অহিংসা (উপন্যাস)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

অহিংসা বাঙালি ঔপন্যাসিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত একটি সামাজিক উপন্যাস।[১]

কাহিনী[সম্পাদনা]

বিপিন আর সদানন্দ, ছোটবেলা থেকেই বন্ধুত্ব তাদের; কখনও খুব একটা গাঢ় হয়ে উঠে নাই। একসাথে থাকার জন্য তারা আকুল ছিল না, কিন্তু ভাগ্য আজীবন প্রায় তাদেরকে একসাথে করেই রেখেছে। বিপিনের তদারকি আর সদানন্দের সাধুগিরিতে তাই এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি আশ্রম। ভালই চলছিল তাদের, যতদিন না মাধবীলতা এসে জুটল। রাজা মশায়ের ছেলে নারায়ণ বিয়ের জন্য ঘর থেকে তাকে বের করে এনেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়ে করতে রাজি না হয়ে সদানন্দের আশ্রমে এসে দিয়ে যায়। বিপিনই তার দায়িত্ব নিয়েছিল, কিন্তু প্রথম রাতে সদানন্দের ঘরে গিয়ে তার গাঁ ঘেষে শয়ন করার মাধ্যমেই মাধবীলতা বিপত্তির সূচনা ঘটায়। অবুঝ কুমারী মাধবীলতার সে রাতেই প্রথম নারীসুলভ জ্ঞান লাভ হয়েছিল বলা যেতে পারে। মাধবীলতার প্রেমে পরে যায় সদানন্দ, বয়স্ক স্বামীজীর সাথে কিশোরী কুমারীর ভয় ও শ্রদ্ধামিশ্রিত প্রেম। আশ্রমের কেউ জানতে পারেনি, যে বিপিনের জ্ঞানের বাইরে সেখানে কিছু ঘটেনা তারও আসল ব্যাপারটি আঁচ করতে অনেক দিন লেগে যায়। মাধবীলতা আশ্রমবালিকা হিসেবে থেকে যায়, উমা ও রত্নাবতীর সাথে। উমা সদানন্দের অন্যতম ভক্ত এক শিষ্য যে ভক্তির আতিশয্যে সর্বদাই একটু অতিরিক্ত কিছু ঘটিয়ে ফেলে। এরপর আরও অন্তত দুই রাত কি তার চেয়ে ঢের বেশি সময় সদানন্দ মাধবীলতার সাহচর্যে কাটায় বা কাটাতে চায়, তাকে ডাকে মাধু নামে। স্বল্প বয়সের কারণেই হয়তো মাধবী প্রথমে এই বিষয়টি বুঝতে পারেনি। সদানন্দকে তার মহাপুরুষ মনে হতে থাকে। বিপিন আরও মাধবীকে বলে, সে যেন স্বামীজীর সেবা করে। মাধবী স্বামীজীর পা টিপে দিতে চায়, কিন্তু স্বামীজী তো চাইতেন আরও কিছু। এর মধ্যেই বিপিনের সাথে সদার ঝগড়া হওয়ায় সদা কোথায় যেন চলে যায়। সদা ভেবেছিল এ সময়ে সে নিজে আশ্রমের দায়িত্ব নিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু তার হাতে আশ্রমের উন্নতি তো হয়ইনা, বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বিপিন বরাবরের মতোই ফিরে আসে। এর মধ্যে সে আশ্রমের্ উন্নতির পাকা বন্দোবস্ত করে ফেলে। নারায়ণকে ফাঁসিয়ে দেবার ভয় দেখিয়ে আশ্রমের উপর খবরদারি থেকে নিরস্ত করে। রাজাসায়েবের কবল থেকে মুক্ত হয় আশ্রম।

