আবদুর রহিম আলহাজ মুহাম্মদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

একই নামে অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য, আব্দুর রহিম (দ্ব্যর্থতা নিরসন) দেখুন।

আবদুর রহিম আলহাজ মুহাম্মদ
عبد الرحيم الحج محمد
পোর্ট্রেট, ১৯৩৮
জন্ম১৮৯২
দিন্নাবা, তুলকারেম, জেরুজালেম মুতাশারিফাত, উসমানীয় সাম্রাজ্য
মৃত্যু২৩ মার্চ ১৯৩৯(১৯৩৯-০৩-২৩)
জাতীয়তাফিলিস্তিনি
অন্যান্য নামআবু কামাল
পরিচিতির কারণ১৯৩৬-৩৯ ফিলিস্তিন বিদ্রোহের জেনারেল কমান্ডার

আবদুর রহিম আলহাজ মুহাম্মদ (আরবি: عبد الرحيم الحج محمد;১৮৯২ – ২৩ মার্চ ১৯৩৯) (কুনিয়া আবু কামাল নামেও পরিচিত) ছিলেন মেন্ডেটরি প্যালেস্টাইনে ১৯৩৬-৩৯ সালে সংঘটিত আরব বিদ্রোহের একজন খ্যাতনামা ফিলিস্তিনি আরব কমান্ডার। ব্রিটিশ শাসন এবং ক্রমবর্ধমান ইহুদি বসতির বিরুদ্ধে এই বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। তার অধিকাংশ কর্মকাণ্ড তুলকারেম, নাবলুসজেনিন কেন্দ্রিক ছিল। এসকল স্থান বর্তমানে পশ্চিম তীরের অংশ।[১] ১৯৩৮ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি বিদ্রোহের জেনারেল কমান্ডার হন। তবে আরিফ আবদুর রাজিকের সাথে তার পদ বদল হত। ১৯৩৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে আলহাজ মুহাম্মদকে বিদ্রোহের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এই পদ পূর্ণভাবে প্রদান করে। মার্চে ব্রিটিশদের সাথে লড়াইয়ের সময় তিনি নিহত হন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

আলহাজ মুহাম্মদ ১৮৯২ সালে দিন্নাবা গ্রামে (বর্তমানে তুলকারেম শহরের অংশ) জন্মগ্রহণ করেন।[২] তিনি ভূসম্পত্তির অধিকারী সামারা গোত্রের সদস্য ছিলেন।[৩] এই গোত্র আল-বারাকাউয়ি নামক বৃহৎ গোত্রীয় কনফেডারেশনের অংশ ছিল। তুলকারেম অঞ্চলে আল-বারাকউয়ির দীর্ঘ দিনের কর্মকাণ্ডের ইতিহাস রয়েছে।[২] নেপোলিয়ানের সিরিয়া আক্রমণের সময় আলহাজ মুহাম্মদের প্রপিতামহ উসমানীয়দের পক্ষে লড়াই করেছেন। পরে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল। তার আরেক সমস্থানীয় আত্মীয় ১৮৩৪ সালে ফিলিস্তিনে ইবরাহিম পাশার শাসনের বিরুদ্ধে সংঘটিত কৃষক বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিলেন।[৪]

আলহাজ মুহাম্মদ দিন্নাবার মক্তবে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেছেন।[২] ১৮৯৯-১৯০০ সালে তিনি তুলকারেমের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তিনি তার পিতার সাথে নিজেদের জমিতে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন স্থানে তাদের কৃষিপণ্য বিক্রি করেছেন।[৫] প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি উসমানীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। লেবাননের ত্রিপলিবৈরুতে তিনি দায়িত্বপালন করেছেন।[২][৫] ব্রিটিশ ও হাশেমি আরব মিত্রদের কাছে উসমানীয়দের পরাজয়ের পর তিনি ফিরে আসেন।[২] যুদ্ধকালীন সময়ে তার বাবা মারা যান।[৪] ১৯২০ সালে লীগ অফ নেশনসের পৃষ্ঠপোষকতায় এই অঞ্চল নিয়ন্ত্রণকারী ব্রিটেন মেন্ডেটরি প্যালেস্টাইন প্রতিষ্ঠা করে।

ব্রিটিশ যুগে কর্মজীবন[সম্পাদনা]

দামেস্কে আলহাজ মুহাম্মদ ও তার চার পুত্র, কামাল (জ্যেষ্ঠ), আবদুল জাওয়াদ, আবদুল করিম ও জাওদাত, ১৯৩৭ সালের প্রথমদিক।

