চার্লস ওয়াটসন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(অ্যাডমিরাল চার্লস ওয়াটসন থেকে পুনর্নির্দেশিত)
চার্লস ওয়াটসন
জন্ম১৭১৪
মৃত্যু১৬ আগস্ট ১৭৫৭(1757-08-16) (বয়স ৪২–৪৩)
ক্যালকাটা, ভারত
আনুগত্যগ্রেট ব্রিটেন রাজত্ব
সেবা/শাখা রয়্যাল নৌবাহিনী
নেতৃত্বসমূহএইচএমএস গারল্যান্ড
এইচএমএস প্লায়মাউথ
এইচএমএস ড্রাগন
এইচএমএস প্রিন্সেস লউইসা
নিউফাউন্ডল্যান্ড এবং নর্থ আমেরিকান স্টেশন
ইস্ট ইন্ডিয়াস স্টেশন
যুদ্ধ/সংগ্রামঅস্ট্রিয়া গঠনের যুদ্ধ
সপ্ত বছরের যুদ্ধ

ভাইস নৌসেনাপতি চার্লস ওয়াটসন (১৭১৪ – ১৬ আগস্ট ১৭৫৭) একজন নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন, যিনি নিউফাউন্ডল্যান্ড এর কর্ণেল গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং কলকাতা (তৎকালীন ক্যালকাটা), ভারতে মৃত্যুবরণ করেন।

সময়কাল[সম্পাদনা]

তিনি জন ওয়াটসন এর পুত্র এবং তার স্ত্রী নৌসেনাবাহিনীর প্রথম অধিনায়ক স্যার চার্লস ওয়াগার (১৬৬৬-১৭৪৩) এর বোন।[১] ওয়াটসন পরিবারের তথাকথিত বর্মের থেকে তার পুত্র ১ম ব্যারোনেটের ব্যবহৃত অস্ত্র ভিন্ন ছিলো,[২] যা পরিবর্তিতে মারকিউস অফ রকিংহাম এবং অন্যান্য রাজ পরিবার যুদ্ধবিদ্যা শাখা তৈরিতে ব্যবহার করেছিলো।

নৌ-জীবন[সম্পাদনা]

১৭২৮ সালে তিনি রোমনেই এর আদেশে সেচ্ছাসেবক হিসেবে নৌবাহিনীতে যোগ দেন।[৩] ১৭৩৪ সালে তিনি লেফটেনেন্ট হিসেবে উন্নীত হোন এবং ১৭৩৮ সালে অধিনায়ক পদস্থ হোন এবং গারলেন্ড জাহাজের আদেশ দেন।[৩] মে ১৭৪১ সালে তাকে এইচএমএস প্লেমাউথ জাহাজে বদলি করা হয় এবং নভেম্বর ১৭৪২ সালে এইচএমএস ড্রাগন জাহাজে বদলি হোন এবং টোউলোন যুদ্ধের আদেশ দেন।[৩]

১৭৪৬ সালে তাকে প্রিন্সেস লোউসা যুদ্ধজাহাজে বদলি করা হয়, যেখানে তিনি মে ১৯৪৭ সালে ফার্স্ট ব্যাটল অফ কেপ ফিনিশটেরের আদেশ দেন এবং অক্টোবর ১৭৪৭ সালে সেকেন্ড ব্যাটল অফ কেপ ফিনিশটেরের আদেশ দেন।[৩] জানুয়ারি ১৭৪৮ সালে এইচএমএস লায়ন যুদ্ধজাহাজে তার পতাকাসহ চিফ কমান্ডার হিসেবে পদস্থ হোন।[৩] তিনি নিউফাউন্ডল্যান্ড এর গভর্নর এবং কেপ ব্রেটোন আইল্যান্ড এর কমান্ডার-ইন-চিফ এর দায়িত্ব একসাথে পান।[১] ১৭৩১ সালে রিচার্ড এডয়ার্ড এর মৃত্যুর পর গভর্নর এর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান এবং তার উত্তরাধিকারসূত্রে ১ম ব্যারোনেট জ্যামস ডাফল্যাস গভর্নর হিসেবে নয় নৌসেনাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শুরু করেন। এরপর এমতাবস্থায় ১৭৪৮ সালে চার্লস ওয়াটসন গভর্নর এর দায়িত্ব পান। নিউফাউন্ডল্যান্ড এর গভর্নর হওয়ার পর তিনি আইরিশ এবং স্কটিশ ক্যাথলিকদের শহর থেকে বিতাড়িত করেন।[১]

সেন্ট জর্জ সমাধিক্ষেত্র, কলকাতা, ভারতে চার্লস ওয়াটসন এর সমাধি

১৭৫৪ সালে তিনি পূর্ব ভারতের কমান্ডার-ইন-চিফ হোন।[৩][৪] তিনি কোম্বে মার্টিন এর উত্তরাধিকারি ছিলেন এবং তার ভাই ফ্র‍্যান্সিস বুলার এন্থনি হাউস পেয়েছিলেন উত্তরাধিকারসূত্রে।[৫] তাদের ছেলে ওয়াটসন বারোনেটস, ১৭৬০ সালে ফুলমার, বাকিংহামশায়ারের প্রথম ব্যারোনেট নির্বাচিত হোন।

