আবহাওয়া ও জলবায়ু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আবহাওয়া হল কোনো নির্দিষ্ট স্থানের স্বল্পসময়ের বায়ুমণ্ডলের অবস্থা। পরিসংখ্যান সম্পর্কিত তথ্য ব্যবহার করে কোনো স্থানের দীর্ঘ সময়ের জলবায়ুর অর্থপূর্ণ গড় পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করে আবহাওয়া সম্পর্কে আগাম ধারণা পাওয়া যায়।[১][২] আর জলবায়ু হলো কোনো নির্দিষ্ট স্থানের দীর্ঘ সময়ের, সাধারণত ২০-৩০ বছরের আবহাওয়ার বিভিন্ন অবস্থার গড় অবস্থার হিসাব।[৩] সাধারণত বৃহৎ এলাকাজুড়ে জলবায়ু পরিমাপ করা হয়ে থাকে।আবহাওয়া বিজ্ঞান,যা বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞান নামে পরিচিত,সেখানে জলবায়ু পরিবর্তন অধ্যয়ন করা হয়। জলবায়ু একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কারণ এটি তাপ, আর্দ্রতা এবং সঞ্চালনের বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থাকে ইঙ্গিত করে; এটি উদ্ভিদ এবং মাটির গঠনে একটি প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে; এবং এটি চূড়ান্তভাবে জীবনের সমস্ত রূপকে প্রভাবিত করে। এটি একটি বৈজ্ঞানিক ভবিষ্যদ্বাণী যা প্রজ্ঞাময় পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে দীর্ঘকাল ধরে টেকসই হয়েছে।

এমন অনেক উপাদান রয়েছে যা সেখানকার ভৌগোলিক অবস্থানের আবহাওয়া এবং জলবায়ু উভয়কেই সমন্বিত করে। এই উপাদানগুলির মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য হল তাপমাত্রা, বায়ুমণ্ডলীয় চাপ, বাতাস, সৌর বিকিরণ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত, ঘনত্ব এবং টোপোগ্রাফি। জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বাধিক প্রভাব এর কারণ কেবল প্রাকৃতিক নয়, কৃত্রিমও হতে পারে। এই কৃত্রিম কারণগুলো স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গুরত্বপূর্ণ কারণ হিসাবে পরিমাপ করা যায়। সহজ ভাষায় জলবায়ু কোনও বৃহত অঞ্চলের দীর্ঘকালীন বায়ুমন্ডলের পরিবর্তনজনিত অবস্থা।

আবহাওয়া বিজ্ঞান বলা হয়।আবহাওয়া বায়ুচাপ, তাপমাত্রা এবং এক জায়গা আবহাওয়া বিজ্ঞান বলা হয়।আবহাওয়া বায়ুচাপ, তাপমাত্রা এবং এক জায়গা এবং অন্য জায়গার মধ্যে আর্দ্রতার পার্থক্য দ্বারা পরিচালিত হয়। এই পার্থক্যগুলি কোনও নির্দিষ্ট স্থানে সূর্য যে কোণে আলো দেয় তার কারণে ঘটতে পারে কারণ এই কোণ অক্ষাংশের সাথে পরিবর্তিত হয়। মেরু এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের বাতাসের মধ্যে শক্তিশালী তাপমাত্রার বৈসাদৃশ্যটি বৃহত্তম পর্যায়ে বায়ুমণ্ডলীয় তাপ জন্ম দেয়, যেমন হ্যাডলি সেল, ফেরেল সেল, মেরু কোষ এবং জেট প্রবাহ। মধ্য অক্ষাংশে আবহাওয়ার ধরণগুলো অন্য আবহাওয়া বিজ্ঞান বলা হয়।আবহাওয়া বায়ুচাপ, তাপমাত্রা এবং এক জায়গা এবং অন্য জায়গার মধ্যে আর্দ্রতার পার্থক্য দ্বারা পরিচালিত হয়। এই পার্থক্যগুলি কোনও নির্দিষ্ট স্থানে সূর্য যে কোণে আলো দেয় তার কারণে ঘটতে পারে কারণ এই কোণ অক্ষাংশের সাথে পরিবর্তিত হয়। মেরু এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের বাতাসের মধ্যে শক্তিশালী তাপমাত্রার বৈসাদৃশ্যটি বৃহত্তম পর্যায়ে বায়ুমণ্ডলীয় তাপ জন্ম দেয়, যেমন হ্যাডলি সেল, ফেরেল সেল, মেরু কোষ এবং জেট প্রবাহ। মধ্য অক্ষাংশে আবহাওয়ার ধরণগুলো মধ্যে আর্দ্রতার পার্থক্য দ্বারা পরিচালিত হয়। এই পার্থক্যগুলি কোনও নির্দিষ্ট স্থানে সূর্য যে কোণে আলো দেয় তার কারণে ঘটতে পারে কারণ এই কোণ অক্ষাংশের সাথে পরিবর্তিত হয়। মেরু এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের বাতাসের মধ্যে শক্তিশালী তাপমাত্রার বৈসাদৃশ্যটি বৃহত্তম পর্যায়ে বায়ুমণ্ডলীয় তাপ জন্ম দেয়, যেমন হ্যাডলি সেল, ফেরেল সেল, মেরু কোষ এবং জেট প্রবাহ। মধ্য অক্ষাংশে আবহাওয়ার ধরণগুলো[সম্পাদনা]