১৯১৮ সালে ফিলিস্তিনে ফিরে আসার পর আলহাজ মুহাম্মদ তার পরিবারের জায়গাজমি দেখাশোনা এবং ব্যবসা শুরু করেন।[২] মেন্ডেটের প্রথমদিকে তিনি ফিলিস্তিনের একজন প্রধান স্থানীয় শস্য ব্যবসায়ী ছিলেন।[৬] এই সময় তিনি জায়নবাদ এবং জায়নবাদিদের প্রতি ব্রিটিশ সমর্থনের বিরোধী আন্দোলনের একজন সমর্থক হয়ে উঠেন। ১৯২০ সালের নবী মুসা দাঙ্গা, ১৯২৩ সালের বিক্ষোভ এবং ১৯২৯ সালের দাঙ্গা তুলকারেমে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় ফিলিস্তিনিদের প্রতি ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের নিপীড়নমূলক আচরণের কারণে তিনি ক্ষুব্ধ হন।[৫] মেন্ডেট কর্তৃক নতুন অর্থনৈতিক নীতির কারণে তার ব্যবসা দেওলিয়া হয়ে পড়ে। এসময় স্থানীয় উৎপাদন খরচের চেয়ে কম মূল্যে বিদেশ থেকে গম আমদানি করা হত। ফিলিস্তিনে ১৯৩৬ সালে সংঘটিত আরব বিদ্রোহে তার অংশগ্রহণে এই ঘটনা অন্যতম প্রধান ভূমিকা রেখেছে।[৭]

শস্য ব্যবসায়ী হিসেবে আলহাজ মুহাম্মদের স্থানীয় পরিচিতি পরবর্তীতে সদস্য সংগ্রহের কাজে সুফল প্রদান করেছে।[৫] আল-বারাকাউয়ির গোত্রীয় আনুগত্যের সম্পর্ক তাকে যোদ্ধা ও রসদ দিয়ে শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছে।[৩] ১৯৩০ এর দশকে আলহাজ মুহাম্মদ তুলকারেমের কাছে বালআর সান্নিধ্যে ঘাটি স্থাপন করেন এবং যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ প্রদান শুরু করেন। তার সাথে সাবেক উসমানীয় সৈনিকরাও যোগ দেয়। এর ফলে যুদ্ধ ও অস্ত্র বিষয়ে বাড়তি অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। তার কমান্ডে এই দলটি ইহুদি বসতি এবং ব্রিটিশ নিরাপত্তা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্র অভিযান চালাত। তুলকারেমের পশ্চিমে ওয়াদি আল-হাওয়ারিসের ইহুদি বসতির নতুন কমলা বাগান ছিল অন্যতম প্রধান লক্ষ্যবস্তু। এখানকার কৃষকদেরকে ইতিপূর্বে উচ্ছেদ করে এসব স্থান গড়ে তোলা হয়েছিল।[৫] আলহাজ মুহাম্মদকে মেন্ডেটরি কর্তৃপক্ষ অপরাধী হিসেবে দেখত। ইসরায়েলি ইতিহাসবিদ ইয়েহুশুয়া পোরাথ অভিযোগ করেছেন যে আলহাজ মুহাম্মদ এক ইহুদি ক্রেতার সাথে জমি কেনাবেচার সময় জালিয়াতি করেছেন। তবে লেখক ও নৃতত্ত্ববিদ টেড সোয়েডেনবার্গ লিখেছেন যে আলহাজ মুহাম্মদ সংক্রান্ত কোনো সূত্রে পোরাথের অভিযোগ খুজে পাওয়া যায় না।[৬]

১৯৩৪ সালে তার স্ত্রী বাদিয়া মারা যান। এসময় এই দম্পতির চারপুত্র ছিল। মুসলিম প্রচারক ও উপনিবেশবিরোধী জনপ্রিয় সামরিক নেতা ইজ্জউদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিটিশদের সাথে লড়াইয়ে নিহত হওয়ার পর ফিলিস্তিনি আরবদের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এসময় ব্রিটিশ শাসন এবং জায়নবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার চেয়ে সশস্ত্র সংগ্রামকে জনগণ বেশি কার্যকর মনে করতে থাকে। জনতা আলাপআলোচনার পন্থাকে অকার্যকর হিসেবে দেখত। আলহাজ মুহাম্মদ আসন্ন বিদ্রোহে অংশ নেয়ার সময় তার সন্তানদেরকে তার বোন হালিমার তত্ত্বাবধানে দিয়েছিলেন। তার জ্যেষ্ঠ পুত্র কামালের মতে তাদের ফুফুও একজন শস্য ব্যবসায়ী ছিলেন এবং পরে কাপড়ের ব্যবসা করেছেন। এছাড়া তিনি আলহাজ মুহাম্মদের সন্তানদের পড়াশোনার খরচও দিয়েছেন। আলহাজ মুহাম্মদ নিজে এক বা দুইদিন বিভিন্ন গ্রামে তার সন্তানদের সাথে সাক্ষাত করতেন। তার বিদ্রোহী যোদ্ধারা তার সন্তানদেরকে তার কাছে নিয়ে যেত।[৩]

