আক্কুশ আল-আফরাম
আক্কুশ আল-আফরাম | |
---|---|
آقوش الأفرم | |
নায়িব (ভাইসরয়) দামেস্ক | |
কাজের মেয়াদ ২৫ ফেব্রুয়ারি ১২৯৯ – ১৩০৯ | |
সার্বভৌম শাসক | আন-নাসির মুহাম্মদ |
পূর্বসূরী | সাইফ আল-দিন কিবজাক |
উত্তরসূরী | কারাসুনকুর আল-মানসুরি |
হামাদান গভর্নর | |
কাজের মেয়াদ ১৩১২ – ১৩৩৬ | |
সার্বভৌম শাসক | ওলজাইতু |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
মৃত্যু | ১৩৩৬ হামাদান, ইলখানেট |
সম্পর্ক | আইদামুর আল-জারদাকাশ (শ্বশুর) |
সামরিক পরিষেবা | |
আনুগত্য | মামলুক সালতানাত (মিশর) (পূর্বে) ইলখানেট |
শাখা | মামলুক বাহিনী (পূর্বে) ইলখানিদ বাহিনী |
যুদ্ধ | আল-রাহবার অবরোধ (১৩১৩) |
জামাল আল-দীন আককুশ আল-আফরাম আল-মানসুরি ( আরবি: جمال الدين آقوش الأفرم المنصوري ; মৃত্যু ১৩৩৬) ছিলেন একজন উচ্চপদস্থ মামলুক আমির এবং দলত্যাগী। তিনি দামেস্কের মামলুক নায়েব (ভাইসরয়) এবং পরে হামাদানের ইলখানি গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
মামলুক আমির
[সম্পাদনা]আক্কুশ আল-আফরাম ছিলেন একজন চার্কাসিয়ান জাতিগোষ্ঠীর সদস্য। তাকে কৃষ্ণ সাগরের দাস ব্যবসার মাধ্যমে দাস হিসেবে আনা হয়েছিল। তিনি সুলতান কালাউনের (শাসনকাল ১২৭৯–১২৯০) মানসুরিয়া বাহিনীতে মামলুক (দাস সৈনিক) হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।[১] তিনি ট্রান্সজর্ডানের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে বিস্তৃত একটি প্রদেশের মরুভূমি দুর্গ রাজধানী আল-কারাকের গভর্নর ছিলেন।[২]
দামেস্কের নায়েব (ভাইসরয়)
[সম্পাদনা]২৫ ফেব্রুয়ারী ১২৯৯ তারিখে আক্কুশকে দামেস্কের ভাইসরয় হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়।[৩] তার পূর্বসূরী সাইফ আল-দিন কিবজাকের বাগদাদ -ভিত্তিক মঙ্গোল ইলখানাতে চলে গেলে তাকে এ পদ দেওয়া হয়।[২] আক্কুশ ১৩০৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।[১] ১৩০০ এবং ১৩০৫ সালে তিনি লেবানন পর্বতের কিসরাওয়ান অঞ্চলের শিয়া মুসলিম এবং আলাউইত পর্বতারোহীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক অভিযানের নেতৃত্ব দেন। এতে বহু গ্রাম ধ্বংস হয় এবং বিদ্রোহ কঠোরভাবে দমন করা হয়।[৪] ইতিহাসবিদ আল-সাফাদি তার সাহসিকতা, ইলখানিদ আক্রমণের বিরুদ্ধে কৌশলগত পরিকল্পনা, দরিদ্রদের প্রতি সহানুভূতি ও শিকার দক্ষতার জন্য তাকে প্রশংসা করেন।[৫] দামেস্কের লোকেরা যুদ্ধক্ষেত্রের খ্যাতির জন্য আক্কুশকে অত্যন্ত সম্মান করত। মানুষ প্রায়ই তার প্রতীকচিহ্ন নিজেদের পোশাক বা অস্ত্রে ব্যবহার করত। [৬] প্রদেশে আক্কুশের ব্যাপক ক্ষমতা ছিল। এককভাবে তিনি সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগ করতেন এবং পরে কায়রোর কেন্দ্রীয় সরকারকে শুধু জানাতেন। সে সময় মামলুক শক্তিশালী আমিরদের মধ্যে সালার এবং বাইবার্স আল-জাশনাকির কাছে প্রকৃত ক্ষমতা ছিল। সুলতান আল-নাসির মুহাম্মদ মূলত নামমাত্র শাসক ছিলেন। আক্কুশ নিজেকে বাইবার্স এবং সালারের সমকক্ষ মনে করতেন এবং একবার মন্তব্য করেছিলেন যে, “যদি আমার আবলাক প্রাসাদ, সবুজ চত্বর, এবং সুন্দর নদী [দামেস্কে] না থাকত, তবে আমি তাদের মিশরের রাজত্ব [সুলতানাতের রাজধানী] উপভোগ করতে একা ছেড়ে দিতাম না।”[৭]