নিজের কাম প্রবৃত্তিকে দমনের উদ্দেশ্যেই হয়তো সদানন্দ সাত দিন কাউকে দেখা না দেওয়ার ঘোষণা দেয়। কেউ তার জন্য জীবন উৎসর্গ করতে পারলেই কেবল তার দেখা পাবে। মহেশ চৌধুরী এই অসম্ভব সাধনে প্রবৃত্ত হয়। আশ্রমের গাছতলায় রোদ-বৃষ্টির মধ্যে বসে থাকে যতক্ষণ না সদার দেখা পায়। মহেশের সাথে তার বৌও যোগ দেয়, স্বামীকে ফিরিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু মহেশ যখন ফিরে যেতে রাজি হয় তখন আবার বেঁকে বসে এই বলে যে, বাড়িতে ফিরে গেলে তার গঞ্জনা সহ্য করতে হবে কারণ সে মহেশকে প্রভুর জন্য আত্মত্যাগ করতে দেয়নি। মাধবীর মধ্যস্থতায় মহেশের সাথে সদার দেখা হয়। আশ্রম জয় করেছেন বলে পুরো গ্রামে মহেশের সুনাম আরও ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যেই বিপিন সদার সাথে মাধবীর সম্পর্কের বিষয়টি পুরোপুরি বুঝতে পারে। আশ্রম থেকে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় মহেশ একবার মাধবীকে দেখতে চান। আর বিপিন তাকে একেবারে মহেশের বাড়িতে রেখে আসে। এ নিয়ে সদার সাথে তার একতরফা হয়েও গিয়েছিল। মহেশের একমাত্র ছেলে বিভূতি জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ফিরে আসে। সুস্থ হওয়ার পর মহেশ একদিন বিভূতি ও মাধবীকে নিয়ে আশ্রমে সদার সাথে দেখা করতে যায়। বিভূতি কোনোভাবেই সদাকে প্রণাম করতে রাজি হয়নি, মাধবীর অনুরোধেও নয়। মাধবীও বিপিনের অনুরোধ শুনেনি, বিপিন তাকে কখনও অনুমতি ছাড়া আশ্রমে যেতে বারণ করেছিল।

চরিত্রসমূহ[সম্পাদনা]

প্রধান চরিত্রসমূহ[সম্পাদনা]