বিদ্রোহের কমান্ডার[সম্পাদনা]

প্রাথমিক পর্যায়[সম্পাদনা]

নামাজ আদায়রত আলহাজ মুহাম্মদ। পেছনে দন্ডায়মান যোদ্ধাদের সারি, ১৯৩৬ সাল।

১৯৩৬ সালের এপ্রিলে সাধারণ ধর্মঘটের মাধ্যমে বিদ্রোহ শুরু হয়। প্রথমে নাবলুসে ধর্মঘট হয়। পরে তুলকারেমসহ ফিলিস্তিনের অন্যান্য শহরে তা ছড়িয়ে পড়ে। আলহাজ মুহাম্মদ তুলকারেমে কার্যক্রম সংগঠনের জন্য সহায়তা করেছিলেন।[৮] সেই বছরের গ্রীষ্ম নাগাদ ফিলিস্তিনি আরব মিলিশিয়ারা বিদ্রোহে সক্রিয় নেতৃত্ব নিতে শুরু করে। এই মিলিশিয়াদের মধ্যে আলহাজ মুহাম্মদের বাহিনীও ছিল।[৯] তিনি তার সামাজিক যোগাযোগ এবং গোত্রীয় রাজনীতির ব্যবস্থাকে এক্ষেত্রে কাজে লাগিয়েছেন। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রধান শহরগুলোর মধ্যবিত্ত শ্রেণী, বিশেষত শিক্ষিতদের এবং গোত্রীয় জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের সাথে তিনি মিত্রতা গড়তে সচেষ্ট ছিলেন।[৮] ব্রিটিশদের ফাকি দেয়ার জন্য তিনি বড় আকারের বাহিনীর নেতৃত্ব দিতেন না। এর বদলে তিনি 'ফাসাইল নামক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র যোদ্ধাবাহিনী গঠন করেন। তারা সাধারণত রাত্রিকালীন সময়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করত।[১০]

বিদ্রোহের প্রথম পর্যায়ে গ্রীষ্মের সময় আলহাজ মুহাম্মদের যোদ্ধারা নাবলুস ও উপকূলীয় সমভূমির মধ্যবর্তী ওয়াদি আল-শাইর অঞ্চলে কার্যক্রম চালাত।[৯] তুলকারেম ও নাবলুসের মধ্যবর্তী স্থলে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ও টহল পুলিশের উপর তারা হামলা চালায়। ২১ জুন আলহাজ মুহাম্মদ ও তার ফাসাইল বাহিনী ইহুদি গাড়িবহরকে রক্ষাকারী ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একটি দলের উপর বালআ গ্রামের নিকট দিয়ে যাওয়ার আক্রমণ করে। আক্রমণের স্বীকার হওয়া গাড়িবহরকে সহায়তার জন্য তৎক্ষণাৎ তিনটি ব্রিটিশ বোমারু বিমান পাঠানো হয়। দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় সাত ঘণ্টা নাগাদ লড়াই চলে এবং এতে ৩জন বিদ্রোহী ও ১জন ব্রিটিশ সৈনিক মারা যায়। এছাড়া ২১জন বিদ্রোহ ও ২জন ব্রিটিশ সৈনিক আহত হয়। এরপরে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ আলহাজ মুহাম্মদকে গ্রেপ্তারের জন্য পরোয়ানা জারি করে।[১১]

জুলাই পর্যন্ত মিলিশিয়ারা স্বাধীনভাবে কাজ করেছে। এসময় আলহাজ মুহাম্মদ, আরিফ আবদুর রাজিক ও ফাখরি আবদুল হাদি নিজেদের সশস্ত্র দল নিয়ে সমন্বিত আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। আবদুর রাজিক তাইয়েবের কাছে বনি সাব অঞ্চল থেকে কাজ করতেন। অন্যদিকে আবদুল হাদি আরাবার কাছে শারুউয়িয়া থেকে কাজ করতেন। এই তিন কমান্ডারের অপারেশনের এলাকা উত্তর-মধ্য উচ্চভূমিতে কেন্দ্রীভূত ছিল। আগস্টে তাদের আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে তাদের কার্যক্রমের এলাকা ও লক্ষ্যস্থল নির্দিষ্ট করা হয়। জেরুজালেম অঞ্চলের মিলিশিয়া আবদুল কাদির আল-হুসাইনি এসকল বৈঠকে অণুপস্থিত ছিলেন, ফলে বিদ্রোহীদের মধ্যে মজবুত কমান্ড গঠন কঠিন হয়ে পড়ে।[১২]

