বিষয়বস্তুতে চলুন

আল্লাহর দল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আল্লাহর দল
অন্য যে নামে পরিচিতআল্লাহর সরকার
প্রতিষ্ঠাতাআবদুল মতিন মেহেদী ওরফে মুমিনুল ইসলাম
নেতাশেখ কামাল (গ্রেফতারকৃত) ও অন্যান্য
অপারেশনের তারিখ১৯৯৫–বর্তমান
দেশবাংলাদেশ
মতাদর্শইসলামবাদ
ইসলামি মৌলবাদ
অবস্থাসক্রিয়
এর অংশজামাত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশ
বিপক্ষ বাংলাদেশ
খণ্ডযুদ্ধ ও যুদ্ধবাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ
যার দ্বারা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসাবে মনোনীত

আল্লাহর দল হলো বাংলাদেশে সক্রিয় একটি নিষিদ্ধ ইসলামপন্থী জঙ্গি সংগঠন। এই সংগঠনটি অতীতে "আল্লাহর সরকার" নামেও কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।[][] বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট নামের একটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ২০০৭–২০০৮ সালে জঙ্গিবাদ সংশ্লিষ্ট একটি প্রতিবেদনে আল্লাহর দলকে জামাত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর একটি সংগঠন বলে উল্লেখ করে। প্রতিবেদন অনুসারে আল্লাহর দল কুষ্টিয়া, মেহেরপুরচুয়াডাঙ্গা জেলায় সক্রিয় ছিল।[]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

১৯৯৫ সালে আবদুল মতিন মেহেদী ওরফে মুমিনুল ইসলাম নামের একজনের নেতৃত্বে আল্লাহর দল প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার পর তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ঘটনার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।[] বোমা হামলার পূর্বেই ২০০৪ সালের শেষ নাগাদ আল্লাহর দল জামাত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশের সাথে একীভূত হয়ে যায়।[]

২০০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন রংপুরনীলফামারী জেলা থেকে আল্লাহর দলের চারজন সদস্যকে গ্রেফতার করে।[] ২০০৮ সালের ২৫ মে তারিখে গাইবান্ধা থেকে দলের আরও ১৩ জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। স্থানীয় লোকজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের খুঁজে বের করেছিল।[] ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আল্লাহর দলকে নিষিদ্ধ করে।[]

২০১৩ সালের ৩১ মার্চ বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা শাখা বোমা তৈরির উপকরণ এবং ৬৩ লাখ ভারতীয় টাকা সমমূল্যের জাল মুদ্রাসহ চারজন পাকিস্তানি নাগরিককে গ্রেফতার করে। একইসাথে অভিযানে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির, হরকাতুল জিহাদ আল-ইসলামী বাংলাদেশ, হরকাত-উল-মুজাহিদিন এবং আল্লাহর দলের ১২ জন সদস্যকেও আটক করা হয়। মাদারীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি ড. ফরিদ উদ্দিন আহম্মদকে গ্রেফতারের পর দেশজুড়ে এই সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত হচ্ছিল।[]

২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ পুলিশ মেহেরপুর জেলা থেকে আল্লাহর দলের চারজন সদস্যকে বোমা তৈরির উপকরণসহ আটক করে।[]

২০১৯ সালের ১৯ আগস্ট র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের অভিযানে ঢাকার হাতিরঝিল এলাকা থেকে আল্লাহর দলের চারজন সদস্যকে আটক করা হয়।[][১০] ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে আল্লাহর দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।[] সেই বছরের ১৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশের অ্যান্টি-টেরোরিজম ইউনিট খুলনা থেকে আল্লাহর দলের চারজন সদস্যকে গ্রেফতার করে।[১১]

২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন মেহেরপুর জেলার আল্লাহর দলের প্রধানকে আটক করে।[১২] ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলা থেকে আল্লাহর দলের একজন সদস্যকে গ্রেফতার করে।[১৩] ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি তারিখে বাংলাদেশ পুলিশও সিলেট থেকে নয়জনকে গ্রেফতার করেছিল।[১৪]

২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ পুলিশের অ্যান্টি-টেরোরিজম ইউনিট আল্লাহর দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড শেখ কামালসহ আরও চারজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা আল্লাহর দলের সদস্য সংখ্যা ২৫ হাজারের অধিক বলে দাবি করেন।[১৫] ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলা থেকে দুইজন সদস্যকে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন আটক করে।[১৬]

মতাদর্শ

[সম্পাদনা]

আল্লাহর দল বাংলাদেশে একটি ইসলামপন্থী সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তারা একজন ইমামের পিছনে নামাজ পড়ে না এবং শাহাদতের বাক্যে সর্বশেষ নবির নাম নিয়ে তাদের মধ্যে বিরুদ্ধমত রয়েছে।[]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. 1 2 3 4 5 "Allah'r Dal banned in Bangladesh"দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ৬ নভেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  2. "Allah'r Sarkar: The threat must be removed before too late"দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  3. "Militants regrouping for attacks, says study"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১২ জুন ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  4. "Extremist outfit Allahr Dal banned in Bangladesh"ঢাকা ট্রিবিউন (ইংরেজি ভাষায়)। ৬ নভেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  5. "Four Islamist 'militants' arrested"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০ সেপ্টেম্বর ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  6. "13 militants held from meeting"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২৫ মে ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  7. "4 Pakistanis held with fake Indian rupees"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ৩১ মার্চ ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  8. "4 Allah'r Dal men held while holding meeting"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ৪ অক্টোবর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  9. "4 'Allah'r Dal' men held in Dhaka"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ আগস্ট ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  10. "Rab arrests four suspected militants from Hatirjheel"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০ আগস্ট ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  11. "4 members of banned militant group arrested"ইউএনবি (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  12. "Meherpur Allah'r Dal chief held"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১১ ডিসেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  13. "Member of 'Allah'r Dal' held in Meherpur"দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট (ইংরেজি ভাষায়)। ২০ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  14. "9 suspected militants held in Sylhet"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ৩০ জানুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  15. "Five, including acting chief, of Allah'r Dal arrested in Dhaka: police"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১
  16. "RAB nabs two 'Allah'r Dal men' in Gaibandha"দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২১