ইজাজ আহমেদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইজাজ আহমেদ
اعجاز احمد
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামইজাজ আহমেদ
জন্ম (1968-09-20) ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৬৮ (বয়স ৫৫)
শিয়ালকোট, পাঞ্জাব, পাকিস্তান
ডাকনামঅ্যাক্সম্যান
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান, কোচ
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১০৭)
৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭ বনাম ভারত
শেষ টেস্ট২৭ মার্চ ২০০১ বনাম নিউজিল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৬০)
১৪ নভেম্বর ১৯৮৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ ওডিআই১১ অক্টোবর ২০০০ বনাম নিউজিল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা ৬০ ২৫০
রানের সংখ্যা ৩৩১৫ ৬৫৬৪
ব্যাটিং গড় ৩৭.৬৭ ৩২.৩৩
১০০/৫০ ১২/১২ ১০/৩৭
সর্বোচ্চ রান ২১১ ১৩৯*
বল করেছে ১৮০ ৬৩৭
উইকেট
বোলিং গড় ৩৮.৫০ ৯৫.২০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ১/৯ ২/৩১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৪৫/- ৯০/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৭ মে ২০২০

ইজাজ আহমেদ (উর্দু: اعجاز احمد‎‎; জন্ম: ২০ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৮) শিয়ালকোট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী কোচ ও সাবেক পাকিস্তানি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮৬ থেকে ২০০৩ সময়কালে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানি ক্রিকেটে গুজরানওয়ালা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন, হাবিব ব্যাংক লিমিটেড, ইসলামাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন, লাহোর, পাকিস্তান অটোমোবাইলস করপোরেশন ও রাওয়ালপিন্ডি এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডারহাম দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, বামহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন ‘অ্যাক্সম্যান’ ডাকনামে পরিচিত ইজাজ আহমেদ।

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

১৯৮৩-৮৪ মৌসুম থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ইজাজ আহমেদের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ষাটটি টেস্ট ও দুইশত পঞ্চাশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন ইজাজ আহমেদ। ৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৭ তারিখে চেন্নাইয়ে স্বাগতিক ভারত দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৭ মার্চ, ২০০১ তারিখে হ্যামিল্টনে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

বিশ্বের তৎকালীন শীর্ষস্থানীয় দল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ছয়টি টেস্ট শতক হাঁকিয়েছেন। পাকিস্তানের পক্ষে রেকর্ডসংখ্যক সেঞ্চুরি জাভেদ মিয়াঁদাদের সাথে যৌথভাবে ভাগাভাগি করে নেন। তবে, অংশগ্রহণকৃত ৯২ ইনিংসের মধ্যে ৩৩টিতে এক অঙ্কের ও ৫৪টি ইনিংসে ২০-এর নিচে রান তুলতে পেরেছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটে সর্বমোট ১২টি টেস্ট শতক হাঁকান। তন্মধ্যে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম ও একমাত্র দ্বি-শতরানের ইনিংস ২১১ তুলেন। এছাড়াও, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ সংগ্রহটি তার দখলে রয়েছে।

ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন জাতীয় দলে খেলেন। প্রায় এক যুগ দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। বেশ ভালোমানের রান সংগ্রহ করলেও ১৯৯২ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর দল থেকে বাদ পড়েন। পরের মৌসুমে আবারও দলে ফিরে আসেন ও প্রথম উইকেট পতনের পরবর্তী অবস্থানে খেলার পাকাপোক্ত আসন গড়েন।

২১ এপ্রিল, ১৯৯৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট চলাকালে ৯৭ রানে থাকা অবস্থায় রান আউটের শিকার হন। তবে, পুণঃপ্রচারে দেখা যায় যে, সেলিম মালিক আউট হয়েছেন। ফলে, ইজাজ আহমেদকে ক্রিজে ফিরিয়ে আনা হয়। ১৯৮৭ সালের পর প্যাভিলিয়ন থেকে কোন ব্যাটসম্যানকে ক্রিজে ফিরিয়ে আনার প্রথম ঘটনা ছিল।[১]

একদিনের আন্তর্জাতিক[সম্পাদনা]

সব মিলিয়ে ২৫০টি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নিয়েছেন ইজাজ আহমেদ। এরফলে, শহীদ আফ্রিদি, ইনজামাম-উল-হক, ওয়াসিম আকরাম, সেলিম মালিক, ইউনুস খান, ওয়াকার ইউনুসশোয়েব মালিকের পর পাকিস্তানের সর্বকালের সেরাদের তালিকায় সপ্তম স্থানে অবস্থান করেন।

বলকে বেশ সজোরে পেটাতেন। পাকিস্তানের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ওডিআইয়ে ১০টি সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন। ১৯৯৭ সালে লাহোরে ভারতীয় বোলিং আক্রমণ রুখে দিয়ে মাত্র ৬৯ বলে ৯টি ছক্কা সহযোগে দ্রুতগতিতে সেঞ্চুরি করেন। অপরাজিত ১৩৯ রানের ঐ ইনিংসটি পরবর্তীতে তার ওডিআইয়ে সর্বোচ্চ সংগ্রহ হিসেবে চিত্রিত হয়।

খেলার ধরন[সম্পাদনা]

