আলাপ:ইয়ামানাশি প্রশাসনিক অঞ্চল

পাতাটির বিষয়বস্তু অন্যান্য ভাষায় নেই।
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

শিরোনাম[সম্পাদনা]

@ব্যা করণ:"য়ামানাশি"- পরিবর্তে "ইয়ামানাশি"-তে পরিবর্তন করেছি। বাংলা শব্দের শুরুতে অন্তঃস্থ য় লেখাটা স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। শব্দের ভেতরে বা শেষে ঠিক আছে। একই যুক্তিতে "ইউরোপ" লিখি, "য়ুরোপ" নয়। অন্যান্য নিবন্ধেও শুরুতে যদি "য়" দেখি, সেগুলিতে "ইয়া", "ইউ", "ইয়ো", ইত্যাদি দিয়ে প্রতিস্থাপন করে দিচ্ছি। বিরোধিতা বা মন্তব্য থাকলে এখানে বা আমার আলাপ পাতায় করতে পারেন। অর্ণব (আলাপ | অবদান) ০৮:৩৬, ২৮ মার্চ ২০১৭ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]

@Zaheen: অর্ণবদা, প্রথমেই বলে রাখি আপনার নজর আমার কাজে পড়েছে বলে নিজেকে ও নিজের আণুবীক্ষণিক নিবন্ধগুষ্টিকে ভাগ্যবান মনে করছি। আমি ২০১৪ থেকে আপনার ফ্যান। আপনি পাকাপাকি উইকিপিডিয়া ছেড়ে চলে গেছেন ভেবে নিতান্ত হতাশ ছিলাম।
তবে বর্তমান সিদ্ধান্তের বিরোধিতাও আছে। ধাপে ধাপে জানাই।
  • জাপানিতে একটা অক্ষর আছে 'ই', আরেকটা আছে 'য়া'। য়া দিয়ে শুরু শব্দগুলোকে যদি বাংলায় ইয়া লিখি, তাহলে মূল জাপানিতে ই-য়া দিয়ে শুরু হওয়া শব্দগুলোকে আলাদাভাবে কী করে বোঝাব?
  • অন্তত রবীন্দ্রনাথ "য়ুরোপ" যাত্রীর ডায়রি লিখেছিলেন। মানছি সেই বানান পরবর্তী সুদীর্ঘ "ইউরোপ" ব্যবহারের ইতিহাসে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে, আর "ইউরোপ" বাংলায় একটা প্রথা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। কিন্তু ঘটনাচক্রে জাপানি নামগুলো এখনও বাংলায় প্রতিষ্ঠিত হয়নি; আমরা যা চাই চালাতে পারি। এই পরিস্থিতিতে জাপানি বর্ণমালা জেনে এ'কথা বলছি।
  • আরেকটা কথা। বাংলায় অনেক বানানই অস্বাভাবিক লাগে উচ্চারণের অসুবিধার জন্য না, বরং স্রেফ এই কারণে যে এখনও অবধি বানানগুলো বাংলায় লেখাই হয়নি। যদি বাংলাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হয়, তাহলে না চাখা খাবারদাবার চেখে চেখেই এগোতে হবে বলে মনে করি। একবার চাখলে তারপর থেকে আর অচেনা লাগবে না। এই বিষয়ে দুটো সাব-পয়েন্ট:
    • ইংরেজি দেখুন। সে'ভাষা এত জাত বেজাতের শব্দ খেয়েছে, বাছবিচার না করেই খেয়েছে, যে তার বর্ণমালা আর উচ্চারণের মধ্যে সামঞ্জস্য বলে কিছুই আর বাকি নেই। তা'বলে কি তার কোনও অসুবিধে হচ্ছে বলে মনে হয়?
