অ্যান্টার্কটিকার ভূগোল
মহাদেশ | অ্যান্টার্কটিকা |
---|---|
স্থানাঙ্ক | ৮০° দক্ষিণ ৯০° পূর্ব / ৮০° দক্ষিণ ৯০° পূর্ব |
আয়তন | 2nd (unofficially) |
• মোট | ১,৪০,০০,০০০ কিমি২ (৫৪,০০,০০০ মা২) |
• স্থলভাগ | 100% |
• জলভাগ | 0% |
উপকূলরেখা | ১৭,৯৬৮ কিমি (১১,১৬৫ মা) |
সীমানা | কোন স্থলসীমা নেই |
সর্বোচ্চ বিন্দু | ভিনসন স্তূপপর্বত, ৪,৮৯২ মি (১৬,০৫০ ফু) |
সর্বনিম্ন বিন্দু | বেন্টলি হিমবাহনিম্ন খাত, −২,৫৫৫ মি (−৮,৩৮২.৫ ফু) |
দীর্ঘতম নদী | অনিক্স নদী, ২৫ কিমি |
বৃহত্তম হ্রদ | ভস্তক হ্রদ, ২৬,০০০ বর্গ মি (আনু.) |
জলবায়ু | উপঅ্যান্টার্কটিক হতে অ্যান্টার্কটিক |
ভূখণ্ড | বরফ ও অনুর্বর প্রস্তর |
প্রাকৃতিক সম্পদ | ক্রীল, ডানা মাছ, কাঁকড়া |
প্রাকৃতিক বিপত্তিসমূহ | তীব্র বায়ুপ্রবাহ, তুষারঝড়, ঘূর্ণিঝড়, আগ্নেয়ক্রিয়া |
পরিবেশগত সমস্যা | ওজোন স্তর ক্ষয়, বর্ধমান সমুদ্রপৃষ্ঠ |
অ্যান্টার্কটিকার ভূগোল প্রধানত কুমেরুর সন্নিকটে এর অবস্থান তথা, বরফের দ্বারা প্রভাবিত। অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত, এটি কুমেরুর চারদিকে অপ্রতিসমভাবে বিস্তৃত এবং এর সিংহভাগই কুমেরু বৃত্তের দক্ষিণে অবস্থিত। এটি বিশ্ব মহাসাগরের দক্ষিণাংশের জলরাশি দ্বারা পরিবেষ্টিত - মতান্তরে এটি দক্ষিণ মহাসাগর দ্বারা অথবা প্রশান্ত মহাসাগর, অতলান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরের দক্ষিণভাগ দ্বারা বেষ্টিত। এর আয়তন ১.৪ কোটি বর্গ কিমি-র বেশি। অ্যান্টার্কটিকার প্রায় ৯৮% পৃথিবীর বৃহত্তম হিম আচ্ছাদন দ্বারা আবৃত, যাকে অ্যান্টার্কটিক হিম আচ্ছাদন বলা হয় এবং যা স্বাদুপানির বৃহত্তম আধার। গড়ে ১.৬ কিমি পুরুত্ব বিশিষ্ট এই বরফ আচ্ছাদনটি এত ভারী যে তা মহাদেশীয় মূলপ্রস্তরের অবনমন ঘটিয়েছে, কোন কোন স্থানে তা সমুদ্রপৃষ্ঠের চেয়ে ২.৫ কিমি গভীর পর্যন্ত; যার ফলে তরল পানিবিশিষ্ট হিমবাহনিম্ন হ্রদেরও সৃষ্টি হয়েছে, যেমন ভস্তক হ্রদ। বরফ আচ্ছাদনের পরিসীমার দিকে অনেক হিম তাক ও হিম উত্থান রয়েছে।
অঞ্চলসমূহ
