অঞ্জলি ভাগবত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অঞ্জলি ভাগবত
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম নামঅঞ্জলি রমাকান্ত বেদপাঠক
জাতীয়তাভারতীয়
জন্ম (1969-12-05) ৫ ডিসেম্বর ১৯৬৯ (বয়স ৫৪)
মুম্বাই,মহারাষ্ট্র, ভারত
ক্রীড়া
দেশভারত
ক্রীড়ারাইফেল শ্যুটিং

অঞ্জলি ভাগবত (জন্ম ৫ই ডিসেম্বর, ১৯৬৯) একজন পেশাদার ভারতীয় শ্যুটার। ২০০২ সালে তিনি ১০ মিটার এয়ার রাইফেল বিভাগে বিশ্বে প্রথম স্থান দখল করেন। ২০০৩ সালে ৩৯৯ / ৪০০ স্কোর করে, তিনি মিলানের প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালও জিতেছিলেন।

অঞ্জলি আইএসএসএফ চ্যাম্পিয়ন অফ চ্যাম্পিয়ন্স পুরস্কার জিতেছেন এবং ২০০২ সালে এয়ার রাইফেল পুরুষ ও মহিলা মিশ্র বিভাগে আইএসএসএফ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অর্জনকারী একমাত্র ভারতীয়। তিনি পর পর তিনটি অলিম্পিকে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং ২০০০ সালের সিডনি অলিম্পিকে প্রথম ভারতীয় মহিলা শ্যুটার হিসেবে প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছন। তিনি কমনওয়েলথ গেমস এবং কমনওয়েলথ শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে ১২টি স্বর্ণ এবং ৪টি রৌপ্য পদক জিতেছেন। তিনি ১০ মিটার এয়ার রাইফেল এবং স্পোর্টস রাইফেলে তিন অবস্থানে (নত অবস্থান, নতজানু অবস্থান, দন্ডায়মান অবস্থান) কমনওয়েলথ রেকর্ডের অধিকারিণী। ২০০৩ আফ্রো-এশিয়ান গেমসে, ভাগবত যথাক্রমে স্পোর্টস রাইফেল তিন অবস্থানে এবং এয়ার রাইফেল ইভেন্টে স্বর্ণ ও রৌপ্য পদক জয় করে প্রথম ভারতীয় মহিলা শ্যুটার হিসেবে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন।

আজ অবধি, তিনি ৩১টি স্বর্ণ, ২৩টি রৌপ্য এবং ৭টি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছেন। তিনি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ১৩ টি নতুন রেকর্ড তৈরি করেছেন এবং ভারতে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় ৮ টি নতুন রেকর্ড সহ ৫৫টি স্বর্ণ, ৩৫টি রৌপ্য এবং ১৬টি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছেন।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

অঞ্জলি রামকান্ত বেদপাঠকের জন্ম ১৯৬৯ সালের ৫ই ডিসেম্বর মুম্বাইয়ের এক মারাঠি দেশস্থ ব্রাহ্মণ পরিবারে[১]। কিংবদন্তি অ্যাথলিট কার্ল লুইস দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ভাগবত খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী হন। শুটিংয়ের সাথে তাঁর প্রথম পরিচয় ঘটেছিল জাতীয় ক্যাডেট কর্পস (এনসিসি) -এ ক্যাডেট থাকাকালীন সময়ে। জুডো, ক্যারাটে এবং পর্বতারোহণের একজন শিক্ষার্থী, ভাগবত এনসিসির প্রতি খুব আকৃষ্ট ছিলেন। মূলত এনসিসির সাথে ঘনিষ্ঠতার কারণে তিনি মুম্বইয়ের কীর্তি কলেজে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর পাঠ্যক্রমের অংশ হিসাবে তিনি এমআরএ (মহারাষ্ট্র রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন) তে যোগদান করেন। তিনি ২১ বছর বয়সে শ্যুটিং শুরু করেছিলেন এবং বন্দুক ধরার ৭ দিনের মধ্যে, ১৯৮৮ সালের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছিলেন এবং মহারাষ্ট্রের হয়ে রৌপ্য পদক জিতেছিলেন। অঞ্জলির দুই ভাইবোন রয়েছে; একটি ছোটো ভাই এবং একটি বড়ো বোন। অঞ্জলি শ্যুটিং ছাড়াও টেনিস এবং ক্রিকেটের ব্যাপারে আগ্রহী। যোগাসন এবং ধ্যান তাঁর দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ। তাঁর মা আকাশবাণীতে (অল ইন্ডিয়া রেডিও) গান করতেন এবং অঞ্জলির দিদিও একজন গায়িকা। ২০০০ সালের ডিসেম্বরে, তিনি মুম্বাই-ভিত্তিক ব্যবসায়ী মন্দার ভাগবতকে বিয়ে করেছিলেন। ২০১০ সালে এই দম্পতির আরাধ্য নামে এক পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। ২০০৬ সালে, তিনি খেলাধূলার সুবিধার কারণে মুম্বই থেকে পুনেতে চলে আসেন। ভাগবত বর্তমানে পুণেতে শ্যুটিং প্রশিক্ষক রূপে কাজ করেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

