আব্দুস সালাম জাইফ
মোল্লা আব্দুস সালাম জাইফ الحاج ملا عبدالسلام ضعيف | |
---|---|
পাকিস্তানে আফগান রাষ্ট্রদূত | |
কাজের মেয়াদ ২০০০ – ২০০১ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯৬৭ কান্দাহার, আফগানিস্তান |
রাজনৈতিক দল | আফগানিস্তান ইসলামী আমিরাত |
মোল্লা আব্দুস সালাম জাইফ (জন্ম :১৯৬৭) একজন আফগান তালেবান নেতা, কূটনীতিক ও লেখক। যিনি আফগানিস্তানে মার্কিন আক্রমণের আগে পাকিস্তানে আফগান রাষ্ট্রদূত ছিলেন।[১] তাকে ২০০১ সালের শরৎকালে পাকিস্তানে আটক করা হয়েছিল এবং তিনি ২০০৫ সাল পর্যন্ত গুয়ান্তানামো কারাগারে বন্দী ছিলেন। [১] জাতিসংঘ ২০১০ সালের জুলাই মাসে তার নাম সন্ত্রাসীদের তালিকা থেকে সরিয়ে দেয়।[২] মাই লাইফ উইথ তালেবান নামে তাঁর লিখিত একটি প্রসিদ্ধ বই আছে।
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]মোল্লা জাইফ ১৯৬৭ সালে দক্ষিণ আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের পাঞ্জওয়াই জেলার আরগান্দাব এবং ডোরি নদীর মধ্যবর্তী জাঙ্গিয়াবাদের একটি ছোট গ্রামে একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। এর আগে তাঁর পরিবার জাবুল প্রদেশের জলদক গ্রামে বসবাস করত। সেখানে জমি নিয়ে লড়াই ঝগড়ার কারণে তার পরিবার কয়েক বছর আগে জাঙ্গিয়াবাদে চলে এসেছিল। তার চাচার নাম মোল্লা নেজাম, যার বিরুদ্ধে আফগান-আমেরিকা যুদ্ধে ১৬ জন সরকারী সৈন্য হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়েছিল এবং পরে সরকারী বাহিনীর হাতে তিনি নিহত হয়েছিলেন। জাইফের বয়স যখন মাত্র এক বা দুই বছর তখন তার মা মারা যান। এরপর তার পরিবারটি পাশের আরেকটি গ্রাম মুশানে চলে যায় এবং কিছুদিন পর সেখান থেকে মায়ওয়ান্দ জেলার রংরেজানে চলে যায়।
তার পিতা ১৯৭৫ সালে মারা যান। তখন জাইফের বয়স ছিল মাত্র আট বছর। তাই অসহায় জাইফকে পাঞ্জওয়াই জেলায় তাঁর একজন খালার সাথে দেড় বছর এবং চার্শাখায় চাচাতো ভাইদের সাথে কিছুদিন থাকতে হয়েছিল। এরপর তাকে তার এক মামার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন তিনি সোভিয়েত আক্রমণের আগ পর্যন্ত প্রাথমিক ধর্মীয় শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে সঙ্গীসার একটি মাদ্রাসায় ভর্তি হন। [৩] [৪] ১৯৭৮ সালে তিনি কান্দাহার শহরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক বছর পড়াশোনা করেন। সে বছর কমিউনিস্টরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করলে মুজাহিদিন ও সরকারের মধ্যে লড়াই শুরু হয়। তাই ১৯৭৯ সালের জানুয়ারিতে তিনি তার আত্মীয়স্বজন এবং অন্য অনেকের সাথে পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়ে বেলুচিস্তানের নুশকিতে একটি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। [৩]
কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে লড়াই