[সম্পাদনা]ভৌগোলিকভাবে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ রস সাগর ও ওয়েডেল সাগরের মাঝে ট্রান্স-অ্যান্টার্কটিক পর্বতমালা দ্বারা দুটি অসমান অংশে বিভক্ত হয়েছে। পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা ও পূর্ব অ্যান্টার্কটিকা, মূলমধ্যরেখার সাপেক্ষে যথাক্রমে পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধের সাথে অনেকটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই নামকরণকে অনেকে ইউরোকেন্দ্রিক পক্ষপাতদুষ্ট বলে গণ্য করেন, যার ফলে বিকল্প নাম হিসেবে 'ক্ষুদ্রতর অ্যান্টার্কটিকা' ও 'বৃহত্তর অ্যান্টার্কটিকা' কে অনেক সময় প্রাধান্য দেয়া হয়। অ্যান্টার্কটিকার মূল ভূখণ্ডের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা ও বাকি দুই-তৃতীয়াংশ পূর্ব অ্যান্টার্কটিকার অন্তর্ভুক্ত। ক্ষুদ্রতর পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা পশ্চিম অ্যান্টার্কটিক হিম আচ্ছাদন দ্বারা আবৃত। এই হিম আচ্ছাদন কিছু উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে কারণ এটি ধসে পড়ার ক্ষুদ্র সম্ভাবনা রয়েছে। যদি তা ঘটে তবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা খুব অল্প সময়ের মাঝেই কয়েক মিটার বৃদ্ধি পাবে।
আগ্নেয়গিরি
[সম্পাদনা]পর্যবেক্ষিত আগ্নেয় গ্যাসের উপস্থিতি ও অপেক্ষাকৃত সাম্প্রতিককালে জমা হওয়া অগ্ন্যুৎপাতজাত প্রস্তরখণ্ড বিশ্লেষণের ভিত্তিতে অ্যান্টার্কটিকার মূল ভূখণ্ডে চারটি আগ্নেয়গিরিকে সক্রিয় বলে মনে করা হয়। এগুলো হল: মেলবোর্ন পর্বত (২,৭৩০ মি) (৭৪°২১'দ., ১৬৪°৪২'পূ.), একটি যৌগিক আগ্নেয়গিরি; বার্লিন পর্বত (৩,৫০০ মি) (৭৬°০৩'দ., ১৩৫°৫২'প.), যৌগিক আগ্নেয়গিরি; কফম্যান পর্বত (২,৩৬৫ মি) (৭৫°৩৭'দ., ১৩২°২৫'প.), যৌগিক আগ্নেয়গিরি; এবং হ্যাম্পটন পর্বত (৩,৩২৫ মি) (৭৬°২৯'দ., ১২৫°৪৮'প.), একটি আগ্নেয়গিরিকুন্ড। সমুদ্রতীরাতিক্রান্ত দ্বীপসমূহে কয়েকটি আগ্নেয়গিরিতে পূর্ব সক্রিয়তা নথিভুক্ত করা হয়েছে। যেমন: এরেবাস পর্বত (৩,৭৯৫ মি), ১০ টি জ্ঞাত অগ্ন্যুৎপাত ও ১ টি ধারণাকৃত অগ্ন্যুৎপাত রস দ্বীপে অবস্থিত একটি যৌগিক আগ্নেয়গিরি। মহাদেশের অপর প্রান্তে, ডিসেপশন দ্বীপ (৬২°৫৭'দ., ৬০°৩৮'প.), ১০ টি জ্ঞাত অগ্ন্যুৎপাত ও ৪ টি ধারণাকৃত অগ্ন্যুৎপাত বিশিষ্ট এই আগ্নেয়গিরিকুন্ডটি সবচেয়ে সক্রিয় রয়েছে। ব্যালেনি দ্বীপপুঞ্জের বাকল দ্বীপ (৬৬°৫০'দ., ১৬৩°১২'পূ.), দক্ষিণ শেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের পেঙ্গুইন দ্বীপ (৬২°০৬'দ., ৫৭°৫৪'প.), পলেট দ্বীপ (৬৩°৩৫'দ., ৫৫°৪৭'প.), এবং লিন্ডেনবার্গ দ্বীপ (৬৪°৫৫'দ., ৫৯°৪০'প.) - এগুলোকেও সক্রিয় বলে ধারণা করা হয়।