    • আন্দাজ উনবিংশ শতকে লেখা হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর একটা নিবন্ধে নতুন বাংলা শব্দ প্রণয়নের বেশ কিছু পদ্ধতিগত সমালোচনা করা ছিল। তাতে সদ্যপ্রণীত কিছু শব্দকে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছিল, যেমন "প্রতিযোগিতা" ও "অভিযোগ"। ওখানে উনি বলছেন, কেউ কস্মিনকালেও এরকম শব্দ শোনেনি, তাই এগুলো বাতিল করতে হবে বা কালের নিয়মে নিজে থেকেই বাতিল হয়ে যাবে। আমরা জানি দুটোই বহাল তবিয়তে টিকে গেছে, আর খুব গুরুত্বপূর্ণও হয়ে উঠেছে। আমি মনে করি জাপানির "য়া" এবং "ৎসু" দিয়ে শুরু হওয়া শব্দগুলোও দিব্যি চলবে।

এই যুক্তিগুলো আমার মাথায় রয়েছে। আপনি কী মনে করেন?--ব্যা করণ (আলাপ) ০৩:৩১, ২৯ মার্চ ২০১৭ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]

@ব্যা করণ: আপনার যুক্তিগুলি পড়েছি। চমৎকার সব যুক্তি যা চিন্তা করতে বাধ্য করে। আমি এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই অনেক বছর যাবৎ বেশ চিন্তাভাবনা করেছি এবং আমার চিন্তাভাবনার কিছুটা বিবর্তনও ঘটেছে। এখানে আপনার সাথে শেয়ার করছি।
  • মূল জাপানিতে "ই-য়া" অক্ষর দিয়ে শুরু হওয়া শব্দগুলিকেও আমরা "ইয়া" হিসেবে লিখতে পারি। তবে আপনি হয়ত আশঙ্কা করছেন যে ya=ইয়া হলে "iya"-কে "ইইয়া" লিখতে হবে, কিন্তু আমাদের প্রতিবর্ণীকরণে নীতি এক্ষেত্রে নমনীয়। জাপানি শব্দের জাপানি বানানের প্রতিটি অক্ষর ভেঙে ভেঙে দেখানো আমাদের প্রতিবর্ণীকরণের মূল লক্ষ্য নয়। আমাদের লক্ষ্য বাংলা বর্ণ ব্যবহার করে মূল জাপানি শব্দের উচ্চারণের যতটূকু কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব, ততটুকু যাওয়া। এখানে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নমনীয় হতে হবে। এটি তেমনই একটি ক্ষেত্র।
  • কখনো কখনো বিদেশী শব্দের বানানের প্রতিটি অক্ষর বা written element-এর সাথে বাংলা একটি বর্ণ হুবহু মিলে যাবে, কখনো মিলবে না। এখানে একাধিক পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে।
ক) যদি কোন বিদেশী শব্দে প্রতিটি বিদেশী বর্ণের একটিমাত্র ধ্বনিমান থাকে এবং প্রতিটি ধ্বনিমানের জন্য বাংলাতেও একটি বর্ণ নির্দিষ্ট করা থাকে, তাহলে হুবহু মিলে যাবে। বীজগণিতের মত অক্ষর ধরে ধরে প্রতিস্থাপন করে পুরো শব্দ প্রতিবর্ণীকরণ করা যাবে। তখন নমনীয়তার প্রশ্ন উঠবে না। যেমন- ইংরেজি চার বর্ণের শব্দ many (স্বর-ব্যঞ্জন-স্বর-ব্যঞ্জন এই অনুক্রমে) আমরা প্রতিবর্ণীকরণ করব "মেনি"- একইসংখ্যক বর্ণ একই অনুক্রমে বসিয়ে (ম+এ+ন+ই)। কিন্তু এরকম সবসময় হয় না। এটি আমাদের প্রতিবর্ণীকরণের লক্ষ্যও নয়।
খ) যদি কোন বিদেশী শব্দের বানান এমন হয় যে, শব্দস্থিত বর্ণসমষ্টির বানানের সাথে ধ্বনির মিল খুব কম, তাহলে আমাদেরকে অক্ষর ধরে ধরে প্রতিবর্ণীকরণ করার বদলে ধ্বনি ধরে প্রতিবর্ণীকরণ করতে হবে। আমাদের নীতি হবে নমনীয়। যেমন ইংরেজি station আমরা "স+ট+এ+ট+ই+ও=ন=স্টেটিওন" লিখব না, কিন্তু ধ্বনি অনুযায়ী "স্টেশন" লিখব। বাংলা প্রতিবর্ণীকরণ "শন" দেখে বোঝা যাবে না মূল ইংরেজিতে "tion" লেখা ছিল। এটাতে কোনই সমস্যা নেই। এটাই স্বাভাবিকভাবে প্রচলিত।
