বিষয়বস্তুতে চলুন

আবুল আ'লা মওদুদী

পরীক্ষিত
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আবুল আ'লা মওদুদী
ابو الاعلی مودودی
১ম আমির, জামায়াতে ইসলামীর
অফিসে
২৬ আগষ্ট ১৯৪১  অক্টোবর ১৯৭২
পূর্বসূরীঅবস্থান প্রতিষ্ঠিত
উত্তরসূরীমিয়াঁ তুফায়েল মোহাম্মদ
উপাধিআমীর, শাইখুল ইসলাম, ইমাম, আল্লামা, সৈয়দ, মুজাদ্দিদ, আমীর
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম(১৯০৩-০৯-২৫)২৫ সেপ্টেম্বর ১৯০৩
মৃত্যু২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯(1979-09-22) (বয়স ৭৫)
ধর্মইসলাম
যুগবিংশ শতাব্দী
আখ্যাসুন্নি
বংশহুসাইন ইবনে আলীমঈনউদ্দিন চিশতীর মাধ্যমে মুহাম্মদের সরাসরি বংশধর
ব্যবহারশাস্ত্রকুরআন হাদিস ইজমা
আন্দোলনজামায়াতে ইসলামী
প্রধান আগ্রহতাফসির, হাদিস, ফিকহ, রাজনীতি, অর্থনীতি, ইসলামী আন্দোলন, সংস্কৃতি
মুসলিম নেতা
পুরস্কারইসলাম পরিষেবায় বাদশাহ ফয়সাল পুরস্কার (১৯৭৯)
ওয়েবসাইটsyed-maududi.com (আর্কাইভ)

সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী (উর্দু: ابو الاعلیٰ المودودی; ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯০৩২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯) ছিলেন একজন ইসলামী পণ্ডিত, ইসলামপন্থী মতাদর্শী, মুসলিম দার্শনিক, আইনবিদ, ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক, কর্মী এবং গবেষক, যিনি ব্রিটিশ ভারত এবং পরবর্তীতে দেশভাগের পর পাকিস্তানে সক্রিয় ছিলেন।[] উইলফ্রেড ক্যান্টওয়েল স্মিথ তাঁকে "আধুনিক ইসলামের সবচেয়ে সুসংবদ্ধ চিন্তাবিদ" হিসেবে বর্ণনা করেছেন।[] তাঁর অসংখ্য রচনা, যা "কুরআন ব্যাখ্যা, হাদিস, আইন, দর্শন এবং ইতিহাসের মতো বিভিন্ন শাখা আবৃত করে,[] যেগুলো উর্দুতে লেখা হয়েছিল, কিন্তু পরে ইংরেজি, আরবি, হিন্দি, বাংলা, তেলুগু, তামিল, কন্নড়, বর্মি, মালয়ালম এবং আরও অনেক ভাষায় অনূদিত হয়।[] তিনি ইসলামকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং "প্রকৃত ইসলাম" বলতে তিনি যা বুঝেছিলেন তা প্রচার করতে চেয়েছিলেন।[][] তিনি বিশ্বাস করতেন যে ইসলাম রাজনীতির জন্য অপরিহার্য এবং শরিয়া প্রতিষ্ঠা করা ও রাশেদুন খলিফাদের শাসনের সময়কার মতো ইসলামিক সংস্কৃতি সংরক্ষণ করা এবং ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদসমাজতন্ত্রের মতো পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যবাদের প্রভাব থেকে উদ্ভূত অনৈতিকতা পরিত্যাগ করা প্রয়োজন।[]

তিনি ইসলামপন্থী দল জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠা করেন।[][][১০] ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় মওদুদী এবং জামায়াতে ইসলামী সক্রিয়ভাবে ভারত বিভাগের বিরোধিতা করেছিলেন।[১১][১২][১৩] কিন্তু ভারত ভাগের পর মওদুদী এবং তাঁর অনুসারীরা ইসলামের রাজনৈতিকীকরণ এবং পাকিস্তানকে একটি ইসলামী রাষ্ট্র বানানোর জন্য সমর্থন তৈরির দিকে মনোযোগ দেন।[১৪] ধারণা করা হয় যে, তারা জেনারেল মুহাম্মদ জিয়াউল হককে পাকিস্তানে ইসলামীকরণ প্রবর্তন করতে সাহায্য করেছিলেন এবং তাঁর প্রশাসনের সময় বিচার বিভাগ ও বেসামরিক চাকরিতে হাজার হাজার সদস্য ও সমর্থককে চাকরি দেওয়ায় তারা জিয়াউল হকের দ্বারা ব্যাপকভাবে শক্তিশালী হয়েছিলেন।[১৫][১৬] ১৯৭৯ সালে মওদুদী ইসলামে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ সেবার জন্য সর্বপ্রথম সৌদি আরবের কিং ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কারের প্রাপক হন।[১৭] তিনি সৌদি আরবের মদিনা ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় অংশ নিয়েছিলেন।[১৮]

জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম ব্রাদারহুড, ইসলামিক সার্কেল অফ নর্থ আমেরিকা, হামাস এবং অন্যান্য অনেক সংস্থা মওদুদীর কাজের প্রশংসা করে।

