আলেপ্পোর প্রাচীন শহর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
১৯১২ খ্রিস্টাব্দে আলেপ্পো

আলেপ্পোর প্রাচীন শহর সিরিয়ার আলেপ্পোয় ঐতিহাসিক শহরের কেন্দ্র। সিরীয় গৃহযুদ্ধের পূর্বে, ১২শ থেকে ১৬শ শতাব্দীর মধ্যে প্রাচীন শহরের অন্যান্য জেলাগুলোর তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন হয় নি। ক্রমাগত বহিরাক্রমণের শিকার ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার জন্য সিরিয়ার আবাসস্থলগুলো নির্মিত হতে হয়েছিল কারাগারের মত। জেলাগুলো ছিল সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন। প্রতিটি জেলা ছিল বাসিন্দাদের ধর্মীয় ও জাতিগত বৈশিষ্ট্যসূচক। 

প্রাচীন শহর আলেপ্পো শহরের বাইরে থেকে দেয়াল নির্মিত। বাসিন্দাদের বসবাসের বাড়িঘর কারাগারের মত শক্ত প্রতিরক্ষাবিশিষ্ট। শহরের আয়তন প্রায় ৩৫০ হেক্টর (৮৬০ একর; ৩.৫ কিমি) যেখানে নিবাস রয়েছে ১২০,০০০ বাসিন্দার।[১]

এর প্রাসাদগুলো অতিকায়, রাস্তাগুলো সরু, ক্যারাভানসরাই আর বাজারগুলো আচ্ছাদিত। এই সমারোহ প্রাচীন শহর আলেপ্পোকে ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে।[২]

সিরীয় আরব আর্মি এবং জাভাত আল নুসরার বিদ্রোহী বাহিনীর মধ্যকার লড়াইয়ে এ প্রাচীন শহরের আল-মদিনা বাজারের অনেক অংশ এবং অন্যান্য মধ্যযুগীয় ভবনগুলো ধ্বংস হয় এবং কোথাও কোথাও পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। আলেপ্পোর এ লড়াই সংঘটিত হয় বিদ্রোহী বাহিনীর মাধ্যমে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে সেপ্টেম্বরে।[৩] ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তে, ইসলামিক ফ্রন্টের বিরোধী দল দাবি করে, বিচার প্রাসাদ, কার্লটন হোটেল এবং প্রাচীন সিটি কাউন্সিল ভবনসহ বিভিন্ন প্রধান ঐতিহাসিক স্থাপনা ধ্বংসের জন্য সিরীয় আর্মিকে দায়ী করে। কারণ, তারা এগুলোকে সুরক্ষিত ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছিল।[৪][৫][৬]

প্রাচীন শহর আলেপ্পোর ৩০%[৭] ধ্বংস হয়েছে এ লড়াইয়ে। 

উৎস এবং ভিত্তি[সম্পাদনা]

প্রাচীন আলেপ্পোর নকশা
খুশরুইয়াহ মসজিদ, খান আল শৌনেহ এবং কার্লটন দুর্গ হোটেল সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল আলেপ্পোর লড়াইয়ে। 

কুয়াইক নদীর তীরে অবস্থিত এ প্রাচীন শহর ঘিরে আছে আটটি পর্বত। পর্বতগুলো হল তেল আস-সওদা, তেল আয়শা, তেল আস-সেত, তেল আল-ইয়াসমিন, তেল আনসারি, আন আত-তাল, আল-জাল্লুম, বাহসিতা। [৮] এদের আয়তন প্রায় ১৬০ হেক্টর (৪০০ একর; ১.৬ কিমি)। এই প্রাচীন শহর ঘেরাও করা ছিল ঐতিহাসিক ৫ কিমি (৩ মা) দীর্ঘ দেয়াল দিয়ে। সর্বশেষ পুনঃনির্মাণ হয়েছিল মামলুকের শাসনামলে। অধিকাংশ অংশেই এর চিহ্ন মুছে গেছে। এর নয়টি ফটকের ৫টি সংরক্ষিত আছে পরিখা দিয়ে ঘেরাও করে।

পুরনো শহরের নতুনতর জেদেদেহ কোয়ার্টার প্রথম নির্মাণ করা হয়েছিল খ্রিস্টান কর্তৃক ১৫শ শতাব্দীতে। উত্তর উপশহরীয় অঞ্ছলের দিকে, মঙ্গোলদের আলেপ্পো থেকে চলে যাওয়ার পর। জেদেদেহ আলেপ্পোর কারাগার মতন বাসস্থানের অন্যতম সেরা নিদর্শন। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে, অন্যান্য অনেক আবাসন গড়ে উঠেছিল শহরের দেয়ালের বাইরে ১৫শ এবং ১৬শ শতাব্দীতে। 

ঐতিহাসিক সময়কাল[সম্পাদনা]

ইতিহাসে আলেপ্পো ছিল যে রাজ্যগুলোর অংশ:

প্রাগৈতিহাসিক এবং প্রাক-চিরায়ত যুগ[সম্পাদনা]

প্রাচীন আলেপ্পো
আলেপ্পো দুর্গের অভ্যন্তরে হাদাদ মন্দির

আলেপ্পো প্রত্নতাত্ত্বিকদের দেখা পায় নি বলতে গেলে, যতদিন না আধুনিক শহর প্রাচীন শহরকে গ্রাস করা শুরু করেছিল। 

