অচেতন
অচেতন | |
---|---|
একজন অচেতন পুরুষ পুনরুদ্ধার অবস্থায় শায়িত | |
বিশেষত্ব | মনোরোগ বিজ্ঞান স্নায়ুচিকিৎসাবিজ্ঞান হৃদবিজ্ঞান ফুসফুসবিজ্ঞান |
অচেতন বা অজ্ঞান হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন জীবিত ব্যক্তি নিজের এবং পরিবেশের সচেতনতা বজায় রাখতে বা কোনও মানুষ্য বা পরিবেশগত উদ্দীপকের প্রতিক্রিয়া জানাতে সম্পূর্ণ বা প্রায় সম্পূর্ণ অক্ষমতা প্রদর্শন করে।[১] মস্তিষ্কের আঘাতজনিত জখম, মস্তিষ্কে অক্সিজেন স্বল্পতা (সম্ভবত মস্তিষ্কের রক্তনালীতে বাধা বা হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া), কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকলাপ কমিয়ে দেয় এমন ওষুধের (যেমন, অ্যালকোহল এবং অন্যান্য সম্মোহক বা প্রশান্তিদায়ক ওষুধ) দ্বারা মারাত্মক বিষক্রিয়া, চরম ক্লান্তি, ব্যথা, অজ্ঞান করার ওষুধ (অ্যানেস্থেশিয়া) এবং অন্যান্য কারণে অচেতন হয়ে যেতে পারে।
চেতনা হারানোর ধারণাটিকে মনোসমীক্ষণীয় অবচেতন, যেমন সচেতনতার বাইরে সংঘটিত জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া (অপ্রকাশিত বা প্রচ্ছন্ন জ্ঞান) কিংবা সচেতনতার পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। পরিবর্তিত সচেতনতার অবস্থাগুলোর মধ্যে ঘুম, প্রলাপ, সম্মোহন এবং এমন অন্যান্য অবস্থাগুলি অন্তর্ভুক্ত, যেখানে ব্যক্তি উত্তেজনার প্রতি সাড়া দেয়। এর মধ্যে ট্রান্স এবং সাইকেডেলিক অভিজ্ঞতাও অন্তর্ভুক্ত।
কারণসমূহ
[সম্পাদনা]এটি একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা নয়।
সংবহন তন্ত্র
[সম্পাদনা]- অ্যারিথমিয়া (অনিয়মিত হৃদস্পন্দন)
- রক্তক্ষরণ
- হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া
- কার্ডিওমেগালি (হার্ট বড় হওয়া)
- হৃৎপিণ্ডের অকৃতকার্যতা (এইচএফ) (সংকুচিত হৃদপিণ্ড বিকল) (পিএইচএফ)
- হৃৎপেশীর রক্তাভাবজনিত মৃত্যু (এমআই) (হৃদরোগ)
- হৃৎপেশীপ্রদাহ
- হৃৎঝিল্লিপ্রদাহ
- অভিঘাত
স্নায়ুতন্ত্র
[সম্পাদনা]- মস্তিষ্ক ফোড়া
- মস্তিষ্কের টিউমার
- মস্তিষ্কপ্রদাহ
- অন্তঃকরোটি চাপ
- ইন্ট্রাসেরিব্রাল রক্তক্ষরণ (রক্তক্ষরণজনিত স্ট্রোক)
- ইস্কেমিক স্ট্রোক
- মেনিনজাইটিস
- মৃগী
- সাবঅ্যারাকনয়েড রক্তক্ষরণ
- মস্তিষ্কের আঘাতজনিত জখম (টিবিআই) (মস্তিষ্কে অভ্যন্তরীণ আঘাত)
শ্বসনতন্ত্র
[সম্পাদনা]- তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক রোগলক্ষণসমষ্টি (এআরডিএস)
- শ্বাসরোধ
- ডুবে যাওয়া
- ফুসফুসের ক্যান্সার (ফুসফুস কার্সিনোমা)
- নিউমোনিয়া
- ফুসফুসে রক্ত জমাট (পিই)
- শ্বসনতন্ত্রের ব্যর্থতা
- শ্বসনতন্ত্রের অকার্যকারিতা
অন্যান্য
[সম্পাদনা]আইন ও চিকিৎসাবিজ্ঞান
[সম্পাদনা]
আইন অনুযায়ী, অচেতন অবস্থা ফৌজদারি আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোনো ব্যক্তি যদি অপরাধ করার সময় অচেতন থাকেন অর্থাৎ কাজের উপর তার নিয়ন্ত্রণ না থাকে, তাহলে তিনি "স্বয়ংক্রিয়তা" নামক আইনি যুক্তির আশ্রয় নিতে পারেন। স্বয়ংক্রিয়তা হলো এমন এক অবস্থা যেখানে শরীর কাজ করে কিন্তু মন বা মস্তিষ্ক যুক্ত থাকে না। ফৌজদারি আইনে, কোনো ব্যক্তিকে তখনই দোষী সাব্যস্ত করা যায় যখন তিনি স্বেচ্ছায় এবং সজ্ঞানে কোনো অপরাধ করেন। অচেতন অবস্থায় কৃত কোনো কাজের জন্য কোনো ব্যক্তি দায়ী নন। প্রায় সকল দেশেই, আদালতকে বিচার করতে হয় যে কোনো অবস্থায় বেহুঁশ থাকাকে একটি বৈধ কারণ হিসেবে বিবেচনা করা যায় কিনা; যা প্রতিটি মামলার ক্ষেত্রে বিভিন্ন হতে পারে। তাই, মৃগীরোগের খিঁচুনি, স্নায়বিক বৈকল্য এবং ঘুমের মধ্যে হাঁটা—গ্রহণযোগ্য অজুহাত হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে, কারণ এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ হারানো অপ্রত্যাশিত। কিন্তু ঘুমিয়ে পড়া (বিশেষত গাড়ি চালানোর সময় বা অন্য কোনো ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সময়) গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে, কারণ স্বাভাবিক ঘুম সাধারণত কাউকে পূর্বসতর্কতা ছাড়াই অপ্রত্যাশিতভাবে গ্রাস করে না।
অনেক দেশে, এটা ধরে নেওয়া হয় যে একজন ব্যক্তি যিনি সম্পূর্ণরূপে সচেতন নন তিনি কোনো কিছুর জন্য সম্মতি দিতে পারেন না। এটি যৌন নিপীড়ন, ইচ্ছামৃত্যু অথবা রোগীদের চিকিৎসা শুরু বা বন্ধ করার ক্ষেত্রে তাদের জ্ঞাত সম্মতি প্রদানের ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "MeSH Browser"। www.nlm.nih.gov। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১৮।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]