বিষয়বস্তুতে চলুন

আবু বকর আল-কালাবাদি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আবু বকর আল-কালাবধি ( আরবি: أبو بكر الكلاباذي ), সম্পূর্ণরূপে, আবু বকর ইবনে আবি ইসহাক মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহীম ইবনে ইয়াকুব আল-বুখারি আল-কালাবাদি ( আরবি: أبو بكر بن أبي إصحاق محمد بن إبراهيم بن يعقوب البخاري الكلاباذي ) হলেন একজন ফার্সি [] হানাফী মাতুরিদি [] সুফি পণ্ডিত।তিনি দশম শতাব্দীর শেষের দিকে বুখারায় বসবাস করতেন। তিনি ইসলামের প্রথম ৩০০ বছরে রচিত সুফিবাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রচনা "কিতাব আত-তাররুফ" -এর লেখক।

তার জীবন সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। তার আরবি নাম ( নিসবা ) ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি বুখারার একটি জেলা কালাবধে বাস করতেন। ধারণা করা হয় যে, তিনি পারস্য বংশোদ্ভূত ছিলেন। ইতিহাস বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে বোঝা যায় যে,তিনি ৯৯০ খ্রিস্টাব্দ বা ৩৮০ হিজরির ১৯শে জমাদিউল আউয়াল বুখারায় ইন্তেকাল করেন।তাকে বুখারায় সমাহিত করা হয়।এখনও অনেক দর্শনার্থী বর্তমান উজবেকিস্তানের বুখারায় অবস্থিত তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।

কালাবাদি আবু আল-হুসেন আল-ফারসির অধীনে সুফিবাদ এবং মুহাম্মদ ইবনে ফাদলের অধীনে ফিকাহ অধ্যয়ন করেন।

তাঁর ছয়-সাতটি রচনা রয়েছে।তাদের মধ্যে আরবি ভাষায় দুটি টিকে আছে:

  • বাহর আল-ফাওয়াইদ ফি মা'আনি আল-আখরহাদিসের ২২২ নম্বর আয়াতের উপর সংক্ষিপ্ত নৈতিক ভাষ্য।
  • কিতাব আত-তাররুফ ( এজে আরবেরির ইংরেজি অনুবাদকে বলা হয় "সুফিদের মতবাদ ")।

আল-কালাবাদি কিতাব আত-তাররুফ রচনার মাধ্যমে বিখ্যাত হয়ে উঠেন। এই গ্রন্থটিতে ৭৫টি অপেক্ষাকৃত ছোট অধ্যায় রয়েছে এবং বেশ কয়েকটি দীর্ঘ ভাষ্য সংযোজিত হয়েছে। এই রচনাটি মূলত দুটি উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছিল: সাহু ("সংযমী") সুফি চিন্তাধারার পক্ষে সমর্থন করা এবং গোঁড়া ইসলামের অনুসারীদের আশ্বস্ত করা যে, সুফিবাদ তাদের বিশ্বাসের বিরোধিতা করে না। দ্বিতীয় বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ সেসময় সুফিবাদকে ধর্মদ্রোহী ঘোষণা করার সম্ভাবনা ছিল।

এই বইটি শুরু থেকেই সুফিদের কাছ থেকে প্রচুর সমর্থন পেয়েছিল এবং মনোযোগের কেন্দ্রে চলে আসে। সুফিবাদ এবং মরমী লেখালেখির উপর এই বইয়ের প্রভাব এতটাই বেশি যে এর সম্পর্কে বলা হয়েছে: "তাররুফ না থাকলে সুফিবাদ জানা যেত না।" এই গুরুত্ব এবং খ্যাতির কারণেই এই বইটির উপর তাফসীর লেখা শুরু হয়, যার মধ্যে আবু ইব্রাহিম ইসমাইল মুস্তামলি বুখারী (মৃত্যু ৪৩৪ হিজরী )-এর বিস্তারিত তাফসীরও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এর কিছুদিন আগে ৯২২ সালে, বিখ্যাত সুফি আল-হাল্লাজকে ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। আল-কালাবাদির উপর এ ঘটনার উল্লেখযোগ্য প্রভাব ছিল। তিনি তার রচনায় প্রায়ই আল-হাল্লাজের কথা উদ্ধৃত করেছেন। কিন্তু কখনোই নাম উল্লেখ করে বলেননি।তার বইয়ে মানসুর আল–হাল্লাজকে কেবল "মহান সুফিদের একজন" হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

তার এই বইটি এখনও আধুনিক পাঠকদের কাছে বোধগম্য এবং বইটিতে ইসলামের প্রথম তিনশ বছরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ উক্তি সংযোজন করা হয়েছে।

আরো দেখুন

[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. The Cambridge history of Iran. (Repr. সংস্করণ)। Cambridge U.P.। ১৯৭৫। পৃষ্ঠা 461। আইএসবিএন 978-0-521-20093-6 
  2. Madelung, Wilferd (১৯৮৮)। Religious Trends in Early Islamic Iran। Persian Heritage Foundation। পৃষ্ঠা 47।