আশরাফ জাহাঙ্গীর সেমনানি

আশরাফ জাহাঙ্গীর সেমনানি
উপাধি	জাহাঙ্গীর গাউসুল আলম মেহবুবে-ইয়াজদানী কুদওয়াতুল কুবরা সুলতান আশরাফ জাহাঙ্গীর মখদুম-এ-সিমনানি
অন্য নাম	হযরত সৈয়দ মখদুম আশরাফ
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম	মীর সৈয়দ আশরাফ জাহাঙ্গীর সেমনানি ১৩০৮ (৭০৯ হিজরী) সেমনান (আধুনিক ইরানে)
মৃত্যু	১৪০৫ (২৮ মহররম ৮০৮ হিজরী) কিছৌছা, ভারত
ধর্ম	ইসলাম
পিতামাতা	সুলতান ইব্রাহিম নুরবখশি বিবি খাদিজা
অন্য নাম	হযরত সৈয়দ মখদুম আশরাফ
মুসলিম নেতা
ভিত্তিক	কিছৌছা, দক্ষিণ ভারত
কাজের মেয়াদ	১২তম শতাব্দীর শেষে ও ১৩তম শতাব্দীর প্রারম্ভে
পূর্বসূরী	আলাউল হক পাণ্ডভি
উত্তরসূরী	আবদুর রাজ্জাক নুরুল আইন

সুলতান সৈয়দ মখদুম আশরাফ জাহাঙ্গীর সেমনানি (উর্দু: اشرف جهانگر سمنانی‎‎‎; ১৩০৮–১৪০৫) সুলতান সৈয়দ মখদুম আশরাফ জাহাঙ্গীর সেমনানি একজন সুফি দরবেশ যিনি ১৩০৮ সালে ইরানের সেমনানে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সুলতান ইব্রাহিম নুরবখশি সেমনানের বাদশাহ ছিলেন। তার বংশ-তালিকা হযরত মুহাম্মাদ (দঃ) পর্যন্ত পৌছে। তার মা বিবি খাদিজা তুর্কি সুফি দরবেশ খাজা আহমদ ইয়াসাভীর বংশধর ছিলেন।

পরিবার ও বংশ

আশরাফ জাহাঙ্গীর সেমনানি ৭০৮ হিজরিতে (১৩০৮ সাল) ইরানের সেমনানে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সুলতান সৈয়দ ইব্রাহিম নুরবখশী কুতুবউদ্দিন সেমনানের শাসক ছিলেন এবং ধর্মতত্ত্বের একজন দক্ষ পণ্ডিত ও অন্তর্নিহিতভাবে তাসাউফ (রহস্যবাদ)-এর প্রতি আগ্রহী ছিলেন। তার মাতা বিবি খাদিজা বেগম বিখ্যাত তুর্কি সুফি খাজা আহমদ ইয়াসাভীর বংশধর ছিলেন।

সেমনানি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (দ.)'র সরাসরি বংশধর।

শিক্ষা

সেমনানি চার বছর বয়সে তার পিতা থেকে ধর্মীয় শিক্ষা শুরু করেন। তিনি সাত বছর বয়সে পবিত্র কুরআনের হিফজ সম্পন্ন করেন। এটি সম্পন্ন করার পর, তিনি ধর্মতত্ত্বের বিভিন্ন শাখার শিক্ষায় যেমন তাফসীর (ব্যাখ্যা), হাদিস (মহানবী হজরত মুহাম্মদ (দ.) এর বাণী), ফিকাহ (ইসলামী আইনশাস্ত্র) এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। চৌদ্দ বছর বয়সে ইসলামি বিভিন্ন বিষয়ের উপর দক্ষতা অর্জন করেন।

প্রাথমিক জীবন

তার বাবার মৃত্যুর পর তিনি ১৭ বছর বয়সে রাজা হন। তিনি সর্বদা সুফিবাদের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন এবং সর্বদা তার সময়ের সুফিদের সাথে ছিলেন, বিশেষত রুকনউদ্দীন আলা উদ দৌলা সেমনানি।