প্রারম্ভিক জীবন

পটভূমি

মাওলানা মওদুদী ভারতের হায়দারাবাদের (বর্তমান মহারাষ্ট্র) ঔরঙ্গবাদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম সাইয়েদ আহমদ হাসান, তিনি পেশায় ছিলেন আইনজীবী। মাওলানা মওদুদী বংশীয় দিক দিয়ে সাইয়িদুনা হুসাইন শহিদের ৩৬তম উত্তর পুরুষ। তাঁর ২৩তম পূর্বপুরুষ খাজা কুতুব উদ্দীন মওদুদ চিশতি (মৃ.৫২৭ হিজরী) ভারতে চিশতিয়া তরিকার আদি পীর হিসেবে পরিচিত। তাঁর নামানুসারেই এ বংশের লোকজন ‘মওদুদী’ নামে পরিচিত। মওদুদী খান্দানের কয়েক প্রজন্ম বংশ পরম্বরায় দাওয়াত-তাবলীগ ও পীর-মুরশিদির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।

সাইয়েদ মওদুদীর মাতার নাম রুকাইয়া বেগম। মায়ের দিক দিয়ে মাওলানা মওদুদী তুর্কি বংশোদ্ভূত।[১৯] মাওলানা আহমদ হাসানের তিন সন্তানের মধ্যে তিনি সব থেকে ছোট[২০] ছিলেন। তাঁর প্রমাতামহ মির্যা কোরবান আলী বেগ খান সালেক একজন তুর্কী কবি ও সাহিত্যিক ছিলেন (১৮১৬-১৮৮১) ছিলেন দিল্লিতে একজন সুপরিচিত লেখক ও কবি, বিখ্যাত উর্দু কবি গালিবের বন্ধু।[২১] কিন্তু সৈনিক বৃত্তিই তাঁর পূর্ব-পুরুষগণের আসল পেশা ছিল। মির্যা তোলক বে নামক তার জনৈক পূর্ব পুরুষ বাদশাহ আওরঙ্গজেব আলমগীরের আমলে ভারতে আগমন করে সেনা বিভাগে যোগদান করেন। বাদশাহ শাহ আলমের রাজত্বকাল পর্যন্ত উক্ত পরিবারের লোক কোন না কোন শাহী মসনদ অধিকার করেছিলেন। মোঘল সাম্রাজ্য পতনের পর তারাও বিভিন্ন দিকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।[২২]

শৈশব

আবুল আ’লার শিক্ষাজীবনের সূচনা হয় বাড়িতে গৃহশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে। তিনি তার পিতার হাতে এবং তার দ্বারা নিযুক্ত বিভিন্ন শিক্ষকের কাছ থেকে ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করেন।[২৩] তার পিতা তাকে মৌলবী বানাতে চেয়েছিলেন। নয় বছর বয়স পর্যন্ত তিনি তৎকালীন প্রসিদ্ধ আলেম আব্দুস সালাম নিয়াযীর কাছে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। এই শিক্ষার মধ্যে ছিল আরবি, ফারসি, সাহিত্য, কোরআন, ফেকাহ,ইসলামী আইন ও হাদীস শিক্ষা।[২৪] তিনি মানতিক (যুক্তিবিদ্যা) বইগুলিও অধ্যয়ন করেন।[২৫][২৬] ১১ বছর বয়সে মওলানা  কাশিম আমিনের লেখা বই আল-মারহা আল-জাদিদাহ আরবি থেকে উর্দুতে অনুবাদ করেন।[২৭][২৮] কয়েক বছর পর, তিনি পারস্যের রহস্যময় চিন্তাবিদ মোল্লা সাদ্রাের বই আসফারের প্রায় ৩,৫০০ পৃষ্ঠার অনুবাদ করেন।[২৯] সাম্রাজ্যের পুনর্জীবনের ধারণা এবং মানুষের আধ্যাত্মিক পুনরুজ্জীবনের জন্য ইসলামী আইন (শরিয়া) শাসনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সাদ্রার লেখা মওদুদীর চিন্তাধারা প্রভাবিত করে, যার প্রতিচ্ছবি তার লেখা ও কাজে পাওয়া যায়।[৩০]

শিক্ষা

শৈশবের গৃহশিক্ষক মাওলানা নিয়াযীর কাছ থেকে তিনি আরবি ব্যাকরণ, মাআনি ও বালাগাত শিক্ষা লাভ করেন। ১৯১৬ সালে এগারো বছর বয়সে তাকে আল্লামা শিবলী নোমানীর প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা 'ফওকানিয়া মাদরাসায়' রুশদিয়া শ্রেণীতে (৮ম শ্রেণী) ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তিনি 'ম্যাট্রিকুলেশন’ মানের ‘মৌলভি’ পাশ করেন। এরপর তিনি হায়দ্রাবাদের ঐতিহ্যবাহী দারুল উলূমে চলে যান। তিনি আলিম তথা উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন। কিন্তু অধ্যয়নের ছয় মাসের মাথায় পিতার অসুস্থতার কারণে তাকে খেদমতের জন্য লেখাপড়া অসমাপ্ত রেখে ভূপালে চলে যেতে হয়। পিতার অসুস্থতায় উপার্জনের তাগিদে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় তার ইতি ঘটে।[৩১][২৪]

