ইয়েতি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৬৯১
দুর্ঘটনা | |
---|---|
তারিখ | ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ |
সারমর্ম | অবতরণের স্টল, তদন্ত চলছে |
স্থান | নেপালের পোখারার পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে ২৮°১১′৫২″ উত্তর ৮৩°৫৯′০৬″ পূর্ব / ২৮.১৯৭৭৮° উত্তর ৮৩.৯৮৫০০° পূর্ব |
উড়োজাহাজ | |
বিমানের ধরন | এটিআর ৭২-৫০০ |
পরিচালনাকারী | ইয়েতি এয়ারলাইন্স |
আইএটিএ ফ্লাইট নম্বর | YT691 |
আইসিএও ফ্লাইট নম্বর | NYT691 |
কল সাইন | ইয়েতি এয়ারলাইন্স ৬৯১ |
নিবন্ধন | ৯এন-এএনসি |
ফ্লাইট শুরু | ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কাঠমান্ডু, নেপাল |
গন্তব্য | পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পোখারা, নেপাল |
মোট ব্যক্তি | ৭২ |
যাত্রী | ৬৮ |
কর্মী | ৪ |
নিহত | ৭২ (সবাই) |
ইয়েতি এয়ারলাইন্স দ্বারা পরিচালিত একটি এটিআর ৭২-৫০০ উড়োজাহাজ নেপালের পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় সেতি নদীর তীরে ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে বিধ্বস্ত হয়।[১][২][৩] উড়োজাহাজটি ৪ জন ক্রুসহ মোট ৭২ জনকে নিয়ে কাঠমান্ডু থেকে পোখারায় যাওয়ার পথে বিধ্বস্ত হয়ে সবার মৃত্যু হয়েছে।[৪] যাত্রীদের মধ্যে ১৫ জন বিদেশি নাগরিক ছিলেন।[২][৫]
উড়োজাহাজ
[সম্পাদনা]দুর্ঘটনায় কবলে পড়া বিমানটির মডেল ছিল এটিআর ৭২-৫০০, যার সিরিয়াল নম্বর ৭৫৪ এবং নিবন্ধন নম্বর ৯এন–এএনসি। ফ্লাইটরাডার২৪ সাইটের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উড়োজাহাজটি ১৫ বছরের পুরনো ছিল।[৬]
দুর্ঘটনা
[সম্পাদনা]দুর্গম হিমালয়ের দেশ নেপালে আবহাওয়া খুব ঘন ঘন বদলায়। সে কারণে প্রায়ই সেখানে বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। নেপালের মধ্যে পোখারা একটি অন্যতম আকর্ষনীয় পর্যটনস্থল। উড়োজাহাজটি ৬৮ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রুসহ মোট ৭২ জনকে নিয়ে কাঠমান্ডু থেকে পোখারায় যাচ্ছিল। পোখারা বিমানবন্দরে নামার সময় উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ছবি ও ভিডিওতে পাহাড়ি এলাকায় বিমানের জ্বলন্ত ধ্বংসস্তূপের কাছে উদ্ধারকর্মীদের আগুন নেভাতে দেখা গেছে।
যাত্রী ও কর্মী
[সম্পাদনা]বিমানটিতে ৬৮ জন যাত্রী ও চারজন কর্মী ছিল। যাত্রীদের মধ্যে ৩৭ জন পুরুষ, ২৫ জন নারী ও ৬ জন শিশু ছিল, শিশুদের মধ্যে ৩ জন বাচ্চা ছিল। দুর্ঘটনায় সকলেই মৃত্যুবরণ করেন।
সিনিয়র ক্যাপ্টেন কামাল কেসি এবং সহযোগী-পাইলট অঞ্জু খাতিওয়াদা বিমানটি চালনার দায়িত্বে ছিলেন। খাতিওয়াদার স্বামী দীপক পোখরেলও ইয়েতি এয়ারলাইন্সের হয়েও কাজ করতেন, যিনি ২০০৬ সালে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের টুইন অটার দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। এই ফ্লাইটটি সফলভাবে সম্পন্ন করার পর, খাতিওয়াদার ক্যাপ্টেন হওয়ার লাইসেন্স পাওয়ার কথা ছিল।[৭]
জাতীয়তা | যাত্রী | কর্মী | মোট | সূত্র |
---|---|---|---|---|
নেপাল | ৫৩ | ৪ | ৫৭ | [৮] |
ভারত | ৫ | ০ | ৫ | [৯] |
রাশিয়া | ৪ | ০ | ৪ | [১০] |
দক্ষিণ কোরিয়া | ২ | ০ | ২ | [১১] |
আর্জেন্টিনা | ১ | ০ | ১ | [১২] |
অস্ট্রেলিয়া | ১ | ০ | ১ | [১৩] |
ফ্রান্স | ১ | ০ | ১ | [১৪] |
যুক্তরাজ্য | ১ | ০ | ১ | [১৫] |
মোট | ৬৮ | ৪ | ৭২ |
উদ্ধার কার্যক্রম
[সম্পাদনা]দুর্ঘটনার পর উদ্ধার অভিযান চালাতে বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল প্রচণ্ড মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন ও রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোকে দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা চালাতে নির্দেশ দেন।[১৬] প্রধানমন্ত্রী জানান, এই মর্মান্তিক ও দুঃখজনক দুর্ঘটনায় তিনি গভীরভাবে শোকাহত।
দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১৬ জানুয়ারিকে শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এই দিন অর্ধনমিত অবস্থায় নেপালের পতাকা উত্তোলন করা হয়। ইয়েতি এয়ারলাইন্স ১৬ জানুয়ারির জন্য নির্ধারিত সমস্ত নিয়মিত ফ্লাইট বাতিল করে।
তদন্ত