সদানন্দ
রাধাই নদীর তীরে অবস্থিত আশ্রমের সাধু। বিপিন তাকে সদা নামে ডেকে থাকে। তার চরিত্রের মধ্যে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ও বচনের গভীরতা পরিলক্ষিত হলেও সে নিজে তা সম্পর্কে সচেতন নয় মোটেই। হয়তোবা নিজেকে প্রতারক সাধু হিসেবেই জ্ঞান করে। বয়স হলেও পুরুষের যৌন চাহিদা মিটে যায় না। পরিণত বয়সে তাই কাম এবং কাম থেকে প্রেমে জড়িয়ে যায় সদানন্দ। তার চরিত্রের মধ্যকার যে সচেতন মননশক্তি সাধারণ মানুষের মধ্যে সভয় শ্রদ্ধা জাগিয়ে তুলেছে অসাধারণ মহেশ চৌধুরীও সেই মননশক্তির কাছে বশ মেনেছে। এরকম অনেকেই তার অন্ধ ভক্ত। ভক্তকুলের সামনে সে যেন প্রকৃতই মহাপুরুষ, কিন্তু মাধবীলতা বা বিপিনের সামনে একেবারেই সাধারণ; শেষ দিকে মহেশ চৌধুরীর কাছে নিজেকে তার একেবারে অসহায় শিশু মনে হচ্ছিল। তার মননশক্তি সচেতন ছিল বলেই নিজেকে ধরে রাখতে পারেন নি। অধঃপাতে গিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত তার হিংসা ও ক্রোধই জয়লাভ করেছে। মাধবীলতার কাছে গিয়ে হেরে গিয়ে সবসময় চেয়েছেন তীব্র প্রতিশোধ নিতে। মাধবীকে তার চাই, এ ধরনের মন মানসিকতার কারণেই বোধ হয় প্রাণ হারাতে হয়েছিল মাধবীর স্বামী বিভূতিকে। অবশেষে পেয়েছেন মাধবীকে, কিন্তু তার চরিত্রের সেই সচেতন শক্তি আর হয়তো ফিরে আসবে না যার পরিচয় পেয়ে যান মহেশ চৌধুরী। আশ্রমের প্রতিষ্ঠা সৎ উদ্দেশ্যে হয়েছিল বলেই হয়তোবা সদানন্দের সেখানে জায়গা হয়নি।
বিপিন
সদানন্দের বাল্যবন্ধু, কিন্তু তাদেরকে প্রাণের বন্ধু বা একান্ত সুহৃদ বলা যাবে না। কারণ একসাথে তারা সারা জীবন থাকতে চায়নি। ভাগ্যই তাদেরকে সবসময় এক করে রেখেছে। আশ্রমের পরিচালক ও জমির মালিক বিপিন, সদানন্দ কেবল সাধু ও শিক্ষক। জনসমক্ষে সে স্বামীজীকে প্রভু বলেই ডাকে, কিন্তু আড়ালে সম্পর্ক গড়ায় তুইয়ের পর্যায়ে। তারই মধ্যস্থতা ও চালে মাধবীলতা আশ্রমে এসেছিল যা ছিল মূলত সব সম্পত্তি নিজের করে নেয়ার জন্য তার একটি পলিসি। মাধবী সম্বন্ধে তার কৌতূহল কতটুকু এবং কোন ধরনের তা লেখক সহজে বুঝতে দেননি। সবসময়ই সদানন্দের কাছ থেকে সে মাধবীকে দূরে রেখেছে, কিন্তু আশ্রম থেকে মহেশ চৌধুরীর বাড়িতে রেখে আসার আগে মাধবীকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেয়া কোন কিছু ইঙ্গিত করে কি-না, তা লেখকই বলতে পারবেন। তার মধ্যে অদম্য কর্মশক্তি, পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা, চালবাজি ও দূরদর্শীতার সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। মহেশ চৌধুরীকে রাজাসায়েবের চাপে প্রথম দিকে একেবারে অবজ্ঞা করলেও পরবর্তিতে তাকে নিয়েই আশ্রম গড়ার স্বপ্ন দেখে বিপিন। তার স্বপ্ন সফল হয়, খুব একটা ব্যর্থ কখনই হননি। আশ্রমের সম্পত্তি থেকে রাজার প্রভাব মুছে ফেলে নিজেই সর্বেসর্বা হয়ে উঠে বিপিন। আশ্রম সে সৎ উদ্দেশ্যেই খুলেছিল, মহেশ চৌধুরী হয়তো পারবেন সেই সৎ উদ্দেশ্যের ইন্ধন যোগাতে।
মহেশ চৌধুরী
বাগবাদা গ্রামের জনপ্রিয় নাম। মহেশের মধ্যে রয়েছে অসাধারণ প্রভুভক্তি, ধর্মপরায়ণতা, ঈশ্বরপ্রেম, সরলতা এবং বিচক্ষণতা। সাধারণ অন্ধ ভক্তরা খুব একটা বিচক্ষণ হয়না। কিন্তু সদানন্দের অন্ধ ভক্ত মহেশ এমন সব কাজ করে প্রথমদিকে যেগুলোকে নিছক ভক্তির বহিঃপ্রকাশ মনে হলেও পরবর্তিতে অনেকটা বিচক্ষণ মনের চিন্তার ফসল বলে মনে হয়েছে। প্রভুর পতন কখনই দেখতে চাননি। লেখকের মতে সদার সাথে তার মৌলিক চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের তেমন কোন পার্থক্য নাই, কেবল সদার মননশক্তি যেখানে সচেতন, মহেশেরটি সেখানে অচেতন। অবশ্য এই একটি মাত্র পার্থক্যই মহেশকে সদানন্দের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক করে দিয়েছে। মহেশ হয়ে উঠেছে এই