিয়ার নেতারা, যারা ১৯৯০-এর দশকের শুরু থেকে কোনো অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেননি, সম্প্রতি মৃত্যুদণ্ডে ফিরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।[১৬][১৭]
কার্যপদ্ধতি
[সম্পাদনা]শরীয়া আইনের অধীনে জনসমক্ষে পাথর ছুঁড়ে হত্যা ও শিরশ্ছেদ একটি বিতর্কিত বিষয়, কারণ একে মৃত্যুদণ্ডের এক নির্মম রূপ হিসেবে দাবি করা হয়।[১৮][১৯] বর্তমানে মৃত্যুদণ্ডের এই পদ্ধতিগুলো সৌদি আরব, ইয়েমেন, কাতার, ইরান এবং মৌরিতানিয়ার আইনে বলবৎ আছে। তবে বহু বছর ধরে পাথর ছুঁড়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি।[২০][২১]
পাথর নিক্ষেপ সম্পর্কিত উদ্ধৃতিগুলো নিম্নলিখিত কুরআন ও হাদিসগুলোতে দেখা যায়। কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী; তাদের প্রত্যেককে তোমরা একশ করে বেত্রাঘাত করবে। আল্লাহর বিধান কার্যকরী করণে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে প্রভাবিত করতে না পারে যদি তোমরা আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালে বিশ্বাসী হয়ে থাকো এবং মুমিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে”।
উবাদা ইবনে সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
"আমার কাছ থেকে গ্রহণ করো, আমার কাছ থেকে গ্রহণ করো (অর্থাৎ আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনো)। আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য একটি ব্যবস্থা দিয়েছেন তথা বিধান অবতীর্ণ করেছেন। যখন কোনো অবিবাহিত পুরুষ কোনো অবিবাহিত নারীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, তখন তারা একশত বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য নির্বাসন ভোগ করবে। আর যদি কোনো বিবাহিত পুরুষ কোনো বিবাহিত নারীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, তবে তারা একশত বেত্রাঘাত এবং পাথর নিক্ষেপে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত হবে।"
ইসলামে শিরচ্ছেদ
[সম্পাদনা]প্রাক-আধুনিক ইসলামী আইনে শিরশ্ছেদ একটি বহুল প্রচলিত শাস্তির বিধান ছিল। বিংশ শতাব্দীতেও ইসলামী ও অ-ইসলামী উভয় দেশেই শাস্তি হিসেবে এর ব্যবহার অব্যাহত ছিল।[২৩][২৪] যখন সঠিকভাবে করা হত, তখন একে এক সময় মানবিক ও সম্মানজনক মৃত্যুদণ্ড পদ্ধতি হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
তবে, বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে অধিকাংশ দেশেই এর ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়। সৌদি আরব, কাতার ও ইয়েমেনে শিরশ্ছেদ একটি আইনসিদ্ধ মৃত্যুদণ্ড প্রক্রিয়া। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০০১ সালে ইরানেও এর ব্যবহার ছিল, কিন্তু বর্তমানে সেখানে এর প্রচলন নেই।[২৫]
ইসলামী পবিত্র গ্রন্থে
[সম্পাদনা]কুরআনে শিরশ্ছেদের বিষয়ে আলোচনা আছে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। একটি বিশেষ সূরা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে শিরশ্ছেদের ন্যায্যতা প্রমাণে ব্যবহার করা হয়:
অতএব যখন তোমরা কাফিরদের সাথে যুদ্ধে মুকাবিলা কর তখন ঘাড়ে আঘাত কর, অবশেষে যখন তোমরা তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পর্যুদস্ত করবে তখন তাদেরকে মজবুতভাবে বাঁধ ; তারপর হয় অনুকম্পা, নয় মুক্তিপণ। যতক্ষণ না যুদ্ধ এর ভার (অস্ত্র) নামিয়ে না ফেলে। এরূপই, আর আল্লাহ ইচ্ছে করলে তাদের থেকে প্ৰতিশোধ নিতে পারতেন, কিন্তু তিনি চান তোমাদের একজনকে অন্যের দ্বারা পরীক্ষা করতে। আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তিনি কখনো তাদের আমলসমূহ বিনষ্ট হতে দেন না।
— সূরা মুহাম্মদ, আয়াত ৪৭:৪[২৬]
ফখরুদ্দীন আল রাযি কুরআনের ৮:১২ আয়াতের শেষ অংশের ব্যাখ্যায় বলেছেন যে শত্রুদের উপর তাদের শরীরের যেকোনো অংশে, মাথা থেকে পা পর্যন্ত, যেকোনো উপায়ে আঘাত করা যায়।[২৭] আল-কুরতুবি "ঘাড়ে আঘাত" এর উল্লেখটিকে যুদ্ধের গুরুত্ব ও তীব্রতা প্রকাশক হিসেবে মনে করেন।[২৮] আল-কুরতুবি, আল-তাবারি এবং ইবনে কাসিরের মতে, এই অভিব্যক্তিটি কাজের সংক্ষিপ্ততা নির্দেশ করে, কারণ এটি কেবল যুদ্ধের মধ্যেই সীমাবদ্ধ এবং এটি কোনো অবিরাম আদেশ নয়।[২৮]