১৯২০ সালে তার পিতা আহমদ হাসান মৃত্যুর পর তিনি ভুপাল হতে দিল্লি চলে যান। জীবিকার প্রয়োজনে তিনি সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি পুনরায় জ্ঞানার্জনে মনোযোগ দেন আবুল আ’লা। এসময় তিনি সমাজবিজ্ঞান, পশ্চিমা দর্শন এবং ইতিহাস অধ্যয়ন করার জন্য ইংরেজী ও জার্মান ভাষা শিখেন। কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি না হলেও খ্যাতনামা আলেমদের কাছ থেকে ইলম হাসিল করেন এবং সনদ লাভ করেন। দিল্লির দারুল উলুম ফতেহপুর এর শিক্ষক মাওলানা শরিফুল্লাহ খানের তত্ত্বাবধানে ১৯২৬ সালের ১২ জানুয়ারি ‘উলুমে আকলিয়া ও আদাবিয়্যা ওয়াবালাগাত’ এবং ‘উলুমে আকালিয়া ওআদাবিয়্যা ওয়াফরুইয়া’ সনদ অর্জন করেন। একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মাওলানা আশফাকুর রহমান কান্ধলভির কাছ থেকে ১৯২৭ সালে হাদিস, ফিকহ ও আরবি সাহিত্যে সনদ লাভ করেন। ১৯২৮ সালে জামে তিরমিযি এবং মুয়াত্তায়ে মালেক সমাপ্তির সনদপ্রাপ্ত হন।[৩২][১৯]

সাংবাদিকতা

১৯১৮ সালে মাত্র পনেরো বছর বয়সে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। তার বড়ো ভাই আবুল খায়ের মওদুদী বিজনৌর থেকে প্রকাশিত 'মদিনা’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। বড়ো ভাইয়ের সাথে দুই মাস কাজ করেন মওদুদী। এভাবেই তার কর্মজীবনের সূত্রপাত হয় । ১৯২০ সালে ১৭ বছর বয়সে ‘সাপ্তাহিক তাজ’ পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত হন । তার সম্পাদনায় পত্রিকাটি পরবর্তী সময়ে দৈনিকে রুপান্তরিত হয়। কিন্তু অল্প কিছুকাল পরেই ব্রিটিশবিরোধী সম্পাদকীয় লেখার কারণে তাজ পত্রিকার অফিসিয়াল সম্পাদক ও মালিক তাজ উদ্দিন সরকার কর্তৃক মামলায় পড়েন। তখন সাইয়েদ মওদুদী আবার জব্বলপুর ছেড়ে দিল্লি চলে আসতে বাধ্য হন।[৩৩]

১৯২২ সালে দিল্লিতে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা আহমদ সাঈদ ও মুফতি কেফায়ত উল্লাহর অনুরোধে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের মুখপত্র ‘মুসলিম’ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন আবুল আ’লা মওদুদী। ১৯২৩ সালে ‘মুসলিম’ পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায়। ১৯২৪ সালে পুনরায় ‘আল-জমিয়ত’ নামে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের মুখপত্রের প্রকাশনা শুরু হয়। সাইয়েদ মওদুদীকে আবার ‘আল-জমিয়ত’-এর সম্পাদক পদে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯২৮ সাল পর্যন্ত টানা দায়িত্ব পালনের পর জমিয়ত কর্তৃপক্ষের সাথে জাতীয়তার প্রশ্নে মতবিরোধ হলে তিনি পদত্যাগ করেন। চার বছর বিরতির পর ১৯৩২ সালে মাসিক ‘তরজুমানুল কুরআন’ প্রকাশনার মধ্য দিয়ে পুনরায় সাংবাদিকতায় জড়িত হন। মওদুদী প্রতিষ্ঠিত এ মাসিক পত্রিকাটি এখনও নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। [১৯]

লেখালেখি

১৯২৬ উগ্র হিন্দুবাদী নেতা স্বামী শ্রদ্ধানন্দ ‘শুদ্ধি আন্দোলন’ শুরু করে। প্রচারণা চালিয়ে, লোভ-ভয় দেখিয়ে এবং চাপ সৃষ্টি করে কিছু নিঃস্ব অসহায় মুসলিমকে হিন্দু ধর্মে দীক্ষিত করা হয়। এ ঘটনা মুসলিমদের মাঝে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি করে। এ পরিস্থিতিতে দিল্লি শাহী জামে মসজিদে মাওলানা মুহাম্মদ আলী জওহর এ সমস্ত ভিত্তিহীন এবং উস্কানীমূলক প্রচারণায় অতীব দুঃখ প্রকাশ করে বলেন,

"আহা! আজ যদি ভারতে এমন কোন মর্দে মুজাহিদ আল্লাহর বান্দা থাকতো, যে তাদের এসব হীন প্রচারণার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে পারতো, তাহলে কতই না ভাল হতো!"

মাওলানা মুহাম্মদ আলী জওহরের কথায় প্রচন্ড প্রভাবিত হন মওদুদী। ১৯২৭ সালে উগ্র হিন্দুবাদী অপপ্রচারের জবাব এবং জিহাদের যৌক্তিকতা প্রমাণে মওদুদীর ‘আল-জিহাদ ফিল ইসলাম’ শীর্ষক প্রবন্ধ সিরিজ জমিয়ত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করেন। পরবর্তী সময়ে তা বিরাট গ্রন্থ আকারে প্রকাশিত হয়।হিন্দুত্ববাদীদের অপপ্রচারের সমুচিত ও যৌক্তিক জবাব সম্বলিত বইটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ডক্টর মুহাম্মদ ইকবাল গ্রন্থখানি সম্পর্কে মন্তব্য করেন-

"জেহাদ, যুদ্ধ ও সন্ধি সম্পর্কে ইসলামী আইন-কানুন সম্বলিত এ গ্রন্থখানা অভিনব ও চমৎকার হয়েছে। প্রত্যেক জ্ঞানী ও সুধী ব্যক্তিকে গ্রন্থখানি পাঠ করতে অনুরোধ করি।"[৩৪]