নিজেকে উচ্চ মর্যাদার মনে করে তিনি দামেস্কে শাসনকালে ইলখানিদ রাজকন্যা এল কুতলুঘ খাতুনের সাথে বিয়ের চেষ্টা করেছিলেন। কারণ মঙ্গোল রাজপরিবারে বিয়ে করা বিরল এবং মর্যাদাপূর্ণ বলে বিবেচিত হত। তবে এল কুতলুঘ খাতুন তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং কোনো উৎসে উল্লেখ নেই যে তিনি কোনও মঙ্গোল মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন।[৮]
ইলখানাতের প্রতি আত্মসমর্পণ
[সম্পাদনা]১৩১২ সালে আক্কুশ তার শ্বশুর আইদামুর আল-জারদাকাশ এবং উচ্চপদস্থ আমির কারাসুনকুরের সাথে মামলুক রাজ্য থেকে পালিয়ে যান,। কারণ তারা সুলতান আল-নাসির মুহাম্মদের (শাসনকাল ১৩১০–১৩৪১) শাস্তির ভয় পেয়েছিলেন। সুলতান তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে এসেছিলেন এবং আক্কুশ ও কারাসুনকুরের প্রতি তার বিরূপ মনোভাবের গুজব দুই আমিরের কাছে পৌঁছেছিল।[৫] ইলখানিদ খান ওলজাইতু তাদের স্বাগত জানান এবং আক্কুশকে হামাদানের গভর্নর নিযুক্ত করেন।[৯] আক্কুশ ১৩৩৬ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।
আক্কুশ এবং কারাসুনকুর মামলুক সিরিয়ার বিরুদ্ধে ইলখানিদদের শেষ বড় অভিযানে উৎসাহ দেন। ফলে ১৩১৩ সালে ইউফ্রেটিসের আল-রাহবা দুর্গের ব্যর্থ অবরোধ সংঘটিত হয়।[৯]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ Brack 2011, পৃ. 341।
- ↑ ক খ Guo 1998, পৃ. 107, note 84।
- ↑ Guo 1998, পৃ. 119।
- ↑ Harris 2012, পৃ. 70–71।
- ↑ ক খ Brack 2011, পৃ. 342।
- ↑ Brack 2011, পৃ. 343।
- ↑ Brack 2011, পৃ. 343, note 64।
- ↑ Brack 2011, পৃ. 341–342।
- ↑ ক খ Daftary 1996, পৃ. 249।
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- Brack, Yoni (জুলাই ২০১১)। "একজন মঙ্গোল রাজকুমারীর হজযাত্রা: আবাঘা ইলখানের (শাসনকাল: ১২৬৫–৮২) কন্যা এল কুতলুগ-এর জীবনী"। Journal of the Royal Asiatic Society। ২১ (৩): ৩৩১–৩৫৯। এসটুসিআইডি 162431130। ডিওআই:10.1017/S1356186311000265।
- Daftary, Farhad (১৯৯৬)। মধ্যযুগীয় ইসমাঈলি ইতিহাস ও চিন্তাধারা। ক্যামব্রিজ: ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 0-521-45140-X।
- Guo, Li (১৯৯৮)। প্রারম্ভিক মামলুক যুগের সিরীয় ইতিহাস: আল-ইউনিনি’র “যায়ল মিরআতুজ জামান”, খণ্ড ১। লেইডেন, বোস্টন ও কোলন: ব্রিল। আইএসবিএন 90-04-11028-3।
- Harris, William (২০১২)। লেবানন: একটি ইতিহাস, ৬০০–২০১১। নিউ ইয়র্ক: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-0-19-518-111-1।