আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(আয়ারল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট দল থেকে পুনর্নির্দেশিত)
আয়ারল্যান্ড
কর্মীবৃন্দ
অধিনায়কঅ্যান্ড্রু বালবিরিনি
কোচহেইনরিখ মলান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল
আইসিসি মর্যাদাপূর্ণ সদস্য (২০১৭) ওডিআই মর্যাদাসহ সহযোগী সদস্য (১৯৯৩)
আইসিসি অঞ্চলইউরোপ
বিশ্ব ক্রিকেট লিগপ্রযোজ্য নয়
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
প্রথম আন্তর্জাতিক১০ সেপ্টেম্বর, ১৮৫৫ ব ইংল্যান্ডের ভদ্রলোকগণ, ডাবলিন

টেস্ট কিট

ওডিআই কিট

টি২০আই কিট

২২ জুলাই ২০২২ অনুযায়ী

আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল (ইংরেজি: Ireland cricket team) ক্রিকেট দল হিসেবে আয়ারল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করছে। রাজনৈতিক কারণে আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়ন ১৯৯৩ সালের পূর্ব পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের অনুমোদন পায়নি। ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। আইরিশ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে রয়েছে আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়ন। পেশাদার ক্রিকেটার এবং ক্রিকেট বিশ্বের অন্যত্র অবস্থানকারী খেলোয়াড়দের নিয়ে দলটি গঠিত হয়েছে। আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়নের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড। ২০০৯ সাল থেকে তারা খেলোয়াড়দের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে।[১] এছাড়াও, ২০১১ সালের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী ১৩ খেলোয়াড়কেও পূর্ণাঙ্গভাবে চুক্তিতে এনেছে সংস্থাটি।[২] ২০১৭ সালের ২২ জুন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের পূর্ণ সদস্য হিসেবে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড অনুমোদন পায়।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৮৫৫ সালে আইরিশ দল প্রথম খেলতে নামে। ২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একদিনের আন্তর্জাতিকে প্রথমবারের মতো অংশ নেয়। এ পর্যন্ত দলটি ৯৬ খেলায় অংশ নিয়ে ৪৪ জয়, ৪৪ পরাজয়, ৫ ফলাফলবিহীন এবং ৩টি খেলায় টাই করে।[৩]

আইসিসি’র অন্যতম সহযোগী সদস্য দেশ হিসেবে রয়েছে আয়ারল্যান্ড। টেস্ট ক্রিকেটের পূর্বের দলীয় অবস্থানই সহযোগী সদস্য। আন্তর্মহাদেশীয় কাপ এবং বিশ্বকাপে আইরিশদের দূর্দান্ত সফলতার কারণে দলটি শীর্ষস্থানীয় সহযোগী সদস্য দেশের মর্যাদা পেয়েছে।[৪] বর্তমানে আয়ারল্যান্ড প্রথম বিভাগের অন্যতম দল হিসেবে একদিনের আন্তর্জাতিক এবং টি২০ আন্তর্জাতিকের মর্যাদাপ্রাপ্ত দল।

সাফল্যগাঁথা[সম্পাদনা]

আইসিসি ট্রফি, ইউরোপীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপ এবং আইসিসি আন্তর্মহাদেশীয় কাপে অংশ নেয় আইরিশ দল। তন্মধ্যে ইউরোপীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপ তিনবার জয় করে ও বর্তমান ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন। ২০০৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত আইসিসি আন্তর্মহাদেশীয় কাপ জয় করেছে তিনবার। ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের কাউন্টির ফ্রেন্ডস প্রভিডেন্ট ট্রফিতেও অংশ নিয়েছে তারা।

আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেটের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে ১৯২৮, ১৯৬৯ এবং ২০০৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তান, বাংলাদেশকে পরাভূত করার পাশাপাশি জিম্বাবুয়ের সাথে টাই করে দ্বিতীয় পর্বে উত্তীর্ণ হয়। এছাড়াও ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করেছিল দলটি।

আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে দূর্দান্ত সাফল্যে উজ্জ্বীবিত হয়ে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড পূর্ণাঙ্গ সদস্য পদ লাভের জন্য আইসিসি বরাবরে আবেদন করেছে। তারা ২০০৮ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্ব এবং ২০০৯ সালের আইসিসি বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছে। এছাড়াও ২০০৯, ২০১০২০১৪ সালের বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতাসহ ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশ নিয়েছে। পূর্ণাঙ্গ সদস্য হলে আয়ারল্যান্ড একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণকারী দেশের মর্যাদা লাভসহ টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারবে।[৫]

আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০[সম্পাদনা]

দলটি ২০১৩ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাই-পর্বে শীর্ষস্থান অধিকার করে। এরফলে তারা বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মতো ১৬ দলের অংশগ্রহণে অন্য দশটি পূর্ণাঙ্গ সদস্যদের সাথে অংশগ্রহণ করে। গ্রুপ-পর্বে আইরিশ দল জিম্বাবুয়ে, সংযুক্ত আরব আমিরাতনেদারল্যান্ডস ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।

প্রথম খেলায় শক্তিশালী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ উইকেটে জয়ী হয়ে চমক দেখায়। ২১ মার্চ, ২০১৪ তারিখে সিলেটে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় গ্রুপ-পর্বে প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ১৮৯ রানের সম্মানজনক স্কোর দাঁড় করালেও দলটি জয়লাভে সক্ষম হয়নি ও সুপার টেন পর্বে প্রবেশের পূর্বেই প্রতিযোগিতা থেকে দলকে বিদায় নিতে হয়।[৬]

প্রতিযোগিতার ইতিহাস[সম্পাদনা]

বর্তমান সদস্য[সম্পাদনা]

ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সালে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড ২৪জন খেলোয়াড়ের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। নিম্নের তালিকায় ২৪জন খেলোয়াড়সহ গত ১২ মাসে অংশগ্রহণকারী ক্রিকেটারদের তালিকা তুলে ধরা হলো। পূর্ণাঙ্গকালীন খেলার জন্য ক্যাটেগরি এ, এবং খণ্ডকালীন হিসেবে ক্যাটেগরি বি ও সি রয়েছে। ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবে অংশগ্রহণকারীদেরকে ক্যাটেগরি বি চুক্তিতে রাখা হয়েছে।[৭]