১৯৩২ সালে তিনি তার্জমানুল কুরআন পত্রিকায় প্রকাশ শুরু করেন। ১৯৩৩ সাল থেকে ১৯৪০ পর্যন্ত সময়ে তার্জমানুল কুরআনে সাইয়েদ মওদুদীর গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক গবেষণা গুলো প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকার মাধ্যমে তার রাজনৈতিক চিন্তাধারার ছড়িয়ে যেতে থাকে। সমসাময়িক বিষয়, খিলাফত, ইসলামের পুনরুজ্জীবন, ব্যক্তিজীবনে ইসলামকে ফিরিয়ে আনা, ইত্যাদি বিষয়ে তিনি ধারাবাহিক ভাবে লিখতে থাকেন। এ সময় তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেন।[৩৫]

ইসলামের বুনিয়াদী শিক্ষা,সুদ ও আধুনিক ব্যাংকিং, ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন, ইসলাম ও জাতীয়তাবাদ, ইসলাম ও পাশ্চাত্য সভ্যতার দ্বন্দ্ব, ইসলামী সংস্কৃতির মর্মকথা,পর্দা, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুসলমান প্রভৃতি মূল্যবান গ্রন্থ এই সময়ে রচিত হয়। মওলানার জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ কাজ হচ্ছে তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন (উর্দু: تفہيم القرآن‎, ইংরেজী: Towards Understanding the Qur'an বাংলা: তাফহীমুল কুরআন) উর্দু এই তাফসীরটি লিখতে তার জীবনের বড় অংশ ব্যয় করেন।[৩৬]

বিবাহ

১৯৩৭ সালের ১৫ই মার্চ দিল্লির এক শরিফ পরিবারের সাইয়িদ নাসির উদ্দিন শামসির কন্যা মাহমুদা বেগমের সাথে মওদুদীর বিবাহ সম্পাদিত হয়। তখনকার দিল্লির ধনী পরিবারগুলোর বিয়েতে লক্ষাধিক টাকার মোহরানা ধরা হতো, কিন্তু তা পরিশোধ করা হতো না। মওদূদী এ অনৈসলামিক রীতি প্রত্যাখ্যান করেন। মাত্র দুই হাজার টাকা মোহরানায় নিতান্ত অনাড়ম্বরভাবে তাঁর বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।[৩৭][৩৮]

প্রভাব ও ধারাবাহিকতা

ইরানের ইসলামী বিপ্লবের নেতা ও শিয়া ইসলামের পণ্ডিত আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ্ খোমেনী ১৯৬৩ সালে মাওলানা মওদুদীর সাথে সাক্ষাত করেন, পরবর্তীতে ইমাম খোমেনী মওদুদীর বইগুলো ফার্সি ভাষায় অনুবাদ করেন। [৩৯]