গ) এরপরেও কথা থেকে যায়। ক) কিংবা খ) যেকোনটির মত প্রতিবর্ণীকরণ করার পর যদি সবশেষ ফলাফলে দেখা যায় প্রতিবর্ণীকৃত বাংলা শব্দটির বানান দেখতে ও পড়তে "অস্বাভাবিক" লাগছে, তাহলে আমাদেরকে আরও নমনীয় হতে হবে এবং বাংলা বানানটা সরলীকরণ/পরিবর্তন করতে হবে যাতে "স্বাভাবিক" দেখায় ও পড়তে অসুবিধা না লাগে
  • আমাদের আলোচ্য জাপানি "iya" ব্যাপারটা উপরের ক-->গ ক্রমটা অনুসরণ করেছে। "iya" প্রথমে ক) অনুসরণ করে "ইইয়া" প্রতিবর্ণীকরণ করলেও পরে বানানের স্বাভাবিকতা ও সরলতার জন্য এটাকে "ইয়া" করে দিতে হবে। যদি "স্বাভাবিকতার" স্বার্থে করা এই সরলীকরণের ফলে ভিন্ন বানানের দুইটি বিদেশী শব্দ বাংলাতে একই বানানে প্রতিবর্ণীকৃত হয়, সেটা কোন বড় ব্যাপার নয়। শুরুতেই যেমন বলেছি, আমাদের প্রতিবর্ণীকরণের মূল লক্ষ্য বিদেশী শব্দের পুঙ্খানুপুঙ্খ সঠিক বানান দেখানো নয়। তাহলে তো আমরা খ)-এর কাজটা করতে পারতাম না। এ কারণে ya=ইয়া এবং iya=ইয়া একই প্রতিবর্ণীকরণ হলেও কোন সমস্যা নেই। বাংলা ভাষায় যেমন "আওয়ার" দেখে মূল ইংরেজি বানান hour নাকি our সেটা বোঝার যেমন কোন উপায় নেই, এবং এটা যেমন কোন ইস্যু নয়, তেমনি করে এখানেও মূল জাপানি "ইয়া"="ya/"ই-ইয়া""="iya" বানানের পার্থক্য দেখানোটা আমাদের লক্ষ্য না।
  • আরেকটা কথা হল কোন প্রতিবর্ণীকরণটা "স্বাভাবিক" আর কোনটা "অস্বাভাবিক", সেটা কে নির্ধারণ করবে? এ ব্যাপারেও আপনার দেওয়া যুক্তিগুলি চিন্তার খোরাক যোগায়। আমার মতে এটা নির্ধারণ করবে অনেকগুলি জিনিস। প্রথমত কোন নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের জন্য যারা প্রতিবর্ণীকরণ নীতি যারা বানাবেন, তাঁরা ব্যাপারটা অনেকখানিই নিয়ন্ত্রণ করবেন। এই ক্ষেত্রে সেটা হবে বাংলা উইকির সম্প্রদায়। বাংলা উইকি সম্প্রদায় নিজেদের মধ্যে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে আলোচনা করে যে নীতিতে একমত হবেন, সেটিই প্রযোজ্য হবে। তবে তারা সবকিছু নিজেরাই ঠিক করতে পারবেন না। সেই যুক্তিতর্কেরও সীমা আছে। আলোচ্য বিদেশী ভাষার ক্ষেত্রে বাংলা অ্যাকাডেমিগুলিতে বা বাংলাভাষী অঞ্চলের প্রশাসনগুলিতে কোন প্রতিষ্ঠিত প্রতিবর্ণীকরণ নীতি যদি থেকে থাকে, তাহলে সেটাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে (জাপানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, যা আপনি ঠিক বলেছেন)। এর অবর্তমানে "স্বাভাবিকতা"-র ব্যাপারটা বেশ আপেক্ষিক হয়ে দাঁড়ায়। আমার আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ একে অপরের উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া মুশকিল। "সময়ের সাথে সাথে স্বাভাবিক হয়ে যাবে", বা "আগেও এক বা একাধিক বিখ্যাত