আবহাওয়া প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল একটি চলক। আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ে বিজ্ঞানের যে শাখায় আলোচনা করা হয় তাকে যেমন এক্সট্রাট্রপিকাল ঘূর্ণিঝড় এই জেটের প্রবাহের অস্থিরতার কারণে ঘটে। যেহেতু পৃথিবীর অক্ষগুলি তার কক্ষসমতলের তুলনায় কাত হয়ে থাকে), বছরের বিভিন্ন সময়ে সূর্য বিভিন্ন কোণে আলো দেয়। পৃথিবীর উপরিভাগে, তাপমাত্রা সাধারণত বার্ষিক ± ৪০ °C (−৪০ °F থেকে ১০০ °F) পর্যন্ত হয়ে থাকে। হাজার হাজার বছর ধরে, পৃথিবীর কক্ষপথের পরিবর্তনগুলি সূর্যের আলো দ্বারা প্রাপ্ত সৌর শক্তি পরিমাণ এবং বিতরণকে প্রভাবিত করতে পারে, ফলে দীর্ঘমেয়াদী জলবায়ু এবং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাবিত হয়।

পৃথিবীর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা পার্থক্য চাপের পার্থক্য এর কারণেও হয়ে থাকে। উচ্চতর উচ্চতায় তাপমাত্রা নিম্নতর উচ্চতার চেয়ে শীতল, কারণ বেশিরভাগ বায়ুমণ্ডলীয় উত্তাপটি পৃথিবীর পৃষ্ঠের সাথে সূর্যের আলোর যোগাযোগের কারণে হয় এবং সব স্থানের তেজস্ক্রিয় ক্ষতির পরিমাণ বেশিরভাগক্ষেত্রে স্থির থাকে। ভবিষ্যতের সময় এবং নির্দিষ্ট অবস্থানের বায়ুমণ্ডলের অবস্থার পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োগ করা হলে তাকে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়া বলে। পৃথিবীর আবহাওয়া ব্যবস্থা একটি বিশৃঙ্খল ব্যবস্থা; ফলস্বরূপ, সিস্টেমের এক অংশে ছোট ছোট পরিবর্তনগুলি পুরো সিস্টেমে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য মানব প্রচেষ্টা পুরো ইতিহাস জুড়ে এসেছে এবং এমন প্রমাণও পাওয়া যায় যে কৃষি ও শিল্পের মতো মানবিক ক্রিয়াকলাপ আবহাওয়ার রীতি পরিবর্তন করেছে