জীবনকাল

  • ১৯০৩- জন্ম গ্রহণ করেন। জন্মস্থানঃ ঔরঙ্গাবাদ (বর্তমানে মহারাষ্ট্রের মধ্যে), হায়দারাবাদ, ভারত।
  • ১৯১৮- সাংবাদিক হিসেবে 'বিজনোর' (Bijnore) পত্রিকায় কাজ শুরু করেন।
  • ১৯২০- জবলপুরে 'তাজ' পত্রিকার এডিটর হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।
  • ১৯২১- দিল্লিতে মাওলানা আব্দুস সালাম নিয়াজির কাছে আরবি শিক্ষা গ্রহণ করেন।
  • ১৯২১- দৈনিক 'মুসলিম' পত্রিকার এডিটর হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।
  • ১৯২৫- নয়া দিল্লির 'আল জামিয়াহ' পত্রিকার এডিটর হিসেবে নিয়োগ লাভ।
  • ১৯২৬- দিল্লির 'দারুল উলুম ফতেহপুরি' থেকে 'উলুম-এ-আকালিয়া ওয়া নাকালিয়া' সনদ লাভ করেন।
  • ১৯২৭- 'আল জিহাদ ফিল ইসলাম' নামে জিহাদ বিষয়ক একটি গবেষণাধর্মী গ্রন্থ রচনা শুরু করেন।
  • ১৯২৮- উক্ত প্রতিষ্ঠান (দারুল উলুম ফতেহপুরি) থেকে 'জামে তিরমিযি' এবং 'মুয়াত্তা ইমাম মালিক' সনদ লাভ করেন।
  • ১৯৩০- 'আল জিহাদ ফিল ইসলাম' নামের বিখ্যাত বইটি প্রকাশিত হয়। তখন তার বয়স ২৭ বছর।
  • ১৯৩৩- ভারতের হায়দারাবাদ থেকে 'তরজুমানুল কুরআন' নামক পত্রিকা প্রকাশ শুরু করেন।
  • ১৯৩৭- তার ৩৪ বছর বয়সে, লাহোরে, দক্ষিণ এশিয়ার কিংবদন্তিতুল্য মুসলিম কবি ও দার্শনিক আল্লামা মুহাম্মাদ ইকবালের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয় করিয়ে দেন চৌধুরী নিয়াজ আলী খান।
  • ১৯৩৮- তার ৩৫ বছর বয়সে, হায়দারাবাদ থেকে পাঠানকোটে গমন করেন। সেখানে তিনি দারুল ইসলাম ট্রাস্ট ইনস্টিটিউটে যোগদান করেন, যেটি ১৯৩৬ সালে আল্লামা ইকবালের পরামর্শে চৌধুরী নিয়াজ আলী খান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পাঠানকোটের ৫ কিমি পশ্চিমে, জামালপুরে, চৌধুরী নিয়াজ আলী খানের ১০০০ একর এস্টেট ছিল। চৌধুরী নিয়াজ আলী খান সেখান থেকে ৬৬ একর জমি মাওলানা মওদুদীকে দান করেন।
  • ১৯৪১- লাহোরে 'জামায়াতে ইসলামী হিন্দ' নামে একটি ইসলামী রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর আমির হন।
  • ১৯৪২ - জামায়াতে ইসলামীর প্রধান কার্যালয় পাঠানকোটে স্থানান্তর করেন।
  • ১৯৪২ - তাফহীমুল কুরআন নামক তাফসির গ্রন্থ প্রনয়ন শুরু করেন।
  • ১৯৪৭ - জামায়াতে ইসলামীর প্রধান কার্যালয় লাহোরের ইছরায় স্থানান্তর করেন।
সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদীর বাড়ির প্রবেশ পথ, ইছরা, লাহোর
  • ১৯৪৮ - 'ইসলামী সংবিধান' ও 'ইসলামী সরকার' প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচারণা শুরু করেন।
  • ১৯৪৮ - পাকিস্তান সরকার তাকে কারাগারে বন্দী করে।
  • ১৯৪৯ - পাকিস্তান সরকার জামায়াতের 'ইসলামী সংবিধানের রূপরেখা' গ্রহণ করে।
  • ১৯৫০ - কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন।
  • ১৯৫৩- 'কাদিয়ানী সমস্যা' নামে একটি বই লিখে কাদিয়ানী বা আহমদিয়া সম্প্রদায়কে অমুসলিম প্রমাণ করেন। ফলে ইতিহাসখ্যাত বড় রকমের কাদিয়ানী বিরোধী হাঙ্গামার সৃষ্টি হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এ সময় অনেকগুলো সংগঠন একযোগে কাদিয়ানীদেরকে সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। তারা সর্বদলীয় কনভেনশনে ২৭ ফেব্রুয়ারি তারিখে 'ডাইরেক্ট একশন কমিটি' গঠন করে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] জামায়াত এই কমিটির বিরোধিতা করে অহিংস আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নেয়। কিন্তু তথাপি মার্চ মাসের শুরুতে আন্দোলন চরম আকার ধারণ করে এবং পুলিশের গুলিতে কিছু লোক নিহত হয়।[৪০] পরে একটি সামরিক আদালত আবুল আ'লাকে এই গোলযোগের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেয়, (যদিও কাদিয়ানী সমস্যা নামক বইটি বাজেয়াপ্ত করা হয়নি)। অবশ্য সেই মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর করা হয়নি।[৪১]
  • ১৯৫৩- মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর চাপ এবং দেশী বিদেশী মুসলিম নেতৃবৃন্দের অনুরোধে মৃত্যুদন্ডাদেশ পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড করা হয়, কিন্তু পরে তা-ও প্রত্যাহার করা হয়।
  • ১৯৫৮- সামরিক শাসক ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান 'জামায়াতে ইসলামী'কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
  • ১৯৬৪- আবারো তাকে কারাবন্দী করা হয়।
  • ১৯৬৪- কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
  • ১৯৭১- পাকিস্তান থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আলাদা হবে কিনা এ প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের উপর ন্যাস্ত করেন[৪২]
  • ১৯৭২- তাফহীমুল কুরআন নামক তাফসির গ্রন্থটির রচনা সম্পন্ন করেন।
  • ১৯৭২- জামায়াতে ইসলামীর আমির পদ থেকে ইস্তফা দেন।
  • ১৯৭৮- তার রচিত শেষ বই 'সিরাতে সারওয়ারে আলম' প্রকাশিত হয়। এটি নবী মুহাম্মাদ-এর জীবনী গ্রন্থ।
  • ১৯৭৯- "ইসলাম পরিসেবায়" এই বিভাগে মুসলিম বিশ্বের নোবেলখ্যাত বাদশাহ ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন।[৪৩]
  • ১৯৭৯- চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন।
  • ১৯৭৯- যুক্তরাষ্ট্রে তার মৃত্যু হয়।[৪৪]
  • ১৯৭৯- লাহোরের ইছরায় সমাধিস্থ করা হয়।
সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদীর কবর