২৩ বছর বয়সে তিনি তার সিংহাসনটি তার ভাই সুলতান সাঈদ মুহাম্মদকে ছেড়ে দেন এবং তার মায়ের কাছ থেকে অনুমতি চেয়েছিলেন এবং বাংলায় তার শিক্ষক আলা উল হক পান্ডভীর সাথে দেখা করার জন্য যাত্রা শুরু করেছিলেন।

ভ্রমণ

তিনি দক্ষিণ ভারতের গুলবার্গা যান এবং তারপর সারান্দিব যান এবং তিনি আরো মক্কা ও মদীনায়ও যান।

অন্যান্য সুফিদের সাথে সাক্ষাত

ভ্রমণের সময় তিনি দেখা করেন মখদুম জাহানিয়ান জাহান গশত, মীর সৈয়দ আলী হামদানি, বান্দে নওয়াজ, খাজা বাহউদ্দিন নকশবন্দ এবং সুলতান ওয়ালাদ (জালালুদ্দীন রুমির পুত্র)।

আধ্যাত্মিক ধারা

চিশতি তরিকায় সেমনানির আধ্যাত্মিক ধারা:

• হজরত মুহাম্মদ (দ.)
• হজরত আলী
• হাসান বসরী
• আবদুল ওয়াহিদ বিন জায়েদ
• আল-ফুজাইল ইবনে আয়াজ
• ইব্রাহিম বিন আদহাম
• হুজাইফা আল মারাশি
• আবু হুবাইরা বসরী
• মুমশাদ দিনাওয়ারি
• আবু ইসহাক শামী
• আবু আহমদ আবদাল চিশতি
• আবু মুহাম্মদ চিশতি
• নাসির উদ্দিন আবু ইউসুফ বিন সামান
• খাজা কুতুবউদ্দিন মওদুদ চিশতি
• হাজী শরীফ জানদানি
• খাজা উসমান হারুনী
• খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি
• কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকী
• ফরিদ উদ্দিন গঞ্জেশকার
• নিজামুদ্দিন আউলিয়া
• আখি সিরাজ
• আলাউল হক পাণ্ডভী
• আশরাফ জাহাঙ্গীর সেমনানি

মাজার এবং ওরস

তার মাজার ভারতের উত্তর প্রদেশের আম্বেদকর জেলার কিছৌছা শরিফে অবস্থিত। তার 'উরস' (মৃত্যুবার্ষিকী) হিজরী সন অনুযায়ী মুহাররম মাসের ২৮ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়।

বই

সৈয়দ আশরাফ জাহাঙ্গীর সেমনানী বিভিন্ন বিষয়ে বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন যা ইঙ্গিত করে যে তিনি ধর্মতত্ত্ব এবং তার সময়ের অন্যান্য সম্পর্কিত বিষয়ের একজন অতুলনীয় সাধক ছিলেন। তার লেখা বইগুলি নিম্নরূপ:

• কানজুল আসরার
• লাতাফে আশরাফী (তার আধ্যাত্মিক বাণীর সংগ্রহ)
• মাকতুবাতে আশরাফী
• শারহে সিকান্দার নামা
• সিররুল আসরার
• শারহে আওয়ারেফুল মারিফ
• শারহে ফসুসুল হাকাম
• কুওয়ায়েদুল আক্বাইদ
• আশরাফুল আনসাব
• বাহরুল আজকার
• আশরাফুল ফাওয়ায়েদ
• ফাওয়ায়েদুল আশরাফ
• তানবিহুল আখওয়ান
• বাশারা তুজ্জাকেরিন
• বাশারাতুল ইখওয়ান
• মুস্তা লেহাতে তাসাউফ
• মানাকিবে খোলাফায়ে রাশেদিন
• হুজ্জালুজ্জা কেরিন
• ফতোয়া আশরাফীয়া
• তাফসীরে নুর বাখহিয়া
• ইরশাদুল ইখওয়ান

আরও দেখুন

• আলা উদ-দৌলা সিমনানি
• আলাউল হক পাণ্ডভি
• সৈয়দ মুহাম্মদ মুখতার আশরাফ
• মাদনী মিয়া
• হাশমী মিয়া