একই মাসে খ্যাতনামা প্যান-আরববাদি বিদ্রোহী নেতা ফাউজি আল-কায়ুকজি বিদ্রোহের কমান্ড নিজ হাতে নেন। তিনি বিদ্রোহীদের মধ্যে ঐক্য গড়তে চাইলেও এর ফলে বিদ্রোহের সমন্বয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[১৩] তিনি একজন অভিজ্ঞ কমান্ডার হওয়া সত্ত্বেও তার সাথে ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক ও স্থানীয় সামরিক নেতাদের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব ছিল।[১৪] কমান্ডিং পর্যায়ে অফিলিস্তিনিদের অবস্থানের কারণে স্থানীয় বিদ্রোহীরা অসন্তুষ্ট হয়। এছাড়া ফাওজি আল-কায়ুকজি "ফিলিস্তিন" না বলে "দক্ষিণ সিরিয়া" বলে এই অঞ্চলকে অভিহিত করার ফলে অসন্তোষ ছিল।[১৫] তবে সেপ্টেম্বরে বালআতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংঘটিত দ্বিতীয় প্রধান সংঘর্ষের সময় আলহাজ মুহাম্মদ ও কায়ুকজি একসাথে লড়াই করেছেন। এই যুদ্ধ ছয় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলেছে। ব্রিটিশ মেন্ডেটরি কর্তৃপক্ষের মতে এতে তিনজন ব্রিটিশ সামরিক ব্যক্তি নিহত ও চারজন আহত হন। এসময় একটি ব্রিটিশ বিমানকে বিদ্রোহীরা গুলি করে ভূপাতিত করে এবং এর পাইলট নিহত হয়। বিদ্রোহীদের মধ্যে দশজন নিহত ও ছয়জন আহত হয়[১৪]

ব্রিটিশপন্থি জর্ডান, ইরাক এবং সেসাথে সৌদি আরবের অণুরোধের কারণে বিদ্রোহের রাজনৈতিক নেতৃত্ব আরব হাইয়ার কমিটি ১৯৩৬ সালের অক্টোবরে সাময়িকভাবে তাদের সামরিক তৎপরতা বন্ধ করে। দেশগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে তারা জায়নবাদের সাথে সংঘাত বিষয়ে ফিলিস্তিনি আরবদের পক্ষে ব্রিটিশদের কাছে তদবির করবে। আল-কায়ুকজি ফিলিস্তিন ত্যাগ করার পর আলহাজ মুহাম্মদও ধরা না পড়ার জন্য একই মাসে দামেস্কের দিকে রওয়ানা হন। মেন্ডেট কর্তৃপক্ষ তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ৫০০ পাউন্ড পুরস্কার ঘোষণা করে। দামেস্কে থাকার সময় তিনি বিদ্রোহের জন্য অর্থ সংগ্রহ এবং অস্ত্র যোগাড় করেন। ফিলিস্তিনে গোপনভাবে অস্ত্র সরবরাহের জন্য তিনি সিরিয়ান ও লেবানিজ জাতীয়তাবাদিদের সাথে কাজ শুরু করেছিলেন। পরে তিনি দামেস্ক ত্যাগ করে বৈরুতের পূর্ব দিকে লেবাননের পার্বত্য গ্রাম কারানায়িলের চলে আসেন। এখান থেকে তিনি তার বাহিনীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন।[১৫]

পুনরায় বিদ্রোহের সূচনা[সম্পাদনা]

কাফর সুরের বাইরে নিজ ফাসাইলদের সাথে ঘোড়ার পিঠে আলহাজ মুহাম্মদ ("x" চিহ্নের নিচে)। তার বামে বাদামি ঘোড়ার উপরে কমান্ডার আবদুর রহিম আল-হাত্তাব এবং আল-হাত্তাবের বামে মারুফ সাদ

