বিষয়বস্তুতে চলুন

ইন সিক্রেট (চলচ্চিত্র)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইন সিক্রেট
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পোস্টার
In Secret
পরিচালকচার্লি স্ট্র্যাটন
প্রযোজক
রচয়িতাচার্লি স্ট্র্যাটন
উৎসএমিল জলা কর্তৃক 
তেরেজ রাকেঁ[]
শ্রেষ্ঠাংশে
সুরকারগাব্রিয়েল ইয়ারেদ
চিত্রগ্রাহকফ্লোরিয়ান হফমাইস্টার
সম্পাদক
প্রযোজনা
কোম্পানি
পরিবেশকরোডসাইড অ্যাট্রাকশন্স
মুক্তি
  • ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩ (2013-09-07)
স্থিতিকাল১০৭ মিনিট[]
দেশমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ভাষাইংরেজি
নির্মাণব্যয়$২ মিলিয়ন
আয়$৬৫২,২২[]

ইন সিক্রেট (ইংরেজি: In Secret) হলো একটি মার্কিন আদিরসাত্মক রোমাঞ্চকর প্রণয়ধর্মী চলচ্চিত্র, যা চার্লি স্ট্র্যাটন পরিচালনা এবং রচনা করেছেন। এই চলচ্চিত্রে এলিজাবেথ ওলসেন, টম ফেল্টন, অস্কার আইজ্যাক, জেসিকা ল্যাং এবং ম্যাট লুকাসের মতো অভিনয়শিল্পীগণ অভিনয় করেছেন। ১৮৬০-এর দশকের প্যারিসের পটভূমিতে রচিত এই চলচ্চিত্রটি এক যুবতীর গল্প তুলে ধরে, যিনি তাঁর অসুস্থ চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে এক নিঃসঙ্গ বিবাহিত জীবনে আবদ্ধ। তার জীবন অন্ধকার মোড় নেয়, যখন তিনি স্বামীর এক বন্ধুর সঙ্গে এক গভীর প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন, যা শেষ পর্যন্ত ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যায়।

মূলত ইংরেজি ভাষায় নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি ২০১৩ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর তারিখে মুক্তি পেয়েছে।[][] ২ ঘণ্টা ৪৭ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি সর্বমোট ৬৫২,২২ মার্কিন ডলার আয় করেছে।

সারাংশ

[সম্পাদনা]

১৮৬০-এর দশকের ফ্রান্সের গ্রামাঞ্চলে, ছোট্ট তেরেজ রাকেঁ (লিলি লাইট) তার মায়ের মৃত্যুর পর তার খালা, মাদাম রাকেঁর তত্ত্বাবধানে চলে যায়। মাদাম রাকেঁ (জেসিকা ল্যাং) কর্তৃত্বপরায়ণ একজন নারী, যিনি তার অসুস্থ পুত্র, কামিলের (দিমিত্রিয়ে বোগদানভ) সঙ্গে তেরেজকে বড় করেন। যখন তারা বড় হয়, মাদাম রাকেঁ তেরেজ (এলিজাবেথ ওলসেন) এবং কামিলের (টম ফেল্টন) বিয়ের ব্যবস্থা করেন, যদিও তাদের মধ্যে কোনো প্রণয়ধর্মী ভালোবাসা ছিল না। তেরেজ এক নিঃসঙ্গ, শুষ্ক বিবাহের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে তার আবেগ ও ইচ্ছাগুলো দমন করে রাখে।

পরিবারটি প্যারিসে চলে যায়, যেখানে কামিল একটি চাকরি পায়, আর মাদাম রাকেঁ এবং তেরেজ একটি ছোট দোকান চালায়। তাদের দৈনন্দিন জীবন একঘেয়ে হয়ে পড়ে, প্রতিদিন সন্ধ্যায় মাদাম রাকেঁ তার বন্ধুদের সঙ্গে ডোমিনো খেলার আয়োজন করেন। একদিন, কামিল তার শৈশবের বন্ধু লরাঁ ল্যক্লেয়ারকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে। লরাঁ, একজন শিল্পী ও কেরানি, তার রুক্ষ, বন্য আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে তেরেজকে তীব্রভাবে মোহিত করে। লরাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে, তেরেজ তার সঙ্গে এক নিষিদ্ধ প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তারা লুকিয়ে লুকিয়ে দোকানের ওপরের কক্ষে মিলিত হতে থাকে, তাদের সম্পর্ক দিনে দিনে আরও গভীর হয়। তারা একে অপরের সঙ্গে কাটানোর মুহূর্তগুলোর জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠে এবং সমাজের বাধা উপেক্ষা করে একসঙ্গে থাকার স্বপ্ন দেখে।

একপর্যায়ে, তেরেজ ও লরাঁ বুঝতে পারে যে কামিল বেঁচে থাকতে তাদের সম্পর্ক কখনোই সম্ভব নয়। তারা কামিলকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং একটি নৌকা ভ্রমণের সময় দুর্ঘটনার ছলে তাকে নদীতে ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারা একদিন নদীতে নৌকা নিয়ে যায় এবং সুযোগ বুঝে লরাঁ কামিলকে ধাক্কা মেরে পানিতে ফেলে দেয়। কামিল কিছুক্ষণ বাঁচার জন্য লড়াই করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ডুবে যায়। তেরেজ ও লরাঁ শোকের ভান করে প্যারিস ফিরে আসে, একজন বিধবা এবং এক শোকাহত বন্ধু হিসেবে।