গ্রন্থাবলী

কুরআন
  • তরজমায়ে কুরআন মজীদ – তরজুমায়ে কুরআন মজীদ;
  • তাফহীমুল কুরআন – তাফহীমুল কুরআন;
  • তাফহীমুল কুরআন বিষয় নির্দেশিকা – মাওয়ূয়াতে কুরআনী;
  • কুরআনের মর্মকথা – মুকাদ্দামায়ে তাফহীমুল কুরআন;
  • কুরআনের চারটি মৌলিক পরিভাষা – কুরআন কী চার বুনয়াদী ইসতেলার্হী।
হাদীস/সুন্নাহ
  • সুন্নাতে রাসূলের আইনগত মর্যাদা – সুন্নাত কী আইনি হাইসিয়ত;
  • কুরআনের মহত্ব ও মর্যাদা – ফাযায়েলে কুরআন (হাদীস কী রোশনী মেঁ)।
ইসলামী জীবন দর্শন&n
  • ইসলাম পরিচিতি – রিসালায়ে দ্বীনীয়াত;
  • ঈমানের হাকিকত – হাকীকতে ঈমান;
  • ইসলামের হাকিকত – হাকীকতে ইসলাম;
  • নামায রোযার হাকিকত – হাকীকতে সাওম আওর সালাত;
  • জিহাদের হাকিকত – হাকীকতে জিহাদ;
  • হজ্জের হাকিকত – হাকীকতে হজ্জ;
  • যাকাতের হাকিকত – হাকীকতে যাকাত;
  • তাকদীরের হাকিকত – মাসয়ালায়ে জবর ওয়া কদর;
  • তাকওয়ার হাকিকত – হাকীকতে তাকওয়া;
  • শিরকের হাকিকত – হাকীকতে শিরক;
  • তাওহীদের হাকিকত – হাকীকতে তাওহীদ;
  • শান্তিপথ – সালামতী কা রাস্তা;
  • একমাত্র ধর্ম – দ্বীনে হক;
  • তাওহীদ রিসালাত ও আখিরাত – তাওহীদ রিসালাত আওর যীন্দেগী বা’দ মওতকা আকলী সুবুত;
  • ইসলামের জীবন পদ্ধতি – ইসলাম কা নেযামে হায়াত;
  • ইসলাম ও জাহেলিয়াত – ইসলাম আওর জাহেলিয়াত;
  • ইসলামের শক্তির উৎস – ইসলাম কা ছের চশমায়ে কুঅত;
  • কুরবানীর তাৎপর্য – ইসবাতে কুরবানী বিআয়াতে কুরআনী;
  • ইসলামের নৈতিক দৃষ্টিকোণ – ইসলাম কা আখলাকী নোকতায়ে নযর;
  • ইসলামী দাওয়াতের দার্শনিক ভিত্তি – ইসলাম আওর মাগরিবী লা দ্বীনী জমহুরিয়ত;
  • ইসলাম ও সামাজিক সুবিচার – ইসলাম আওর আদলে ইজতেমায়ী;
  • ইসলামী জীবন ব্যবস্থার মৌলিক রূপরেখা – ইসলামী নেযামে যিন্দেগী আওর উসকে বুনয়াদী তাসবিরাত;
  • ইসলাম ও পাশ্চাত্য সভ্যতার দ্বন্দ্ব – তানকীহাত;
  • ইসলামী সংস্কৃতির মর্মকথা – ইসলামী তাহযীব আওর উসকে উসুল ওয়া মুবাদী;
  • ইসলাম ও জাতীয়তাবাদ – মাসয়ালায়ে কাওমিয়াত;
  • ইসলাম ও সমাজতন্ত্র;
  • শিক্ষা ব্যবস্থা : ইসলামী দৃষ্টিকোণ – তা’লীমাত;
  • আল জিহাদ – আল জিহাদু ফিল ইসলাম;
  • নির্বাচিত রচনাবলী (১-৩ভাগ) – তাফহীমাত (১-৩জিলদ)।
আইন, রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা
  • ইসলামের রাজনৈতিক মতবাদ -ইসলাম কা নযরিয়ায়ে সিয়াসী;
  • ইসলামী রাষ্ট্র – ইসলামী রিয়াসত;
  • ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রণয়ন – ইসলামী দস্তুর কি তাদবীন;
  • ইসলামী শাসন্তন্ত্রের মূলনীতি – ইসলামী দস্তুর কি বুনিয়াদী;
  • ইসলামী আইন – ইসলামী কানুন;
  • ইসলামে মৌলিক মানবাধিকার – ইনসানকে বুনিয়াদী হুকুম;
  • ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমদের অধিকার – ইসলামী রিয়াসত মে জিম্মীয়ু কী হুকুক;
  • খেলাফত ও রাজতন্ত্র – খিলাফত ওয়া মুলূকিয়াত;
  • উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুসলমান (১-২খন্ড) – তাহরীকে আযাদী হিন্দ আওর মুসলমান (১-২জিলদ);
  • কুরআনের রাজনৈতিক শিক্ষা – কুরআন কী সিয়াসী তা’লীমাত;
  • মুরতাদের শাস্তি – মুরতাদ কী সাযা;
  • জাতীয় ঐক্য ও গণতন্ত্রের ভিত্তি – কওমী ওয়াহদাত;
  • দাক্ষিণাত্যের রাজনৈতিক ইতিহাস – দাককিন কী সিয়াসী তারীখ।
ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠন
  • ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি – দাওয়াতে ইসলামী আওর উসকা তারীক কার;
  • ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি – তাহরীকে ইসলামী কী আখলাকী বুনিয়াদী;
