অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় (ভূবিজ্ঞানী)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় একজন ভারতীয় বাঙালি বিজ্ঞানী এবং বর্তমানে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, খড়গপুর-এর ভূতত্ত্ববিদ্যা ও ভূপদার্থবিদ্যার অধ্যাপক। [১] তিনি পৃথিবী বায়ুমণ্ডল মহাসাগর এবং গ্রহ বিজ্ঞান ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ২০২০ খ্রিস্টাব্দে শাস্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার লাভ করেন। [২][৩] ২০২১ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম ভারতীয় হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের "জিওলজিক্যাল সোসাইটি অব আমেরিকা" ফেলো নির্বাচিত হন। [৪]

উত্তর ভারতে গঙ্গানদীর অববাহিকায় গভীর খনন বা তুরপুন

অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বর্তমানে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, খড়গপুর-এর  স্কুল অফ এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সহযোগী অধ্যাপক। এছাড়া তিনি বিজ্ঞান পত্রিকা 'নেচার', 'আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির' এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, এলসেভিয়ারের ভূগর্ভস্থ জলের স্থায়ী সমাধান সম্পর্কিত বিষয়ের এবং 'স্প্রিংগার নেচার' পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক/ সাইন্টিফিক রিপোর্ট-এর সম্পাদকীয় পর্ষদে আছেন। এর আগে তিনি  এলসেভিয়ারের জলবিদ্যা সম্পর্কিত পত্রিকা জার্নাল অফ হাইড্রোলজি, এলসেভিয়ারের  ব্যবহারিক ভু-রসায়নবিদ্যা - অ্যাপ্লায়েড জিওকেমিস্ট্রিতে সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ভূগর্ভস্থ পানীয় জল সংরক্ষণে দিশা প্রদর্শনে ও জলবিদ্যায় অবদানের জন্য সুপরিচিত।

অভিজিতের গবেষণার প্রধান ক্ষেত্রগুলি হল - সংখ্যাসূচক মডেলিং, গণনা, দূষিত পরিবহন, পানীয় জল নীতির প্রয়োগ সহ প্রাকৃতিক, রাসায়নিক ও আইসোটোপিক জলবিদ্যাগত তথা জলভূতত্ত্ববিদ্যার বিষয়সমূহ। তিনি ভূতাত্ত্বিক এবং মনুষ্য-ব্যবহিত ভূগর্ভস্থ পানীয় জল দূষণ (যেমন, আর্সেনিক, ফ্লুরাইড, শৌচকর্ম জনিত এবং শিল্পবর্জ্যজনিত দূষণ) ইত্যাদি র জন্য বিশ্বের এক ডজনেরও বেশি দেশে সুপরিচিত। তিনি ভূগর্ভস্থ-ভূপৃষ্ঠ জলের মিথস্ক্রিয়ায় বিশেষজ্ঞ। ভারতে এই ব্যাপারে তার কাজ পানীয় জল ও খাদ্য সুরক্ষায় অবদান রেখেছে। তিনি উন্নত গণনা পদ্ধতি ও বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে ভারতীয় উপমহাদেশের ভূগর্ভস্থ জলের দশ বৎসরের ব্যবধানে তার পরিমাণ ও  স্বল্পতা বিষয়ে নিয়ে ব্যাপক কাজ করেছেন। অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম শহরাঞ্চলীয় ভূবৈজ্ঞানিক পরিকল্পনায় ভারতের প্রাচীন শহর বারানসীতে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

মুখার্জি বিশ্বজুড়ে নিরাপদ ও টেকসই ভূগর্ভস্থ জলের সর্বাধিক পানীয় জলের সীমাবদ্ধকরণে অন্যতম পরিচিত বিশেষজ্ঞ

ভারত সরকারের বৈজ্ঞানিক গবেষণার শীর্ষ সংস্থা কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিকঅ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ তাঁকে ২০২০ খ্রিস্টাব্দে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল, মহাসাগর এবং গ্রহবিজ্ঞান ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার জন্য শাস্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার প্রদান করে।

জীবনের প্রথমার্ধ[সম্পাদনা]

