অতুলচন্দ্র ঘোষ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(অতুলচন্দ্র ঘোষ(২) থেকে পুনর্নির্দেশিত)
অতুলচন্দ্র ঘোষ
জন্ম
অতুলচন্দ্র ঘোষ

২ মার্চ ১৮৮১[১]
মৃত্যু১৫ অক্টোবর,১৯৬২
জাতীয়তাভারতীয়
অন্যান্য নামমানভূম কেশরী[১]
শিক্ষাআইন
পরিচিতির কারণভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক বিপ্লবী
দাম্পত্য সঙ্গীলাবণ্যপ্রভা ঘোষ
সন্তানঅরুণ চন্দ্র ঘোষ
ঊর্মিলা মজুমদার
অমল চন্দ্র ঘোষ
পিতা-মাতাপিতা - মাখনলাল ঘোষ

অতুলচন্দ্র ঘোষ (২ মার্চ ১৮৮১ — ১৫ অক্টোবর ১৯৬২) ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক কর্মী, লোকসেবক সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলা ভাষা আন্দোলন (মানভূম) ও পুরুলিয়া জেলার বঙ্গভূক্তি আন্দোলনের মূখ্যস্থপতি।

জীবনী[সম্পাদনা]

অতুলচন্দ্র ঘোষের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষে। পিতার নাম মাখনলাল ঘোষ। তার শৈশব কাটে পিতৃব্য হিতলাল ঘোষের কাছে বর্তমান পুরুলিয়া জেলার অযোধ্যায়। পরে প্রতিপালিত হন ওখানকার এক উকিল মেসোমশাইয়ের কাছে । বর্ধমান মহারাজা স্কুল থেকে ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা ও কলজ হতে ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে এফ.এ পাশ করে কলকাতার মেট্রোপলিটন কলেজে বি.এ. ক্লাসে ভর্তি হন। ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে বি.এ.পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে পুরুলিয়ায় আইন ব্যবসা শুরু করেন। সেখানকার স্কুলের লাইব্রেরিয়ান-অ্যাকাউন্টেট অঘোরচন্দ্র রায়ের কন্যা লাবণ্য প্রভাকে বিবাহ করেন।

স্বাধীনতা আন্দোলন[সম্পাদনা]

অতুলচন্দ্র ও লাবণ্যপ্রভা স্বামী-স্ত্রী দু-জনে মহাত্মা গান্ধীনিবারণ চন্দ্র দাশগুপ্তর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে আইন ব্যবসা ছেড়ে অসহযোগ আন্দোলনের ঝাঁপিয়ে পড়েন। বিহার প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির সেক্রেটারি (১৯২১ - ১৯৩৫) ও মানভূম জেলা কংগ্রেস কমিটির সভাপতি (১৯৩৫-১৯৪৭) হিসাবে মানভূম ও নিকটবর্তী এলাকার বহু কাজ করেন। ১৯২১ সালে মানভূমে কংগ্রেস দলের প্রতিষ্ঠা হয় যেখানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন যথাক্রমে নিবারণ চন্দ্র দাশগুপ্ত এবং অতুলচন্দ্র ঘোষ। ১৯৩৫ সালের ১৭ জুলাই নিবারণবাবুর মৃত্যুর পর সভাপতি হন অতুলচন্দ্র। তিনি জেলা সত্যাগ্রহ কমিটির সেক্রেটারি হন (১৯৩০) এবং লবণ-সত্যাগ্রহে ও পরে 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলনের অংশগ্রহণ করায় এবং জাতীয় সপ্তাহ পালনকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের অপরাধে (১৯৪৫) তিনি কারারুদ্ধ হন। মানভূমের ভাষানীতির প্রশ্নে কংগ্রেস সরকারের সঙ্গে তার মতবিরোধ হওয়ায় জাতীয় কংগ্রেস ত্যাগ করে (১৯৪৭) ওই বছরই লোকসেবক সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা করে বিহার সরকারের প্রশাসনিক,অর্থনৈতিক ও শিক্ষাসংক্রান্ত নীতির বিরোধিতা করে আন্দোলন চালিয়ে যান। মানভূম কেশরী নামে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৫০ - ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অনেকবার তিনি সত্যাগ্রহ করেছেন । ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে সঙ্ঘ 'টুসু' গানের ব্যবস্থা করে। রাজ্য পুনর্গঠন কমিটির কাছে এই সঙ্ঘ স্মারকলিপি রেখেছিল (১৯৫৩-১৯৫৫)।[২] বাংলা বিহার সীমানা-সংক্রান্ত সমস্যা বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে মেটানো সম্ভব বলে তিনি বিশ্বাস করতেন। অতঃপর ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে পুরুলিয়া জেলা গঠিত হয়।[৩] সেকারণে তাঁকে বঙ্গভূক্তি আন্দোলনের স্থপতিও বলা হয়। মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে গণতন্ত্র পঞ্চায়েতরাজ প্রতিষ্ঠা, গ্রাম্যশিল্পের উন্নতি,নিরক্ষরতা দূরীকরণ প্রভৃতিতে তিনি বিশ্বাসী ছিলেন। [৪] অতুলচন্দ্র ঘোষ বাংলা সাপ্তাহিক সংবাদপত্র 'মুক্তি'র সম্পাদক ছিলেন । মৃত্যুর পর তার স্ত্রী স্বাধীনতা সংগ্রামী লাবণ্যপ্রভা ঘোষ সম্পাদনার দায়িত্ব নেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "INFORMATION & CULTURE : PURULIA,FAMOUS PERSONALITIES,ATUL CHANDRA GHOSH"। purulia.gov.in.a Govt.owned website। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১২ 
  2. "বড় ভূমিকা ছিল টুসু সত্যাগ্রহের"anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০৫ 
  3. https://www.aajkaal.in। "ভাষা আন্দোলনের সূচনা করেছিল বাংলার পুরুলিয়া"https://www.aajkaal.in/ (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০২-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০৫  |ওয়েবসাইট= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  4. {{সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান প্রথম খণ্ড পঞ্চম সংস্করণ তৃতীয় মুদ্রণ পৃষ্ঠা সংখ্যা ১২}}