[সম্পাদনা]নগেন্দ্র ঘিমিরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি নেপাল সরকারের পক্ষে দুর্ঘটনার তদন্ত করছে। তাদের সাহায্য করছে ফরাসি বেসামরিক বিমান চলাচল নিরাপত্তার জন্য অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ ব্যুরো।
অভিজ্ঞ পাইলট এবং ইন্ডিয়াস সেফটি ম্যাটার্স ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা অমিত সিং অনুমান করে জানান যে, বিমানটির বাম পাখনা হঠাৎ পড়ে গিয়ে বিমানটি দৃষ্টির বাইরে চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত, দুর্ঘটনার আগে ও দুর্ঘটনার মূহূর্তে তোলা ভিডিওতে বিমানের নাক উল্লেখযোগ্যভাবে উঁচু দেখা গেছে, যা সম্ভবত স্টল হবার ইঙ্গিত দেয়। একজন মুখপাত্র বলেন যে বিমানটি বিমানবন্দরের কাছাকাছি আসার সময় পাইলট "অপ্রীতিকর কিছু" রিপোর্ট করেন নি।
১৬ জানুয়ারি, বিমানের ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার এবং ককপিট ভয়েস রেকর্ডার উভয়ই পাওয়া যায়। ১৭ জানুয়ারি, কর্তৃপক্ষ নিহতদের দেহ তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে শুরু করে এবং বিশ্লেষণের জন্য ফ্লাইট রেকর্ডার ফ্রান্সে প্রেরণ করে।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ডেস্ক, প্রথম আলো। "নেপালে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, নিহত ১৬"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৫।
- ↑ ক খ ডেস্ক, নিউজ। "পোখারায় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, নিহত অন্তত ৪০"। bdnews24। ২০২৩-০১-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৫।
- ↑ "At least 40 killed in Nepal's worst air crash in five years"। www.dhakatribune.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০১-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৫।
- ↑ "বিধ্বস্ত বিমানের পাইলটের স্বামীও নিহত হয়েছিলেন দুর্ঘটনায়"। www.jugantor.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৬।
- ↑ ডেস্ক, প্রথম আলো। "ছয় শিশুসহ ৬৮ জনের মরদেহ উদ্ধার"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৬।
- ↑ ডেস্ক, স্টার অনলাইন (২০২৩-০১-১৫)। "নেপালের পোখারায় ৭২ আরোহী নিয়ে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, নিহত অন্তত ৪০"। The Daily Star Bangla (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৫।
- ↑ "পাইলট স্বামী মারা যান বিমান দুর্ঘটনায়; ১৭ বছর পর পোখারায় একই পরিণতি স্ত্রীর"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "নেপালে বিধ্বস্ত উড়োজাহাজে যেসব দেশের নাগরিক ছিলেন"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "নেপালে বিধ্বস্ত উড়োজাহাজ থেকে 'জীবিত উদ্ধার হয়নি কেউ'"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "Обнародованы имена погибших в Непале россиян"। Vesti.ru (রুশ ভাষায়)। ২০২৩-০১-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৬।
- ↑ "네팔 여객기 추락 사망자 68명…한국인 2명 생존 확인 안 돼"। এসবিএস নিউজ (কোরীয় ভাষায়)। ২০২৩-০১-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৬।
- ↑ "Era de Neuquén la argentina que murió en el accidente de avión en Nepal"। দিয়ারিও রিও নেগ্রো (স্পেনীয় ভাষায়)। ২০২৩-০১-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৬।
- ↑ মিচাম, সাভানা (২০২৩-০১-১৬)। "Sydney teacher believed to be victim in horror Nepal plane crash"। ৯নিউজ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৬।
- ↑ আল্লেমন্দ, দামিয়েন (২০২৩-০১-১৬)। "Un Français parmi les victimes du crash d'un avion au Népal, au moins 67 morts"। nicematin.com (ফরাসি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৬।
- ↑ "Nepal plane crash: Briton among dozens who died"। বিবিসি নিউজ (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ জানুয়ারি ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ ডেস্ক, ভিডিও। "৭২ জন আরোহী নিয়ে নেপালে বিমান বিধ্বস্ত"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৫।