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কালীঘাটে। তার স্কুলের পড়াশোনা কলকাতার সাউথ পয়েন্ট স্কুলে এবং পরবর্তী উচ্চশিক্ষা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যান উচ্চ শিক্ষার্থে ও পোস্ট ডক্টরাল গবেষণার জন্য। তিনি বহুদিন কানাডায় কর্মরত ছিলেন। দেশে ফিরে তিনি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, খড়গপুর-এ যোগ দেন। [৫][৬]

দক্ষিণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কার্বন ক্যাপচার পরীক্ষার সরেজমিনে

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে  কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ আশুতোষ কলেজ ভূতত্ত্ববিদ্যায় অনার্স সহ বি.এসসি পাশ করেন এবং ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূতত্ত্ববিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। উচ্চ শিক্ষার্থে ও পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান। তিনি ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে কেনটাকি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জলভূতত্ত্ববিদ্যায় আর একটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। সেখানে তার স্নাতকোত্তরস্তরের থিসিসের বিষয় ছিল, পশ্চিম কেনটাকিতে ওহিও-র শাখানদীর অঞ্চলে উদ্বায়ী জৈব যৌগ এবং তেজস্ক্রিয়তার কারণে দূষিত ভূগর্ভস্থ জল ও নদীর জলের মিথস্ক্রিয়ার উপর। তারপর তিনি ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে ভূতত্ত্ববিদ্যায় (জলভূতত্ত্ববিদ্যায়) পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। এখানে তার ডক্টরাল থিসিস ছিল - "ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম অববাহিকায় গভীরতর ভূগর্ভস্থ জলের প্রবাহ এবং আর্সেনিক জনিত দূষণে জলজের রসায়ন।" খ্যাতিমান জলভূতত্ত্ববিদ্ ডাঃ অ্যালান ফ্রায়ার তার একাডেমিক উপদেষ্টা ছিলেন।

তিনি ২০০৬-২০০৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রিজেট স্ক্যানলনের তত্ত্বাবধানে অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যাকসন স্কুল অফ জিওসায়েন্সের ব্যুরো অফ ইকোনমিক জিওলজির পোস্ট ডক্টরাল ফেলো ছিলেন। অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ২০০১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি (এনআইআইটি) সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পেশাদারি ডিপ্লোমা অর্জন করেছেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপের সুন্দরবন বনে বিশ্ব itতিহ্য জৈবিক রিজার্ভ উপকূলীয় প্রক্রিয়া দ্বারা ভূগর্ভস্থ জলের দূষণের দুর্বলতা বর্ণনা

বর্তমানে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ হতে  অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, খড়গপুর-এর  স্কুল অফ এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ভূতত্ত্ব ও ভূপদার্থবিদ্যা বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক। তিনি ২০১০ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর এই ইনস্টিটিউটে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন।

মরুভূমিতে ভূগর্ভস্থ জলের সন্ধানে সরেজমিনে

তিনি ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ হতে ২০১০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কানাডার এডমন্টনস্থিত আলবার্টা সরকারের শক্তি সংরক্ষণ পর্ষদের আলবার্টা জিওলজিক্যাল সার্ভে ফিজিক্যাল হাইড্রোজোলজিস্ট ছিলেন। এর আগে ২০০৬ খ্রিস্টাব্দ হতে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত  তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যাকসন স্কুল অফ জিওসায়েন্সের ব্যুরো অফ ইকোনমিক জিওলজির পোস্ট ডক্টরাল ফেলো ছিলেন। এরও আগে ২০০২ খ্রিস্টাব্দ হতে ২০০৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত গ্রীষ্মকালীন সময়ে  তিনি কেনটাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূতত্ত্ববিদ্যার গবেষণা সহকারী এবং ২০০১ খ্রিস্টাব্দ হতে ২০০৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়ে ভূতত্ত্বের প্রশিক্ষক ও শিক্ষক সহকারী ছিলেন।

গবেষণা[সম্পাদনা]

অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের গবেষণা দেশে ও বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। মূলত ভূগর্ভস্থ জলস্তর ও পানীয় জলের দূষণরোধে তার দীর্ঘ সময়ের গবেষণার সাফল্য তাঁকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছে। তার গবেষণার মূল ক্ষেত্র ভূগর্ভস্থ জল সুষ্ঠু সংরক্ষণ ও পানীয় জলে আর্সেনিক রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা। তার গবেষণা দল গাঙ্গেয় অববাহিকায় ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক সনাক্ত করার লক্ষ্যে এআই পূর্বাভাস মডেল তৈরি করেন। [৭]

ভূগর্ভস্থ জলতাত্ত্বিক সেটিংস দ্বারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রভাবিত হয়। ভূগর্ভস্থ জলের দূষণ সংক্রান্ত কাজে হিমালয়ের লাদাখে
হিমালয়ের উচ্চ উচ্চতায় ভূগর্ভস্থ জলের সহজলভ্যতা এবং স্থিতিস্থাপকতা অধ্যয়ন করা

অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ও তার সহকর্মীরা বিভিন্ন ভূগর্ভস্থ জলের উপর কাজ করে ফলাফলের উপর নজর রাখছেন যাতে সামগ্রিক ভাবে মানবকল্যাণে প্রয়োজনীয় কিছু করা যায় যেমন - ভূগর্ভস্থ জলের প্রশাসনের মূল্যায়ণ ও পরিমান নিরূপণ, নীতিগত হস্তক্ষেপ, ভবিষ্যতে ভারতীয় শহরগুলির সহনশীলতা (বারাণসীতে পরীক্ষামূলক গবেষণা), ভারতীয় উপমহাদেশের ভূগর্ভস্থ জল-সমুদ্রজলের গতিবিধি, জলবায়ুর কারণে ভূগর্ভস্থ জলের পুনঃসঞ্চয়, আর্সেনিক পরিবহন নিয়ন্ত্রণে ভূপৃষ্ঠ এবং উপগ্রহ ভিত্তিক গবেষণার কাজে নিয়োজিত হয়েছেন। কানাডার রকি পর্বতের পূর্বভূমির অববাহিকায় ভবিষ্যতে ভূগর্ভস্থ জলের প্রবাহের সন্ধানে, জলবিদ্যুত সম্ভাবনায় তার স্বকীয় বুদ্ধিমত্তার পরিচয় যায়।  তিনি আর্জেন্টিনা, বাংলাদেশ, কানাডা, চিন, কোস্টারিকা, ভারত এবং যুক্ত রাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশে তিনি গবেষণা করেছেন।

গঙ্গা নদীর অববাহিকায় ভূগর্ভস্থ আর্সেনিক দূষণ

অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম হাইড্রোজোলজিস্ট হিসাবে সুপরিচিত। তিনি সারা ভারতের ভূগর্ভস্থ জলের গুণগত ও পরিমানগত উৎস সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং ভারতের ভূগর্ভস্থ পানীয় জলের উপস্থিতি সম্পর্কে তার সাম্প্রতিক গবেষণায় উল্লিখিত হয়েছে। তার সাম্প্রতিক গবেষণা ভারত সরকারের ভূগর্ভস্থ জল পুনর্জীবন বিষয়ে  মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট তথা 'মনরেগা' মিশনে সমর্থন জুগিয়েছে এবং স্বচ্ছ ভারত অভিযানে ভূগর্ভস্থ পানীয় জলের দূষণরোধে, গঙ্গানদীর নির্মল প্রবাহে 'নমামি গঙ্গ' ইত্যাদির মূল্যায়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দীর্ঘমেয়াদি ভূগর্ভস্থ পানীয় জল নীতি 'ভিশন-২০২০' রূপায়ণ যথোপযুক্ত উপায়ে সম্পাদন করেছেন।

উত্তর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জলের পুনর্জীবন অধ্যয়নরত

সিন্ধু-গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র নদীর অববাহিকায়  (আর্সেনিক, কীটনাশক, শৌচকর্ম ) ইত্যাদিতে ভূগর্ভস্থ পানীয় জলের দূষণরোধে ড. মুখোপাধ্যায়ের ভূতাত্ত্বিক ও মানবিক প্রভাবের উপর গবেষণা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তিনি দেশের অগ্রণী ভূগর্ভস্থ জল দূষণ বিশেষজ্ঞ হিসাবে গণ্য হন এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ফ্লুরাইড টাস্কফোর্সের সদস্য হন। তিনি ভারতের প্রথম বিজ্ঞানী হিসাবে দেশে " জল সুরক্ষা বিল" প্রস্তাব রাখেন।