কিছু ভাষ্যকার এমন ধারণা দেন যে সন্ত্রাসীরা এই সূরাগুলির বিকল্প ব্যাখ্যা ব্যবহার করে বন্দীদের শিরশ্ছেদ করাকে ন্যায্যতা দেয়, তবে পণ্ডিতদের মধ্যে এই বিষয়ে ঐক্যমত রয়েছে যে এগুলোর একটি ভিন্ন অর্থ আছে।[২৯] অধিকন্তু, র্যাচেল স্যালুমের ভাষ্য অনুযায়ী, সূরা ৪৭:৪ যুদ্ধকালে শত্রুদের প্রতি উদারতা অথবা মুক্তিপণ প্রদানের কথা বলে এবং এটি এমন এক সময়ের প্রতি ইঙ্গিত করে যখন মুসলমানরা নিপীড়িত ছিল এবং নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য যুদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল।[২৯]
ইসলামী আইনে শিরশ্ছেদ
[সম্পাদনা]ধ্রুপদী ইসলামী আইনে শিরশ্ছেদ ছিল মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের স্বাভাবিক পদ্ধতি।[৩০] উসমানীয় সাম্রাজ্যেও, ফাঁসির পাশাপাশি, এটি ছিল মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অন্যতম সাধারণ পদ্ধতি।[৩১]
বর্তমানে, সৌদি আরব বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে তাদের ইসলামী আইন ব্যবস্থায় শিরশ্ছেদের প্রচলন রয়েছে।[৩২][৩৩] সৌদি আরবের ওয়াহাবি সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অধিকাংশ মৃত্যুদণ্ডই জনসাধারণের সামনে শিরশ্ছেদের মাধ্যমে কার্যকর করা হয়, যা সাধারণত ব্যাপক জনসমাগম সৃষ্টি করে, কিন্তু এর ছবি তোলা বা ভিডিও ধারণ করা নিষিদ্ধ।[৩৪]
অ্যামনেস্টির মতে, ইরান ২০০১ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শিরশ্ছেদ কার্যকর করে,[৩২][৩৫][৩৬] কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে এটি আর ব্যবহার করা হয় না।[৩৫] কাতার ও ইয়েমেনেও এটি একটি বৈধ মৃত্যুদণ্ড, কিন্তু দেশগুলোতে এই শাস্তি স্থগিত করা হয়।[৩২][৩৭]
ঐতিহাসিক ঘটনাবলী
[সম্পাদনা]- ৬২৭ খ্রিষ্টাব্দে, মুহাম্মদের অনুসারীরা বনু কুরাইজা নামক ইহুদি গোত্রের সাথে সম্পাদিত একটি চুক্তি লঙ্ঘিত হওয়ায়, গোত্রের পুরুষ সদস্যদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। এই ঘটনায় কয়েকশত পুরুষ নিহত হয়।[৩৮]
- হিত্তিনের যুদ্ধের (১১৮৭) পর, সালাহুদ্দিন আইয়ুবি স্বহস্তে রেনাল্ড ডি অব চ্যাটিলনের শিরশ্ছেদ করেন; যিনি ছিলেন দ্বিতীয় ক্রুসেডের একজন খ্রিস্টান নাইট এবং ইসলাম ধর্মের পবিত্রতম দুটি শহরের বিরুদ্ধে আক্রমণের ষড়যন্ত্রকারী।[৩৯]
- ১৪৮০ খ্রিষ্টাব্দে উসমানীয় সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনী ইতালির ওত্রান্তো শহর ও তার দুর্গ অবরোধ করে। প্রচলিত বর্ণনা অনুসারে, শহরটি দখলের পর, ৮০০ জনেরও বেশি অধিবাসী যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান এবং তাদের শিরশ্ছেদ করা হয়। তারা "ওত্রান্তোর শহীদ" হিসেবে পরিচিত।[৪০] আধুনিক পণ্ডিতগণ এই বিবরণের ঐতিহাসিকতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন।[৪১]
- মোহাম্মদ আহমাদ ১৮৮০ সালে নিজেকে মাহদী হিসেবে ঘোষণা করেন এবং উসমানীয় সাম্রাজ্য এবং তাদের ব্রিটিশ মিত্রশক্তির বিরুদ্ধে জিহাদের নেতৃত্ব দেন। তিনি ও তাঁর অনুসারীরা তাঁদের প্রতিপক্ষদের, খ্রিস্টান ও মুসলমান নির্বিশেষে, শিরশ্ছেদ করতেন; এমনকি ব্রিটিশ জেনারেল চার্লস গর্ডনও তাঁদের হাতে নিহত হন।[৪২]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Samuel M. Zwemer, The law of Apostasy, The Muslim World. Volume 14, Issue 4, pp. 373-391
- ↑ "Archived copy"। ২১ জুলাই ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০২২।
- ↑ "BBC - Religions - Islam: Capital punishment"। www.bbc.co.uk (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১২-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-০৪।
- ↑ Asif, Naima (২৬ জানুয়ারি ২০২১)। "An introduction to sharia law and the death penalty"। law.ox.ac.uk। ২৫ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ Mohamed El-Awa (1993), Punishment in Islamic Law, American Trust Publications, আইএসবিএন ৯৭৮-০৮৯২৫৯১৪২৮
- ↑ Encyclopædia Britannica, Qisas ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৫-০২-০৫ তারিখে (2012)
- ↑ Shahid M. Shahidullah, Comparative Criminal Justice Systems: Global and Local Perspectives, আইএসবিএন ৯৭৮-১৪৪৯৬০৪২৫৭, pp. 370-377
