বিষয়বস্তুতে চলুন

ইরানের শিক্ষাব্যবস্থা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
২০০৬ সালে ইরানের জনসংখ্যা ৭ কোটি ছাড়িয়ে যায়। ইরানের মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের বয়স ৩০ বছরের নিচে এবং স্বাক্ষরতার হার ৮২ শতাংশের বেশি।

ইরানের শিক্ষাব্যবস্থা, কিন্ডারগার্ডেন থেকে দ্বাদশ শ্রেণী (কে-১২) এবং উচ্চশিক্ষা, এই দুইভাগে বিভক্ত। কে-১২ শিক্ষা, ইরানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে, অন্যদিকে উচ্চশিক্ষার অংশটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা মন্ত্রণালয়ের অধীনে। সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে, ইরানে প্রাপ্তবয়স্কদরে স্বাক্ষরতার হার ছিল ৯৩ শতাংশ।[] ২০০৮ সালে, এই হার ছিল ৮৫ শতাংশ। ২০০৭ সালে ইরানে দৈহিক পরিশ্রম দিয়ে অর্থ উপার্জন এবং মেধা দিয়ে অর্থ উপার্জন করা মানুষের অনুপাত ছিল ১০.২ শতাংশ।[]

ইরানের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (Dabestân دبستان) ৬ বছরের শিশুদের ভর্তি করানো হয়। এই স্তরে প্রতিটি শিশুকে ছয় বছর পাঠদান করা হয়। প্রথম ৩ বছরের সময়কে বলা হয় মধ্য বিদ্যালয় এবং পরের ৩ বছরকে উচ্চ বিদ্যালয় (Dabirestân دوره دوم دبیرستان)। উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচী তত্ত্বীয়, প্রযুক্তিগতসহ আরো কয়েক ভাগে বিভক্ত। উচ্চ বিদ্যালয়ের স্তরটি আবশ্যিক নয়।[] এর পরের ধাপে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য অবশ্যই একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ডিপ্লোমা থাকতে হবে এবং ইরানি বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় (Konkur کنکور) উত্তীর্ণ হতে হবে। যেটি ফ্রান্সের ব্যাচেলর পরীক্ষার সমতূল্য।

ইরানে উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, চিকিৎসা বিদ্যালয় এবং কমিউনিটি কলেজ রয়েছে। উচ্চশিক্ষার স্তরটি নানান ডিপ্লোমায় বিভক্ত, "ফগ-ই-ডিপ্লম" বা "কারদানি" উচ্চশিক্ষার দুই বছর পর প্রদান করা হয়, "কারশেনাশি" (লাইসেন্স নামেও পরিচিত) চার বছর পর প্রদান করা হয় (ব্যচেলর ডিগ্রি), "কারশেনাসি-ইয়ে এরশাদ" দুই বছর পড়াশোনার পর প্রদান করা হয় (মাস্টার ডিগ্রি)। এরও পরে পিএইচডি করার জন্য শিক্ষার্থীদের আরো একটি পরীক্ষা দিতে হয়।[]

শিক্ষা সংস্কার

[সম্পাদনা]

ইরানের অর্থনীতিতে শিক্ষার ব্যাপারে নানান পদক্ষেপ রয়েছে। বিশেষ করে প্রতিটি স্তরে শিক্ষার উন্নয়ন, পাঠ্যসূচির সংস্কার এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষায় সঠিক বিষয়ে পড়ানোর ব্যবস্থা করা।[]

২০১২ সালের শিক্ষা সংস্কার পরিকল্পনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির পূর্বের বছরকে বাড়িয়ে দুই বছর করা হয়েছে।[] প্রতিটি শিক্ষার্থী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম তিন বছর একই শিক্ষকের অধীনে থাকবে। গণিত এবং মুখস্থ বিদ্যার পরিবর্তে গবেষণা, জ্ঞান আহরণ এবং প্রশ্নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে। নতুন পদ্ধতিতে, শিক্ষক শুধু মাত্র পড়াবেন না, একই সাথে তিনি শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধা ও দিক নির্দেশনাও দেবেন।[]

শিক্ষক প্রশিক্ষণ

[সম্পাদনা]

ইরানে শিক্ষকদের পড়ানোর জন্য বিশেষভাবে শিক্ষাদান করার একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় ফারহাঙ্গিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়। এটি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধীনে।[] শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক স্তরসমূহের শিক্ষকদের শিক্ষা দান করা হয়। এই প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলো শিক্ষকদের চার বছরের জন্য বিএ বা বিএস ডিগ্রি প্রদান করে। প্রতিটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হওয়ার জন্য কমপক্ষে উচ্চ বিদ্যালয়ের ডিপ্লোমা থাকতে হয়, একটি ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে আবেদনকারীরা এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে ভর্তি হতে পারে।

ফারহাঙ্গিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রায় ৯৮টি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "خبرگزاری فارس - 93 درصد جمعیت ایران باسواد هستند"। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৮ 
  2. "L'espace mondial" (পিডিএফ)। ২০১১-০১-১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৪-১১ 
  3. "WEP-Iran"। Wes.org। ২০১২-০২-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-০৭ 
  4. "Iran: Country Brief", Development Progress, World Bank, জুন ২০০৯, ২০০৭-০৫-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১২ 
  5. "PressTV"www.presstv.com। ১০ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৮ 
  6. "PressTV"presstv.com। ৮ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৮ 
  7. "دانشگاه فرهنگیان"। ১৮ জুন ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৮ – Wikipedia-এর মাধ্যমে। 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
বিশেষ প্রতিবেদন
  • Iran, the UNESCO EFA 2000 Assessment: Country Reports
ভিডিও