ইসরায়েলে সমকামীদের অধিকার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সমকামী অধিকার : ইসরায়েল
সমকামী অধিকার?১৯৮৮ সাল থেকে সমকামিতা বৈধ (কিন্তু এর আগে সমকামিতাবিরোধী আইনের কোনো প্রয়োগ দেখা যায়নি এবং ১৯৬৩ সালে এ্যাটর্নী জেনারেল বলেন যে সমকামবিরোধী আইন কোনো ব্যক্তির উপরেই প্রয়োগ করা হবেনা)
লিঙ্গ স্বীকৃতিলিঙ্গ পরিবর্তনের অনুমতি আছে
সামরিক চাকরিতেসমকামী কিংবা সমকামিনী সবার ক্ষেত্রেই সামরিক বাহিনীতে যোগদানের অনুমতি আছে
বৈষম্য নিরাপত্তাইসরায়েলের সমাজের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে সমকামীদের মানসিক/শারীরিকভাবে হেয় করা যাবেনা এরকম আইন আছে
পারিবারিক অধিকার
সম্পর্কের স্বীকৃতি১৯৯৪ সাল থেকে সমকামী যুগলদের একত্রবাসের অনুমতি আছে (রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই);
২০০৬ সাল থেকে সম-লিঙ্গের মানুষের মধ্যে বিয়ের বৈধতা দেওয়া আছে তবে সেটা ইসরায়েলে অনুষ্ঠিত হওয়া যাবেনা,
২০১০ সাল থেকে অধার্মিক সমকামী যুগলদের জন্যে বিয়ের অনুমতি
বাঁধা:
ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ছাড়পত্র থাকলে ইসরায়েলে সম-লিঙ্গের বিয়ে অনুষ্ঠিত করা যেতে পারে
সন্তান দত্তকসমকামী যুগলদের বাচ্চা দত্তক নেওয়ার অনুমতি আছে

সমকামিনী, সমকামী, উভকামী, এবং হিজড়া (এলজিবিটি) অধিকারের ক্ষেত্রে ইসরায়েল পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম সেরা।[১] ১৯৮৮ সালে দেশটিতে সমকামিতা আইনগতভাবে বৈধতা পায় তবে ১৯৬৩ সালে উচ্চবিচারালয় সিদ্ধান্ত নেয় যে সডোমী আইন আর কার্যকরী থাকবেনা।[২] ১৯৯৪ সালে সমকামী যুগলদের বিয়ে ছাড়াই একত্রবাসের অনুমতি দেয় ইসরায়েল এবং এশিয়ার মধ্যে এ ধরনের পদক্ষেপের ক্ষেত্রে ইসরায়েলই প্রথম। যদিও সম-লিঙ্গের মানুষের মধ্যে বিয়ের অনুমতি আসে ১২ বছর পর অর্থাৎ ২০০৬ সালে কিন্তু তারপরেও ঐ বিয়ের কার্যক্রম ইসরায়েলের মাটিতে করা যাবেনা বলে হুঁশিয়ারি দেয় ধর্মবাদীরা, এশিয়াতে ইসরায়েল প্রথম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে সমকামী বিবাহের বৈধতা দেওয়ার ক্ষেত্রে। ১৯৯২ সালে সমকামী ব্যক্তিবর্গদেরকে সামাজিক নিরাপত্তা দিয়ে আইন পাশ করা হয়। ২০০৮ সালে সম-লিঙ্গের যুগলদের সন্তান দত্তক নেওয়ার অনুমতি দেয় উচ্চবিচারালয়, এর আগেও সমকামীযুগলরা সন্তান দত্তক নিতে পারত যদিও কোনো আইনগত বৈধতা ছিলোনা আবার কোনো বাঁধাও ছিলোনা। ইসরায়েলী সামরিক বাহিনীতে সমকামীদের যোগদানের অনুমতি আছে (১৯৯৩ সাল থেকে)।

ইসরায়েলের সমাজের অধিকাংশ মানুষ যৌনতার ব্যাপারে খুবই উদার এবং তারা সম-লিঙ্গের মানুষের মধ্যে বিয়ে সমর্থন করে, যদিও সমাজে অনেক উগ্রধর্মবাদী লোকও আছে।[৩] তেল আবিব শহরকে বিশ্বের অধিকাংশ গণমাধ্যম পৃথিবীর অন্যতম সমকামীবান্ধব শহর হিসেবে আখ্যা দেয়,[৪] শহরটি সমকামীদের জন্যে সমুদ্র-সৈকত, নৈশক্লাব এবং প্রকাশ্য নগ্নতার জন্যে বিখ্যাত,[৫] যুক্ত্ররাষ্ট্রের 'আউট' ম্যাগাজিন তেল আবিবকে এশিয়ার সমকামী-রাজধানী সবসময়ই বলে থাকে।[৬] ২০১১ সালে বিভিন্ন দেশের সমকামী পর্যটকরা ইসরায়েল ভ্রমণ করে ইসরায়েলকে সর্বোৎকৃষ্ট সমকামীবান্ধব রাষ্ট্র বলেন,[৭] ২০০৯ সালে ফিলিস্তিনি মুসলিম জঙ্গীরা তেল আবিবের সমকামী নৈশক্লাবে হামলা চালায়,[৮] ঘটনাটির সমালোচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং রাষ্ট্রপতি শিমন পেরেজ। ২০১৪ সালে তেল আবিব শহরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানীতে নাৎসী বাহিনীর হাতে নিহত সমকামীদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ বানানো হয়।[৯]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "The five most improved places for gay tolerance"The Independent। London। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০০৮। 
  2. de:Homosexualität in Israel
  3. "Angus Reid Global"angusreidglobal.com। ২৪ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  4. "The world's most gay-friendly places". Calgary Herald. 29 June 2011.
  5. Grant, Anthony (২ জুলাই ২০১০)। "Dispatch"The New York Times 
  6. James Kirchick. "Was Arafat Gay?". Out. http://www.out.com/entertainment/2007/07/29/was-arafat-gay
  7. "Tel Aviv named 'world's best gay city' for 2011"The Jerusalem Post - JPost.com 
  8. Haaretz Service and News Agencies (১ আগস্ট ২০০৯)। "Two killed in shooting at Tel Aviv gay center"Haaretz.com 
  9. "Tel Aviv unveils first memorial to gay Holocaust victims"BBC News। ১০ জানুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৫