পাকিস্তানের তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ের জন্যে ইনজামাম-উল-হকসেলিম মালিক অনেকগুলো বছর নিজেদের মাঝে ভাগাভাগি করে নিতেন। তবে, ইজাজ আহমেদের আগমনে দৃষ্টিনন্দন খেলা উপহার না দিলেও বেশ কার্যকর ছিল। তার উইকেটে সামাল দেয়ার ব্যাপারটি এলবিডব্লিউ ধাঁচের ছিল না। ‘অ্যাক্সম্যান’ ডাকনামে তাকে ডাকা হতো। অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলগুলো তার কাছ থেকে নিস্তার পেতো না। পিছনের হাতে ভর দিয়ে ইজাজ তার ব্যাটিং কৌশল পরিচালনায় অগ্রসর হতেন।

ব্যতিক্রমধর্মী শক্তিশালী স্কয়ার কাটের মার মারতেন ও তার পা মিড-উইকেট বরাবর চলে যেতো। কভার অঞ্চলে তিনি অবস্থান করতেন। একবার রাউন্ড-আর্ম ভঙ্গীমায় মিডিয়াম পেস বোলিং করেছিলেন।

অবসর[সম্পাদনা]

১৯৯৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে তেমন ভালো খেলা উপহার দিতে পারেননি। এছাড়াও, ইউনুস খানের আবির্ভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার ভিত নড়ে যায়। ফলশ্রুতিতে, ২০০৩ সালে সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে নিজের অবসর গ্রহণের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন।

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ২০ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখে পাকিস্তানের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ হিসেবে তাকে মনোনীত করা হয়।[২] বর্তমানে তিনি পাকিস্তান সুপার লীগে লাহোর কালান্দার্স দলের ব্যাটিং কোচ ও পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

২০১২ সালে জালিয়াতির অভিযোগে পুলিশ হেফাজতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরিসংখ্যান[সম্পাদনা]

ওডিআইয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ
ক্রমিক প্রতিপক্ষ মাঠ তারিখ অবদান ফলাফল
শ্রীলঙ্কা ব্রিসবেন ক্রিকেট গ্রাউন্ড, ব্রিসবেন ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯০ ২ কট; ১০২* (১০০ বল, ৯x৪, ১x৬)  পাকিস্তান ৫ উইকেটে বিজয়ী[৩]
শ্রীলঙ্কা শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম, শারজাহ ২১ ডিসেম্বর, ১৯৯০ ৫৪* (৭৮ বল, ১x৪, ১x৬); ৩-০-১০-০, ১ কট  পাকিস্তান ৫০ রানে বিজয়ী[৪]
দক্ষিণ আফ্রিকা রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়াম, রাওয়ালপিন্ডি ২০ অক্টোবর, ১৯৯৪ ১১০ (১১০ বল, ১৩x৪, ১x৬); ডিএনবি  পাকিস্তান ৩৯ রানে বিজয়ী[৫]
দক্ষিণ আফ্রিকা ইকবাল স্টেডিয়াম, ফয়সলাবাদ ২৮ অক্টোবর, ১৯৯৪ ডিএনবি; ৯৮* (৮৭ বল, ১১x৪, ১x৬)  পাকিস্তান ৬ উইকেটে বিজয়ী[৬]
দক্ষিণ আফ্রিকা কিংসমিড ক্রিকেট গ্রাউন্ড, ডারবান ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৯৪ ডিএনবি, ১ কট; ১১৪* (৯০ বল, ১৭x৪, ৩x৬)  পাকিস্তান ৮ উইকেটে বিজয়ী[৭]
ভারত ক্রিকেট, স্কেটিং ও কার্লিং ক্লাব, টরন্টো ২১ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৬ ৯০ (১১০ বল: ৭x৪, ১x৬); ১ কট  পাকিস্তান ৯৭ রানে বিজয়ী[৮]
জিম্বাবুয়ে আরবাব নিয়াজ স্টেডিয়াম, পেশাওয়ার ৩ নভেম্বর, ১৯৯৬ ১১৭ (১০৫ বল: ১০x৪, ৪x৬)  পাকিস্তান ৭৮ রানে বিজয়ী[৯]
ভারত গাদ্দাফি স্টেডিয়াম, লাহোর ২ অক্টোবর, ১৯৯৭ ১৩৯* (৮৪ বল: ১০x৪, ৯x৬)  পাকিস্তান ৯ উইকেটে বিজয়ী[১০]
জিম্বাবুয়ে রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়াম, রাওয়ালপিন্ডি ২৪ নভেম্বর, ১৯৯৮ ১৩২ (১০৩ বল: ৯x৪, ৪x৬); ডিএনবি  পাকিস্তান ১১১ রানে বিজয়ী[১১]
১০ ভারত পিসিএ আইএস বিন্দ্রা স্টেডিয়াম, মোহালী ১ এপ্রিল, ১৯৯৯ ১ কট; ৮৯* (১২৯ বল: ৫x৪, ২x৬)  পাকিস্তান ৭ উইকেটে বিজয়ী[১২]
১১ ইংল্যান্ড শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম, শারজাহ ৭ এপ্রিল, ১৯৯৯ ১৩৭ (১৩০ বল: ১২x৪, ১x৬)  পাকিস্তান ৯০ রানে বিজয়ী[১৩]
১২ নিউজিল্যান্ড কালাং গ্রাউন্ড, কালাং ২০ আগস্ট, ২০০০ ৪৯ (৩৭ বল: ৫x৪, ১x৬)  পাকিস্তান ১২ রানে বিজয়ী[১৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]