অত্রি কর
অত্রি কর হলেন ভারতের দ্বিতীয় রূপান্তরিত লিঙ্গের মানুষ, যিনি দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। তামিলনাড়ুর এস স্বপ্না হলেন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রথম রূপান্তরিত লিঙ্গের মানুষ।[১][২][৩]
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]অত্রি তাঁর বাবা-মা, বড় ভাই, বড় ভাইয়ের স্ত্রী এবং তাঁদের ছেলের সঙ্গে হুগলির ত্রিবেনীতে থাকেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি অনার্সে স্নাতক সম্পন্ন করেন, এরপর তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তিনি কুন্তিঘাটের একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।[৪][৫] তিনি ব্রততী বন্দীপাধ্যায় ইনস্টিটিউটের আবৃত্তির (উচ্চারণ, ব্যাকরণ এবং শৈলী মেনে সঠিক স্বরক্ষেপন করে আনুষ্ঠানিক কথা বলা) ছাত্রী এবং উপন্যাস পড়তে ভালোবাসেন।[৪][৫]
আইনি লড়াই
[সম্পাদনা]অত্রি এসএসসি টেট পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে গিয়ে দেখেছিলেন যে লিঙ্গ জানানোর ক্ষেত্রে শুধু মাত্র দুটি বিকল্প ছিল। তিনি ২০১১ সালে শিক্ষা বিভাগের কাছে প্রথমবারের মতো বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। তিনি তখন সবেমাত্র স্নাতক (বি.এড.) সম্পন্ন করে সরকারী চাকরির জন্য আবেদন করছিলেন। তিনি স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং যোগ্যতা অর্জনও করেছিলেন। সেই সময় সুপ্রিম কোর্ট থেকে তৃতীয় লিঙ্গ নিয়ে কোন আদেশ দেওয়া হয়নি (দুই বছর পর সুপ্রিম কোর্ট একটি রায় জারি করে সরকারি অফিসে তৃতীয় লিঙ্গকে অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক করে)। শিক্ষা বিভাগ তাঁকে বলেছিল যেহেতু তিনি একজন মহিলা হিসেবে পরীক্ষা দিয়েছেন, তাই তাঁকে মহিলা হিসেবেই নিয়োগ দেওয়া হবে।[১][৪]
ইতিমধ্যে, অত্রি ডব্লিউবিসিএস (পশ্চিমবঙ্গ স্টাফ সিলেকশন) পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য রাইস-এ যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে দেড় বছর প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর, ২০১৬ সালে পরীক্ষার জন্য ফর্ম পূরণ করতে গিয়ে তিনি দেখতে পান যে লিঙ্গ কলামে কেবলমাত্র দুটি বিকল্প রয়েছে, হয় পুরুষ অথবা মহিলা। হতাশ হয়ে অত্রি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। কোন সাহায্য না পেয়ে অবশেষে তিনি পিএসসির বিরুদ্ধে মামলা করেন। ট্রাইব্যুনালও এটিকে একটি অগ্রাধিকার মামলা বিবেচনা করে এবং পরের দিনই তাঁকে অনুমতি দেওয়ার জন্য শুনানি হয়। মামলা শেষে একটি নির্দেশ জারি হয় যে অনলাইন আবেদনগুলিতে তৃতীয় লিঙ্গের বিকল্প অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।[১][৪]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ "Transgender to Write UPSC Exam in Bengal for the First Time"। The Better India (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৩-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২১।
- ↑ "Atri Kar vs The Union Of India & Ors on 16 March, 2017"। indiankanoon.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২১।
- ↑ "Bengal's Atri Kar, First Transgender to take UPSC exam in 'other' category"। www.shethepeople.tv (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৩-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২১।
- ↑ ক খ গ ঘ Sharma, Umang। "Meet Atri Kar, The 27-YO Transgender Who Fought For A Third Option On Forms To Identify Her Sex"। indiatimes.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-২১।
- ↑ ক খ ScoopWhoop (২০১৭-০১-২০)। "Meet Atri Kar, The First Transgender Person In India To Appear In A Civil Service Exam"। ScoopWhoop (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২১।