উপন্যাসের নামকরণের সার্থকতার চাবিকাঠি। তার মধ্য দিয়ে লেখক অহিংসা দেখিয়েছেন। মহেশ সবসময়ই বিশ্বাস করত এবং বলত, "কর্তব্যজ্ঞান, নিষ্ঠা, তেজ, সাহস, এ সব মানুষের যতই থাক, ভালো-মন্দ, উচিত-অনুচিত, ন্যায়-অন্যায় বিচার করিবার ক্ষমতা না থাকিলে ও সব কোনো কাজেই লাগে না।" নিজের ছেলেকে দিয়ে এই সত্য সে উপলব্ধি করেছে। মহেশ মনে করে পৃথিবীর সব মানুষই রোগাক্রান্ত, এই রোগের চিকিৎসা মহামানবেরা করতে চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কেউই পরিপূর্ণ সফলতা পাননি। নিজের ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দেয়া, সদানন্দ এবং মাধবীলতাকে মিলিয়ে দেয়ার মত চরম সিদ্ধান্ত নেয়া, বিপিনের আশ্রমে সাধুর দায়িত্বে অধিষ্ঠান, শত কুকীর্তি সত্ত্বেও সদানন্দকে ধৈর্য্যের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা, এসবই তার অহিংস মনোভাবের প্রমাণ দেয়।
মাধবীলতা
স্বল্প বয়সী মাধবীলতাকে বিপিন ডাকে মাধবী নামে, আর সদানন্দ মাধু নামে। প্রথম রাতে তার আচরণ দেখে সদানন্দ তাকে কুমারীই মনে করেছিল, অবশ্য সে রাতের পর সে আর তা ছিলনা। পুরুষ সম্বন্ধে জ্ঞান ছিল না বলেই সদানন্দের খাটে তার গাঁ ঘেষে শুতে পেরেছিল সে, লেখকের ধারণা এই। সদানন্দের প্রেমের প্রতি তার সাড়া দেয়ার পরিমাণ কতটুকু প্রথম দিকে তা একেবারেই বোঝা যায়নি, শুধু তার শ্রদ্ধা ও ভয়মিশ্রিত আবেগের বহিঃপ্রকাশ দেখতে পাওয়া গেছে। সদানন্দ তাকে বারংবার আপন করে পাবার তাগিদ অনুভব করার পর থেকেই তাদের সে সম্পর্কের ধরন গেছে পাল্টে। মহেশর সাথে সদার দেখা করিয়ে দেয়ার মত দুঃসাহস তাই তার হয়েছিল। সদাকে সে আর ভয় পেত না, তার বদলে ঘৃণা করতে শুরু করে। আসলে একটি বিবেক সম্পন্ন আদর্শ ছিল বলে আশ্রমের অনেক কিছুই তার কাছে বেখাপ্পা লাগে। কাজে ডুবে থাকতে তার ভালো লাগে, কাজ না থাকলে সুখে সময় কাটাতে পারে না। নারীসুলভ শক্তি থেকে উৎসারিত কিছু গুণ তার মধ্যেই ছিল, চাহনী যার মধ্যে অন্যতম। এই চাহনী দেখেই শেষবার সদা তাকে ধর্ষণ করতে পারে নি। দিনের বেলায় সদার আদরের দুঃসহ স্মৃতি থেকেই সে বিভূতিকে দিনের বেলায় দেহদান করত না যদিও রাতে সে-ই হয়ে উঠত অগ্রণী। আসলে মাধবী যাকে পায় তাকেই আঁকড়িয়ে ধরে।
বিভূতি
মহেশ চৌধুরীর ছেলে, মানিকের উপন্যাসের বৈশিষ্ট্যময় বিদ্রোহী চরিত্র। কিন্তু অন্য অনেকের চেয়ে এক্ষেত্রে বিভূতি অনেকটাই দুর্বল। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সংঘবদ্ধভাবে ক্ষেপিয়ে তোলার জন্য তার জেল হয়। ধর্মকর্ম খুব একটা পছন্দের নয়, সদানন্দকে কখনই প্রণাম করতে রাজি হয়নি, কিন্তু তার মৃত্যু হয়েছিল সদার পায়ের পরেই। মৃত্যুর জন্য অবশ্য সদাকেই দোষী করা যায়। জেল থেকে পরিবারে এসে নিজেকে বাঁচিয়ে চোখ বন্ধ করে জীবন কাটিয়ে দেয়ার মন্ত্রে সে দীক্ষা নেয়। মাধবীলতার চরিত্র তার ভালো লাগারই কথা, লেখক বলে না দিলেও এটুকু বোঝা যায়। অবশ্য বিয়ে করার কথা সে কখনই ভাবেনি। পিতার দূরদর্শীতায় তাদের বিয়ে হয়। মাধবীর মত একটি বৌ পেয়ে সে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করত, যদিও সদাকে নিয়ে খানিকটা সন্দেহ শেষের দিকে জাগ্রত হয়। বিয়ের পর স্ত্রীর প্রতি এতোটাই দুর্বল হয়ে পরে, যে সাধারণ ভয় পাইয়ে দেয়ার অপরাধে পিতার প্রিয় পোষা বিড়ালটিকে মেরেই ফেলে। মহেশের মতে তা মধ্যে ভালো-মন্দের জ্ঞানটি প্রখর ছিল না। তাই হয়তো আবেগের বশে নন্দনপুরে গিয়ে অধিকার আদায়ের কথা বলে। অবশ্য আগের মত ছিল না বলেই সংঘর্ষটিকে সে সহজভাবে নিএ পারেনি, বিমর্ষ হয়ে পড়ে। প্রথমদিকে পিতৃক্ত মনে না হলেও পিতার মার খাওয়ার প্রতিবাদে সে আবার পুরোদস্তুর বিদ্রোহী হয়ে উঠে। মারামারিত তার মৃত্যু হলেও মাধবীর মনে সে টিকে থাকতে পারবে হয়ত।