অন্যান্য গ্রহে আবহাওয়া কীভাবে কাজ করে সেটার অধ্যয়ন পৃথিবীতে আবহাওয়া কীভাবে কাজ করে তা বুঝতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপঃ সৌরজগৎের একটি বিখ্যাত ল্যান্ডমার্ক, বৃহস্পতির গ্রেট রেড স্পট, একটি এন্টিসাইক্লোনিক ঝড় যার অস্তিত্ব কমপক্ষে ৩০০ বছর ধরে ছিল এসব জানা যায়। তবে আবহাওয়া শুধু গ্রহগুলির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। কোনও তারা অবিচ্ছিন্নভাবে মহাকাশে হারিয়ে যেতে থাকলে সেটা সৌরজগৎ জুড়ে মূলত খুব পাতলা বায়ুমণ্ডল তৈরি করে। সূর্য থেকে বেরিয়ে আসা উপাদানের চলাচল সৌর বায়ু হিসাবে পরিচিত।

আবহাওয়ার উপাদান[সম্পাদনা]

আবহাওয়ার উপাদান বলতে সেসকল উপাদানকে বোঝায়, যাদের পরিবর্তনের ভিত্তিতে কোনো স্থানের বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থার পরিবর্তন সূচিত হয়। আবহাওয়ার এমন উপাদানগুলো হলো:

পরিবর্তন[সম্পাদনা]

আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করার আকাঙ্ক্ষা মানব ইতিহাস জুড়ে স্পষ্ট: আমেরিকার সামরিক অপারেশন পোপিয়ে, ফসলের জন্য বৃষ্টিপাতের উদ্দেশ্যে প্রাচীন রীতিনীতি থেকে উত্তর ভিয়েতনামের বর্ষা দীর্ঘায়িত করে সরবরাহের লাইন ব্যাহত করার প্রচেষ্টা করেছিল। আবহাওয়াকে প্রভাবিত করার সবচেয়ে সফল প্রচেষ্টা মেঘ বীজের সাথে জড়িত; এর মধ্যে রয়েছে প্রধান কুয়াশা এবং নিম্ন স্তরের বিচ্ছুরণের কৌশলগুলি প্রধান বিমানবন্দরগুলির দ্বারা নিযুক্ত করা, পর্বতমালায় শীতের বৃষ্টিপাত বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত কৌশল এবং শিলাবৃষ্টি দমন করার কৌশলগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।[৪] আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণের একটি সাম্প্রতিক উদাহরণ হ'ল ২০০৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমসের জন্য চীন প্রস্তুতি। ২০০৮ সালের ৮ আগস্ট চীন বেইজিং শহরের ২১ টি সাইট থেকে ১,১০৪টি রেইন রকেট দিয়ে ছত্রভঙ্গ গুলি করেছিল। বেইজিং পৌরসভা আবহাওয়া ব্যুরোর (বিএমবি) প্রধান গুও হু সাফল্যের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যে হেবাই প্রদেশের বাওডিং সিটিতে দক্ষিণ-পশ্চিমে ১০০ মিলিমিটারের বৃষ্টির অভিযান এবং বেইজিংয়ের ফাংশন জেলাতে ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ডিং হয়েছে। [৫]

এই কৌশলগুলির কার্যকারিতার জন্য যখন অবিসংবাদিত প্রমাণ রয়েছে, সেখানে কৃষিক্ষেত্র এবং শিল্পের মতো মানুষের ক্রিয়াকলাপের ফলে অজান্তেই আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলস্বরূপ বিস্তৃত প্রমাণ রয়েছে।[৪]

