ইউয়ার্ট অ্যাস্টিল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(ইউয়ার্ট অ্যাসটিল থেকে পুনর্নির্দেশিত)
ইউয়ার্ট অ্যাস্টিল
ক্রিকেট তথ্য
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৭৩৩
রানের সংখ্যা ১৯০ ২২,৭৩৫
ব্যাটিং গড় ১২.৬৬ ২২.৫৫
১০০/৫০ ০/০ ১৫/১০৭
সর্বোচ্চ রান ৪০ ১৬৪*
বল করেছে ২,১৮২ ১৩৮,৫৩২
উইকেট ২৫ ২,৪৩২
বোলিং গড় ৩৪.৬৬ ২৩.৭৬
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৪০
ম্যাচে ১০ উইকেট ২২
সেরা বোলিং ৪/৫৮ ৯/৪১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৭/০ ৪৬৬/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

উইলিয়াম ইউয়ার্ট অ্যাস্টিল (ইংরেজি: Ewart Astill; জন্ম: ১ মার্চ, ১৮৮৮ - মৃত্যু: ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮) লিচেস্টারশায়ারের রেটবি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২৭ থেকে ১৯৩০ সময়কালে ইংল্যান্ড দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে লিচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ইউয়ার্ট অ্যাস্টিল

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন। তবে যুদ্ধের পর চার কিংবা পাঁচ নম্বর অবস্থানে উইকেটে নামতেন ইউয়ার্ট অ্যাস্টিল।

আঠারো বছর বয়সে ১৯০৬ সালে অ্যাস্টিল তার খেলোয়াড়ী জীবনের সূচনা ঘটান। ঐ মৌসুমে তিনি একটিমাত্র খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। তবে ডানহাতি মিডিয়াম পেস বোলিং পরবর্তী মৌসুমের ব্যাটিং সহায়ক পিচেও তাণ্ডবলীলা চালিয়েছিলেন। ১৬.৫৮ গড়ে ৭৪ উইকেট লাভ করেন তিনি। ৮৪ উইকেট নিয়ে পরের মৌসুমে লিচেস্টারশায়ারের প্রধান বোলারের মর্যাদা পান।

ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে ৬১ রানের বিনিময়ে তেরো উইকেট পান যা পঁচিশ বছর টিকে রয়েছিল। ১৯০৯ সালে আবারও ভালো করেন। তবে ১৯১০ ও ১৯১১ সালে দূর্বলমানের খেলা প্রদর্শন করায় দল থেকে বাদ পড়েন।

১৯১২ সালের বৃষ্টিস্নাত গ্রীষ্মকালে অ্যাস্টিল দলের সদস্য থাকলেও উপযুক্ত পরিবেশে তাকে বেশ মাসুল গুণতে হয়।[১] এবড়ো-থেবড়ো উইকেটে সাফল্য লাভ না করার প্রেক্ষিতে দলের বাইরে থাকতে হয় তাকে। তিনি মাত্র পাঁচটি খেলায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯২১ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক সেঞ্চুরি করেন। সোয়ানসীতে নব উত্তরণ ঘটানো গ্ল্যামারগনের বিপক্ষে এ সেঞ্চুরিটি হাঁকিয়েছিলেন তিনি।

অর্জনসমূহ[সম্পাদনা]

১৯২১ থেকে ১৯২৬ ও ১৯২৮ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত প্রত্যেক বছরেই ডাবল লাভ করেন। ১৯২১ সালে ১৫০-এর বেশি ও ১৯২২ সালে ১৪৪ উইকেট দখল করেন তিনি। বোলিংয়ে তেমন দৃষ্টিনন্দন ও উচ্চমানের না হলেও ১৯০০-এর দশকে তার বোলিং স্থির ও মাঝে-মধ্যেই মৃত্যুদূতে পরিণত হতো।

কেবলমাত্র ১৯২৭ সালে ১০০ উইকেটের কোটা স্পর্শ করতে ব্যর্থ হন। তবে ঐ মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে গ্ল্যামারগনের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৬৪ রান তুলেন। সর্বসাকুল্যে নয় মৌসুমে ১০০ উইকেট ও এগারোবার সহস্রাধিক রান সংগ্রহ করেন তিনি। লিচেস্টারশায়ারের পক্ষে সর্বাধিক ২১৩১টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পেয়েছেন।[২]

কাউন্টি অধিনায়কত্ব[সম্পাদনা]

১৯২২ থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত জর্জ গিয়েরি’র সাথে তিনিও লিচেস্টারশায়ার দলের প্রধান চালিকাশক্তি ছিলেন। তবে তিন দশককাল কোনরকমে টিকে থাকা লিচেস্টারশায়ার দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন তিনি। কোন শৌখিন খেলোয়াড়ই কাউন্টি দলটির পক্ষে স্বতঃস্ফূর্তভাবে খেলেননি।