সাহিত্যিক ব্যক্তিত্ব এমনটি করেছেন", বা "আগে বিখ্যাত ব্যক্তিরা বিরোধিতা করলেও এখন তা স্বাভাবিক হয়ে গেছে", এই যুক্তিগুলি পুরোপুরি সমর্থন বা খণ্ডন করা সম্ভব নয়, কেন না সময়ের সাথে কী হবে তা ভবিষ্যৎবাণী করা মুশকিল; যদিও আপনি বলছেন "দিব্যি চলবে", কিন্তু আমি এ ব্যাপারে এতটা আত্মবিশ্বাসী নই। বাংলা উইকিপিডিয়ার যে ভবিষ্যৎমুখী আত্মবিশ্বাসী প্রতিবর্ণীকরণ নীতিমালা প্রণয়ন করার অধিকার আছে, আমার এ ব্যাপারে আগেও এবং এখনও সমর্থন আছে। কিন্তু তার পরেও আলোচ্য জাপানি বানানগুলির ক্ষেত্রে আমার মনের মধ্যে খানিকটা খচখচানি থেকেই যাচ্ছে। জাপানি বানানের ক্ষেত্রে "আমরা যা চাই, তা-ই চালাতে পারি" আপনার এই আত্মবিশ্বাসটা আমি পুরোপুরি শেয়ার করতে পারছি না। বিশেষ করে আমার মনে হচ্ছে টাইব্রেকার হিসেবে অন্য কোন মানদণ্ড যদি থেকে থাকে, তাহলে সেদিকে আগে নজর দেওয়া উচিত।
  • আমার মতে আলোচ্য ক্ষেত্রে এখনও অন্তত একটি মানদণ্ড রয়ে গেছে, যা টাইব্রেকার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। সেটা হচ্ছে বাংলা উইকিপিডিয়াতে ভাষাভেদে প্রতিবর্ণীকৃত বানানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ব্যাপারটা। আমরা এই উইকিতে শুধু জাপানি ভাষারই প্রতিবর্ণীকরণ করছি না, অন্যান্য ভাষারও। এই বাংলা উইকিতে অন্য সব ভাষার ক্ষেত্রে যদি "য়া" দিয়ে শুরু করাটাকে এ পর্যন্ত "অস্বাভাবিক" ধরা হয়, তাহলে জাপানি প্রতিবর্ণীকরণের ক্ষেত্রেও তা "অস্বাভাবিক" ধরা উচিত, নাহলে ধারাবাহিকতা রক্ষা পাবে না এবং ভুল বোঝাবুঝির একটা আশঙ্কা থেকে যায়। এই যুক্তিরও বিরোধিতা করা যায়। কেউ হয়ত বলতে পারেন, তাহলে সব ভাষার ক্ষেত্রেই শুরুতে "য়া", "য়ু" এভাবে প্রতিবর্ণীকরণ অনুমোদন করে দিলেই তো হয়। কিন্তু আমার কাছে এত বড় পরিবর্তন করা এত সহজ হবে বলে মনে হচ্ছে না। বৃহত্তর বাংলা পাঠক সম্প্রদায় শব্দের শুরুতে এই বানানগুলি দেখে অভ্যস্ত নন, তাই যে ভাষার প্রতিবর্ণীকরণেই যখনই তারা এগুলি দেখবেন, তখনই তারা এগুলি নিয়ে অসন্তুষ্টি দেখাবেন। এরকম অসন্তুষ্টি প্রকাশ আগেও এই উইকিতে ঘটেছে, অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি। তাই এখানে আমার অবস্থান হচ্ছে এ জাতীয় ঝামেলা যতটুকু সম্ভব কমানো। তাই আপাতত উপরের সব কিছু বিবেচনা করে শব্দের শুরুতে "য়ু"/"য়া"/"য়ি" এগুলির বদলে সরলতর "ইউ"/"ইয়া"/"ই" এগুলিকে বেশি পছন্দ করছি। এ ব্যাপারে জাপানি প্রতিবর্ণীকরণ নীতিমালার পাতাতেও ব্যাপক ব্যাখ্যা দিতে হবে, যাতে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ একেবারে কমে যায়।
  • Ideal world scenario-তে আমি আসলে আপনার সাথে প্রায় পুরোই একমত। আমারও মনের কোণে ইচ্ছা আছে যদি বাংলা শব্দ "য়ু"/"য়া"/"য়ি"/"ৎসু" দিয়ে শুরু করা যেত, তাহলে খুবই ভাল হত। কিন্তু উল্লিখিত বেশ কিছু ব্যাপার বিবেচনায় নেবার পর আমার চিন্তাধারার খানিকটা বিবর্তন ঘটেছে। অর্ণব (আলাপ | অবদান) ১১:৩৭, ২৯ মার্চ ২০১৭ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]