  1. বায়ুমণ্ডলে সালফার ডাই অক্সাইড এবং নাইট্রোজেন অক্সাইডের শিল্প নির্গমনের ফলে অ্যাসিড বৃষ্টিপাত মিঠা পানির হ্রদ, উদ্ভিদ এবং কাঠামোকে বিরূপ প্রভাবিত করে।
  2. অ্যানথ্রোপোজেনিক দূষকগুলি বায়ুর গুণমান এবং দৃশ্যমানতা হ্রাস করে।
  3. গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি বাতাসে নির্গত করে এমন মানবিক ক্রিয়াকলাপের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খরা, চরম তাপমাত্রা, বন্যা, তীব্র বাতাস এবং তীব্র ঝড়ের মতো চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলির ফ্রিকোয়েন্সি প্রভাবিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে [
  4. বৃহত্তর মহানগর অঞ্চলগুলি দ্বারা উৎপাদিত উত্তাপটি নিকটবর্তী আবহাওয়াকে সামান্যতম প্রভাবিত করতে দেখা গেছে, এমনকি ১,৬০০ কিলোমিটার (৯৯০ মাইল) অবধি দূরত্ব পর্যন্তও।[৬]

অজান্তে আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব ইকোসিস্টেমস, প্রাকৃতিক সম্পদ, খাদ্য এবং ফাইবার উৎপাদন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং মানব স্বাস্থ্যের সহ সভ্যতার অনেক দিক থেকে মারাত্মক হুমকির সৃষ্টি করতে পারে।[৭]

পূর্বাভাস[সম্পাদনা]

উত্তরের প্রশান্ত মহাসাগর, উত্তর আমেরিকা এবং উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের জন্য ৯ জুন ২০০৮ সালের দিকে ভবিষ্যতের পাঁচ দিনের পৃষ্ঠের চাপের পূর্বাভাস

ভবিষ্যতের সময় এবং নির্দিষ্ট অবস্থানের জন্য বায়ুমণ্ডলের অবস্থা পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োগ হ'ল আবহাওয়ার পূর্বাভাস। মানুষ সহস্রাব্দের জন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার চেষ্টা করেছে, এবং আনুষ্ঠানিকভাবে কমপক্ষে উনিশ শতক থেকে।[৮] আবহাওয়ার পূর্বাভাস বায়ুমণ্ডলের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে পরিমাণগত তথ্য সংগ্রহ করে এবং বায়ুমণ্ডলীয় প্রক্রিয়াগুলির বৈজ্ঞানিক বোধগম্যতা ব্যবহার করে বায়ুমণ্ডলটি কীভাবে বিকশিত হবে তা প্রজ্ঞাপন দ্বারা তৈরি করা হয়। [৯]

একদা আবহাওয়া পূর্বাভাসের সর্বজনীন প্রচেষ্টা মূলত ব্যারোমেট্রিক চাপ দিয়ে করা হত। বর্তমানে আবহাওয়া এবং আকাশের অবস্থার পরিবর্তনের উপর ভিত্তি করে পূর্বাভাস মডেলগুলি ভবিষ্যতের পরিস্থিতি নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়।[১০] অন্যদিকে, এখন পর্যন্ত ভবিষ্যতের পূর্বাভাসের জন্য মানব ইনপুটটিকে সর্বোত্তম সম্ভাব্য পূর্বাভাস মডেল ধরা হয়, যাতে প্যাটার্ন স্বীকৃতি দক্ষতা, টেলিকনেকশনস, মডেল পারফরম্যান্সের জ্ঞান এবং মডেল পক্ষপাতের জ্ঞান হিসাবে অনেকগুলি শাখা জড়িত।

বায়ুমণ্ডলের বিশৃঙ্খল প্রকৃতি, বায়ুমণ্ডলকে বর্ণনা করে এমন সমীকরণগুলি সমাধান করার জন্য প্রয়োজনীয় বিশাল গণনা শক্তি, প্রাথমিক অবস্থার পরিমাপে জড়িত ত্রুটি এবং বায়ুমণ্ডলীয় প্রক্রিয়াগুলির একটি অসম্পূর্ণ বোঝার অর্থ বর্তমান সময়ের পার্থক্যের কারণে পূর্বাভাসগুলি কম নির্ভুল হয়ে উঠেছে এবং যে সময়ের জন্য পূর্বাভাস তৈরি করা হচ্ছে তার সীমা(পূর্বাভাসের সীমা) বাড়ছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসের জন্য বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন রকম ব্যবহারকারী রয়েছে। আবহাওয়ার সতর্কতাগুলি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বাভাস কারণ সেগুলি জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়।[১১][১২] তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতের উপর ভিত্তি করে পূর্বাভাস কৃষির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।[১৩][১৪][১৫][১৬][১৭]