লড়াই স্থগিত থাকাবস্থায় ব্রিটিশ সরকার ঘোষণা করে যে তারা ফিলিস্তিনে ইহুদি অভিবাসনের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করবে না। যুক্তরাজ্যের পিল কমিশন ফিলিস্তিনে পৃথক ইহুদি ও আরব রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব করে। এসকল কারণে ইহুদি বসতি বৃদ্ধির জন্য অসন্তুষ্ট ফিলিস্তিনি নেতারা আরো বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেন। তারা শুরু থেকে কমিশন বয়কট করেছিলেন। জেরুজালেমের গ্র্যান্ড মুফতি মুহাম্মদ আমিন আল-হুসাইনি এসময় আরব হাইয়ার কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। কমিটির তরফ থেকে বিদ্রোহী নেতাদেরকে ফিরে এসে সামরিক কার্যক্রম শুরু করার অণুরোধ জানানো হয়।[১৫] ১৯৩৭ সালের এপ্রিলে আলহাজ মুহাম্মদ ফিলিস্তিনে ফিরে এসে তুলকারেম-জেনিন-নাবলুস অঞ্চলে বিদ্রোহী ইউনিটগুলোর কমান্ড গ্রহণ করেন। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এই অঞ্চলকে "সন্ত্রাসের ত্রিভুজ" বলত। [১৬]

বিদ্রোহ পুনরায় শুরু হওয়ার পর বিদ্রোহীদের একতাবদ্ধ এবং র‍্যাঙ্ক কাঠামো গঠন করা হয়।[১৩] ১৯৩৭ সালের শেষের দিকে আলহাজ মুহাম্মদ তুলকারেমের নিকটস্থ গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠদেরকে তলব করেন এবং অণুরোধ করেন যাতে তাদের প্রত্যেকের তরফ থেকে একজন করে সশস্ত্র ব্যক্তি তাকে দেয়া হয়। তিনি ৫০জনের একটি দল গঠন করতে সক্ষম হন।[১৭] বছরের শেষ এক চতুর্থাংশে ব্রিটিশ সামরিক লক্ষ্যবস্তু, ইহুদিদের বহনকারী বাস, ফিলিস্তিনে ইরাকি পেট্রোলিয়াম কোম্পানির পাইপলাইন এবং টেলিযোগাযোগ লাইনের উপর হামলা বৃদ্ধি পায়। এই পর্যায়ে ফিলিস্তিন জুড়ে বিদ্রোহ সংগঠিত রূপ পায়। আলহাজ মুহাম্মদের ফাসাইল বাহিনী চারটি ব্রিগেডে বিভক্ত ছিল। এসকল ব্রিগেডের একটির কমান্ডার ছিলেন আহমাদ মাসাদ। অন্যান্য কমান্ডারগণ মাসাদের সাথে যোগাযোগ রাখতেন এবং মাসাদ আলহাজ মুহাম্মদের ডেপুটি হিসেবে কাজ করতেন। প্রত্যেক ব্রিগেডের পৃথক বাজেট থাকত।[১৬]

১৯৩৭ সালের ডিসেম্বরের প্রথমদিকে আন-নাজলা আশ-শারকিয়া গ্রামে বিদ্রোহী ও ব্রিটিশদের মধ্যে একটি লড়াইয়ের সময় আলহাজ মুহাম্মদ আহত হন। তবে গ্রামের মুখতার (প্রধান) তাকে নিকটস্থ গুহায় নিয়ে যাওয়ায় তিনি ধরা পড়েননি। লড়াইয়ের সময় তার পক্ষের চারজন যোদ্ধা মারা যায়। ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। ১৯৩৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি এখানে ছিলেন। এসময় তিনি দামেস্কে আরো ভালো চিকিৎসার জন্য যান। সেই মাসে তিনি ফিলিস্তিন ফিরে আসেন। ১৯৩৮ সালের শুরুর দিকে বিদ্রোহীরা গ্রামাঞ্চল ও সড়কপথের উপর নিয়ন্ত্রণ সংহত করতে সক্ষম হয়। এসকল অঞ্চল মূল শহরগুলোতে কেন্দ্রীভূত ব্রিটিশ বাহিনীর জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠে।[১৮]

জেনারেল কমান্ডার[সম্পাদনা]