[সম্পাদনা]১৯৮৩ সালে জাইফ কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে মুজাহিদিনদের সাথে যুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য তার আত্মীয় ও পরিচিতদের কিছু না বলে একাই পাকিস্তান হতে আফগানিস্তানে ফিরে আসেন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র 15 বছর। আফগানে এসে পাশমোলে (বর্তমানে ঝাড়ী জেলা) একটি মুজাহিদিন দলের সাথে দুই মাস থাকার পরে তিনি নেলঘামে তালেবানের একটি দলে যোগ দেন। কিছুদিন পর সেখান থেকে জাঙ্গিয়াবাদে সরে যাওয়ার পূর্বে তারা আফগান সেনাবাহিনী ও সোভিয়েত বাহিনী কর্তৃক দীর্দ দশ দিন ধরে আক্রমণের শিকার হতে থাকেন। এরপর সেখানে আরো দশ দিন ধরে মুজাহিদিনদের ওপর হামলা হয়। ফলে শত শত মুজাহিদিন ও বেসামরিক লোক নিহত হয়। তারপর মুজাহিদিনদের বিতাড়িত হওয়ার আগ পর্যন্ত যুদ্ধটি দুই সপ্তাহের জন্য পাশমোলে স্থানান্তরিত হয়। তখন জাইফের দলটি নেলঘাম থেকে কাজ চালিয়ে যেতে থাকে।
সে সময়ে কখনো কখনো তিনি যুদ্ধের খাতিরে হেলমান্দ বা উরুজগান প্রদেশ পর্যন্ত পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করতেন এবং একই সময়ে ধর্মীয় বিষয়াদি অধ্যয়ন করতেন। তালেবানের সাথে প্রায় এক বছর থাকার পর তাকে গুরুতর আহত একজন সহযোগী যোদ্ধাকে চিকিৎসার জন্য পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাকিস্তানে গিয়ে তিনি সেখানে বসবাসকারী তার আত্মীয়দের সাথে পুনরায় মিলিত হন। তারা তখন কোয়েটায় বসতি স্থাপন করেছিলেন। সেখানে তিনি প্রায় নয় মাস পুনরায় স্কুল ও ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর ১৯৮৫ সালে পুনরায় আফগানিস্তানে প্রবেশের আগে তিনি পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স থেকে রকেট সিস্টেমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর কান্দাহার যাওয়ার পথে তার দল অতর্কিত আক্রমণের শিকার হলে যুদ্ধের সময় তিনি নবম বারের মত একটি অ্যামবুশ করেন। তখন জাইফের কোমরে গুলি লেগেছিল এবং তাকে পাকিস্তানে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। [৩]
এরপর পরবর্তী কয়েক বছর তিনি কান্দাহার প্রদেশে যুদ্ধ করেন। ১৯৮৭ সালে জাইফ আরগান্দাবের যুদ্ধে কয়েক সপ্তাহ যুদ্ধ করেছিলেন। যখন মোল্লা মোহাম্মদ ওমর এর অন্যতম কমান্ডার ছিলেন এবং আহত হয়ে একটি চোখ হারিয়েছিলেন। এটি ছিল দক্ষিণ কান্দাহারে সর্বশেষ বড় যুদ্ধ। ১৯৮৮ সাল নাগাদ জাইফ একজন জুনিয়র কমান্ডারে উন্নীত হন। সেই বছর কান্দাহার বিমানবন্দরে একটি আক্রমণে তিনি ৫৮ জন লোকের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং লড়াই তখন এতটাই তীব্র ছিল যে, তাদের মধ্যে 50 জনই নিহত হয়েছিলেন। [৩] [৫]
তালেবান ও মোল্লা জাইফ
[সম্পাদনা]১৯৮৯ সালে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সেনা প্রত্যাহারের পর তিনি স্থানীয় একটি গ্রামে শ্রমিক এবং মসজিদে ইমাম হিসাবে কাজ করেছিলেন। [৬] তখন আফগান গৃহযুদ্ধের ফলে কান্দাহারে সৃষ্ট গোলযোগের কারণে ১৯৯১ সালে তিনি স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে পাকিস্তানে চলে যান। ১৯৯২ সালে পুনরায় আফগানিস্তান ফিরে আসেন এবং কান্দাহারের নিকটবর্তী একটি ছোট গ্রামের মসজিদে ইমাম হিসেবে যোগদান করেন।