  • দায়ী ইলাল্লাহ দাওয়াত ইলাল্লাহ – দায়ী ইলাল্লাহ দাওয়াত ইলাল্লাহ;
  • ভাঙা ও গড়া – বানাও আওর বেগাড়;
  • একটি সত্যনিষ্ঠ দলের প্রয়োজন – এক সালেহ জামায়াত কা জরুরত;
  • সত্যের সাক্ষ্য – শাহাদাতে হাক;
  • জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াত – জামায়াতে ইসলামী কা দাওয়াত;
  • জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশ্য,ইতিহাস,কর্মসূচী – জামায়াতে ইসলামী কা মাকসাদে তারীখ আওর লায়েহায়ে আ’মল;
  • ইসলামী বিপ্লবের পথ – ইসলামী হুকুমাত কিসতারাহ কায়েম হূতী হ্যায়;
  • মুসলমানদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের কর্মসূচী – মুসলমানু কা মাযী হাল মুস্তাকবেল কে লিয়ে লায়েহায়ে আমল;
  • ইসলামী আন্দোলন সাফল্যের শর্তাবলী – তাহরীকে ইসলামী কামিয়াবী কা শারায়েত;
  • আন্দোলন সংগঠন কর্মী – তাহরীক আওর কারে কুন;
  • ইসলামী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কর্মসূচী – তাহরীকে ইসলামী কা আয়েনদাহ লায়েহায়ে আমল;
  • শাহাদাতে হুসাইন রাঃ – শাহাদাতে ইমাম হসাইন রাঃ;
  • আল্লাহর পথে জিহাদ – জিহাদুন ফি সাবীলিল্লাহ;
  • বিশ্ব মুসলিম ঐক্যজোট আন্দোলন – ইত্তেহাদে আলমে ইসলামী;
  • আজকের দুনিয়ায় ইসলাম – ইসলাম আসরে হাযের মে;
  • ইসলামী রেনেসা আন্দোলন – তাজদীদ ওয়া ইহইয়ায়ে দ্বীন;
  • জামায়াতে ইসলামীর ঊনত্রিশ বছর – জামায়াতে ইসলামী কা ঊনত্রিশ সাল।
অর্থনীতি ও ব্যাংক ব্যবস্থা
  • ইসলামী অর্থব্যবস্থার মূলনীতি – ইসলামী মায়া’শিয়াত কে উসুল;
  • কুরআনের অর্থনৈতিক নির্দেশিকা – কুরআন কী মায়াশী তা’লীমাত;
  • ইসলাম ও আধুনিক অর্থনৈতিক মতবাদ – ইসলাম আওর জাদীদে মায়া’শী নযরিয়াত;
  • অর্থনৈতিক সমস্যার ইসলামী সমাধান – ইনসান কা মায়া’শী মাসয়ালা আওর উসকা ইসলামী হল;
  • ভূমির মালিকানা বিধান – মাসয়ালায়ে মিলকিয়তে যমীন;
  • জাতীয় মালিকানা – কওমী মিলকিয়ত;
  • ইসলামী অর্থনীতি – মায়াশিয়াতে ইসলাম;
  • সুদ ও আধুনিক ব্যাংকিং – সুদ।
দাম্পত্য জীবন ও নারী
  • পর্দা ও ইসলাম – পর্দা;
  • মুসলিম নারীর নিকট ইসলামের দাবী – মুসলিম খাওয়াতীন সে ইসলাম কে মুতালিবাত;
  • স্বামী স্ত্রীর অধিকার – হুকুকুয যাওজাইন;
  • ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ – ইসলাম আওর যবতে বেলাদাত।
তাযকিয়ায়ে নফস
  • হিদায়াত – হিদায়াত;
  • ইসলামী ইবাদতের মর্মকথা – ইসলামী ইবাদত পর তাহকীকী নযর;
  • আত্মশুদ্ধির ইসলামী পদ্ধতি – তাযকিয়ায়ে নফস;
  • ইসলামের বুনিয়াদি শিক্ষা – খুতবাত।
সীরাত
  • আদর্শ মানব – সরওয়ারে আলম কা আসলী কারণামা;
  • খতমে নবুয়্যাত – খতমে নবুওয়াত;
  • সীরাতে সরওয়ারে আলম (১-২খন্ড) – সীরাতে সরওয়ারে আলম (১-২জিলদ);
  • নবীর কুরআনী পরিচয় – কুরআন আপনে লায়ে ওয়ালে কো কেসরং মেঁ পেশ করতা হায়;
  • সাহাবায়ে কিরামের মর্যাদা – মাকামে সাহাবা।
অন্যান্য
  • কাদিয়ানী সমস্যা – কাদিয়ানী মাসয়ালাহ;
  • রাসায়েল ও মাসায়েল (১-৫খন্ড) – রাসায়েল ওয়া মাসায়েল (১-৫জিলদ);
  • যুব সমাজের মুখোমুখি মাওলানা মওদুদী – তাসরীহাত;
  • যুব জিজ্ঞাসার জবাব (১-২খন্ড) – ইসতিফসারাত (১-২জিলদ);
  • বিকালের আসর (১-২খন্ড) – আসরী মাজালিশ (১-২জিলদ);
  • খুতবাতুল হারাম – খুতবাতুল হারাম;
  • বেতার বক্তৃতা – নশরী তাকরীরী;
  • সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদীর পত্রাবলী (১-২খন্ড) – মাকাতীব মাওলানা মওদুদী (র.) (১-২জিলদ);
  • পত্রালাপ মাওলানা মওদুদী ও মরিয়ম জমিলা – মাওলানা মওদুদী আওর মরিয়ম জমিলা কে দরমিয়ান খত।