  • আরেকটা কথা আপনি বলেছেন যে ধারাবাহিকতা, সামঞ্জস্যবিধান এগুলি এত মেনে চলার দরকার কি? ইংরেজিতে তো যখন যেভাবে পেরেছে দু হাত খুলে নিয়েছে। এজন্য ইংরেজি বর্ণমালা ও উচ্চারণের মধ্যে বর্তমানে এত অসামঞ্জস্য। কিন্তু তাতে ইংরেজির তো কোন ক্ষতি হয়নি। এই যুক্তিটা আমার কাছে খুব গ্রহণযোগ্য মনে হচ্ছে না। আমার মতে আমরা যদি প্রতিবর্ণীকরণ নীতি বানানোর ব্যাপারে একমত হই, তাহলে সেই নীতি প্রণয়নের একটি মানদণ্ড হবে সামঞ্জ্যস্যতা বিধান। নইলে তো নীতি প্রণয়নের গুরত্ব কমে যায়। যখন যেভাবে খুশি সামঞ্জস্যহীনভাবে প্রতিবর্ণীকরণ হবে, যেটা ইংরেজি-আরবি-ফার্সির থেকে প্রতিবর্ণীকরণের ক্ষেত্রে যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে, তার পরে সেই পাকানো জট খুলতে গিয়ে আরও সমস্যা হবে। অন্য ভাষাতেও সেই সমস্যা এড়ানোর জন্যই তো এখানে প্রতিবর্ণীকরণ নীতি বানানো। আর নীতির সুবিধা তো অনেক --- যুক্তিযুক্ত সামঞ্জস্য ও নিয়মমাফিকতা, এগুলি তো বাংলার সৌষ্ঠব, আকর্ষণীয়তা আরও বাড়াবে, কমাবে তো না। অর্ণব (আলাপ | অবদান) ১৩:৩৭, ২৯ মার্চ ২০১৭ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]
@Zaheen:, উপরের আলোচনাসাপেক্ষে আপাতত প্রারম্ভিক য়-এর ক্ষেত্রে "ইউ"/"ইয়া"/"ইয়ো" মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু "tsu" এর জায়গায় বাংলা "ৎসু" অস্বাভাবিক লাগলেও যথাযথ। এখানে আপনার উল্লিখিত ক) নিয়মটাই প্রযোজ্য হয়; ধ্বনির পূর্ণ সঙ্গতির ভিত্তিতে। অন্য কোন বাংলা বর্ণ দিয়ে এই নামগুলো লিখলে উচ্চারণ নিতান্তই বিকৃত হয়ে যাবে। তাই স্বাধীন ৎসু-এর অনুমোদন দাবী করছি।--ব্যা করণ (আলাপ) ১৫:৪৬, ২৯ মার্চ ২০১৭ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]
  • ৎসু সম্পর্কে বলি। এটা নিয়েও বহু আগে বেশ তর্ক বিতর্ক হয়েছিল। ৎসু বর্ণসমষ্টিটা বাংলা ভাষার শব্দের বানানে বিরল নয়। কিন্তু বাংলাতে কেবল শব্দের মাঝে (যেমন "উৎসুক") কিংবা শেষে (যেমন "বিভৎস", "অনুসন্ধিৎসু") এটাকে দেখা যায়, এগুলি সব তৎসম শব্দও। বাংলা ভাষায় ৎসু দিয়ে শুরু হয় এরকম কোন শব্দ নেই, বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব অনুসারে কখনোই সম্ভব নয়। যদি জোর করে করা হয়, তবে সেটা শুনতে বা পড়তে স্বাভাবিক লাগবে না।
  • প্রসঙ্গক্রমে অন্য একটি দিক নিয়ে বলি: ভাষাবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে আসলে খাঁটি বাংলা ভাষা খুব সরল; বাংলার অধিকাংশ মাটির মানুষ শব্দের শুরুতে যুক্তবর্ণ স্বাভাবিকভাবেই উচ্চারণ করতে পারে না, এমনকি যেসব শব্দ বাংলা অভিধানে বাংলা ভাষার শব্দ বলে স্বীকৃত, সেগুলিতেও। এ ব্যাপারটা তাদের কাছে এতটাই অস্বাভাবিক যে আমার মাঝে মাঝে মনে হয় শব্দের শুরুতে যুক্তবর্ণ না বলাটা আসলে "খাঁটি বাঙালের" লক্ষণ, যে এখনও আরোপিত আদর্শ চলিত