পঞ্চাশ বছরেরও অধিক সময় পর অ্যাস্টিল আনুষ্ঠানিকভাবে যে-কোন কাউন্টি দলের পক্ষে পেশাদার অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। কাউন্টি দলটি কার্যকরী মৌসুম অতিবাহিত করে। শৌখিন মানদণ্ডের ও প্রাপ্তির পূর্ব-পর্যন্ত সাতচল্লিশ বছর বয়সেও দায়িত্ব পালন করেন।[৩]

টেস্ট ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি সর্বমোট নয় টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন। তবে স্বদেশে কিংবা বিদেশে কোন অ্যাশেজ সিরিজ খেলার সৌভাগ্য ঘটেনি তার। অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য কখনোই গুরুত্বতা দেখাননি অ্যাস্টিল।[৪] তবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে ১৯২০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যান। ১৯২৭-২৮ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকায় ম্যাটিং পিচে পাঁচ টেস্টে অংশ নেন।

১৯২৯-৩০ মৌসুমে একই দলের বিপক্ষে চার টেস্টে অংশ নেন। তবে খেলাগুলোয় তিনি দক্ষতা প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হন।

১৯২৬-২৭ মৌসুমে আর্থার জিলিগানের নেতৃত্বে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব ভারতে ২৬টি ও সিলনে চারটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিল। মরিস টেট, মরিস লেল্যান্ড, অ্যান্ডি স্যান্ডহাম, বব ওয়াট, আর্থার ডলফিন, জর্জ গিয়েরি, ইউয়ার্ট অ্যাস্টিল ও জর্জ ব্রাউনের ন্যায় খেলোয়াড়েরা দলের সদস্য ছিলেন।[৫] ২৪ খেলায় অংশ নিয়ে সর্বসাকুল্যে ৭১ উইকেট পান। তবে ১৯৩৩ সালের পর থেকে তার খেলার মান পড়তির দিকে যেতে থাকে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ[সম্পাদনা]

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। মেশিন গান কোরে কমিশন লাভ করেন।[৬] ১৯১৯ সালে তিনি কেবলমাত্র তিনটি খেলায় অংশ নিতে পেরেছেন। এর প্রধান কারণ ছিল বিদেশে থাকাকালে দেরীতে ছাড়পত্র প্রদান করা।

অবসর[সম্পাদনা]

১৯৩৭ সালের শেষদিকে অ্যাস্টিল খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তাস্বত্ত্বেও লিচেস্টারশায়ারের কার্যকরী খেলোয়াড়ের অভাব হেতু ১৯৩৮ ও ১৯৩৯ সালে দুইবার আসা-যাওয়ার পালায় অবস্থান করতে হয় তাকে।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তবে, দূর্বল স্বাস্থ্যের কারণে কমিশন লাভ করেননি। তার স্বাস্থ্যের ক্রমশঃ অবনতি ঘটতে থাকে। নিজ ষাটতম জন্মদিনের তিন সপ্তাহ পূর্বে লিচেস্টার হাসপাতালে তার দেহাবসান ঘটে।

১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮ তারিখে ৬০ বছর বয়সে তার দেহাবসান ঘটে। ওয়েলফোর্ড রোড সমাধিক্ষেত্রে তাকে সমাহিত করা হয়।

অ্যাস্টিল পরিবার ইউয়ার্ট অ্যাস্টিলের স্মরণার্থে ২০০৩ সালে একদিনের টেস্ট খেলার আয়োজন করে। ঐ টেস্টের পাশাপাশি নামফলক ও তার অসাধারণ অর্জনের মুহূর্তকাল নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করা হয়েছিল।

চ্যাম্পিয়ন বিলিয়ার্ড খেলোয়াড় হিসেবেও তার সুনাম ছিল।

লিচেস্টারশায়ারের ফাস্ট বোলার টমাস জয়েস সম্পর্কে তার ভ্রাতৃস্পুত্র।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Wisden 1913 Leicestershire Section
  2. "The Home of CricketArchive"। Cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৩ 
  3. Gentlemen v Players Vol.II M.Marshall
  4. Wisden 1975 Cameos of the Nearly Great - B.Easterbrook
  5. "Marylebone Cricket Club cricket team in India and Ceylon in 1926–27"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৪ 
  6. History of Leicestershire Cricket Vol.1 EE Snow(1950) p.192

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জী[সম্পাদনা]

  • EE Snow A History of Leicestershire County Cricket Vol 1 (Backus 1949)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]