নির্দেশিকা
  • সি/জি = চুক্তির ধরন
  • এস/এন = ওডিআই ও টুয়েন্টি২০ স্কোয়াড নম্বর
নাম বয়স (১১ মার্চ ২০২৪) ব্যাটিংয়ের ধরন বোলিংয়ের ধরন সি/জি ঘরোয়া দল এস/এন
অধিনায়ক; উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান
উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড ৩৯ বছর, ১৮৭ দিন বামহাতি ডানহাতি অফ-ব্রেক বি ওয়ারউইকশায়ার
সহ-অধিনায়ক; অল-রাউন্ডার
কেভিন ও’ব্রায়ান ৪০ বছর, ৭ দিন ডানহাতি ডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট রেলওয়ে ইউনিয়ন ২২
ব্যাটসম্যান
জন অ্যান্ডারসন ৪১ বছর, ১৫৭ দিন ডানহাতি ডানহাতি অফ-ব্রেক সি মেরিয়ন
ক্রিস ডগার্টি ৩৬ বছর, ৫৫ দিন বামহাতি  – সি
এড জয়েস ৪৫ বছর, ১৭১ দিন বামহাতি ডানহাতি মিডিয়াম বি সাসেক্স ২৪
লি নেলসন ৩৩ বছর, ৯৭ দিন ডানহাতি ডানহাতি অফ ব্রেক সি ওয়ারিংসটাউন
অ্যান্ড্রু পয়েন্টার ১,০৩৬ বছর, ৩২১ দিন ডানহাতি ডানহাতি অফ-ব্রেক বি ক্লোনটার্ফ
জেমস শ্যানন ৩৪ বছর, ২৮ দিন ডানহাতি ডানহাতি অফ-ব্রেক সি ইনস্টোনিয়ান্স
পল স্টার্লিং ৩৩ বছর, ১৯০ দিন ডানহাতি ডানহাতি অফ-ব্রেক বি মিডলসেক্স
অল-রাউন্ডার
অ্যালেক্স কুস্যাক ৪৩ বছর, ১৩৪ দিন ডানহাতি ডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট ক্লোনটার্ফ ৮৩
জন মুনি ৪২ বছর, ৩০ দিন বামহাতি ডানহাতি মিডিয়াম নর্থ কাউন্টি ১০
এডি রিচার্ডসন ৩৩ বছর, ২৩৩ দিন ডানহাতি ডানহাতি মিডিয়াম বি নর্থ কাউন্টি
স্টুয়ার্ট থম্পসন ৩২ বছর, ২০৯ দিন বামহাতি ডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট এগলিনটন ১৭
উইকেট-রক্ষক
অ্যান্ড্রু বালবির্নি ৩৩ বছর, ৭৪ দিন ডানহাতি ডানহাতি অফ-ব্রেক বি মিডলসেক্স ৬৩
নায়ল ও’ব্রায়ান ৪২ বছর, ১২৪ দিন বামহাতি  — বি লিচেস্টারশায়ার ৭৩
স্টুয়ার্ট পয়েন্টার ৩৩ বছর, ১৪৫ দিন ডানহাতি  — বি ডারহাম
গ্যারি উইলসন ৩৮ বছর, ৩৫ দিন ডানহাতি  — বি সারে ১৪
পেস বোলার
পিটার চেজ ৩০ বছর, ১৫৪ দিন ডানহাতি ডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট ডারহাম ২৮
গ্রেইম ম্যাককার্টার ৩১ বছর, ১৫৩ দিন ডানহাতি ডানহাতি মিডিয়াম বি গ্লুচেস্টারশায়ার
টিম মারতাগ ৪২ বছর, ২২২ দিন বামহাতি ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বি মিডলসেক্স
ম্যাক্স সোরেনসেন ৩৮ বছর, ১১৪ দিন ডানহাতি ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম দ্য হিলস ২৬
ক্রেগ ইয়ং ৩৩ বছর, ৩৪২ দিন ডানহাতি ডানহাতি মিডিয়াম ব্রেডি ৮৪
স্পিন বোলার
জর্জ ডকরেল ৩১ বছর, ২৩৩ দিন ডানহাতি স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বি সমারসেট ৫০
অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রায়ান ৩০ বছর, ৩১৬ দিন বামহাতি ডানহাতি অফ-ব্রেক ডানমানা ৩৫

কোচিং কর্মকর্তা[সম্পাদনা]

  • প্রধান কোচ: জন ব্রেসওয়েল
  • ম্যানেজার: রয় টরেন্স
  • সহকারী কোচ: পিটার জনস্টন
  • বোলিং কোচ: ব্রেট লি[৮]
  • স্ট্রেন্থ এন্ড কন্ডিশনিং কোচ: ব্রেন্ডন কনর
  • ফিজিও: কিরণ ও’রিলি

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Cricket Ireland announce player contract details"। Cricketeurope4.net। ১৩ জানুয়ারি ২০১০। ২৩ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১২ 
  2. Coverdale, Brydon (৩ মার্চ ২০১১)। "Johnston says Ireland not ready for Tests"ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১১ 
  3. Ireland Playing Record in ODI Matches, CricketArchive [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] Retrieved 2 March 2011.
  4. Martin Williamson (১৭ অক্টোবর ২০০৮), Zimbabwe should avoid another banana skin, Cricinfo  Retrieved 3 November 2008.
  5. "Ireland in hot pursuit of Full Member status | Ireland Cricket News | ESPN Cricinfo"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১২ 
  6. Netherlands stun rivals to qualify, espncricinfo, retrieved: 17 April, 2014
  7. "McBrine, Chase added to Ireland 'A' list"। ESPNcricinfo। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  8. Brett Lee: Ireland appoint ex-Australian star as bowling coach

পাদটীকা[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]