আদি ব্রোঞ্জ যুগ[সম্পাদনা]

ইতিহাসে আলেপ্পোর খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল দামাস্কাসেরও আগে। খ্রস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে আরমি হিসেবে আলেপ্পোদের চিহ্নিত করা সত্য হলে, ইবলার সাথে সম্পর্কিত নগর রাষ্ট্র সঠিক। আধুনিক তেল বাজীতেও আরমি চিহ্নিত হয়েছে। [৯] জিওভান্নি পেত্তিনাতো আরমিকে ইবলার বিপরীত অহংকার বলে বর্ণনা করেছেন। আক্কাদের নারাম সিন (অথবা তার দাদা সারগন) ইবলা এবং আরমান উভয়ই ধ্বংস করেছিলেন খ্রিস্টপূর্ব ২৩শ শতকে।[১০][১১]

মধ্য ব্রোঞ্জ যুগ[সম্পাদনা]

প্রাচীন ব্যাবিলনীয় যুগে আলেপ্পোর নাম পাওয়া যায় হালাব (হালবা) প্রথমবারের মত। আলেপ্পো ছিল সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ইয়ামহাদ অঞ্চলের আমোরাইট রাজবংশের রাজধানী। ইয়ামহাদ অঙ্গরাজ্য (খ্রিস্টপূর্ব ১৮০০-১৬০০ অব্দ), পরিচিত ছিল হালাবের ভূমি হিসেবে যা তৎকালে নিকট পূর্বাঞ্চলে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল। [১২] 

হিট্টি এবং মুরসিলিস ১ খ্রিস্টপূর্ব ষোড়শ শতাব্দীতে ইয়ামহাদকে ধ্বংশ করে দেয়। তবে, আলেপ্পো শীঘ্রই এর নেতাসুলভ ভূমিকা নিয়ে উঠে আসে সিরিয়ায়।

আধুনিক ব্রোঞ্জ যুগ[সম্পাদনা]

পারশাতাতার অঞ্চলে ক্ষমতার শুন্যতা সুযোগ নিয়ে মিতানির অঙ্গরাজ্যের রাজা হুরিয়ান আলেপ্পো জয় করে বসেন খ্রিস্টপূর্ব ১৫শ শতকে। পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে আলেপ্পোকে পাওয়া গেছে মিতান্নি, হিট্টি এবং মিশরীয়দের মধ্যে লড়াইয়ের লক্ষ্য হিসেবে।

মধ্যযুগ এবং শহরের সম্প্রসারণ[সম্পাদনা]

মামলুক শাসনামলে সংস্কার করা সিংহাসন মিলনায়তন। 

সাসানীয় সাম্রাজ্যের পারসিকরা সিরিয়া আক্রমণ করে হঠাৎ করে ৭ম শতাব্দীর শুরুতে। শীঘ্রই আলেপ্পোর পতন হয় খালিদ বিন ওয়ালিদের হাতে আরবদের কাছে ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে। ৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে, এটি হামদানিদের রাজা সায়েফ আল-দৌলা অধীনে স্বাধীন আমিরশাহী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে আলেপ্পো সমৃদ্ধির পথে এগুতে থাকে। 

৯ আগস্ট ১১৩৮ খ্রিষ্টাব্দে, এক মারাত্মক ভূমিকম্প আঘাত হানে আলেপ্পো এবং এর আশেপাশের অঞ্চলে। যদিও বর্তমানে এসে তৎকালীন ক্ষতি নিরূপণ নির্ভরযোগ্য নয়, কিন্তু বিশ্বাস করা হয় সে ভূমিকম্পে ২৩০,০০০ লোক মৃত্যুবরণ করেছিল, যা কিনা ইতিহাসের ৫ম বৃহত্তম ভূমিকম্প। 

তৈমুর লং ১৪০০ খ্রিষ্টাব্দে আলেপ্পো আক্রমণের পর এটি ধ্বংস করে দেয়। ফলে খ্রিস্টানরা শহরের প্রাচীরের বাইরে অভিবাসিত হয় এবং ১৪২০ খ্রিষ্টাব্দের মাঝে নিজেদের বাসস্থান প্রতিষ্ঠা করে উত্তর-পশ্চিম উপশহর এলাকায়। এভাবে জন্ম নেয় জেদেদেহ আবাসিক এলাকা। জেদেদেহর বাসিন্দারা ছিল মূলত দালাল শ্রেণীর লোক যারা বিদেশী বণিক এবং স্থানীয় বণীকদের মধ্যে বাণীজ্য সুগম করত। ঐতিহাসিক প্রাচীরের বাইরে ১৫শ এবং ১৬শ শতকে আরো অনেক জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। 

উইলিয়াম শেকসপিয়রের ম্যাকবেথ এ একজন জাদুকরীর মাধ্যমে এই শহরের নাম একবার আসে। ম্যাকবেথ লেখা হয়েছিল ১৬০৩ এবং ১৬০৭ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে।[১৩]

দর্শনীয় স্থান[সম্পাদনা]

আলেপ্পো বিবিধ মিশ্র স্থাপত্যকলায় সমৃদ্ধ হয়েছে অন্যদের দ্বারা শাসিত হয়ে যাদের মধ্যে রয়েছে রোমান, বাইজেন্টানীয়, সেলজুক, মামলুক এবং তুর্কিরা। [১৪]

ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ শতকের বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা যেমন- ক্যারাভানসরাই, সিজারিয়া, কুরানিক বিদ্যালয়, হাম্মামখানা এবং ধর্মীয় ভবনসমূহ যা আলেপ্পোর প্রাচীন শহরে পাওয়া গেছে। জেদেদেহর কোয়ার্টার শোড়শ এবং সপ্তদশ শতকের আলেপ্পাইন মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের কীর্তি যা পাথর কেটে ঘর নির্মাণের ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। 

বাজার এবং খানকাহ [সম্পাদনা]

জেদেদেহতে  পশম বাজারের নিকটে বাওয়াবেত আল-ইয়াসমিন
প্রাচীন আলেপ্পো, আল মদিনা বাজারের প্রবেশপথ

শহরের কৌশলী ব্যবসায়িক অবস্থান আকর্ষণ করে সব ধরনের জাতির লোকেদের। বিভিন্ন বিশ্বাসে বিশ্বাসী লোকেরাও এখান থেকে ব্যবসায়ী সুযোগ নিতে পারেন। আলেপ্পোর বাণিজ্যিক সড়ক মিলেছে চীন, মেসোপটেমিয়ার সাথে পূর্বদিকে, ইউরোপে পশ্চিম দিকে এবং উর্বর চন্দ্রকলা ও মিশর দক্ষিণ দিকে। বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ আচ্ছাদিত বাজারও অবস্থিত আলেপ্পোয় যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩ কিলোমিটার (৮.১ মাইল)।[১৫]

সবচেয়ে গুরুরত্বপূর্ণ খানকাহ এবং আচ্ছাদিত বাজারগুলো যেগুলো আল মদিনা বাজারের আওতাধীন: ১৪৫০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে খান আল কাদি, ১৬শ শতাব্দীর গোড়া থেকে খান আল সাবুউন, ১৫৩৯ খ্রিষ্টাব্দের খান নাহহাসিন, ১৫৪৬ থেকে খান আল শৌনেহ, ১৫৭৪ থেকে খান আল জুমরক, ১৬৮২ থেকে খান আল ওয়াজির বাজার, আল-ফারেইন বাজার, আল-দিরা বাজার, আল-হিরাজ বাজার, আল-জির্ব বাজার, মার্কোপোলি বাজার, আস-সিয়াগ বাজার, দ্যা ভেনেসিয়ান্স খানকাহ, খান আল-হারির বাজার ষোড়শ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ইত্যাদি। 

ঐতিহাসিক ভবনসমূহ[সম্পাদনা]

আলেপ্পোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ভবনগুলো:

আলেপ্পোর দুর্গ
আল শিবানি চার্চ স্কুল
বিমারিস্তান আর্ঘুন আল কামিলি, ১৩৫৪
বাব আল-ফারাজ ঘড়ি মিনার
ডার বেসিলে গলি জেদেয়দেহতে অবস্থিত।
  • শহরের শীর্ষে বিরাট দুর্গ নির্মিত হয়েছিল যার উচ্চতা ছিল ৫০ মি (১৬৪ ফু)। খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতকে একটি মন্দির এবং ২৫টি ভাস্কর্য ছিল বলে কার্বন ডেটিং এর মাধ্যমে তথ্য বেরিয়েছে। [১৬] বর্তমান অনেক স্থাপনার সময়কাল পরীক্ষা করে পাওয়া গেছে ত্রয়োদশ শতক। দুর্গটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল্ল ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দের ভূমিকম্পে। 
  • আল-মাতবাখ আল-আজামি, যা ছিল দুর্গের কাছে অবস্থিত দ্বাদশ শতকের একটি প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন জেনগি আমির মাজেদ আদ-দীন আদ-দায়া। ভবনটি ১৫শ শতকে সংস্কার করা হয়। ১৯৬৭-১৯৭৫ পর্যন্ত এটি ছিল জনপ্রিয় ঐতিহ্যবাহী জাদুঘর। 
  • দ্বাদশ শতাব্দীর আল শিবানি চার্চ স্কুল, একটি পুরনো গির্জা এবং স্কুল অব ফ্রান্সিসকান মিশনারিজ অব ম্যারি অবস্থিত ছিল এই শহরে, বর্তমানে এটি একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 
  • ১২৩৭ খ্রিষ্টাব্দে সুফিদের আশ্রম হিসেবে খানকাহ আল ফারাফিরা নির্মাণ করেন দায়ফা খাতুন। 
  • ১৩৫৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বিংশ শতকের গোড়া পর্যন্ত বিমারিস্তান আর্ঘুন আল-কামিলি নামে এক আশ্রমের কাররযক্রম চালু ছিল। 
  • ১৬শ শতাব্দীতেদার রজব পাশা নামে আল-খাঙ্কাহ সড়কের কাছে বৃহৎ অটালিকা নির্মাণ করা হয়। একবিংশ শতকের প্রথম দশকে বাড়িটি সংকার করা হয় এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিণত করা হয় কাছেই একটি থিয়েটার মিলনায়তনের সাথে। 
  • জুনব্লাত প্রাসাদ নির্মাণ করা হয় ১৬শ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে। নির্মাণ করেন জানপোলাদ বেক ইবনে কাসিম। তিনি ছিলেন তৎকালীন আলেপ্পোতে কুর্দিদের আমির এবং জানপোলাদ পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা। 
  • বেইত মাররাশ নির্মাণ করে মাররাশ পরিবার ১৮শ শতকের শেষের দিকে। এটি ছিল আল-ফারাফিরা আবাসনে (কোয়ার্টারে) অবস্থিত এক অট্টালিকা।
  • বাব আল-ফারাজ ঘড়ি মিনার নির্মাণ করা হয়েছিল ১৮৯৮-১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে। নির্মাণ করেছিলেন অস্ট্রীয় স্থপতি চার্তিয়ের (Chartier)।[১৭]
  • গ্র্যান্ড সেরাইল ডি'আলেপ যা কিনা আলেপ্পোর প্রাক্তন শাসনকর্তার ভবন নির্মিত হয়েছিল ১৯২০ এর দিকে এবং উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছিল ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে। 
  • আলেপ্পোর জাতীয় গ্রন্থাগার [১৮] নির্মিত হয়েছিল ১৯৩০ এর দিকে এবং ১৯৪৫ এ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছিল। 

