অ্যাডভেঞ্চার গ্যালি
ইতিহাস | |
---|---|
![]() | |
নাম: | অ্যাডভেঞ্চার গ্যালি |
নির্মাতা: | উইলিয়াম কাসল, ডেপ্টফোর্ড? |
মোট খরচ: | ৮,০০০ পাউন্ড স্টার্লিং |
অভিষেক: | ৪ ডিসেম্বর, ১৬৯৫ |
নিয়তি: | ডুবে যায়, এপ্রিল ১৬৯৮ |
সাধারণ বৈশিষ্ট্য | |
প্রকার ও শ্রেণী: | পাল তোলা গ্যালি |
Tons burthen: | ২৮৭ |
দৈর্ঘ্য: | ১২৪ ফু (৩৮ মি) (keel) |
প্রস্থ: | ২৮ ফু (৮.৫ মি) |
গভীরতা: | ৯ ফু (২.৭ মি) |
প্রচালনশক্তি: | পাল তোলা, কিছুক্ষণের জন্যে দাঁড় টানা দুটি ব্যাংক |
জলযাত্রা পরিকল্পনা: | শীপ রিগ |
গতিবেগ: |
|
লোকবল: | ১৬০ জন |
রণসজ্জা: | ৩৪টি হালকা কামান |
অ্যাডভেঞ্চার গ্যালি (ইংরেজি:Adventure Galley) (অ্যাডভেঞ্চার নামেও পরিচিত) হল কুখ্যাত ইংরেজ প্রাইভেটিয়ার উইলিয়াম কিডের জাহাজের মত দেখতে পাল তোলা ছোট নৌকা। এটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল যে, এটি বাতাসে পাল উড়িয়ে বা বৈঠার সাহায্যে চালনা করা যেত। সেসময় এই ডিজাইনের জাহাজ প্রচলিত ছিল না। তরিটি ১৬৯৫ সালের শেষের দিকে পানিতে ভাসানো হয়েছিল এবং পরের বছর উইলিয়াম কিড তার প্রাইভেটিয়ারিং কাজের জন্য তরিটি সংগ্রহ করেন। এপ্রিল ১৬৯৬ সাল থেকে এপ্রিল ১৬৯৮ সাল পর্যন্ত এটি ভারত ও আটলান্টিক মহাসাগরে জলদস্যুর খোঁজে হাজার হাজার মাইল পড়ি দেয় কিন্তু কোন জলদস্যু আটক করতে ব্যর্থ হয়। অবশ্য এর যাত্রার শেষ পর্যায়ে তরিটি কিছুটা সফল হয়েছিল। জানা যায় উইলিয়াম কিডও কোন জলদস্যু ধরতে না পারর হতাশা ও কোন প্রকার উপঢৌকন না পাওয়ার হতাশা থেকে নিজেই একসময় জলদস্যুতে পরিনত হন। অ্যাডভেঞ্চার গ্যালি ভারত মহাসাগর থেকে দুটি ভেসেল আটক করতে সক্ষম হয় ও তাদের মাদাগাস্কার নিয়ে আসে। কিন্তু ১৬৯৮ -এর বসন্তের দিকে জাহাজের কাঠামোতে প্রচুর ফাঁটল ও গর্ত দেখা দেয়, এবং সমুদ্রে যাত্রার অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়। পরবর্তীতে এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত এটি মাদাগাস্কারের উত্তর-পূর্ব উপকূলে ডুবে যায়। ১৯৯৯-২০০০ এর মাঝামাঝি সময়ে, খবর ছড়িয়ে পরে অন্যান্য কয়েকটি ডুবে যাওয়া জলদস্যু জাহাজের সাথে অ্যাডভেঞ্চার গ্যালির ধংস্ববাশেষ পাওয়া গিয়েছে।
নকশা এবং ক্রয়
[সম্পাদনা]
ভেসেলটি ক্যাপ্টেন কিডের জন্য সংগ্রহ করা হয়েছিল, সাধারনত জলদস্যুদের আটক করার জন্য বিনিয়োগকারীদের নিয়ে গঠিত একটি দল জাহাজটি সংগ্রহ করে দেয়। কিড বেলমোন্টের প্রথম আর্ল ও ব্রিটিশ উপনিবেশ নিউ ইয়র্কের গভর্নর জেনারেল রিচার্ড কোটকে সাহায্য করার জন্য নিযুক্ত হন। রিচার্ড কোটের সাহায্যে ক্যাপ্টেন কিড রাজা উইলিয়াম তৃতীয়-এর কাছ থেকৈ প্রাইভেটিয়ার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। অন্যন্য বিনিয়োগকারি যারা সমুদ্র যাত্রায় কিডের সঙ্গী হয়েছিল তাদের মধ্যে, অক্সফোর্ডের আর্ল, রোমনির আর্ল, শরিওসবারির ডিউক লর্ড চ্যান্সেলর স্যার এডমন্ড ও জন সোমারস। রাজা নিজে এই প্রকল্পের বিনিয়োগকারী ছিলেন না কিন্তু তিনি এর ফল দেখার জন্য উদগ্রীব ছিলেন।[১]