সঞ্জয় চক্রবর্তী তাঁর প্রথম কোচ ছিলেন। অঞ্জলি তাঁর অধীনে ৫ বছর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। ১৯৮৮ সালে তিনি যখন প্রথমবারের মতো জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছিলেন তখনি তিনি পেশাদার শ্যুটারে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় তাঁর ৫৫টি স্বর্ণ, ৩৫টি রৌপ্য এবং ১৬টি ব্রোঞ্জ পদক রয়েছে। তিনি ১৯৯৫ সালে সাফ গেমসে প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৯৯ সালে অকল্যান্ডের কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক স্বর্ণজয়ী প্রদর্শন ছিল, যেখানে তিনি এয়ার রাইফেল বিভাগে এবং স্পোর্টস রাইফেল ৩ অবস্থানে ব্যক্তিগত ও দলগত বিভাগে ৩টি স্বর্ণ পদক এবং ১টি রৌপ্য পদক জিতেছিলেন । অঞ্জলি ভাগবত ২০০০-য়ের সিডনি অলিম্পিকে ওয়াইল্ড কার্ড প্রবেশ অর্জন করেছিলেন, যেখানে তিনি প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে যেতে পেরেছিলেন। ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ভাগবত কোনও প্রশিক্ষক ছাড়াই একাই অনুশীলন করতেন এবং ২০০২ সালে বিশ্ব ক্রমতালিকায় এক নম্বরে উঠে এসেছিলেন।

সম্মাননা ও স্বীকৃতি[সম্পাদনা]

  • রাজীব গান্ধী খেল এবং-রত্ন (২০০৩)[২]
  • অর্জুন পুরস্কার (২০০০)[৩]
  • ১৯৯২: শ্রী শিব ছত্রপতি পুরস্কার
  • ১৯৯৩:মহারাষ্ট্র গৌরব পুরস্কার
  • ১৯৯৩: বসন্ত নায়েক প্রতিষ্ঠান পুরস্কার
  • ২০০২:ইন্দো-আমেরিকান সোসাইটি [১] ইয়াং অ্যাচিভার অ্যাওয়ার্ড
  • ২০০৩: টাইমস গ্রুপ, মহারাষ্ট্র শান
  • ২০০৩:হিরো ভারতীয় ক্রীড়া পুরস্কার -শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদ
  • ২০০৩: হিসা বর্ষসেরা মহিলা ক্রীড়াবিদ
  • ২০০৩: বর্ষসেরা মহিলা শ্যুটার
  • ২০০৪:বর্ষসেরা মহিলা শ্যুটার
  • ২০০৫: গ্রেট পুরস্কার
  • ২০০৬: এফ আই ই ফাউন্ডেশন জাতীয় পুরস্কার

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Chitra Garg। Indian Champions: Profiles of Famous Indian Sportspersons। Rajpal & Sons2010। পৃষ্ঠা 267। 
  2. "Anjali, Beenamol to share Khel Ratna"expressindia.com। Press Trust of India। ২৩ আগস্ট ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৪ 
  3. "Anjali Bhagwat"। National Rifle Association of India। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৪