মাদরাসা[সম্পাদনা]

  • আল-হালাউইয়াহ মাদরাসা নির্মিত হয় ১১২৪ খ্রিষ্টাব্দে আলেপ্পোর ৫ম শতকের সেইন্ট হেলেনার বাইজেন্টাইন গির্জার স্থানে। পরম্পরা মতবাদ অনুযায়ী রোমান মন্দির অবস্থিত ছিল একদা ওখানে। কন্সটান্টিন দ্যা গ্রেটের মা সেইন্ট হেলেনা নির্মাণ করেছিলেন বাইজেনটাইন গির্জা। যখন ক্রুসেডরা রাজ্যের আশেপাশে ডাকাতি করছিল তখন শহরের প্রধান বিচারক সে গির্জাকে মসজিদে রূপান্তর করে ফেলেন। ১১৪৯ খ্রিষ্টাব্দে, নূর আল-দিন এটিকে রূপান্তরিত করেন মাদরাসায়; যা হল ইসলাম ধর্মশিক্ষার বিদ্যালয়। [১৯] বর্তমানে, ৬ষ্ঠ শতকের প্রাচীন গির্জার বাইজেনটাইন স্তম্ভগুলো দেখা যায় মিলনায়তনে।
  • আল মুকাদ্দামিয়াহ মাদরাসা অবস্থিত খান আল-তুতুন গলিতে যা ১১২৩ খ্রিষ্টাব্দের পূর্বে ছিল একটি গির্জা। এটি আলেপ্পোর বিচারক ইবনে-খাসাবের মাধ্যমে গির্জা থেকে মসজিদে রূপান্তর করা হয়। পরবর্তীতে ১১৬৮ খ্রিষ্টাব্দে এটি মাদরাসায় রূপান্তর করা হয়। নূর আল-দীনের শাসনামলে ইজ এদ্দিন আবদাল মালেক আল-মুকাদাম এ কাজ করেন। আলেপ্পোতে এখন পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে প্রাচীন মাদরাসা যা এখনো কার্যক্রম চালু রেখেছে।[২০]
  • আল শাদবাখতিয়া মাদরাসা, ১১৯৩ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত অন্যতম আইয়ুবীয় মাদরাসা যা সংরক্ষিত হয়েছে। এটি নির্মাণ করেন জামাল আল দীন শাদবাখতিয়া যিনি কিনা ছিলেন জেনগি রাজবংশের মুক্ত করে দেয়া গোলাম বা দাস। [২১]
  • আল জাহিরিয়া মাদরাসা, নির্মিত হয় ১২১৭ খ্রিষ্টাব্দে শহরের প্রাচীরের বাইরে বাব আল-মাকামের দক্ষিণে আজ জাহির ঘাজি কর্তৃক।[২২]
  • আল সুলতানিয়াহ মাদরাসা,যাত্রা শুরু করে আলেপ্পোর গভর্নর আজ জাহির ঘাজির মাধ্যমে আর সম্পন্ন হয় ১২২৩-১২২৫ খ্রিষ্টাব্দে তার সন্তান মালেক আল-আজিজ মোহাম্মাদ কর্তৃক এ ভবনটি বিখ্যাত প্রার্থনা কক্ষের মিহরাবের জন্য। সুলতান মালিক আল জাহেরের সমাধি ধারুণ করে এই মিহরাব। সুলতান মালিক ছিলেন সুলতান সালাহউদ্দিনের পুত্র।[২৩]
  • আল-ফিরদাউস মাদরাসা, যেটিকে বলা হয় আলেপ্পোর সবচেয়ে সুন্দর মাদরাসা। এটি দক্ষিণ-পশ্চিমে শহরের প্রাচীরের বাইরে বাব আল-মাকামের ফটকের দিকে নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ করেন আজ-জাহির ঘাজির বিধবা স্ত্রী দাফিয়া খাতুন ১২৩৫-১২৩৬ খ্রিষ্টাব্দে। 
  • আল-কামিলিয়াহ মাদরাসা, নির্মিত হয়েছিল ১২৩০-৩৭ খ্রিষ্টাব্দে।[২৪]
  • আল শারাফিয়া মাদরাসা অবস্থিত গ্রেট মস্কের উত্তর-পূর্বে। আবদ আল-রাহিম ইবনে আল আজমি এবং তার পুত্র শরাফ আল দীন আবদুল রহমান ১২৪২ খ্রিষ্টাব্দে এটি নির্মাণ করেন। [২৫]
  • আল তুরানতাইয়া মাদরাসা অবস্থিত শহরের প্রাচীরের বাইরে বাব আল-নিরাবের পুবে; নির্মিত হয় ১২৪১-৫১ খ্রিষ্টাব্দে আলেপ্পাইন ইতিহাসবিদ ইবনে আল-উদায়ম।[২৬]
  •  আল আহমাদিয়া মাদরাসা উন্মুক্ত করে দেয়া হয় ১৭২৪ খ্রিষ্টাব্দে আল জাল্লাউম জেলায়। [২৭]
  • আল উথমানিয়া মাদরাসা অবস্থিত বাব লা-নাসরের কাছে; প্রতিষ্ঠিত হয় ১৭৩০ খ্রিষ্টাব্দে তুরস্কের পাশা আল দুরাকির হাতে।[২৮]