প্রথমদিকে তাদের পরিকল্পনা সফল মনে হয়। মাদাম রাকেঁ তার ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন, এবং ধীরে ধীরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যান, ফলে তিনি কথা বলতে বা চলাফেরা করতে পারেন না। এই সুযোগে তেরেজ ও লরাঁ বিয়ে করে, মনে করে এবার তারা মুক্তভাবে জীবন যাপন করতে পারবে। কিন্তু খুব শিগগিরই তাদের মধ্যে অপরাধবোধ ও আতঙ্ক দানা বাঁধতে শুরু করে। তারা সবসময় কামিলের মৃত আত্মার উপস্থিতি অনুভব করতে থাকে, এবং তাদের একসময়ের উত্তাল প্রেম ক্রমশ ঘৃণা ও সন্দেহে পরিণত হয়। মাদাম রাকেঁ, যদিও কথা বলতে বা নড়াচড়া করতে অক্ষম, তবু বুঝতে পারেন যে তেরেজ ও লরাঁই তার ছেলেকে হত্যা করেছে। তিনি তাদের তীব্র বাকবিতণ্ডা ও অভিযোগ শুনতে পান এবং উপলব্ধি করেন যে তার সন্দেহ সত্যি। কিন্তু তিনি প্রতিবাদ করতে পারেন না, তার অবশ শরীর তাকে বাধা দেয়। অপরাধবোধ তাদের মানসিকভাবে বিধ্বস্ত করে ফেলে। তাদের বাসা এক বিভীষিকাময় কারাগারে পরিণত হয়, যেখানে মাদাম রাকেঁর স্থির দৃষ্টি তাদের পাপের এক চিরস্থায়ী সাক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। তারা বুঝতে পারে যে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় মৃত্যুই। একদিন, তারা একসঙ্গে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা বিষ মিশিয়ে একসঙ্গে শেষ খাবার খায়, এবং ধীরে ধীরে বিষের প্রতিক্রিয়ায় মৃত্যু বরণ করে। মাদাম রাকেঁ, যিনি তাদের সামনে নিঃশব্দ সাক্ষী হয়ে ছিলেন, তাদের মর্মান্তিক পরিণতির প্রত্যক্ষদর্শী হন।

চলচ্চিত্রটি শেষ হয় মাদাম রাকেঁর দৃষ্টিতে, যেখানে মিশে থাকে দুঃখ ও প্রতিশোধের এক অদৃশ্য অনুভূতি, যা নিষিদ্ধ ভালোবাসা, প্রতারণা ও অপরাধের এক করুণ পরিণতির স্বাক্ষর বহন করে।

অভিনয়শিল্পী

[সম্পাদনা]

পর্যালোচনা

[সম্পাদনা]

ইন সিক্রেট দর্শকের কাছ থেকে মিশ্র পর্যালোচনা পেয়েছে। মেটাক্রিটিক এটিকে ১০০-এর মধ্যে ৪৭ স্কোর দিয়েছে, যা মিশ্র বা গড় পর্যালোচনার ইঙ্গিত দেয়।[] দ্য গার্ডিয়ান মাদাম রাক্যাঁ চরিত্রে জেসিকা ল্যাংয়ের "যন্ত্রণাদায়ক, সূক্ষ্ম অভিনয়"-কে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে, বলেছে যে যদিও কাহিনিটি পরিচিত, তবুও ল্যাংয়ের অভিনয় চলচ্চিত্রটিতে গভীরতা যোগ করেছে।[] রজারএবার্ট.কম চলচ্চিত্রের আবহ এবং অভিনয়, বিশেষ করে ল্যাংয়ের অভিনয়ের প্রশংসা করেছে, মন্তব্য করেছে যে তিনি "সবচেয়ে অবিশ্বাস্য প্লট টুইস্টকেও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে পারেন"। চলচ্চিত্রটির অন্ধকারাচ্ছন্ন ও আকর্ষণীয় কাহিনির পাশাপাশি শক্তিশালী অভিনয়, বিশেষ করে ল্যাংয়ের পারফরম্যান্স, সমালোচকদের দ্বারা বারবার প্রশংসিত হয়েছে।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Principal photography commences on LD Entertainment Production 'Therese' Starring Elizabeth Olsen, Oscar Isaac, Tom Felton"zamm.com। মে ৯, ২০১২। আগস্ট ২৩, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ২৮, ২০১৩ 
  2. "In Secret (15)"British Board of Film Classification। মার্চ ১৯, ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ১৯, ২০১৪ 
  3. "In Secret (2014) - International Box Office Results"Box Office MojoInternet Movie Database। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৭, ২০২০ 
  4. "Therese"TIFF। আগস্ট ১৬, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৫, ২০১৩ 
  5. "Toronto Adds 75+ Titles To 2013 Edition"IndieWire। ২০১৩-০৮-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৮-১৫ 
  6. Sullivan, Kevin P. (৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২)। "Tom Felton Cast In Ghostly Romance 'Therese Raquin'"MTV News। অক্টোবর ১৮, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০১২ 
  7. Scherstuhl, Alan (২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। "In Secret Reviews"Metacritic। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০২৫ 
  8. Kermode, Mark (১৭ মে ২০১৪)। "In Secret review – Jessica Lange shines in a dark adaptation of a Zola classic"the Guardian। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০২৫ 
  9. "In Secret movie review & film summary (2014)"Roger Ebert। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০২৫ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]