কায়ুকজির মত ফিলিস্তিনের বাইরে থেকে আগত আরব সামরিক নেতা এবং আরব হাইয়ার কমিটির ব্যাপারে স্থানীয় বিদ্রোহী নেতারা সন্দেহপোষণ করতেন। বিশেষত ১৯৩৭ সালের অক্টোবরে আরব হাইয়ার কমিটির বিলুপ্তির পর সদস্যরা দামেস্ক ভিত্তিক কেন্দ্রীয় কমিটিতে যোগ দেয়ায় অসন্তোষ বৃদ্ধি পায়। ১৯৩৭ সালের শেষের দিকে ইজ্জত দারওয়াজা কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করেছিলেন।[১৯] এই কমিটি বিদ্রোহের রাজনৈতিক নেতৃত্ব, অর্থ ও অস্ত্র সংগ্রহের কাজ করেছে।[২০] ফিলিস্তিনে আলহাজ মুহাম্মদ ও আবদুর রাজিকের মধ্যে জেনারেল কমান্ড পদের জন্য প্রতিযোগিতা ছিল।[২০] তাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্ব্বীতা বৃদ্ধি এবং তুলকারেম অঞ্চলের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিমন্ডলে প্রভাব নিয়ে তাদের পরিবারের প্রতিদ্বন্দ্ব্বীতা একই সময়ে ঘটেছিল।[১৯][২০]

মতপার্থক্য দূর করার জন্য বিদ্রোহী নেতারা ১৯৩৮ সালের সেপ্টেম্বরে দাইর গাসানাতে একটি বৈঠকে বসেন। এখানে ফিলিস্তিনে আরব বিদ্রোহের জন্য একটি দপ্তর স্থাপিত হয়।[১৯][১৯][১৯][২০][২০] এর অন্য দুইজন কমান্ডার ছিলেন উচ্চ গ্যালিলি অঞ্চলের আবু ইবরাহিম আল-কবির এবং হাইফা-ওয়াদি আরা অঞ্চলের ইউসুফ আবু দুররা[২১] বৈঠকের সংবাদ পাওয়ার ব্রিটিশ সেনাবাহিনী বোমারু বিমানের সহায়তা নিয়ে কমান্ডারদের গ্রেপ্তার বা বন্দী করার জন্য দাইর গাসানাতে অভিযান চালায়। এখানে সংঘটিত লড়াইয়ে খ্যাতনামা কমান্ডার মুহাম্মদ আল-সালিহ (আবু খালিদ নামে পরিচিত ছিলেন) মারা যান।[২০] কেন্দ্রীয় কমিটির সামরিক শাখা হিসেবে কাজ করা স্থাপিত দপ্তরের উদ্দেশ্য ছিল। তবে আলহাজ মুহাম্মদ ও আবদুল রাজিকের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্ব্বিতা চলতে থাকে ফলে তা দপ্তরের কার্যক্রমের উপর প্রভাব ফেলে।[১৯]

১৯৩৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে আলহাজ মুহাম্মদকে জেনারেল কমান্ডারের পদ প্রদান করা হয়। এর ফলে বিতর্কের মীমাংসা হয়।[১৯][২২] এর আগে তিনি দামেস্কে গিয়েছিলেন এবং এসময় তিনি দামেস্কে ছিলেন।[১] ১৯৩৮ সালের কোনো এক সময়ে কমিটি কর্তৃক রসদ ও অর্থ সহায়তা বন্ধের পর সৃষ্ট উত্তেজনার পরে আলহাজ মুহাম্মদকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। সরকারি সহায়তায় এবং জায়নবাদি সমর্থনে আল-হুসাইনির রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্ব্বীদের নেতৃত্বে কিছু "শান্তি দলের" উত্থান হওয়ায় বিদ্রোহ ভিন্ন পর্যায়ে পৌছাচ্ছিল। এসকল গোষ্ঠীর মধ্যে প্রধান ছিল নাশাশিবি গোত্র। এসকল ইউনিট বিদ্রোহীদের উপর পাল্টা হামলা চালাতে শুরু করে এবং বিদ্রোহীদের সমর্থকদের ক্ষয়ক্ষতি সাধন এবং বিদ্রোহ বন্ধের জন্য স্থানীয় নেতাদের বলপ্রয়োগ করে।[২২]

মৃত্যু ও স্মরণ[সম্পাদনা]