অন্যান্য চরিত্র[সম্পাদনা]

  • ঊমা - সদানন্দের অতি ভক্ত শিষ্য, আশ্রমের নারী, বয়স্ক। রত্নাবতীর সাথেই থাকে।
  • রত্নাবতী - আশ্রমবালিকা। উৎসুক এবং সাহসী। দায়িত্ব নিয়ে কাউকে দেখে রাখার স্বভাবটি আছে তার মধ্যে। আশ্রমের নীতিগত নিষ্পাপ বোধটি যথারীতি তার মধ্যেও নেই, শশধরের সাথে গোপন সম্পর্কে তাই জড়িয়ে পড়া।
  • মহেশ চৌধুরীর স্ত্রী - তৎকালীন বাংলার বধূদের অস্বাভাবিক স্বামীভক্তির নমুনা।
  • শ্রীধর - বাগবাদা গ্রামের দোকানদার।
  • নারায়ণ - রাজাসায়েবের ছেলে তথা রাজপুত্র। মাধবীকে বিয়ে করার জন্য সে-ই ভাগিয়ে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু শেষে বিয়ে করেনি, রেখে গেছে আশ্রমে। বিপিনের চালের কাছে অবশ্য তাকে হার মানতে হয়েছে।
  • শশধর - মহেশ চৌধুরীর ভাগিনা। মহেশের বাড়িতে বিনি পয়সায় থেকে যাওয়ার জন্য সবরকম ত্যাগ স্বীকার করে। ঘরে বৌ রেখে রত্নাবতীর সাথে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে।
  • শশধরের স্ত্রী - সতীত্বের প্রতিমা। বড়ির কাউকে নিজের অস্তিত্ব সম্বন্ধে বুঝতে না দিয়ে বেঁচে থাকার কৌশল সে আবিষ্কার করেছে।

বিশেষ তথ্যাদি[সম্পাদনা]

  • উপন্যাসটিতে বাংলা ভাষার বরেণ্য কবি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। কবিতার মাধুর্য প্রকাশ করতে গিয়েই মানিক তার নাম উল্লেখ করেছেন।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. মজিদ, পিয়াস (১৬ মে ২০১৪)। "মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামগ্র্য"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-৩০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]