প্রার্থনার স্থানসমূহ[সম্পাদনা]

খুসরুইয়াহ মসজিদ
চল্লিশ শহিদের স্মরণে আর্মেনিয় ক্যাথেড্রাল
  • আল-শুয়াইবিয়া মসজিদ পরিচিত আল ওমারি, আল তুতেহ এবং আল-আতরাস মসজিদ হিসেবে। এটি আলেপ্পোর সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদ, নির্মিত হয় ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে। এটিতে বিধৃত রয়েছে প্রাচীন রোমান বিজয়সূচক খিলান। যা একদা রোমান নগর বা কলোনি ডিকুমিনাস ম্যাক্সিমাসের শুরুর ইঙ্গিত দেয়। ভবনটি পুরোপুরি বিনির্মাণ করা হয় ১১৪৬ থেকে ১৪০১ এর মধ্যে। এটি ১২শ শতকের কুফিক লিপি এবং সজ্জার পরিচয় বহন করে।
  • উমায়েদ গোত্রের খলিফা ওয়ালিদ ১ এবং তার পরবর্তী খলিফা সুলায়মান কর্তৃক ৭১৫ খ্রিষ্টাব্দে আলেপ্পোর মহান মসজিদ নির্মিত হয়। এই ভবনে রয়েছে জন দ্যা বাপ্টিস্টের পিতা জাকারিয়ার সমাধি। বর্তমান স্থাপনার প্রবর্তন করেন নূর আল-দীণ ১১৫৮ খ্রিষ্টাব্দে। এটি মঙ্গোলরা আক্রমণ করে ধ্বংস করে ১২৬০ খ্রিষ্টাব্দে। পরে এটি পুনঃনির্মিত হয়। এই মিনারটি ৪৫ মিটার উঁচু যা মধ্যযুগীয় সিরিয়ার প্রধান স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। [২৯] এ স্তম্ভ প্রতিষ্ঠা করা ১০৯০-১০৯২ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম সেলজুক সুলতান তুতুশ ১ এর অধীনে। বিভিন্ন শৈলীতে এর রয়েছে চারটি বহির্ভাগ। 
  • প্রবেশমুখে আগ্নেয় শিলা ব্যাসল্টে নির্মিত আল কাইয়ান মসজিদ (কাকেদের মসজিদ) নির্মাণ করা হয় ১২শ শতকে। মসজিদের দেয়ালে আনাতোলিয়ান হায়ারোগ্লিফিক লিপি দেখা যায়। 
  • মামলুক যুগে ১৩১৮ খ্রিষ্টাব্দে আলতুন বোঘা মসজিদ নির্মাণ করা হয়। 
  • খান আল-ওয়াজিরের নিকটে আল-সাহিবিয়াহ মসজিদ নির্মাণ করা হয় ১৩৫০ খ্রিষ্টাব্দে। 
  • আল-তাওয়াসি মসজিদ নির্মাণ করা হয় ১৩৯৮ খ্রিষ্টাব্দে এবং ১৫৩৭ এ এটি সংস্কার করা হয়। এর কলাম সংবলিত বহির্ভাগ খুবই চমৎকার শিল্পের নিদর্শন। 
  • আল-ওত্রুশ মসজিদ মামলুক শিল্পে নির্মাণ করা হয় ১৩৯৮ খ্রিষ্টাব্দে। সুন্দর বহির্সজ্জার জন্য এই বিখ্যাত। এর প্রবেশমুখের শীর্ষে ঐতিহ্যবাহী ইসলামিক শিল্পমান সংবলিত গম্বুজও এর সৌন্দর্যকে বাড়িয়েছে। ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে এটি সংস্কার করা হয়। 
  • আল-সাফফাহিয়াহ মসজিদ, ১৪২৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এবং ১৯২৫ এ আংশিক সংস্কারকৃত। এটি বিখ্যাত এর সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অষ্টভূজীয় মিনারের চূড়ার জন্য। 
  • খুসরুইয়াহ মসজইদ নির্মাণ সম্পন্ন হয় ১৫৪৭ খ্রিষ্টাব্দে যার নকশা করেন বিখ্যাত তুর্কি স্থপতি মিমার সিনান। 
  • আল-আদিলিয়াহ মসজিদ নির্মিত হয় ১৫৫৭[৩০] খ্রিষ্টাব্দে আলেপ্পোর তুর্কি প্রশাসক মোহাম্মদ পাশার দ্বারা। 
  • জেদেদেহ আবাসনে আর্মেনিয় এপোস্টলিক চার্চের অধীনে হলি মাদার অব গডের প্রাচীন গির্জা নির্মিত হয় ১৪২৯ খ্রিষ্টাব্দের পূর্বে। 
  • চল্লিশ শহিদের আর্মেনিয় এপোস্টলিক গির্জা নির্মিত হয় ১৪২৯ খ্রিষ্টাব্দে জেদেদেহ আবাসনে। 
  • মার আসসিয়া আল-হাকি গির্জা নির্মিত হয় ১৫শ শতকে জেদেদেহতে। এটি সিরীয় ক্যাথলিক গির্জা। 
  • গ্রীক সনাতনীদের গির্জা ডরমিনেশন অফ আওয়ার লেডি নির্মিত হয় ১৫শ শতকে। 
  • জেদেদেহ খ্রিস্টীয় আবাসিক এলাকার গির্জাগুলো হল সেইন্ট এলিয়াস গির্জা, আর্মেনিয়ান ক্যাথলিক গির্জা এবংগ কুমারী ম্যারির মেলকাইট গ্রিক ক্যাথলিক গির্জা। 
  • আলেপ্পোর কেন্দ্রীয় সিনাগগ অথবা আল-বান্দারা সিনাগগ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছিল ৯ম শতকেই ইহুদি সপ্রদায়ের প্রচেষ্টায়। সিনাগগ হলো ইহুদি সম্প্রদায়ের উপাসনালয়। ১৪২৮ খ্রিষ্টাব্দের পূর্বে সিনাগগটি বেহ কয়েকবার ধ্বংস হয়েছিল এবং পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল। সম্প্রতি আমেরিকায় থাকা আলেপ্পাইন ইহুদী অভিবাসীদের প্রচেষ্টায় সেটি পুনরায় নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। 