এর ফলে তিনি ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে ভারতের সংসদে অনুমান সমিতির পর্যবেক্ষণকারী হিসাবে আমন্ত্রিত হন। তার ও তার ছাত্রদের ভারতের ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ নিরূপণের কাজ বিশেষত ভারতের বিভিন্ন স্থানে ভূগর্ভস্থ জল পুনর্জীবন সংক্রান্ত বিষয়ের ফলাফল সরকারী নীতিমালা নির্ধারণে সহায়ক হয়েছে যা কিনা  বিশ্বে প্রশংসিত হয় এবং সংবাদ মাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এই গবেষণায় ভারতের বিভিন্ন স্থানে ভূগর্ভস্থ জলের পুনর্জীবন নিয়ে মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি বা মনরেগার মত জাতীয় জল জীবন মিশন সফল করতে সহায়তা করছে। এই বিষয়টি ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ২২ শে সেপ্টেম্বর নাসার ওয়েব সাইটে প্রদর্শিত হয়েছে।

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

২০১৬ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় জিওসায়েন্স অ্যাওয়ার্ডে সম্মানিত

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখযোগ্য কাজের জন্য বিভিন্ন পুরস্কার লাভে ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ ২০২০ খ্রিস্টাব্দে ভারতে সর্বোচ্চ বিজ্ঞান পুরস্কার শাস্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার প্রদান করে। তিনি খড়াকা পুরস্কারে ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ জুলাই ২০২১ তারিখে ভূষিত হয়েছেন যা ভূতত্ত্ববিদ্যায় গবেষণায় শ্রেষ্ঠত্বের জন্য প্রতি বছর প্রদান করা হয়। মুখার্জি জিওলজিকাল সোসাইটি অফ আমেরিকা আন্তর্জাতিক কমিটির (২০২০-২৪) নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি খড়গপুরে ১০১৯ খ্রিস্টাব্দে শ্রেষ্ট অনুষদের পুরস্কার পান।। ২০১৮ খ্রিস্টাব্দেই  যুক্তরাজ্যের 'ন্যাচারাল এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ কাউন্সিল' ও ভারতের 'ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি'র যৌথ উদ্যোগে তিনি  নিউটন-ভাবা রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি ন্যাশনাল জিওসায়েন্স অ্যাওয়ার্ড পান। ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের পক্ষে রাষ্ট্রপতি তাঁকে জাতীয় ভূবিজ্ঞান পুরস্কার প্রদান করেন।

অন্যান্য পুরস্কার গুলি হল -

২০১৬ - জল বিশ্লেষণে থার্মো ফিশার আউটস্টান্ডিং সায়েন্টিস্ট, থার্মো ফিশার সায়েন্টিফিক।

• ২০১৫ - ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড,, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ হাইড্রোজোলজিস্ট।

• ২০০৪ - স্নাতক গবেষণা পুরস্কার, আমেরিকার ভূতাত্ত্বিক জরিপ,

রচিত গ্রন্থ এবং প্রকাশনা[সম্পাদনা]

গ্লোবাল গ্রাউন্ডওয়াটার

অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের বেশ কিছু প্রকাশিত গ্রন্থ প্রামাণ্যগ্রন্থ হিসাবে পরিচিত। সেগুলি বিশ্বের খ্যাতনামা প্রকাশনা গোষ্ঠীদ্বারাই প্রকাশিত হয়েছে। যেমন - এলসেভিয়ার, স্পিগ্রার নেচার, নেচার পাবলিশিং গ্রুপ, এজিইউ, জিওসায়েন্স ইত্যাদি। এই প্রকাশনা গুলি মূলত ভূগর্ভস্থ জল পদ্ধতি সম্পর্কিত। পত্র পত্রিকা গুলির মধ্যে রয়েছে- 'নেচার জিওসায়েন্স, জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারস্, জার্নাল অফ হাইড্রোলজি, জার্নাল অফ কনটামিন্যান্ট হাইড্রোলজি, ওয়াটার রিসোর্স রিসার্চ, অ্যাডভান্স ইন ওয়াটার রিসার্চ, সায়েন্স অফ টোটাল এনভায়রনমেন্ট,  অ্যাপ্লায়েড জিওকেমিস্ট্রি ইত্যাদি।