১৯৯৪ সালে তিনি সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকারী অন্যান্য সে সকল প্রবীণ সৈনিকদের সাথে দেখা করতে শুরু করেন, যারা রাস্তা ও শহর নিয়ন্ত্রণকারী ডাকাত এবং দুর্বৃত্ত মুজাহিদিন কমান্ডারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী ছিলেন। সে বছর শরৎকালে তারা সবাই তাদের অপারেশনাল লিডার হওয়ার জন্য বিভিন্ন লোকের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন, যাদের মধ্যে মোল্লা মোহাম্মদ ওমরও ছিলেন। তিনি তখন সাঙ্গীসারে বসবাস করছিলেন। তাদের আহ্বানে তিনি সম্মত হন। তখন সাঙ্গীসারের হোয়াইট মসজিদে তালেবান নামে পরিচিত হওয়ার প্রতিষ্ঠাতা সভায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ জন লোক অংশগ্রহণ করেছিল। তারা স্থানীয় এলাকায় শরিয়া আইন প্রয়োগ শুরু করে এবং পাশের হাইওয়েতে একটি চেকপয়েন্ট স্থাপন করে।
দখলীকৃত এলাকায় শৃঙ্খলা কায়েম করার কারণে তারা দ্রুত স্থানীয় লোকজনের সমর্থন লাভ করতে থাকে এবং শীঘ্রই ৪০০ জন সদস্যের তালেবান নামে একটি দল হয়ে যায়। এরপর মেওয়ান্দ এবং পাঞ্জওয়াই জেলার মধ্যে অবস্থিত হাইওয়েতে দুর্বৃত্ত মুজাহিদিনরা রাস্তা ব্যবহারকারীদের চাঁদাবাজি এবং হয়রানি বন্ধ করতে অস্বীকার করলে তারা তাদের উপর হামলা চালায়। সেখান থেকে তারা কান্দাহার শহর এবং পাকিস্তান সীমান্ত পর্যন্ত রাস্তা পরিষ্কার করে ফেলে। [৩]
তালেবান কান্দাহারের নিয়ন্ত্রণ পেলে জাইফকে সেখানকার একজন শরিয়া বিচারককে সহায়তা করার জন্য নিযুক্ত করা হয়। ১৯৯৫ সালে তাকে হেরাত প্রদেশের ব্যাঙ্কগুলির দায়িত্ব দেওয়া হয়। যা তিনি দুই বছর ধরে পালন করেছিলেন। তালেবান কাবুল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর যখন ওবায়দুল্লাহ আখন্দ আঘাত পেয়ে পাকিস্তানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন, তখন জাইফকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে কাজ করার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় এবং নয় মাস ধরে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে অবসর নেন। এরপর তিনি পুনরায় সরকারী কাজে ফিরে যেতে চাননি, কিন্তু তালেবান নেতারা তাকে খনি ও শিল্পের উপমন্ত্রী নিযুক্ত করেছিলেন এবং এই পদে তিনি ১৮ মাস ধরে ছিলেন। এরপর তিনি পরিবহন প্রশাসনের প্রধান হন।
সেখানে কিছুদিন কর্মরত থাকার পরে তিনি পাকিস্তানে আফগান রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পান এবং আমেরিকান আগ্রাসন পর্যন্ত সে পদে বহাল থাকেন। আফগানে আমেরিকান আগ্রাসন শুরু হলে প্রাথমিকভাবে পাকিস্তান সরকার তাকে সে দেশে অবস্থানে অনুমতি দেয়। ফলে তিনি ইসলামাবাদে থেকে যান। কিন্তু ২০০২ সালের ২রা জানুয়ারি পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং পেশোয়ারে পাঠায়। সেখানে তারা তাকে মার্কিন অপারেটিভদের কাছে হস্তান্তর করে। [৩] মোল্লা জাইফের কূটনৈতিক অনাক্রম্যতা সত্ত্বেও তার সাথে এমনটি ঘটেছিল। [১]
কারাজীবন ও মুক্তি