জলবায়ু[সম্পাদনা]

জলবায়ুর শ্রেণিবিভাগ[সম্পাদনা]

  • গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু
    • নিরক্ষীয় জলবায়ু
    • মৌসুমী জলবায়ু
  • নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু
  • হীমমণ্ডলীয় জলবায়ু

জলবায়ু পরিবর্তন[সম্পাদনা]

জলবায়ু কতিপয় বিষয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়ে থাকে, যেগুলোকে জলবায়ুর নিয়ামক বলা হয়ে থাকে। যথা:উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, বায়ুর আর্দ্রতা, বায়ুচাপ ইত্যাদি।

অক্ষাংশ[সম্পাদনা]

অক্ষাংশের ভিন্নতা ও পরিবর্তনের সাথে সাথেই জলবায়ুরও তারতম্য ঘটে। সূর্য কিরণ সারা বছর লম্ব ভাবে পরার কারণে নিরক্ষিয় অঞ্চলে উষ্ণ জলবায়ু বিরাজ করে ।এবং মেরু অঞ্চলের দিকে সূর্য রশ্মি ক্রমশ তির্যক হতে থাকে এবং জলবায়ু শিতল হয়। ফলে নিরক্ষিয় অঞ্চলে ৩২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকলেও মেরু অঞ্চলে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে থাকে। নিরক্ষরেখা বরাবর স্থানসমূহে সূর্যরশ্মি খাড়াভাবে পড়ে বিধায় ঐসকল অঞ্চলে উষ্ণতা বেশি। নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে তাপমাত্রা ক্রমেই কমতে থাকে। ১ °সে অক্ষাংশে উষ্ণতা 0.২৮ °সে হ্রাস পায় বলেই নিরক্ষরেখা থেকে সবচেয়ে দূরবর্তি উত্তর ও দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে বরফ রয়েছে।

উচ্চতা[সম্পাদনা]

উচ্চতার বৃদ্ধিতে তাপমাত্রা হ্রাস পায়। প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতায় ৬.8° সেলসিয়াস তাপমাত্রা হ্রাস পায়। এমনকি উচ্চতার তারতম্যে একই অক্ষাংশে অবস্থিত দুই অঞ্চলের তাপমাত্রা দুরকম হয়।

সমুদ্র থেকে দূরত্ব[সম্পাদনা]

কোনো স্থান সমুদ্র থেকে কতটা দূরে তার প্রেক্ষিতে বাতাসের আর্দ্রতার মাত্রা নির্ভর করে আর আর্দ্রতার প্রেক্ষিতে জলবায়ুর উষ্ণতা অনেকাংশে নির্ভরশীল। সমুদ্র নিকটবর্তি এলাকার বায়ুতে গরমকালে আর্দ্রতা ও শীতকালে মৃদু উষ্ণতা বিরাজ করে। এধরনের জলবায়ুকে সমভাবাপন্ন জলবায়ু বলে।

বায়ুপ্রবাহের দিক[সম্পাদনা]

সমুদ্র থেকে প্রবাহিত জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু যে অঞ্চল দিয়ে বয়ে যায়, সে অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বেশি হয়। কিন্তু স্থলভাগ থেকে প্রবাহিত শুষ্ক বায়ু আবার উষ্ণতা বাড়ায়।

বৃষ্টিপাত[সম্পাদনা]

কোনো স্থানে বৃষ্টিপাত হলে সেখানকার উত্তাপ কমে আবার বৃষ্টিপাতহীন অঞ্চলে উষ্ণতা বেশি থাকে। তাই মরুভূমি এলাকায় জলবায়ু উষ্ণ। তাছাড়া বৃষ্টিপাতের মাত্রার উপর আর্দ্রতার মাত্রাও নির্ভরশীল, যা জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে।

