আবু সালেহ মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লেফটেন্যান্ট কর্নেল

আবু সালেহ মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান
ডাকনামএ এস এম মুস্তাফিজুর রহমান
জন্ম৮ জানুয়ারি ১৯৩৪
রণবিজয়পুর, বাগেরহাট, পূর্ব বাংলা, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান  বাংলাদেশ)
মৃত্যু৩০ নভেম্বর ১৯৯৬
সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (ঢাকা)
আনুগত্য বাংলাদেশ
সেবা/শাখা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
পদমর্যাদালেফট্যানেন্ট কর্ণেল

আবু সালেহ মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান যিনি এ এস এম মুস্তাফিজুর রহমান নামে পরিচিত ছিলেন। (৮ জানুয়ারি ১৯৩৪ – ৩০ নভেম্বর ১৯৯৬) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক লেফট্যানেন্ট কর্ণেল যিনি বাংলাদেশের সংসদ সদস্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রীবাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন।[১]

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

আবু সালেহ মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান ৮ জানুয়ারি ১৯৩৪ সালে ব্রিটিশ ভারতের পূর্ববাংলার বাগেরহাটের রণবিজয়পুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা খান বাহাদুর বজলুর রহমান ছিলেন আবগারি শুল্ক কমিশনার।

তিনি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার'স কলেজিয়েট স্কুলে পড়াশোনা করেন। পরে ঢাকার সেইন্ট গ্রেগরী উচ্চ বিদ্যালয় এর পর ঢাকা কলেজে। তিনি পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। [১]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

আবু সালেহ মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ক্যাডেট হিসাবে যোগদান করেন এবং ১৩ মার্চ ১৯৫৫ সালে কমিশন লাভ করেন। তিনি পঞ্চম বেলুচ রেজিমেন্টে সেনাবাহিনীতে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। ১৯৫৬ সালে তিনি আর্টিলারি অফিসার নির্বাচিত হন। তিনি ইন্টার সার্ভিস গোয়েন্দা শাখায় কাজ করেন। ১৯৬২ সালে পাকিস্তানের কোয়েটার কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ থেকে পিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ১৯৭৩ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পান। তার পরে চাকরি থেকে অবসর নেন তিনি। [১]

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

এ. এস. এম. মুস্তাফিজুর রহমান সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর রাজনৈতি শুরু করেন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তাকে ১৯৭৭ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিযুক্ত করেন। ১৯৭৮ সালে তাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়। ১৯৭৯ সালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল থেকে বাগেরহাট -২ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[২] এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিযুক্ত হয়ে তিনি ২৭ নভেম্বর ১৯৮১ সাল পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। আবদুস সাত্তার মন্ত্রিসভায় তিনি বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৮৫ সালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। [১]

১৯৯১ সালে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং মার্চ ১৯৯১ সাল থেকে মার্চ ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।[৩][৪][৫]ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৬] তিনি গুলশান রোটারি ক্লাব এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবং মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এবং ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯৩ সালে তিনি দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের কাছ থেকে গোয়াং‌হোয়া পদক পেয়েছিলেন। [১]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

আবু সালেহ মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান ৩০ নভেম্বর ১৯৯৬ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। [১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন (২০১২)। "রহমান, লে.কর্নেল এ.এস.এম মুস্তাফিজুর"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  2. "২য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  4. "Mr. A. S. M. Mustafizur Rahman"mofa.gov.bd। ২৭ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৬ 
  5. "এ এস এম মোস্তাফিজুর রহমান"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০৬ 
  6. "৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]