- ↑ কুরআন & 34 ৫:৩৩ & ৩৪
- ↑ "Qisas being used by the wealthy to avoid trial: CJ" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৫-০৪-০৮ তারিখে. The Express Tribune (Pakistan), 3 October 2013 (concerning the murder of Shahzeb Khan).
- ↑ Mohamed El-Awa (1993), Punishment in Islamic Law, American Trust Publications, আইএসবিএন ৯৭৮-০৮৯২৫৯১৪২৮, pp 1-68
- ↑ David Forte, Islam's Trajectory ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৪-০৯-০৩ তারিখে, Revue des Sciences Politiques, No. 29 (2011), pages 92-101
- ↑ Oliver Leaman (2013), Controversies in Contemporary Islam, Routledge, আইএসবিএন ৯৭৮-০৪১৫৬৭৬১৩৭, Chapter 9
- ↑ Marion Katz (2006), Corruption of the Times and the Mutability of the Shari'a, The. Cardozo Law Review, 28:171-188
- ↑ "11 countries where LGBTQ+ people still face death penalty"। ১৭ মে ২০২৩। ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০২৫।
- ↑ "Mideast states made 'chilling' use of executions amid pandemic: Amnesty"। france24.com। ২১ এপ্রিল ২০২১। ২৫ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ Cordall, Simon (অক্টোবর ২০২০)। "Tunisia president calls for return of death penalty following brutal killing"। theguardian.com। ২৫ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "Algeria considers death penalty for child abductors"। www.middleeastmonitor.com। ১৩ নভেম্বর ২০২০। ২৫ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ Ebbe, O. N., & Odo, I. (2013), The Islamic Criminal Justice System, in Comparative and International Criminal Justice Systems: Policing, Judiciary, and Corrections, CRC Press, আইএসবিএন ৯৭৮-১৪৬৬৫৬০৩৩৮, Chapter 16
- ↑ Jon Weinberg (2008), Sword of Justice? Beheadings Rise in Saudi Arabia, Harvard International Review, 29(4):15
- ↑ R Terman (2007), The Stop Stoning Forever Campaign: A Report ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৫-০৪-০৩ তারিখে WLUM Laws
- ↑ Javaid Rehman & Eleni Polymenopoulou (2013), Is Green part of the rainbow - Sharia, Homosexuality, and LGBT Rights in the Muslim World, Fordham Int'l Law Journal, 37:1-501
- ↑ "সূরা নূর, আয়াত: ২"। quran.com। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২৫।
- ↑ Cliff Roberson, Dilip K. Das (২০০৮)। An Introduction to Comparative Legal Models of Criminal Justice। CRC Press। পৃষ্ঠা 156। আইএসবিএন 9781420065930।
- ↑ Nina Rastogi (ফেব্রুয়ারি ২০, ২০০৯)। "Decapitation and the Muslim World"। Slate। ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ৩০, ২০২২।
- ↑ "Beheading was last used as a method of execution in 2001....beheading is no longer in use." Cornell Center on the Death Penalty Worldwide, Death Penalty Worldwide: Iran ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৯-০৭-২৭ তারিখে
- ↑ "সূরা মুহাম্মদ, আয়াত ৪৭:৪"। corpus.quran.com। ২১ জুন ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২৫।
- ↑ Nasr, Seyyed Hossein; Dagli, Caner K.; Dakake, Maria Massi; Lumbard, Joseph E.B.; Rustom, Mohammed (২০১৫)। The Study Quran: A New Translation and Commentary। HarperCollins (Kindle edition)। পৃষ্ঠা Commentary to 8:12, Loc. 23676–23678।
- ↑ ক খ Nasr, Seyyed Hossein; Dagli, Caner K.; Dakake, Maria Massi; Lumbard, Joseph E.B.; Rustom, Mohammed (২০১৫)। The Study Quran: A New Translation and Commentary। HarperCollins (Kindle edition)। পৃষ্ঠা Commentary to 47:4, Loc. 59632–59635।
- ↑ ক খ Rachel Saloom (2005), "Is Beheading Permissible under Islamic Law – Comparing Terrorist Jihad and the Saudi Arabian Death Penalty", UCLA Journal of International Law and Foreign Affairs, vol. 10, pp. 221–49.