বাংলা ভাষাতে কথা বলতে শেখেনি। কিছু উদাহরণ দেই। খাঁটি ফোক বাঙাল কখনও স্কুল, স্ক্রু, স্টেশন, স্পেশাল - এগুলি বলতেই পারবে না; সে বলবে ইশকুল, ইশকুরুপ, ইশটিশান, ইসপিশাল, ইত্যাদি। খাঁটি ফোক বাঙাল এমনকি তৎসম শব্দ উচ্চারণ করতে গেলেও ঝামেলায় পড়বে। সে প্রশ্ন, প্রস্তাব, ইত্যাদি বলতে পারে না; চিন্তা করে দেখুন সে কিন্তু পোশনো, পোসতাব, এভাবে র-ফলা পুরো ফেলে দিয়ে বলবে (খাঁটি বাঙাল অভিনেতা অনন্ত জলিলের ইন্টারভিউগুলি দেখুন বা আপনার আশেপাশেই দেখুন)। আমরা তথাকথিত শিক্ষিত চলিত বাংলাভাষীরা এটা নিয়ে হাসতে পারি, কিন্তু ভাষাবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটাই খাঁটি বাংলা ভাষা, এটাই কোটি কোটি মাটির মানুষের মায়ের ভাষা। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসা আমার দেশের মানুষের জিহবার এই "জড়তা" সম্বন্ধে আমি ওয়াকিবহাল হয়েছি বেশি দিন হয়নি। অথচ চিন্তা করে দেখলাম যে এটাই খাঁটি বাংলা। জিহ্বার এরকম জড়তা থাকাই খাঁটি স্বাভাবিক বাঙালি জিহ্বার লক্ষণ। এটাই সত্যি কথা বলতে বাংলা ভাষার লক্ষণসূচক বৈশিষ্ট্য (identifying feature)। এখন আমি যদি "ৎসু" দিয়ে কোন শব্দ শুরু করি, তাহলে আমি যে শব্দের শুরুর সরলতার এই অলিখিত আবহমান ঐতিহ্য, সেটাকে খানিকটা মেরে ফেলব। আমিই যে প্রথম এরকম হত্যাকারী, তা নয়। স্কুল, স্পেশাল, এই শব্দগুলি কয়েক যুগ ধরে লিখে লিখে ইতিমধ্যেই বাংলার বানান খানিকটা ইংরেজির মত হয়ে উঠছে; শিক্ষিত জনগণ ইংরেজির মত করে বলতে পেরে গর্ববোধ করে (আমিও এই দলের একজন)। এর আগে ১৯শ শতকে সংস্কৃত তৎসম শব্দগুলির ব্যাপক আমদানির সময়েও নিশ্চয়ই একই জিনিস ঘটেছিল, ফলে প্রশ্ন, প্রস্তাব, এগুলি বাংলাতে এখন মিশে গেছে (আমিও সেগুলি স্পষ্ট উচ্চারণ করি)। তবে খাঁটি বাংলাভাষী মানুষের হৃদয়ে আর জিহ্বায় এই বানানগুলি এখনও পুরোপুরি গৃহীত হয়নি। কারণ এগুলি আমাদের বাঙাল ডি এন এ-র গভীরে এখনও গেঁথে আছে। এটা ভাল নাকি খারাপ সেটা নিয়ে আমার মধ্যে দ্বন্দ্ব আছে।
  • এসব ভেবে আমার মনে হয় যে শব্দের শুরুতে "ৎসু" বানানটা মাটির বাংলাভাষী মানুষ কেন, সংস্কৃতিবান "শিক্ষিত" বাংলাভাষী মানুষের কানেও একটা বিশাল ধাক্কা দেবে। এখন কথা হচ্ছে ধাক্কা দেওয়া উচিত কি উচিত না? আমার মতে দেওয়া উচিত, কারণ তাহলে বাংলার বানানের রেঞ্জ আরও বাড়বে; অনেক সময় পুরনোকে না মারলে নতুনের জন্ম হয় না। কিন্তু দ্বিতীয় আরেকটা কথা হচ্ছে এরকম ধাক্কা দেওয়ার কাজ উইকিপিডিয়ার দায়িত্ব কি না। এ ব্যাপারে আমি অতটা আত্মবিশ্বাসী নই। শব্দের শুরুতে যেসব যুক্তবর্ণ বিগত একশ বছরে বাংলা বানানের নিয়মে স্থিতিশীলতা লাভ করেছে, সেগুলি উইকিপিডিয়াতে প্রতিবর্ণীকরণে ব্যবহার করতে আমার কোন আপত্তি নেই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হালকাভাবে একেবারে নতুন কিছু যোগ করার চেষ্টাও করেছি, যেমন জার্মান শব্দের শুরুতে st থাকলে তার বাংলা প্রতিবর্ণীকরণ করেছি "ষ্ট" (যেমন ষ্টলেন-এ), যদিও বাংলা কোন শব্দই এই যুক্তবর্ণ দিয়ে শুরু হয় না। কিন্তু এটা ছিল হাঁটি হাঁটি পা-পা জাতীয় কিছু। তাছাড়া অনেক বাঙালি ইংরেজি st-কে ভুল করে "ষ্ট" দিয়ে প্রতিবর্ণীকরণ করে বলে (যেমন stop-কে অনেকে লেখে "ষ্টপ") বোধ হয় তেমন শোরগোল হয়নি। কিন্তু "ৎস" দিয়ে শব্দ শুরু করলে ও চাপিয়ে দিলে খাঁটি বাঙালের এমনকি তার আধুনিক আরোপিত সাবসেট শিক্ষিত বাঙালের হৃদয়ে গিয়ে লাগতে পারে, খেপে যেতে পারে। এখানেও আমি ঝামেলা এড়াতে পছন্দ করছি। আপনি অবশ্যই দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। তবে technically আপনার সাথে আমার কোন দ্বিমত নেই, আমার দ্বিমতটা বাংলাভাষী সম্প্রদায়ের বিদ্যমান ভাষিক পরিস্থিতির বিচারে এ ধরনের sociolinguistic planning/engineering-এ উইকির ভূমিকা কতটুকু হতে পারে, সে ব্যাপারে আমার নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে এসেছে, আমার অনিচ্ছা সত্ত্বেও, কেননা "ৎস" দিয়ে শব্দ শুরু করতে পারলে আমি নিজেও খুবই খুশি হই। অর্ণব (আলাপ | অবদান) ১৭:৫৭, ২৯ মার্চ ২০১৭ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]
  • আরেকটা ব্যাপার, বিদেশী শব্দের প্রতিবর্ণীকরণে শব্দের মাঝখানে ts="ৎস" বসাতে আমার কোন আপত্তি নেই, বিশেষ করে যদি "ৎ" আগের সিলেবল শেষ করে এবং "স" পরের সিলেবল শুরু করে, আলাদা করে উচ্চারিত হয়ে। যেমন "মোৎসারেলা" (মোৎ - সা - রে - লা) পনির। অন্যদিকে জার্মান লাইপ্‌ৎসিশ যদিও লিখেছি, কিন্তু মনে এখনও দ্বিধা আছে, কেননা এই শব্দে "ৎস" একত্রে উচ্চারিত হয়ে দ্বিতীয় সিলেবল শুরু করেছে (দুইটি সিলেবল: লাইপ - ৎসিশ)। বাংলাভাষী মানুষ হয়ত বুঝতেই পারবে না দ্বিতীয় সিলেবলটা কী করে উচ্চারণ করতে হবে। হয়ত এখানে খণ্ড ৎ-টা ফেলেই দিতে হবে, কারণ দেওয়া না দেওয়া একই কথা; ফলাফল হবে "লাইপসিশ", যা দেখে উচ্চারণ করা সহজ। অর্ণব (আলাপ | অবদান) ১৮:১৯, ২৯ মার্চ ২০১৭ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]
@Zaheen:, আন্দাজ করি অধিকাংশ অনভিজ্ঞ মানুষ শব্দের শুরুতে ৎসু দেখলে "ছু" বা ঐ জাতীয় কিছু পড়বেন। তাতে অসুবিধে কী। যে সমস্ত কঠিন শব্দ এর মধ্যেই এসে গেছে, সেগুলোকে সরল করে তাঁরা তো উচ্চারণ করে চলেইছেন (পোস্তাব ইত্যাদি)। সব বাংলাভাষীই ক্ষ, ষ্ণ, জ্ঞ এসবের ভুল উচ্চারণ করে থাকে। বানানগুলো ঠিকঠাক রেখে দিলে কেবল আমার আপনার মত যাঁরা উচ্চারণ করতে পারি, তাদেরকে স্পষ্ট উচ্চারণের সুযোগটুকু দেওয়া হয়। মাটির মানুষের যদি ভুল ও সরল উচ্চারণ করার অধিকার থাকে, যন্ত্রসভ্যতার মানুষেরও সঠিক ও জটিল উচ্চারণ করার সমান অধিকার আছে। আমি প্রস্তাবকে পোস্তাব না বলে প্রস্তাব বলতে পারি বলে নিজেকে কম বাঙালী মনে করি না। আমার আপনার জিভ আর আমাদের মত আরো অনেকের জিভ যে বেশি নমনীয়, সেটা কক্ষনও আমাদের দোষ নয়, আমাদের পরিশীলিত শিক্ষার গুণ। উইকিপিডিয়ান হিসেবে সেই শিক্ষাকে সর্বজনীন করব আমরা। আপনিও ৎসু চালাতে পারলে খুশি হন, আমিও হই। আমরা ভালভাবে ভেবেচিন্তেই এই সাধারণ সিদ্ধান্তে এসেছি। হুজুগের বশে বা মনের মাধুরীতে আপনিও বয়ে যান না, আমিও না। তাহলে কেবল সংখ্যাগরিষ্ঠ অক্ষমের অক্ষমতাকে তোয়াজ করে নিজের ইচ্ছাতে নিজেই শিকল পরাবেন না। চলুন তাদের সক্ষম করি।
