আব্দুল কুদ্দুস (নাটোরের রাজনীতিবিদ)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আব্দুল কুদ্দুস
মৎস্য ও পশু সম্পদ প্রতিমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২১ ডিসেম্বর ১৯৯৯ – ১৫ জুলাই ২০০‌১
পূর্বসূরীসতীশ চন্দ্র রায়
উত্তরসূরীআব্দুল হাই
নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ – ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬
পূর্বসূরীআবুল কাশেম সরকার
উত্তরসূরীএকরামুল আলম
কাজের মেয়াদ
১২ জুন ১৯৯৬ – ১ অক্টোবর ২০০১
পূর্বসূরীএকরামুল আলম
উত্তরসূরীমোজাম্মেল হক
কাজের মেয়াদ
২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ – ৩০ অগাস্ট ২০২৩
পূর্বসূরীমোজাম্মেল হক
উত্তরসূরীসিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মমো: আব্দুল কুদ্দুস
(১৯৪৬-১০-৩১)৩১ অক্টোবর ১৯৪৬
নাটোর জেলা, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু৩০ আগস্ট ২০২৩(2023-08-30) (বয়স ৭৬)
ইউনাইটেড হাসপাতাল, ঢাকা, বাংলাদেশ
সমাধিস্থলবিলশা পারিবারিক কবরস্থান, নাটোর জেলা
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
দাম্পত্য সঙ্গীরওশন আরা বেগম
সন্তানকোহেলী কুদ্দুস (কন্যা)
পিতামাতা
  • হায়াতুল্লাহ সরদার (পিতা)
  • মোছা: গুলেনুর বেগম (মাতা)
প্রাক্তন শিক্ষার্থী

আব্দুল কুদ্দুস (৩১ অক্টোবর ১৯৪৬ - ৩০ আগস্ট ২০২৩) ছিলেন বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা।[১] তিনি নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও শেখ হাসিনার প্রথম মন্ত্রীসভায় মৎস্য ও পশু সম্পদ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পালন করেন।[২][৩][৪]

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

আব্দুল কুদ্দুস ৩১ অক্টোবর ১৯৪৬ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের নাটোরের গুরুদাসপুরের খুবজীপুর ইউনিয়নের চলনবিল অধ্যুষিত বিলসা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হায়াতুল্লাহ সরদার, পেশায় ছিলেন কৃষক ও মাতা মোছা: গুলেনুর বেগম ছিলেন গৃহিণী।[৫][১]

তিনি রাজশাহী কলেজ পড়াশুনা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন এবং ইংরেজীতে এম এ ডিগ্রি অর্জন করেছেন।[৩][২][১]

তার স্ত্রী নাম রওশন আরা বেগম, এই দম্পতীর ২ ছেলে, বড় ছেলে মুক্তিযুদ্ধের সময় মারা যান। ছোট আসিফ আব্দুল্লাহ বিন কুদ্দুস শোভন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও একমাত্র মেয়ে কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি।[৩][২][৬]

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

আব্দুল কুদ্দুস ২ মেয়াদে তিনি আমৃত্যু নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[৩][২]

১৯৬৬ সালের ছয়দফা, ১৯৬৯ সালের অসহোযোগ আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।[১]

১৯৬৮-১৯৭২ সাল বৃহত্তর রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ছিলেন। তিনি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত রাজশাহী কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন।[২][৩]

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৫ সাল থেকে ৫ বছর কারাগারে ছিলেন, সে সময় কারাগারে থাকা অবস্থায় বৃহত্তর রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি রাজশাহী মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১]

সপ্তম জাতীয় সংসদে তিনি শেখ হাসিনার প্রথম মন্ত্রীসভায় ২১ ডিসেম্বর ১৯৯৯ থেকে ১৫ জুলাই ২০০‌১ সাল পর্যন্ত মৎস্য ও পশু সম্পদ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পালন করেন।[৭]

তিনি ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নাটোর-৪ আসন থেকে মোট পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।[৮][৯][১০][১১][১২]

তিনি পঞ্চম জাতীয় সংসদে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি ও সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য, সপ্তম জাতীয় সংসদে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য, নবম জাতীয় সংসদে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি ও সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত কমিটির সদস্য, দশম জাতীয় সংসদে সরকারী প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি, সরকারী প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একাদশ জাতীয় সংসদে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।[১][১৩]

১৯৮৬ সালের তৃতীয় ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নাটোর-৪ আসন থেকে নির্বাচনে লড়ে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন।[৪]

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা[সম্পাদনা]

আব্দুল কুদ্দুস রাজশাহী অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্বে রাজশাহীতে তিনিই প্রথম পাকিস্তানের পতাকায় অগ্নিসংযোগ করেন। পরবর্তীতে ভারতে ট্রেনিং নিয়ে মুজিব বাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডার ও সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন।[২][৩][১৩]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

আব্দুল কুদ্দুস ৩০ আগস্ট ২০২৩ বুধবার সকাল ৭টা ২২ মিনিটে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।[৩][২][১৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে শোকপ্রস্তাব গৃহীত"বাসস। ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩। ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  2. "নাটোরের এমপি আব্দুল কুদ্দুসের মৃত্যু"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৩০ আগস্ট ২০২৩। ৩০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০২৩ 
  3. "এমপি আব্দুল কুদ্দুস মারা গেছেন"দৈনিক কালবেলা। ৩০ আগস্ট ২০২৩। ৩০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০২৩ 
  4. "সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস আর নেই"দৈনিক সমকাল। ৩০ আগস্ট ২০২৩। ৩০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০২৩ 
  5. "AL Lawmaker Abdul Quddus Passes Away"en.orthosongbad.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৮-৩০। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-৩০ 
  6. "সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস আর নেই"এনটিভি। ৩০ আগস্ট ২০২৩। ৩০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০২৩ 
  7. "বর্তমান ও সাবেক মাননীয় প্রতিমন্ত্রীগণ"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  8. "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  9. "৭ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  10. "৯ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ২০১৬-১১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-৩০ 
  11. "১০ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ২০১৯-০১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১২ 
  12. "১১তম সংসদের সদস্যবৃন্দ"জাতীয় সংসদ। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। ২০১৯-১০-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০১৯ 
  13. "নাটোরের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস আর নেই"দৈনিক কালের কণ্ঠ। ৩০ আগস্ট ২০২৩। ৩০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০২৩