ভেসেলটি ১৬৯৬ সালের আগস্টে £৮,০০০ (£৮৮৯,৯৯৬) ইউরোর বিনিময়ে ক্রয় করা হয়।[২] এর আগে ১৬৯৫ সালের ৪ ডিসেম্বর জাহাজটি ক্যাপ্টেন উইলিয়াম ক্যাসলের ডকইয়ার্ড ডেপ্টফোর্ড থেকে সমুদ্রে নামানো হয়েছিল।[৩] এই জাহাজে পাল ও বৈঠা দুটুর মাধ্যমেই যেন চালনা করা যায় এরকম ডিজাইনে তৈরি করা হয়েছিল। সেসময় যুদ্ধ্বজাহাজের জন্য এরকম নকশা প্রচলিত ছিল না। পূর্ণ পাল তোলা অবস্থায় জাহাজটি ১৪ নট (26 km/h; 16 mph) গতিতে ও বৈঠার সাহায্যে ৩ নট (5.6 km/h; 3.5 mph) গতিতে চলতে সক্ষম ছিল। বাইচের গতি ধীর হলেও এটি বাতাসের বিপরীত দিকে চলতে সক্ষম ছিল, যেখানে অন্যান্য ভেসেল সেসময় খুব বেশি উন্নতি করতে পারেনি।[২] এই জাহাজের দেখাদেখি পরবর্তীতে আরো কয়েকটি ব্রিটিশ যুদ্ধ্বজাহাজ তৈরি করা হয়েছিল। এই ধারণায় উদ্ভত করেছিল কারণ ব্রিটিশরা উত্তর আফ্রিকায় বারবারি জলদস্যুদের সাথে যুদ্ধ করে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। বিশেষ করে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি বিক্রীর উদ্দেশ্যে এরকম কয়েকটি জাহাজ তৈরি করেছিল।[৩] ক্যাসলের শীপইয়ার্ড যেখানে অ্যাডভেঞ্চার গ্যালি তৈরি করা হয়েছিল, সেটি ছিল সেসময় ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শীপইয়ার্ড এবং তারা ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির অধিকাংশ ভেসেল সরবরাহ করত।[৪]
অ্যাডভেঞ্চার গ্যালিতে ৩২টি হালকা কামন রাখার ব্যবস্থা ছিল।[৩] তবে এটি অজানা যে, এই তরিটিকে বাণিজ্য কিংবা যুদ্ধের জন্য তৈরি করেছিল। তবে এই জাহাজটির তৈরিতে কিছুটা ত্রুটি ছিল বলে জানা যায়, যা ক্যাপ্টেন কিড তার যাত্রায় বিভিন্ন সময় সম্মুখীন হয়েছেন। অ্যাডভেঞ্চার গ্যালির কোন চিত্র পাওয়া যায় না তবে এটিকে অন্য একটি ভেসেল চার্লস গ্যালির সাথে তুলনা করা হয়।[৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- Donnelly, Mark P.; Diehl, Daniel (২০১০)। Pirates of New Jersey: Plunder and High Adventure on the Garden State Coastline। Stackpole Books। আইএসবিএন 9780811706674।
- Fumerton, Patricia (২০০৬)। Unsettled: The Culture of Mobility and the Working Poor in Early Modern England। University of Chicago Press। আইএসবিএন 9780226269566।
- Graham, Harris (২০০২)। Treasure and Intrigue: The Legacy of Captain Kidd। Dundurn Press Ltd.। আইএসবিএন 978-1-55002-409-8।
- Lane, Kris E. (১৯৯৬)। Pillaging the Empire: Piracy in the Americas, 1500 - 1750। M.E. Sharpe। আইএসবিএন 9780765630834।
- Paine, Lincoln P. (২০০০)। Warships of the World to 1900। Houghton Mifflin Harcourt। আইএসবিএন 9780547561707।
- Thompson, Harold William (১৯৭৯)। Body, Boots, and Britches: Folktales, Ballads and Speech from Country New York। Syracuse University Press। আইএসবিএন 9780815601609।
- Van Den Boogaerde, Pierre (২০১১)। Shipwrecks of Madagascar। Strategic Book Publishing। আইএসবিএন 9781612043395।
- "Kidd's Narrative"। The New England Historical and Genealogical Register, Volume 6। New England Historic Genealogical Society। জানুয়ারি ১৮৫২।