[সম্পাদনা]বন্দী হওয়ার পর জাইফকে প্রথম বাগরাম তারপর কান্দাহার এবং সবশেষে কিউবার গুয়ান্তানামো বে ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী করে রাখা হয়। [২]২০০৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি গুয়ানতানামো বে থেকে মুক্তি পান এবং পরের দিন আফগানিস্তানে ফিরে আসেন।[১] ২০০৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ডেইলি টাইমসের একটি নিবন্ধে তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছিল যে, "তার মুক্তি ছিল তাঁর কিছু বন্ধুর নিরলস প্রচেষ্টার ফল"। তিনি নিজের মুক্তির জন্য যোদ্ধাবস্থা পর্যালোচনা ট্রাইব্যুনাল বা ২০০৫ সালের প্রশাসনিক পর্যালোচনা বোর্ডের শুনানিকে দায়ী করেননি। তিনি এই দুটি সংস্থার কাজকে বেআইনি বলেও বর্ণনা করেন।[৩]
জাইফ দাবি করেন যে, তাকে বেআইনিভাবে স্ট্রেস পজিশনে বেঁধে রাখা হয়েছিল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাগরাম থিয়েটার ডিটেনশন ফ্যাসিলিটিতে থাকাবস্থায় তিনি ঘুমের অভাব ও চরম তাপমাত্রার শিকার হয়েছিলেন।[৪]
সম্প্রতিক ঘটনাবলী
[সম্পাদনা]একটি ঐক্য সরকারের আহ্বান :
কারামুক্তির পর ২০০৭ সালের ১২ এপ্রিল জাইফ আফগানিস্তানে একটি ঐক্য-সরকারের আহ্বান জানিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেন। [৭] ২০০৮ সালের ৬ জুন দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা জাইফের সাথে একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে। এতে দাবী করা হয় যে, জাইফ দাবি করেছেন, তালেবানের সাথে আলোচনাই আফগান শান্তির চাবিকাঠি। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে, বিদেশী সৈন্যদের উপস্থিতি কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তৃত্ব ক্ষয় করে ফেলছে।[৮]
কাবুল চলে যাওয়া :
২০০৭ সালের ১২ এপ্রিল ডের স্পিগেলের একটি নিবন্ধে বলা হয় যে, জাইফ একটি সুদর্শন গেস্ট হাউসে অবস্থান নিয়েছেন, যা ধুলোময় আধুনিক পাড়া খোশালখানে অবস্থিত। [৭]ডের স্পিগেলের একটি নিবন্ধে বলা হয় যে, কারজাই সরকার জাইফকে যে নতুন বাড়ি দিয়েছেন সেটি তালেবানের প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াকিল আহমেদ মুত্তাওয়াকিলের দখলে থাকা একটি জায়গার পাশেই অবস্থিত। ডের স্পিগেলে জাইফের বাড়ির ভিতরে বাইরে ভারী সশস্ত্র নিরাপত্তা পাহারা দেওয়া বলে বর্ণনা করা হয়েছে। সে নিবন্ধে ডের স্পিগেল জাইফ এবং মুত্তাওয়াকিল উভয়কেই তালেবানের সবচে মধ্যপন্থী প্রাক্তন সদস্য হিসেবে গণ্য করে। পরবর্তীতে জাইফ শিকাগো ট্রিবিউনকে বলেন যে, আফগান নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাকে তার কাবুলের বাড়ির কাছে অবস্থিত মসজিদে যেতে দেন না। [৯]
ম্যাকক্ল্যাচি সাক্ষাৎকার :
২০০৮ সালের ১৫ জুন ম্যাকক্ল্যাচি নিউজ সার্ভিস আব্দুল সালাম জাইফসহ ৬৬ জন প্রাক্তন গুয়ান্তানামো বন্দীর সাক্ষাৎকারের একটি নিবন্ধ প্রকাশ করে। [১০] [১১] ম্যাকক্ল্যাচি রিপোর্টে বলা হয় যে, রক্ষীরা জাইফকে বলেছিল যে, তিনি কারাগারের রাজা এবং তিনি গুয়ানতানামো অনশন ধর্মঘটে প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন।
সৌদি শান্তি আলোচনা :