ফটক[সম্পাদনা]

আলেপ্পোর দেয়াল এবং কিন্নাসরিনের ফটক যা ১২৫৬ তে পুনর্নির্মিত হয় আন-নাসির ইউসুফ কর্তৃক।

শহরের পুরনো অংশ ৫-কিলোমিটার (৩.১-মাইল) দীর্ঘ মোটা প্রাচীর দ্বারা ঘেরাওকৃত। দেয়ালগুলোয় রয়েছে নয়টি ঐতিহাসিক ফটক (যাদের বেশ কয়েকটি ভালভাবেই সংরক্ষিত হয়েছে)। ঘড়ির কাঁটা অনুযায়ী উত্তর-পূর্ব দুর্গ থেকে এই ফটকগুলো হল:

  • বাব আল-হাদিদ (লৌহ ফটক) 
  • বাব আল-আহমার (লোহিত ফটক, সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত)
  • বাব আল-নাইরাব (নাইরাবের ফটক, সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত)
  • বাব আল-মাকাম (শ্রাইনের ফটক)
  • বাব কিন্নাসরিন (কিন্নাসরিনের ফটক)
  • বাব আন্তাকেয়া (আন্তিওখের ফটক) 
  • বাব জেনেন (বাগানের ফটক, সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত)
  • বাব আল-ফারাজ (বদান্যতার ফটক, সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত)
  • বাব আল-নাসর (বিজয়ের ফটক, আংশিক ধ্বংসপ্রাপ্ত)

হাম্মামখানাসমূহ[সম্পাদনা]

হাম্মাম আল-নাহহাসিন

মধ্যযুগে আলেপ্পোয় ছিল ১৭৭টি হাম্মামখানা, মঙ্গোলরা আলেপ্পো আক্রমণের পূর্ব পর্যন্ত। মঙ্গোলরা  শহরের অনেক প্রধান প্রধান স্থাপনা ধ্বংস করে যায়। বর্তমানে ১৮টি হাম্মামখানা পুরনো শহরে চালু আছে। 

  • হাম্মাম আল-সুলতান নির্মিত হয়েছিল ১২১১ খ্রিষ্টাব্দে আজ-জাহির ঘাজি কর্তৃক। 
  • হাম্মাম আল-নাহহাসিন নির্মিত হয়েছিল ১২শ শতাব্দীতে খান আল-নাহহাসিনের নিকটে।
  • হাম্মাম আল-বায়াদাহ ছিল মামলুক শাসনামলের, ১৫৪০ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত।
  • হাম্মাম ইয়ালবুঘা নির্মিত হয়েছিল ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে আলেপ্পোর আমির সাইফ আদ-দীন ইয়াল বুঘা আল-নাসেরি কর্তৃক।
    [৩১]
  • হাম্মাম আল-জাওহারি, হাম্মাম আজদেমির, হাম্মাম বাহরাম পাশা, হাম্মাম বাব আল-আহমার ইত্যাদি। 

জেলা এবং উপবিভাগসমূহ[সম্পাদনা]

বাব আল-ফারাজের প্রবেশমুখে অবশিষ্ট প্রাচীন দেয়াল।
দুর্গের আশেপাশের পুরনো সড়ক, ওঘলুবেক, আলতুনবোঘা জেলা

প্রাচীরের অভ্যন্তরে দুর্গের আশেপাশের পুরনো আবাসনগুলো:

  • আল-আজাম (الأعجام) জেলা অবস্থিত আদ-দাহদিলের (الدحديلة) পাশে। 
  • আলতুনবোঘা (ألتونبوغا) জেলা অবস্থিত ওঘলুবেক (أوغلبك) এবং সাহেত আল-মিলহের(ساحة الملح) সাথে। 
  • আকাবেহ (العقبة) জেলা অবস্থিত বাহসিতা (بحسيتا), খান আল হারির (خان الحرير), আল-মাসাবেন (المصابن) ঞ্জেব আসাদ আল্লাহর (جب أسد الله) পাশে। 
  • বায়াদাহ (البياضة) জেলা অবস্থিত জেবেইলেহ (الجبيلة), কেলতাউয়ে (الكلتاوية) এবং মুস্তাদামিয়েহের (المستدامية) পাশে। 
  • ফারাফিরা (الفرافرة) জেলা অবস্থিত বান্দারা (البندرة), কাস্তাল হাজ্জারিন (قسطل الحجارين), আদ-দাব্বাঘা আল-আতিকা (الدباغة العتيقة), সুয়েইকাত আলি (سويقة علي) এবং সুয়েইকাত হাতেমের (سويقة حاتم) পাশে। 
  • জাল্লুম (الجلوم) জেলা অবস্থিত সাফফাহিয়েহ (السفاحية), খান আল-ওয়াজির (خان الوزير) এবং সৌক আল-মদিনার (سوق المدينة) পাশে।
  • কাল'আত আল-শরিফ (قلعة الشريف) জেলা অবস্থিত তাল্লেত আলসৌদার (تلة السودا) পাশে।
  • আল-কাসিলেহ (القصيلة) জেলা অবস্থিত আল-হাওরানেহের (الحورانة) পাশে।
  • সাহেত বিজ্জেহ (ساحة بزة) জেলা অবস্থিত মাঘাজলেহর (المغازلة) পাশে।

প্রাচীরের বাইরে পুরনো আবাসনগুলো:

জেদেদেহ কোয়ার্টারে অবস্থিত আল-হাতাব স্কয়ার
  • আবরাজ (الأبراج) জেলা অবস্থিত হারেত আল পাশা (حارة الباشا) এবং শাকের আঘার (شاكر آغا) পাশে। 
  • আঘিওল(أقيول) জেলা অবস্থিত শামেসাতিয়ে (الشميصاتية) পাশে।
  • আলমাজি (ألمه جي) অবস্থিত কাস্তাল হারামি (قسطل الحرامي), ওয়াকিলিয়েহ (الوكيلية) এবং সারা'সাউসের (شرعسوس) পাশে।
  • বাব আল-মাকাম (باب المقام) জেলা অবস্থিতাল-মাঘায়ের (المغاير) এবং মাকামতের (المقامات) পাশে।
  • বাল্লাত(البلاط) অবস্থিত কাত্তানেহ (القطانة) এবং সাহেত হামাদের (ساحة حمد) পাশে।
  • আদ-দাল্লালিন (الدلالين) জেলা।
  • আদ-দুদু(الضوضو) জেলা অবস্থিত সাফসাফেহ (الصفصافة), জাব আল-কুব্বেহ (جب القبة), জাব কারামান (جب قرمان) এবং বারিয়েত আল-মাসলাখের (برية المسلخ) পাশে।
  • ফারদোস (الفردوس) জেলা।
  • হাজ্জাজেহ (الهزازة) অবস্থিত আত-তাদরিবেহ (التدريبة) জুকাক আল আরাবা'ইনের (زقاق الأربعين) পাশে।
  • ইবনে ইয়া'কুব (ابن يعقوب) জেলা অবস্থিত বানকুসা (بانقوسا) মুশাতিয়েহের (المشاطية) পাশে।
  • বেইত মেহেব জেলা অথবা জেদেদেহ কোয়ার্টার (بيت محب أو الجديدة) অবস্থিত সিসসি (سيسي), সালিবেহ (الصليبة), বাওয়বেত আল-কাসাব (بوابة القصب), বাসাতনেহ (البساتنة), আল-মুবাল্লেত (المبلط) এবং সাহেত আত-তানানিরের(ساحة التنانير) পাশে।
  • কাল্লাসেহ (الكلاسة) জেলা।
  • মুহাম্মদ বেক (محمد بك) জেলা বাদেঞ্জক (بادنجك), বাজ্ঞারা (البكارة) এবং শাখানেহের (السخانة) পাশে।
  • কাদি আসকর (قاضي عسكر) জেলা হামজা বেকের (حمزة بك) পাশে।
  • কারলেক (قرلق) জেলা।
  • কাস্তাল আল-মশ্ত (قسطل المشط) জেলা আল-আরিয়ান (العريان), ত্রাব আল-ঘুরাবা (تراب الغرباء) এবং মাওয়ার্দির (الماوردي) পাশে।
  • সাজলিখান (صاجليخان) জেলা আঘাজেকের (أغاجك) পাশে।
  • আস-সালাহিন (الصالحين) জেলা।
  • তাতারলার (تاتارلار) জেলা।

প্রাচীন শহর সংরক্ষণ[সম্পাদনা]

