ইন্দোনেশীয় রন্ধনশৈলী
বিশ্বকোষীয় পর্যায়ে যেতে এই নিবন্ধে আরো বেশি অন্য নিবন্ধের সাথে সংযোগ করা প্রয়োজন। (মে ২০২১) |
ইন্দোনেশীয় রন্ধনশৈলী বিশ্বের সবচেয়ে পরিবর্তনশীল এবং বর্ণিল খাবারের সমাহার যা তীব্র স্বাদে পূর্ণ।[১] এটি বৈচিত্রপূর্ণ কারণ ইন্দোনেশিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপপুঞ্জ। ৩০০ টিরও বেশি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী ইন্দোনেশিয়ায় বাস করে[২]। এখানে অনেক আঞ্চলিক রান্না বিদ্যমান। যেগুলোতে আদিবাসী সংস্কৃতি এবং বিদেশী প্রভাবের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ইন্দোনেশিয়ার প্রায় ৫২৫০ টি প্রচলিত রেসিপি রয়েছে, যার মধ্যে ৩০ টিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। চাল, নুডল এবং স্যুপ খাবারের সমন্বয়ে ইন্দোনেশীয় রন্ধনশৈলী বিকশিত হয়েছে।
২০১১ সালে ইন্দোনেশীয় রান্না বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি লাভ করতে শুরু করে। যার মধ্যে তিনটি জনপ্রিয় খাবারের তালিকা 'বিশ্ব এর ৫০ সর্বাপেক্ষা সুস্বাদু খাবার (পাঠক ভোটে) 'এর তালিকায় স্থান করে। এটা ছিলো সিএনএন ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক অনুষ্ঠিত ৩৫,০০০ লোকের বিশ্বব্যাপী অনলাইন জরিপ। রেনড্যাং তালিকার শীর্ষে, দ্বিতীয় স্থানে নসি গোরেং এবং চতুর্দশ স্থানে স্যাতে জায়গা করে নেয়.[৩]।
ইন্দোনেশীয় রান্না বিভিন্ন অঞ্চলের দ্বারা পরিবর্তিত হয় এবং বিভিন্ন প্রভাব রয়েছে[৪][৫][৬]। উদাহরণস্বরূপ সুমাত্রা রন্ধনপ্রণালীতে মধ্যপ্রাচ্য এবং ভারতীয় রন্ধনশৈলীর প্রভাব রয়েছে। মাংস এবং সব্জির বিশেষ ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। অন্যদিকে জাভানীয় রন্ধনপ্রণালী মূলত আদিবাসী ঘেঁষা, যাতে কিছুটা চীনা প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। পূর্ব ইন্দোনেশীয়দের কুইজিন পলিনেশিয়ান এবং মেলানেশিয়ান খাবারের মতো। ইন্দোনেশীয় রন্ধনশৈলীতে চীনা রন্ধনশৈলীর উপাদান দেখা যায়। যেমন নুডলস, মাংসের বল এবং স্প্রিং রোলস ইত্যাদি।
ইতিহাস জুড়ে ইন্দোনেশিয়া তার অবস্থান এবং প্রাকৃতিক সম্পদের কারণে বাণিজ্যে জড়িত হয়েছে। উপরন্তু ইন্দোনেশিয়ার আদিবাসী কৌশল এবং উপাদান ভারত, মধ্যপ্রাচ্য, চীন, এবং অবশেষে ইউরোপ দ্বারা প্রভাবিত ছিল। স্প্যানিশ এবং পর্তুগিজ ব্যবসায়ীরা দ্বীপপুঞ্জে ওলন্দাজদের উপনিবেশ স্থাপন করার আগেই নিউ ওয়ার্ল্ড তৈরি করেছিল। ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপপুঞ্জ মোলুকাস (মালুকু), "স্পাইস আইল্যান্ডস" বা মশলা দ্বীপ নামে পরিচিত। এই দ্বীপের স্থানীয় মশলা ইন্দোনেশীয় এবং বিশ্ব রন্ধনশৈলীতে জয়ফলের সমাবেশ ঘটায়।
ইন্দোনেশীয় রন্ধনপ্রণালী প্রায়ই জটিল সুগন্ধি,[৭] নির্দিষ্ট উপাদান এবং বাম্বু মশলা মিশ্রণ থেকে তৈরী হয়। ইন্দোনেশীয় খাবার পূর্ণতা পায় সমৃদ্ধ স্বাদে; প্রায়শই সুস্বাদু, গরম এবং মসলাযুক্ত হিসাবে বর্ণিত হয় এবং মিষ্টি, লবণাক্ত, খরা এবং তিক্ত মৌলিক বৈশিষ্ট্যের এক স্পষ্ট সমন্বয়। বেশিরভাগ ইন্দোনেশীয় খাবার ঝাল এবং মসলাযুক্ত খাবার। ইন্দোনেশিয়ার সাতটি প্রধান রান্নার পদ্ধতি হচ্ছে ভাজা, গ্রিলিং, রোস্টিং, ড্রাই রোস্টিং রোস্টিং, সাউটিং, ফোটানো এবং স্টিমিং।
কিছু জনপ্রিয় ইন্দোনেশীয় খাবার যেমন নসি গোরেং[৮], গডো-গডো[৯][১০], স্যাটে[১১] এবং সোটো[১২] দেশের সর্বত্র তৈরী হয় এবং জাতীয় খাবার হিসাবে বিবেচিত। ইন্দোনেশিয়ার আনুষ্ঠানিক জাতীয় খাবার হচ্ছে টুমপেং। ইন্দোনেশিয়ার পর্যটন ও ক্রিয়েটিভ ইকোনমি মন্ত্রণালয় ২০১৪ সালে খাবারটিকে নির্বাচন করে কারণ খাবারটি ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন রান্নার ঐতিহ্যের সমন্বয় করেছে। আজকের দিনে ইন্দোনেশিয়াতে উৎপন্ন কিছু জনপ্রিয় খাবার এখন প্রতিবেশী দেশ মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের সাধারণ খাবারের পরিণত হয়েছে। মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে ইন্দোনেশীয় খাবার যেমন সাটে, গরুর মাংসের রেন্ড্যাং, এবং স্যাম্বাল জনপ্রিয়। সোয়ে-ভিত্তিক পদ যেমন টফু ও টেমপেও খুব জনপ্রিয়। টেমপেহকে জাভার আবিষ্কার হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "About Indonesian food"। SBS Australia। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৪।
- ↑ Nadya Natahadibrata (১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। "Celebratory rice cone dish to represent the archipelago"। The Jakarta Post। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৪।
- ↑ Tim Cheung (৭ সেপ্টেম্বর ২০১১)। "Your pick: World's 50 best foods"। CNNGo। ১১ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০১৫।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;epicurina
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "Indonesian food." ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে Belindo.com ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে. Accessed July 2011.
- ↑ "Indonesian Cuisine"। Diner's Digest। ৯ এপ্রিল ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১০।
- ↑ "Flavours of Indonesia, Balinese Food"। Destination Asia। ১৭ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৪।
- ↑ "Nasi Goreng: Indonesia's mouthwatering national dish"। ৬ জুলাই ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১০।
- ↑ "Gado-Gado | Gado-Gado Recipe | Online Indonesian Food and Recipes at IndonesiaEats.com"। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০১৭।
- ↑ "National Dish of Indonesia Gado Gado"। ১২ জুন ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১০।
- ↑ "Indonesian food recipes: Satay"। ১২ আগস্ট ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১০।
- ↑ "A Soto Crawl"। Eating Asia। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১০।