বিদ্রোহের জেনারেল কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর ১৯৩৯ সালের ২৩ মার্চ ফিলিস্তিনে ফিরে এলে আলহাজ মুহাম্মদ ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হন। জেনিন ও নাবলুসের মধ্যবর্তী সানুর গ্রামে তাকে হত্যা করা হয়।[২৩] তিনি তার দুইজন অধীনস্থ কমান্ডার এবং অল্প কিছু যোদ্ধা নিয়ে গ্রামে প্রবেশ করেছিলেন।[২৪] ফরিদ ইরশাইদের নেতৃত্বে একটি শান্তি দল তাকে নজরদারি করছিল। ১৯৩৮ সালের মে মাসে ফরিদের দুই ভাই আহমাদ ও মুহাম্মদ নিহত হয়েছিলেন। এজন্য আলহাজ মুহাম্মদকে সম্পৃক্ত ধরা হত। ফরিদ এজন্য প্রতিশোধ নিতে চাইছিলেন। তার লোকেরা আলহাজ মুহাম্মদের গতিবিধির উপর নজর রাখে এবং সেসব তথ্য ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের সরবরাহ করে। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বড় অংশ তৎক্ষণাৎ সেখানে উপস্থিত হয় এবং সানুর থেকে বের হওয়ার সকল রাস্তা বন্ধ করে দেয়। ইরশাইদের দল সেনাবাহিনীর পাশাপাশি এতে অংশ নিয়েছিল।[২৫] গ্রামবাসীরা আলহাজ মুহাম্মদ ও তার সাথীদের ছদ্মবেশে পালিয়ে সহায়তা করেছিল বলে জানা যায় তবে তিনি ও তার যোদ্ধারা পার্শ্ববর্তী স্থানে প্রবেশ করে ব্রিটিশদের সাথে লড়াই করেন। এই লড়াইয়ে আলহাজ মুহাম্মদ তার একজন ডেপুটি কমান্ডারসহ নিহত হন।[২৪] লড়াইয়ের প্রত্যক্ষদর্শী কিছু গ্রামবাসীর মতে অপারেশনের প্রধান ব্রিটিশ অফিসার জেফরি মট্রিন সম্মানের সাথে নিজের হ্যাট খুলে ফেলেন এবং একটি রুমাল দিয়ে আলহাজ মুহাম্মদের চেহারা ঢেকে দিয়েছিলেন। মট্রিন পরে লিখেছেন যে আলহাজ মুহাম্মদ নিজের জনগণ ও তার (মট্রিন) লোকেদের মধ্যে বিশেষভাবে সম্মানিত ছিলেন।[২৪]

আলহাজ মুহাম্মদকে গ্রামে দাফন করা হয়। এর দুই সপ্তাহ পর তার ফাসাইল সদস্যরা তার লাশ তুলে নিয়ে দিন্নাবায় নিয়ে যায় এবং সেখানে দাফন করে। তার মৃত্যু সংবাদ প্রচারের পর উপনিবেশ ও জায়নবাদ বিরোধী তার কর্মকাণ্ডের জন্য ফিলিস্তিন জুড়ে কয়েকদিনের সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। ফিলিস্তিন এবং অন্যান্য আরব অঞ্চলের সংবাদপত্রে তার মৃত্যুসংবাদ শিরোনাম আকারে প্রকাশিত হয়েছিল। তুলকারেমে মার্চ মাসে তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়। ২০০৯ সালের মার্চে তুলকারেমের খুদুরি ইন্সটিটিউট তার ৭০তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করে। দিন্নাবার একটি বালক বিদ্যালয় এবং আম্মানের একটি প্রধান সড়ক তার নামে নামকরণ করা হয়েছে।[২৬]

ইতিহাসবিদ হিল্লেল ফ্রিসচের মতে পুনরায় অপারেশন শুরুর জন্য বিদ্রোহীরা একটি নিরাপদ স্থান থেকে কতটা বঞ্চিত ছিল তা আলহাজ মুহাম্মদের মৃত্যু থেকে প্রতীয়মান হয়।[২৩] তার মৃত্যুর সময় নাগাদ বিদ্রোহ অনেকটাই বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছিল এবং তার মৃত্যুর পর তা আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আহমাদ আল-হাসান এরপর তার উত্তরসুরি হন তবে তিনি বিদ্রোহের গতি ধরে রাখতে পারেননি এবং ১৯৩৯ সালের শেষের দিকে বিদ্রোহ সমাপ্ত হয়।[২৬]

আদর্শ এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে সম্পর্ক[সম্পাদনা]

সোয়েডেনবার্গ‌ আলহাজ মুহাম্মদকে সবচেয়ে সম্মানিত কমান্ডার, জাতীয়তাবাদি অভিমত, রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের বিরোধিতা এবং অক্লান্ত যোদ্ধা হওয়ার কারণে বিখ্যাত বলে বর্ণনা করেছেন।[২৭] তিনি বিদ্রোহের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের থেকে অনেকটা স্বাধীনভাবে কাজ করেছেন। এই নেতৃবৃন্দের মধ্যে রয়েছেন আল-হুসাইনির নেতৃত্বে ফিলিস্তিন ভিত্তিক আরব হাইয়ার কমিটি এবং দামেস্ক ভিত্তিক কেন্দ্রীয় কমিটি। আল-হুসাইনির সাথে তার মৌন মিত্রতা থাকলেও আল-হুসাইনি পরিবারের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্ব্বী স্থানীয় নেতাদের হত্যা করতে তিনি অসম্মতি জানিয়েছিলেন। জানা যায় তিনি বলেছিলেন যে আমি হুসাইনিয়ার (হুসাইনিবাদ) জন্য কাজ করি না, ওয়াতানিয়ার (জাতীয়তাবাদ) জন্য কাজ করি।[১]