- ↑ Rudolph Peters (২০০৬)। Crime and Punishment in Islamic Law: Theory and Practice from the Sixteenth to the Twenty-First Century
। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 36।
- ↑ Rudolph Peters (২০০৬)। Crime and Punishment in Islamic Law: Theory and Practice from the Sixteenth to the Twenty-First Century
। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 101।
- ↑ ক খ গ Hood, Roger; Hoyle, Carolyn (২০১৫)। The Death Penalty: A Worldwide Perspective। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 178। আইএসবিএন 978-0-19-870173-6।
- ↑ Russell Goldman, "Saudi Arabia's Beheading of a Nanny Followed Strict Procedures" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৯-০৭-১৮ তারিখে, abcnews.com, 11 January 2013.
- ↑ Justine Drennen (জানুয়ারি ২০, ২০১৫)। "Saudi Arabia's Beheadings Are Public, but It Doesn't Want Them Publicized"। Foreign Policy Magazine। জুলাই ২৭, ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ৩০, ২০২২।
- ↑ ক খ "Death Penalty Database: Iran" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৯-০৪-০৭ তারিখে, deathpenaltyworldwide.org, Cornell Law School, accessed 13 June 2016.
- ↑ "Iran / death penalty A state terror policy" (পিডিএফ)। International Federation for Human Rights। ১৬ মার্চ ২০১০। পৃষ্ঠা 38। ১৯ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০১৬।
- ↑ Kronenwetter, Michael (২০০১)। Capital Punishment: A Reference Handbook (ইংরেজি ভাষায়)। ABC-CLIO। আইএসবিএন 9781576074329।
- ↑ Watt, W. Montgomery (২০১২)। "Ḳurayẓa"। P. Bearman; Th. Bianquis; C.E. Bosworth; E. van Donzel; W.P. Heinrichs। Encyclopaedia of Islam (2nd সংস্করণ)। Brill। ডিওআই:10.1163/1573-3912_islam_SIM_4535।
- ↑ Newman, Sharan (২০০৭)। The Real History Behind the Templars। Penguin। পৃষ্ঠা 133। আইএসবিএন 978-0425215333।
- ↑ Bunson, Matthew। "How the 800 Martyrs of Otranto Saved Rome"। Catholic Answers। ১৭ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১২।
- ↑ Nancy Bisaha (২০০৪)। Creating East And West: Renaissance Humanists And the Ottoman Turks। Philadelphia: University of Pennsylvania Press। পৃষ্ঠা 158।
Recently, though, historians have begun to question the veracity of these tales of mass slaughter and martyrdom. Francesco Tateo argues that the earliest contemporary sources do not support the story of the eight hundred martyrs; such tales of religious persecution and conscious self-sacrifice for the Christian faith appeared only two or more decades following the siege. The earliest and most reliable sources describe the execution of eight hundred to one thousand soldiers or citizens and the local bishop, but none mention a conversion as a condition of clemency. Even more telling, neither a contemporary Turkish chronicle nor Italian diplomatic reports mention martyrdom. One would imagine that if such a report were circulating, humanists and preachers would have seized on it. It seems likely that more inhabitants of Otranto were taken out of Italy and sold into slavery than were slaughtered.
- ↑ Byron Farwell, Prisoners of the Mahdi (New York & London: W.W. Norton & Company, 1989), pp. 156-7.