কারজাই সরকারের নেতৃস্থানীয় কয়েকজন আফগান ব্যক্তিত্ব, গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ারের হেজব-ই-ইসলামি এবং তালেবানের অন্যান্য প্রাক্তন সদস্যদের সাথে অনানুষ্ঠানিকভাবে দেখা করার জন্য সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ কর্তৃক আমন্ত্রণ জানানোর কথা স্বীকার করেন জাইফ। [১২] [১৩] জাইফ এই বৈঠকটিকে "শান্তি আলোচনা" হিসাবে চিহ্নিত করা উচিত বলে অস্বীকার করেন এবং বলেন যে, এই বৈঠকে থাকা ব্যক্তিদের কেউই আলোচনা পরিচালনা করার জন্য অনুমোদিত ছিল না। জায়েফ এই বৈঠকে আফগানিস্তান নিয়ে আলোচনার কথা অস্বীকার করেছেন। দ্য এজের বকতব্য অনুসারে বৈঠকে অংশ নেওয়া অন্যান্য ব্যক্তিদের মধ্যে তালেবানের প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াকিল আহমদ মুতাওয়াকিল এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ফাজেল হাদি শিনওয়ারিও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। [১২]মামলা :
২০০৮ সালের অক্টোবরে জাইফ বলেছিলেন যে, ২০০২ সালে তাকে গ্রেফতার করে আমেরিকার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মামলা করবেন। [১৪]
মার্কিন বাহিনীর হয়রানি থেকে পলায়ন:
২০১২ সালের ৯ এপ্রিল আল জাজিরা জানায় যে, জাইফ মার্কিন বাহিনীর হয়রানি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য অজ্ঞাত জায়গায় চলে গিয়েছেন। [১৫] [১৬] তখন তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে পালিয়ে যান।
থিঙ্ক 2013 :
২০১৩ সালে মোল্লা জাইফ একটি সম্মেলনে রবার্ট গ্রেনিয়ারের সাথে দেখা করেছিলেন যেখানে তারা আফগান আক্রমণ এবং তালেবান সরকার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ অবস্থান নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। [১৭]
প্রকাশনা
[সম্পাদনা]২০০৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে জাইফ গুয়ান্তানামো কারাগারে তার প্রতি দুর্ব্যবহারের বিবরণ দিয়ে পশতু ভাষায় এ পিকচার অফ গুয়ান্তানামো নামে একটি বই প্রকাশ করেন।[১৮] ২০০৮ সালের অক্টোবরে তিনি ফরাসি সাংবাদিক জিন-মিশেল কারাদেকের সাথে "প্রিজোনিয়ার আ গুয়ানতানামো" বইটি সম্পাদনা করেন।
২০১০ সালের জানুয়ারীতে আব্দুস সালাম জাইফের আত্মজীবনীর একটি ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হয় মাই লাইফ উইথ দ্য তালেবান নামে।[১৯] বইটিতে তিনি ইতিবাচকভাবে "তালেবানদের চালনা কিসে" তার একটি শক্তিশালী চেহারা প্রদান করেন।[২০]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ Abdul Salam Zaeef (২০১০)। "Torture and Abuse on the USS Bataan and in Bagram and Kandahar: An Excerpt from "My Life with the Taliban" by Mullah Abdul Salam Zaeef"। ২৮ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
We were not permitted to talk to each other, but could see one another while the food was handed to us. I eventually saw that Mullahs Fazal, Noori, Burhan, Wasseeq Sahib and Rohani were all among the other prisoners, but still we could not talk to each other.