সাফল্য[সম্পাদনা]

চার্লস ওয়াটসন নোবাহিনীতে সবসময় পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন, এখানে তার সবথেকে বড় সাফল্য ধরা হয় সিরাজউদ্দৌলার বিরোধি দলের সঙ্গে অনেকগুলো গোপন ও প্রকাশ্যে সফল আলোচনায় অংশগ্রহণ। তাছাড়াও পলাশীর যুদ্ধের পূর্বে মীর বকশী এবং মীর জাফরের সাথেও তিনি সফল গোপন আলোচনায় অংশ নেন, যার পরিপেক্ষিতে নবাবকে যুদ্ধে হারানো সহজ হয়ে যায়। তাছাড়াও পলাশীর যুদ্ধে জয়ের সবথেকে বড় শক্তি ছিলো ওয়াটসনের নৌ-সেনা, এরা যুদ্ধে মূলত গোলন্দাজ বাহিনীর দায়িত্ব পালন করেছিলো।[৩]

ফোর্ট উইলিয়াম, কলকাতার মাদ্রাজের প্রেসিডেন্সি অফ ফোর্ট সেন্ট জর্জ এ হওয়া ইংরেজ বন্দোবস্ত তে ফার্স্ট ব্যারন কর্ণেল রবার্ট ক্লাইভ এর সঙ্গে অধিনায়ক চার্লস ওয়াটসনও উপস্থিত ছিলেন। ২ জানুয়ারি ১৭৫৭ সালে তারা পুনরায় ক্যালকাটায় এ ব্যাপারে কথা বলেন, কিন্তু নবাব ৫ ফেব্রুয়ারি ১৭৫৭ সালে কলকাতায় পুনরায় মিছিল করেন এবং ভোরে ইংরেজদের আক্রমণ সবাইকে অবাক করে দেয়। যার ফলপ্রসূ আলনগর চুক্তি সই হয়। কিন্তু পরবর্তিকালে নবাব ফ্রেঞ্চদের সহায়তা গ্রহণ করেন এবং মার্চে চন্দনগর যুদ্ধ এবং এরপর জুন ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধ সংগঠিত করে। ১৭৫৭ সালে ওয়াটসন হোয়াইট এর ভাইস অধিনায়ক হিসেবে পদস্থ হোন। পদমর্যাদার মাধ্যমে ওয়াটসনের দ্রুত পদন্নোতির পেছনে তার চাচা স্যার চার্লস ওয়াগারের হাত ছিলো বলে মনে করা হয়, যিনি তখন লর্ডস কমিশনার অফ দ্যা এডমিরালিটি ছিলেন। ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে, লন্ডন এ তার স্মৃতিস্বারক রয়েছে।

বিবাহ এবং সন্তান[সম্পাদনা]

১৭৪১ সালে তিনি জন ফ্র‍্যান্সিস বুলার (১৬৯৫-১৭৫১) এর মেয়ে র‍েবেকা বুলারকে বিয়ে করেন।

শেষ বয়স এবং মৃত্যু[সম্পাদনা]

পলাশীর যুদ্ধের পর স্যার লর্ড ক্লাইভ এবং ওয়াটসনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। কেননা দুজনেই চাইতেন ফোর্ট উইলিয়ামের গভর্নর হতে চাইতেন। এদিকে ক্লাইভ নিজেকে ফোর্টের গভর্নর ঘোষণা করেন, কিন্তু তিনি ওয়াটসনের থেকে পদমর্যাদা এবং বয়সে অনেক ছোট ছিলেন। যার কারণে গভর্নর হিসেবে ক্লাইভকে মানতে ওয়াটসন অস্বীকৃতি জানান। এর ফলে ক্লাইভ ওয়াটসনকে দ্বন্দ্বযুদ্ধে আহ্বান করেন। কিন্তু বয়সে এবং পদে ক্লাইভ ছোট হওয়ায় ওয়াটসন তা প্রত্যাখান করে। ফোর্টের ঘটনার ফলে ওয়াটসন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন এবং এর ফলশ্রুতিতে তিনি ১৭৫৭ সালের ১৬ আগস্ট কলকাতায় মারা যান।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Little, C. H.। "Watson, Charles" 
  2. Burke's General & Heraldic Dictionary
  3. Laughton, J. K.। "Charles Watson"। অক্সফোর্ড ডিকশনারি অব ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি (অনলাইন সংস্করণ)। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। ডিওআই:10.1093/ref:odnb/28831  (সাবস্ক্রিপশন বা যুক্তরাজ্যের গণগ্রন্থাগারের সদস্যপদ প্রয়োজন।)
  4. Rebecca Buller omitted from: Leased out jointly with her brother Francis Buller of Antony lands in Combe Martin in 1764
  5. Combe Martin Archives, North Devon Record Office, ref: Combe Martin 787M

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

রাজনৈতিক দপ্তর
পূর্বসূরী
জ্যামস ডাফল্যাস
নিউফাউন্ডল্যান্ডের গভর্নর
১৭৪৮–১৭৪৮
উত্তরসূরী
জর্হ ব্রাইডগেস রোডনি