ড. মুখোপাধ্যায়ের সম্পাদিত গ্রন্থগুলির মধ্যে অন্যতম- "গ্লোবাল গ্রাউন্ডওয়াটার: সোর্স, স্কেয়ারসিটি, সাসটেনেবলিটি, সিকিউরিটি অ্যান্ড সলিউশন" এবং "গ্রাউন্ড ওয়াটার অফ সাউথ এশিয়া"। এগুলি হতে সমন্বিত ও যুগোপযোগী জ্ঞান অর্জন, জলের প্রবাহ থেকে শুরু করে দূষণ, জাতীয়স্তরে ভূগর্ভস্থ জলের ব্যবস্থাপনা, আন্তঃসীমান্ত জলজ প্রশাসন থেকে শুরু করে, বিশ্বস্তর হতে স্থানীয়স্তরের কেস স্টাডিজের পর্যালোচনা প্রদর্শিত হয়েছে। বইটিতে অধ্যয়নে মধ্যে এসেছে বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ দেশ যেমন,  ভারতযুক্তরাষ্ট্র, চিন এবং পাকিস্তান

গ্রন্থ সমূহ :

[৪] অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, বি স্ক্যানলন, এ অরেলিয়া, এস ল্যাঙ্গান, এ ম্যাককেজি, এইচ গুও ২০২০ সংস্করণ ।গ্লোবাল গ্রাউন্ডওয়াটার : সোর্স, স্কেয়ারসিটি, সাসটেনেবলিটি, সিকিউরিটি অ্যান্ড সলিউশন" এলসিভিয়ার,আইএসবিএন ৯৭৮-০১২-৮১৮-১৭২-০

https://www.elsevier.com/books/global-groundwater/mukherjee/978-0-12-818172-0

[৩] অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়(সম্পাদনা), ২০২০ : আন্ডারস্ট্যান্ডিং রিভারাইন সিস্টেমস:  আন্ডারস্ট্যান্ডিং দ্য হাইড্রোলজিক্যাল অ্যান্ড হাইড্রোসোস্যাল ডায়নামিক্স: স্প্রিঙ্গার-ক্যাপিটাল পাবলিশিং  

[২ ] অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় (সম্পাদনা .), ২০১৮. গ্রাউন্ড ওয়াটার অফ সাউথ এশিয়া স্প্রিঙ্গার,আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮১-১০-৩৮৮৮-৪, পৃষ্ঠা সংখ্যা 799।

https://www.springer.com/gp/book/9789811038884

[১] এ রামনাথন, এস জনস্টন, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, বি নাথ (সম্পাদনা) ২০১৫ সেফ অ্যান্ড সাসটেনেবলিটি ইউজ  অফ আর্সেনিক-কনটামিনেটেড একুইফার্স ইন দ্য গ্যানজেটিক  প্লেইন, স্প্রিঙ্গার,আইএসবিএন ৯৭৮-৩-৩১৯-১৬১২৩-৫

https://www.springer.com/gp/book/9783319161235

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "The KGP Chronicle" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৭ 
  2. "14 scientists from prominent research & academic institutions to receive Shanti Swarup Bhatnagar Award"The Indian Express (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৯-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৭ 
  3. PTI (২০২০-০৯-২৭)। "CSIR Announces Awardees of Shanti Swarup Bhatnagar Prize for 2020"The Wire Science (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৭ 
  4. ""১৩৩ বছরে প্রথম ভারতীয়! কালীঘাটের অভিজিৎ এখন জিওলজিক্যাল সোসাইটি অব আমেরিকার ফেলো""। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৪ 
  5. "Moment of Pride – The KGP Chronicle" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৭ 
  6. "Abhijit Mukherjee - Google Scholar"scholar.google.co.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৭ 
  7. "Dr Abhijit Mukherjee, Associate Professor, Deptt. of Geology & Geophysics, IIT Kharagpur Selected for 'Shanti Swarup Bhatnagar' Prize"pib.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৭