তথ্যসূত্র

  1. Zebiri, Kate (ফেব্রুয়ারি ১৯৯৮)। "Seyyed vali Reza Nasr: Mawdudi and the making of Islamic revivalism"। Review। Bulletin of the School of Oriental and African Studies৬১ (1): ১৬৭–১৬৮। ডিওআই:10.1017/S0041977X00016189এস২সিআইডি 161170329
  2. Smith, Wilfred Cantwell (১৯৫৭)। Islam in Modern History। Princeton University Press। পৃ. ২৩৩। ওসিএলসি 397585
  3. Saeed, Abdullah (২০০৬)। Islamic Thought: An Introduction। Routledge। পৃ. ১৪৫। আইএসবিএন ৯৭৮-০-৪১৫-৩৬৪০৮-৯
  4. Adams, Maududi and the Islamic State 1983, পৃ. 99
  5. Nasr, Mawdudi and Islamic Revivalism 1996, পৃ. 140
  6. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; SVRN1996: 138 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  7. Nasr, Mawdudi and Islamic Revivalism 1996, পৃ. 49
  8. Haqqani, Husain (২০১৬)। Pakistan between mosque and military। India: Penguin Group। পৃ. ২১আইএসবিএন ৯৭৮-০-৬৭০-০৮৮৫৬-০
  9. Martín, Richard C. (২০০৪)। Encyclopedia of Islam & the Muslim World। Granite Hill। পৃ. ৩৭১। আইএসবিএন ৯৭৮-০-০২-৮৬৫৬০৩-৮
  10. Jackson 2010, পৃ. 64–65
  11. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Oh2007 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  12. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; NG336 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  13. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Gupta2016 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  14. Adams, Maududi and the Islamic State 1983, পৃ. 99
  15. Devichand, Mukul (১০ নভেম্বর ২০০৫)। "How Islam got political: Founding fathers"BBC News। ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০১৪Maududi made plenty of enemies in his lifetime – but his most significant domestic impact came after his death. Pakistan's military ruler General Zia-ul-Haq put some of Maududi's ideas into practice in 1979, turning Islamic "sharia-based criminal punishments into law.
  16. Jones, Owen Bennett (২০০৩)। Pakistan: Eye of the Storm। New Haven: Yale University Press। পৃ. ১৬–১৭। আইএসবিএন ৯৭৮-০-৩০০-১০১৪৭-৮... Zia rewarded the only political party to offer him consistent support, Jamaat-e-Islami. Tens of thousands of Jamaat activists and sympathizers were given jobs in the judiciary, the civil service and other state institutions. These appointments meant Zia's Islamic agenda lived on long after he died.
  17. "Service to Islam"King Faisal's Prize। ৬ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০১৫
  18. Encyclopaedia Dictionary Islam Muslim World, etc.। পৃ. ৮৭৩। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০From 1956, the discussion of the role of Islam in the constitution, died down and Maududi, until restricted by ill-health in 1969, traveled widely outside Pakistan. He was a particularly frequent visitor to Saudi Arabia, where he took part in both the establishment and the running of Medina's Islamic university and the World Muslim League.
  19. 1 2 3 আবু সুফিয়ান, মুহাম্মদ। ইসলামী রেনেসাঁর দশ পাঞ্জেরী। প্রচ্ছদ প্রকাশনী।
  20. "Sayyid Abul A'la Maududi"Official website of the Jamaat-e-Islami। ১৮ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত।
  21. Vali Nasr, Mawdudi and the Making of Islamic Revivalism, Oxford University Press (1996), p. 11
  22. আলী খান, আব্বাস (এপ্রিল ২০০৫)। মাওলানা মওদুদী ঐকটি জীবন একটি ইতিহাস (৬ সংস্করণ সংস্করণ)। পৃ. ৪৯ ও ৫০ পৃষ্ঠা।{{বই উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: বছর (লিঙ্ক)
  23. Esposito ১৯৮৩, পৃ. ১০০-১০১।
  24. 1 2 Irfan Ahmed in The Princeton Encyclopedia of Islamic Political Thought (collective), Princeton University Press (2013), p. 333
  25. Roy Jackson, Mawlana Mawdudi and Political Islam: Authority and the Islamic state, Routledge (2010), p. 18
  26. Vali Nasr, Mawdudi and the Making of Islamic Revivalism, Oxford University Press (1996), p. 12
  27. Roy Jackson, Mawlana Mawdudi and Political Islam: Authority and the Islamic state, Routledge (2010), p. 19
  28. Vali Nasr, Mawdudi and the Making of Islamic Revivalism, Oxford University Press (1996), p. 13
  29. Muhammad Suheyl Umar, "... hikmat i mara ba madrasah keh burd? The Influence of Shiraz School on the Indian Scholars", October 2004 – Volume: 45 – Number: 4, note 26 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে
  30. Vali Nasr, Mawdudi and the Making of Islamic Revivalism, Oxford University Press (1996), p. 24
  31. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; banglanews24.com নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  32. আলী খান, আব্বাস (এপ্রিল ২০০৫)। মাওলানা মওদুদী ঐকটি জীবন একটি ইতিহাস (৬ সংস্করণ)।{{বই উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: বছর (লিঙ্ক)
  33. Khurshid Ahmad & Zafar Ishaq Ansari, Mawlānā Mawdūdī: An Introduction to His Life and Thought, Islamic Foundation (1979), p. 7
  34. আলী খান, আব্বাস (এপ্রিল ২০০৫)। মাওলানা মওদুদী ঐকটি জীবন একটি ইতিহাস (৬ সংস্করণ)। পৃ. ৪৯, ৫০।{{বই উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: বছর (লিঙ্ক)
  35. Nasr, Mawdudi and Islamic Revivalism 1996, পৃ. 27
  36. Esposito ১৯৮৩, পৃ. ২৭।
  37. Nasr, Mawdudi and Islamic Revivalism 1996, পৃ. 152
  38. মুহাম্মদ, আবু সুফিয়ান। ইসলামী রেনেসাঁর দশ পাঞ্জেরী। প্রচ্ছদ প্রকাশনী। পৃ. ২৫।
  39. tnr.com The New Republic "The roots of jihad in India" by Philip Jenkins, December 24, 2008
  40. [Leonard Binder: Religion and politics in Pakistan , page 263. University of California Press, 1961]
  41. Sayyid Abul Ala Maududi Summary (ইংরেজি ভাষায়)।
  42. "The Politics of Alliance - Bangladesh Experience"www.shahfoundationbd.org। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০২১
  43. "King Faisal Prize | Sayyid Abul Ala'a Al-Mowdoodi" (মার্কিন ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০২১
  44. "Syed Moudoodi biography at a glance"। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১০

গ্রন্থপঞ্জি

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

পূর্বসূরী
দল প্রতিষ্ঠা
জামায়াতে ইসলামীর আমির
১৯৪১– ১৯৭২
উত্তরসূরী
মিয়াঁ তুফাইল মুহাম্মাদ