- ↑ ক খ "Taliban Author, Ambassador Removed From UN Terrorist List - Businessweek"। web.archive.org। ২০১১-০৪-১৬। Archived from the original on ২০১১-০৪-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২৪।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ Abdul Salam Zaeef, My Life With the Taliban ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ জুলাই ২০২৪ তারিখে (London: Hurst Publishers; New York, NY: Columbia University Press, 2010).
- ↑ ক খ Felix Kuehn, Alex Strick van Linschoten (২৩ আগস্ট ২০১২)। An Enemy We Created: The Myth of the Taliban-Al Qaeda Merger in Afghanistan। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 481। আইএসবিএন 9780199977239।
- ↑ Fergusson, James (৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০)। Taliban। Random House। পৃষ্ঠা 12। আইএসবিএন 9781407096346।
- ↑ Noraiee, Hoshang। "A review of Zaeef's Autobiography: My Life With Taliban"।
- ↑ ক খ Olaf Ihlau (১২ এপ্রিল ২০০৭)। "Ex-Taliban Official Calls for Unity Government in Afghanistan"। Der Spiegel। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০০৭।
- ↑ Nushin Arbabzadah (৬ জুন ২০০৮)। "Talking to the Taliban: Afghan politicians increasingly believe negotiations with the ousted Taliban regime are the key to peace"। The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০০৮।
- ↑ Kim Barker (৪ মার্চ ২০০৯)। "Ex-Guantanamo Bay detainees fighting to fit in and feeling the pull to join the Taliban or Al Qaeda"। Chicago Tribune। ৯ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০০৯।
- ↑ Tom Lasseter (১৫ জুন ২০০৮)। "Guantanamo Inmate Database: Page 2"। McClatchy News Service। ১৪ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০০৮।
- ↑ Tom Lasseter (১৮ জুন ২০০৮)। "U.S. hasn't apologized to or compensated ex-detainees"। Myrtle Beach Sun। ১৯ জুন ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০০৮।
- ↑ ক খ "Taliban and Afghan officials break bread"। The Age। ৭ অক্টোবর ২০০৮। ২৫ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০০৮।
- ↑ 24 Hours, "Taliban denies peace talks", 7 October 2008
- ↑ "Taleban official to sue Pakistan"। BBC News। ১৪ অক্টোবর ২০০৮। ১৭ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০০৮।
- ↑
Qais Azimy, Mujib Mashal (৯ এপ্রিল ২০১২)। "Former Taliban leader flees for safety"। Al Jazeera। ৯ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০১২।
Muzhda said Zaeef feared for his life in the wake of the attempted raids on his home. Many of the Taliban prisoners freed from Guantanamo had been killed in night raids and that made Zaeef more nervous.
- ↑
Jason Ditz (৯ এপ্রিল ২০১২)। "Ex-Taliban Turned Negotiator Flees After US Raids: Zaeef Flees Kabul, Relocates in United Arab Emirates"। Antiwar.com। ১৩ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০১২।
Though the US has used Zaeef's help in setting up talks with the Taliban, Zaeef noted that the US has killed a number of former Gitmo detainees in the recent months, which has him convinced that he could well be next, and that he will be safer outside of its reach.
- ↑ "THiNK2013: Mullah Zaeef and Robert Grenier"। YouTube।
- ↑ Zeeshan Haider (৩০ জুলাই ২০০৬)। "Ex-Taliban Details Guantanamo 'Humiliation'"। The Australian। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০০৭।
- ↑
Qurat ul ain Siddiqui (২৯ আগস্ট ২০১০)। "Alternative discourse"। Dawn। Archived from the original on ১ সেপ্টেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১০।
In this scenario the autobiography of a senior former member of the Afghan Taliban, Abdul Salam Zaeef, attempts to fill part of the great void of original Afghan narratives that has impeded a more perceptive understanding of the conflict on the part of the international observer.
- ↑ Ryan Shaffer (অক্টোবর ২০১০)। "A Review of: "Abdul Salam Zaeef. My Life With the Taliban (ed. and tran. Alex Strick van Linschoten and Felix Kuehn).""। Terrorism and Political Violence, Volume 22, Issue 4। পৃষ্ঠা 664–667।