বিদ্রোহের সময়জুড়ে রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। আলহাজ মুহাম্মদ এসবে অংশ নিতে অসম্মতি জানানোর ফলে আল-হুসাইনি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে তার মনোমালিন্য হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির উপর তিনি যুদ্ধ সরঞ্জামের জন্য নির্ভরশীল হলেও বিরোধিতা করেছেন। অস্ত্র ও রসদ সরবরাহ এবং আলোচনার জন্য তিনি প্রায় দামেস্ক যেতেন।[২২] তবে ব্রিটিশ মেন্ডেটরি কর্তৃপক্ষের একটি গোয়েন্দা নথি থেকে জানা যায় যে কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যক্রমের প্রতি অসন্তুষ্ট হওয়ার পর তিনি ১৯৩৮ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিন ত্যাগ করে সিরিয়া যান। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে যে তিনি কমিটিকে সহায়তা দিতে অস্বীকার করেন এই বলে যে সবচেয়ে নগন্য মুজাহিদের জুতাও সমাজের সকল সদস্যের চেয়ে উচ্চ, যারা আরামআয়েশে মগ্ন থাকে কিন্তু তাদের ভাইরা পর্বতে কষ্টে থাকে।[১] এক পর্যায়ে কমিটির পক্ষ থেকে দাউদ আল-হুসাইনির পাঠানো একটি হিট লিস্ট অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে অংশ নিতে রাজি না হওয়ার কারণে ১৯৩৮ সালের কিছু সময় আর্থিক ও সামরিক সমর্থন বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এর ফলে আলহাজ মুহাম্মদকে অর্থ সহায়তার জন্য জেরুজালেমের চেম্বার অফ কমার্স এবং রামাল্লাহ মিউনিসিপালটির দ্বারস্থ হতে হয়। [২২] এছাড়াও বিদ্রোহীদের মধ্যে গুপ্তচর ঢুকে পড়ায় তার পক্ষে সামরিক তৎপরতা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছিল।[২৫]

তার ব্যক্তিগত সহকারী আবু শাহির তাকে একজন প্রকৃত জাতীয়তাবাদি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। স্বঘোষিত জাতীয়তাবাদিনেতাদেরকে আবু শাহির সংকীর্ণ গোষ্ঠী স্বার্থের প্রতি অণুরুক্ত বলে অভিযোগ করেছেন। তার মতে আলহাজ মুহাম্মদ সকলকে নিয়ে ফিলিস্তিনি ঐক্যের পক্ষে ছিলেন এবং রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের ফলে বিদ্রোহীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরী হবে বলে মনে করতেন।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Swedenburg, 2008, p. 87.
  2. Nafi, 1998, p. 255.
  3. Nimr, ed. LeVine, 2012, p. 146.
  4. Nimr, ed. LeVine, 2012, p. 144.
  5. Nimr, ed. LeVine, 2012, p. 145.
  6. Swedenburg, 2008, p. 229.
  7. Swedenburg, 2008, p. 100.
  8. Nimr, ed. LeVine, p. 82.
  9. Frisch, 2008, p. 20.
  10. Thomas, p. 247.
  11. Nimr, ed. LeVine, pp. 146–147.
  12. Frisch, 2008, pp. 20–21.
  13. Frisch, 2008, p. 22.
  14. Nimr, ed. LeVine, p. 147.
  15. Nimr, ed. LeVine, p. 148.
  16. Nimr, ed. LeVine, 2012, p. 149.
  17. Swedenburg, 2008, p. 123.
  18. Levine, Sonia Nimr, 2012, pp. 149–150.
  19. Frisch, 2008, pp. 22–23.
  20. Nimr, ed. LeVine, 2012, p. 150.
  21. Great Britain and the East, 1939, p. 126.
  22. Nimr, ed. LeVine, 2012, p. 153.
  23. Frisch, 2008, p. 23.
  24. Nimr, LeVine, 2012, p. 154.
  25. Cohen, 2009, p. 152.
  26. Nimr, ed. LeVine, 2012, p. 155.
  27. Swedenburg, ed. Burke, 1988, p. 197.

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]