প্রাচীন ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে আলেপ্পোর হৃদয়গ্রাহী বাজার, হাম্মামখানা, মাদরাসা, মসজিদ এবং গির্জাসমূহ সংরক্ষণ করা আবশ্যক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এ শহরটি তাৎপর্যপূর্ণভাবে পুনর্বার নকশা করা হয়েছিল। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে ফরাসি আর্কিটেক্ট আঁদ্রে গাটন কয়েকটি প্রশস্ত রাস্তা কাটেন শহরের মধ্য দিয়ে আধুনিক যুগের যানজট মোকাবেলায়। ১৯৫৪-১৯৮৩ তে অনেক প্রাচীন ভবন ধ্বংস করা হয় আধুনিক এপার্টমেন্ট নির্মাণের জন্য। বিশেষত, উত্তরপূর্ব অঞ্চলে (বাব আল ফারাজ এবং বাব আল জিনান) এটি বেশি সংঘটিত হয়। যেহেতু প্রয়োজনের খাতিরে এই অনন্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার প্রয়োজন জেগে ওঠে, তাই গাটনের মহাপরিকল্পনা ১৯৭৯ তে নিষিদ্ধ করে দিয়ে সুইস দক্ষ শহর পরিকল্পনাবিদ স্টেফানো বায়াঙ্কার নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এ পরিকল্পনায়, আলেপ্পোর ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যকলা বজায় রেখে নকশা করা হয়। যার ফলে ১৯৮৬তে প্রাচীন শহর আলেপ্পোকে ইউনেস্কো ঘোষণা করে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান হিসেবে।[২]

বেশকিছু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আলেপ্পো আর্কিওলজিকাল সোসাইটি এবং স্থানীয় শাসকগোষ্ঠীর সাথে যোগ দিয়ে পুরনো শহরকে নতুন করে আবাসন সৃষ্টিতে এগিয়ে আসে পুরনোগুলো সংরক্ষণ করেই। প্রদেশ এবং পৌরসভাগুলো গুরুত্বসহকারে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে প্রাচীন শহরের উন্নয়নে। 

জার্মান কৌশলী সংস্থা (জিটিজেড) এবং আগা খান ফাউন্ডেশনের রয়েছে শহর সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় বড় অবদান। 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

  • সিরিয়ায় পর্যটন
  • আল-শিবানি গির্জা
  • আলেপ্পো
  • আলেপ্পোর যুদ্ধ (২০১২-২০১৬)
  • মৃত শহরসমূহ

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. bleeker। "Alepposeife: Aleppo history"। Historische-aleppo-seife.de। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১০ 
  2. "eAleppo:Aleppo city major plans throughout the history" (Arabic ভাষায়)। 
  3. "Fighting in Aleppo starts fire in medieval souks"। Kyivpost.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১০ 
  4. Bombing of the justice palace
  5. Bombing of Carlton hotel
  6. "Bombing of the city council"। ১৫ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১৮ 
  7. https://www.usnews.com/news/world/articles/2017-01-20/unesco-30-percent-of-aleppos-ancient-city-destroyed
  8. Alexander Russell, সম্পাদক (১৮৫৬)। The Natural History of Aleppo (1st সংস্করণ)। London: Unknown। পৃষ্ঠা 266। 
  9. Paolo Matthiae; Nicoló Marchetti (২০১৩-০৫-৩১)। Ebla and its Landscape: Early State Formation in the Ancient Near East। পৃষ্ঠা 501। আইএসবিএন 9781611322286 
  10. Pettinato, Giovanni (Johns Hopkins University Press, 1991) Ebla, a new look at history p.135
  11. Hawkins, John David (2000) Inscriptions of the iron age p.388
  12. Kuhrt, Amélie (1998) The ancient Near East p.100
  13. "The Tragedy of Macbeth: Act 1, Scene 3"। Shakespeare.mit.edu। ২০১৩-০৫-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১০ 
  14. Yacoub, Khaled। "Travel Postcard: 48 hours in Aleppo, Syria"। Reuters। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১০ 
  15. "eAleppo: The old Souqs of Aleppo (in Arabic)"। Esyria.sy। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১০ 
  16. "Aleppo…Cultural Landmark, Trade Hub by the Chinese News Agency (Xinhua)"। DP-news। ২০১১-০৪-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১০ 
  17. eAleppo Bab al-Faraj tower (in Arabic)
  18. Aleppo Culture National Library of Aleppo (in Arabic)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  19. Halawiyya Mosque and Madrasa ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ মে ২০১২ তারিখে Archnet Digital Library.
  20. Muqaddamiyya Madrasa ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ মে ২০১২ তারিখে Archnet Digital Library.
  21. Shadbakhtiyya Madrasa ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে Archnet Digital Library.
  22. Zahiriyya Madrasa ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে Archnet Digital Library.
  23. Sultaniyya Madrasa ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে Archnet Digital Library.
  24. Kamiliyya Madrasa ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে Archnet Digital Library.
  25. Sharafiyya Madrasa ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে Archnet Digital Library.
  26. "مدارس حلب القديمة ( 2 )"। ৮ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০২১ 
  27. Ahmadiyya Madrasa ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে Archnet Digital Library.
  28. Uthmaniyya Madrasa ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে Archnet Digital Library.
  29. Burns, Russ (১৯৯৯)। Monuments of Syria। New York, London। পৃষ্ঠা 35 
  30. Syrian Ministry of Tourism Baba Antakya & Qennesrin ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে
  31. Carter, Terry; Dunston, Lara; Humphreys, Andrew (২০০৪)। Syria & Lebanon। Lonely Planet। পৃষ্ঠা 186। আইএসবিএন 978-1-86450-333-3