  • ধাক্কা দেওয়াটা উইকিপিডিয়ার কাজ কি না। দেখুন, আমাদের সাধের ভাষা যে শোচনীয় অবস্থায় রয়েছে, তাতে উইকিপিডিয়াকে বাধ্য হয়েই কিছু কিছু কাজ শুরু করতে হবে। কবে কোন্‌ আকাদেমী জাপানের শহরের উপর মান্য নিবন্ধ লিখবে সে আশায় বসে থাকলে মিয়ে প্রশাসনিক অঞ্চলের রাজধানীটার কথা বাংলায় কেউ আর লিখতে পারবে না। হ্যাঁ, ধাক্কা দেওয়াটা আমাদের কাজ বটে।
  • আরোপিত আদর্শ চলিত বাংলায় তারা কথা বলতে "এখনও শেখেনি"। কিন্তু শিখতে হবে, কেননা "আরোপিত" হলেও এটাই "আদর্শ" ও "চলিত"। আরোপের উদ্দেশ্য ভাল হলে আরোপ দোষের নয়। মাটির ভাষায় কথার অভাব থাকলে সেই ভাষাকে উপযুক্ত কথা দিয়ে গড়েপিটে নিতে হবে।--ব্যা করণ (আলাপ) ০৫:২০, ৩০ মার্চ ২০১৭ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]


@ব্যা করণ:আমার আরেকটা জিনিস মনে পড়ল। আমি আপনার এই যুক্তিগুলি নিজেও বেশ কিছু বছর আগে কনরাড ৎসুজে-র আলাপ পাতাতে দিয়েছিলাম (ওটা এখনও ৎসুজে-ই রয়ে গেছে, আমার বর্তমান মত হল সুজে-তে স্থানান্তর করা)। সেখানেও সংঘাতের সৃষ্টি হয়েছিল। আলোচনাসভাতেও মনে হয় আলোচনা হয়েছিল। আপনি এখন যে অবস্থান নিয়েছেন, আমারও সেসময় একই অবস্থান ছিল। তারপর সংঘাত নিরসনের জন্য একটা অস্থায়ী সমাধান হিসেবে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে বিদেশী শব্দগুলির প্রতিবর্ণীকরণ দুইটি অংশের সমন্বয়ে করা হবে। একটি হচ্ছে সাধারণ পাঠকের জন্য সরলীকৃত বাংলা বানানে প্রতিবর্ণীকরণ, আরেকটি হচ্ছে তার পাশেই বাংলা অক্ষরেই ইটালিক্সে একেবারে শুদ্ধ বিদেশী উচ্চারণটার সবচেয়ে কাছাকাছি একটা বানান বন্ধনীর ভেতরে দেওয়া থাকবে, যাতে আমার আপনার মত অনুসন্ধিৎসুরা, জ্ঞানপিপাসুরা আসল উচ্চারণটাও জানতে পারি। এই সব আলোচনার ক্ষেত্রে এটাই সবচেয়ে সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত এবং আমার মতে এটা একটা ভাল compromise। তাই আপাতত "ৎসু"-টাকে ইটালিক্সে বন্ধনীতে রেখে দিয়ে বাইরে "সু" রাখলে দুই দিকই রক্ষা পাবে। শহরটা নিয়ে আলাদা নিবন্ধ লেখার ক্ষেত্রেও একই নীতি অনুসরণ করা হবে; প্রথম অনুচ্ছেদেই সঠিক ৎসু উচ্চারণটা বাংলায় ইটালিক্সে ও বন্ধনীতে দেওয়া থাকবে। এর পর গোটা নিবন্ধ জুড়ে অবশ্য সু-ই লিখতে হবে (সেটা আপনার মনপূঃত হবে কি না জানি না)। অর্ণব (আলাপ | অবদান) ১৪:১১, ৩০ মার্চ ২০১৭ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]
-_- নিমরাজি হওয়া গেল। তবে আমি অন্য কোন রাস্তার খবরের জন্য তক্কে তক্কে থাকব।--ব্যা করণ (আলাপ) ১৪:২৪, ৩০ মার্চ ২০১৭ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]