আবেগের সমাজবিদ্যা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আবেগের সমাজবিদ্যায় (sociology of emotion) মানুষের আবেগ নিয়ে আলোচনায় সমাজবিদ্যার তত্ত্ব ও পদ্ধতির প্রয়োগ ঘটানো হয়। সমাজবিদ্যার প্রাথমিকভাবে উদ্ভব ঘটে আধুনিকতার নেতিবাচক প্রভাবের প্রতিক্রিয়া হিসেবে। এক্ষেত্রে আবেগ নিয়ে সমাজবিদ্যায় আলাদা কোন বিভাগ তৈরি না হলেও, সমাজবিদ্যার অনেক আদর্শিক তত্ত্ব (nomative theory) আবেগ নিয়ে কাজ করে। যেমন কার্ল মার্ক্স পুঁজিবাদকে (capitalism) ব্যক্তিগত 'প্রজাতি সারাংশের' বিরোধী হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন, জর্জ সিমেল 'দ্য মেট্রোপলিস' বা শহরের ডিইন্ডিভিজুয়ালাইজিং প্রবণতার কথা লিখেছিলেন, আর ম্যাক্স ওয়েবার আধুনিকতার যুক্তিসহকারী প্রভাব নিয়ে লিখেছিলেন।

তত্ত্ব[সম্পাদনা]

আবেগ এক দিক থেকে ব্যক্তির অন্তঃস্থ বৈশিষ্ট্য ও তার মধ্যে কোন প্রোথিত বৈশিষ্ট্য হতে পারে, আবার কোন সত্তা দ্বারা হস্তচালন বা ম্যানিপুলেশ্ন এর ফলাফল হতে পারে। শেষোক্তটি নিয়েই সমাজবিদ্যা আলোচনা করে। অণু স্তরে বা মাইক্রো লেভেলে এর উদাহরণ হিসেবে বলা যায় আমাদের প্রতিদিনের সামাজিক মিথোস্ক্রিয়ায় (social interaction) ও পরিস্থিতিতে সামাজিক ভূমিকা (social role) এবং বিভিন্ন সামাজিক নিয়ম (norm) এর প্রতি অনুভূতি, বৃহৎ স্তরে বা ম্যাক্রো লেভেলে এর উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সামাজিক প্রতিষ্ঠান, আলোচনা, আদর্শ ইত্যাদি। যেমন (উত্তরাধুনিক বা) আধুনিক বিবাহ ভালবাসার আবেগের উপর নির্ভর করে, বা এই বিবাহের দ্বারা ভালবাসার আবেগ নিয়ন্ত্রিত হয়। এভাবে, আধুনিক বিজ্ঞান জানার আগ্রহের আবেগ ছাড়া অগ্রসর হত না, আবার কখনও আবেগ ওভার-স্পেশালাইজেশনের মাধ্যমে বিজ্ঞানের জন্য ক্ষতিকর হয়। সাংস্কৃতিক স্তরীকরণের অনেক ধরন বিরক্তি ও দুঃখের আবেগ ছাড়া তৈরি হত না, ভয় ছাড়া রাজনীতির অস্তিত্ব থাকত না, অনেক গৃহযুদ্ধ ও জাতিগত যুদ্ধই ঘৃণা ছাড়া সংঘটিত হত না।

আমরা কোন পরিস্থিতির নিয়ম অনুযায়ী, আমাদের উপরে অনেক চাহিদার (demands) (যেগুলো কখনও কখনও একে অপরের সাথে দ্বান্দ্বিক হয়) ভিত্তিতে আমাদের আবেগ ও অনুভূতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। দলীয় মিথোস্ক্রিয়ার (group interaction) পদ্ধতিগত পর্যবেক্ষণের দ্বারা পাওয়া গেছে আমাদের দলীয় কার্যক্রমের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আর্থসামাজিক বিষয়ের প্রতি অনুগত থাকে এবং সমাজের উত্তেজনা অনুযায়ী কাজ করে।[১] একই সাথে দলে সামাজিক মিথোস্ক্রিয়া বিষয়ক ফিল্ড স্টাডি থেকে প্রকাশিত হয়, প্রত্যেকের অনুভূতি সামাজিক জালের (social network) সাথে মিশে যায়,[২] এই আবিষ্কারটি নিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এনালাইসিসে এখনও কাজ করা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Hare, A. P. (1976). Handbook of small group research (2nd ed.). New York: Free Press, Chapter 3
  2. Hare, A. P. (1976). Handbook of small group research (2nd ed.). New York: Free Press, Chapter 7

বহিঃস্থ সূত্র[সম্পাদনা]