সমুদ্রস্রোত[সম্পাদনা]

শীতল বা উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের কারণে উপকূলবর্তি এলাকার আবহাওয়ায়ও পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। এর উদাহরণ হিসেবে প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণ পানির প্রবাহ এল নিনোর কথা উল্লেখ করা যায়, যার প্রভাবে উপকূলবর্তি দেশগুলোতে দীর্ঘ খরা পর্যন্ত দেখা দিয়েছে।

পর্বতের অবস্থান[সম্পাদনা]

উঁচু পর্বতে বায়ুপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হলে আবহাওয়া ও জলবায়ুগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, হিমালয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে মৌসুমী জলবায়ু বাংলাদেশ, ভারতনেপালে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়।

বনভূমি[সম্পাদনা]

গাছের প্রস্বেদনবাষ্পীভবনের মাধ্যমে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। বনভূমির প্রগাঢ়তার কারণে কোনো কোনো স্থানে সূর্যালোক মাটিতে পড়ে না, ফলে ঐসকল এলাকা ঠান্ডা থাকে। তাছাড়া বনভূমি ঝড়, সাইক্লোন, টর্নেডো ইত্যাদির গতিপথে বাধা সৃষ্টি করে বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থার রূপ বদলে দেয়।

ভূমির ঢাল[সম্পাদনা]

সূর্যকীরণ উঁচু স্থানের ঢাল বরাবর পড়লে ভূমি উত্তপ্ত হয়ে তাপমাত্রা বাড়ে আবার ঢালের বিপরীত দিকে পড়লে তাপমাত্রা অতোটা বাড়ে না। তাছাড়া ঢাল বরাবর লম্বভাবে সুর্যালোকের পতন, তীর্যকভাবে সূর্যালোক পতনের তুলনায় তুলনামূলক উত্তপ্ত আবহাওয়ার সৃষ্টি করে।

মাটির বিশেষত্ব[সম্পাদনা]

বেলেমাটির বিশেষত্ব হলো তা যত দ্রুত গরম হয়, তত দ্রুত ঠান্ডাও হয়। সেই তুলনায় কর্দমযুক্ত পলিমাটি দ্রুত গরমও হয়না, গরম হলে ঠান্ডা হতেও দেরি হয়। তাই কোনো স্থানের মাটির বিশেষত্বের উপর আবহাওয়া ও জলবায়ুর পার্থক্য দেখা দিতে পারে।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Arthur Newell Strahler (1960). Physical Geography. New York: John Wiley & Sons, Second Edition, p. 185
  2. F. J. Monkhouse (1978). A Dictionary of Geography. London: Edward Arnold (Publishers) Ltd.
  3. "জলবায়ু কাকে বলে?"। দৈনিক সমকাল। ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 29/12/2016  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  4. https://web.archive.org/web/20100612213920/http://ametsoc.org/policy/wxmod98.html
  5. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩ জুন ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০২১ 
  6. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৫ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০২১ 
  7. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০২১ 
  8. https://web.archive.org/web/20070503193324/http://eh.net/encyclopedia/article/craft.weather.forcasting.history
  9. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১০ সেপ্টেম্বর ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০২১ 
  10. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৯ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০২১ 
  11. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৭ আগস্ট ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০২১ 
  12. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০২১ 
  13. http://www.emc.ncep.noaa.gov/research/NCEP-EMCModelReview2006/TPC-NCEP2006.ppt[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  14. https://web.archive.org/web/20131124214601/http://www.weather.gov/mission.shtml
  15. https://web.archive.org/web/20111005203246/http://beef.unl.edu/stories/200004030.shtml
  16. https://web.archive.org/web/20081224112403/http://pubs.caes.uga.edu/caespubs/pubcd/C877.htm
  17. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩১ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০২১ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]