বানৌজা বঙ্গবন্ধু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বানৌজা বঙ্গবন্ধু (এফ২৫) কোঅপারেশন অ্যাফ্লোট রেডিনেস অ্যান্ড ট্রেনিং (ক্যারাট) ২০১২-এর সময়
ইতিহাস
বাংলাদেশ
নাম: বানৌজা বঙ্গবন্ধু
নির্মাণাদেশ: ১৯৯৮
নির্মাতা: দেইয়ু শিপবিল্ডিং এন্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র
নির্মাণের সময়: ১১ মার্চ, ১৯৯৮
অভিষেক: ২৯ অগাস্ট, ২০০০
কমিশন লাভ: ২০ জুন, ২০০১
কার্যসময়: ২০০১-বর্তমান
মাতৃ বন্দর: চট্টগ্রাম
অবস্থা: সক্রিয়
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: ডিডব্লিউ ২০০০এইচ শ্রেণীর ফ্রিগেট
ওজন: ২,৩৫০ টন
দৈর্ঘ্য: ১০৩.৭ মিটার (৩৪০ ফু)
প্রস্থ: ১২.৫ মিটার (৪১ ফু)
গভীরতা: ৩.৮ মিটার (১২ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • সিওডিএডি: ৪ এসইএমটি-পিয়েলস্টিক ১২ ভোল্ট পিএ৬ভি২৮০ এসটিসি ২২,৫০১ অশ্বশক্তি (১৬,৭৭৯ কিওয়াট) ডিজেল ইঞ্জিন;
  • ২ x শ্যাফট
গতিবেগ: ২৬ নট (৪৮ কিমি/ঘ; ৩০ মা/ঘ)
সীমা: ৪,০০০ নটিক্যাল মাইল (৪,৬০০ মা; ৭,৪০০ কিমি)
লোকবল: ১৮৬ জন (১৬ জন কর্মকর্তা)
যান্ত্রিক যুদ্ধাস্ত্র
ও ফাঁদ:
  • ডিএ০৮ (এসপিও-৫০১/আরএডব্লিউএস০৩) ই/এফ ব্যান্ড (এস-ব্যান্ড) এয়ার সার্চ র‍্যাডার;
  • কেলভিন হিউগস ১০০৭আই-ব্যান্ড নেভিগেশন র‍্যাডার;
  • লিরড এমকে 2 কে-ব্যান্ড টিডব্লিউটি ফায়ার কন্ট্রোল র‍্যাডার;
  • ভ্যারিয়েন্ট সার্ফেস সার্চ র‍্যাডার;
  • মিরাডোর অপটিক্যাল সার্ভেল্যান্স এবং ট্র্যাকিং সিস্টেম;
  • টাইপ ৩৪৫ ফায়ার কন্ট্রোল র‍্যাডার (এফএম-৯০ ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য);
  • এএসও৯০/ডিএসইকিউএস-২১ মোড সোনার;
  • লিঙ্ক ওয়াই এমকে-২ কমিউনিকেশন;
  • ইএসএম:রেকাল কাটলাস ২৪২ ইন্টারসেপ্টর;
  • ইসিএম:রেকাল স্কোরপিয়ান ২ জ্যামার;
  • ডিকয়: ২ x ১৫-টিউব এসএলকিউ-২৬১ টর্পেডো অ্যাকোস্টিক কাউন্টারমেজার
রণসজ্জা:
  • ২ x ৪ অটোম্যাট এম কে. ২ ব্লক ৪ জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
  • ১ x ৮ এফএম-৯০এন বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
  • ১ x অটোব্রেডা ৭৬ মিলিমিটার/৬২ সুপার র‍্যাপিড;
  • ৪ x অটোব্রেডা ৪০ মিলিমিটার/৭০ (২ জোড়া) কম্প্যাক্ট সিআইডব্লিউএস;
  • ২ x ৩ ৩২৪ মিলিমিটার বি-৫১৫ টিউবস - হোয়াইহেড এ২৪৪এস টর্পেডো;
  • ২ x সুপার ব্যারিকেড শ্যাফ উৎক্ষেপক
বিমান বহন: ১ x হ্যাঙ্গার, ১ x অগাস্টা-ওয়েস্টল্যান্ড এডব্লিউ১০৯ পাওয়ার হেলিকপ্টার

বানৌজা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সর্বাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ফ্রিগেট। এটি বর্তমানে নৌবাহিনীর প্রধান জাহাজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। জাহাজটি গভীর সমুদ্রে টহল প্রদান, চোরাচালান বিরোধী অভিযান, দূর্ঘটনা পরবর্তী উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনা, পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধসহ সার্বিক কর্মক্ষম সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অংশগ্রহণ করে। পাশাপাশি সুনীল অর্থনীতি বাস্তবায়নে সমুদ্রের মূল্যবান সম্পদ রক্ষা এবং দেশের অর্থনৈতিক কল্যাণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

বানৌজা বঙ্গবন্ধুর জাহাজটির নামকরণ করা হয় বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে, যার উপাধি বঙ্গবন্ধু। এটি যুদ্ধে ও শান্তিকালীন সময়ে সমভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম। ১৯৯৮ সালের ১১ মার্চ কোরিয়া প্রজান্তন্ত্রের দেইয়ু শিপবিল্ডিং এন্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এ জাহাজটির নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ২৯ অগাস্ট ২০০০-এ নির্মাণকাজ শেষ হয়। ২০০১ সালের ২০ জুন বানৌজা বঙ্গবন্ধু কে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশনিং করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে এটিকে বানৌজা খালিদ বিন ওয়ালিদ হিসবে পুনরায় কমিশনিং করা হয়। ২০০৯ সালে এটিকে আবারও বানৌজা বঙ্গবন্ধু নামকরণ করা হয়।

বানৌজা বঙ্গবন্ধু ২০১১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর সাথে দ্বিপক্ষীয় মহড়া ক্যারাট-এ অংশগ্রহণ করে। ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে জাহাজটি কাতারের দোহায় এক্সারসাইজ ফেরোশাস ফ্যালকন-এ অংশগ্রহণ করে।[১] ২৯ অগাস্ট ২০১৩ বানৌজা বঙ্গবন্ধু কে জাতীয় পতাকা প্রদান করা হয়।[২] ২০১৪ সালে মালেশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৩৭০ নিখোঁজের পর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অনুসন্ধানকার্যে জাহাজটি অংশ নেয়।[৩][৪]

ক্যারাট-২০১২ তে বানৌজা বঙ্গবন্ধু

রণসজ্জা[সম্পাদনা]

এই যুদ্ধজাহাজটি তার শ্রেণির সর্বাধুনিক ফ্রিগ্রেট। এটি অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র দ্বারা সজ্জিত। এই জাহজের অটোম্যাট এমকে ২ ব্লক ৪ একটি অত্যাধুনিক জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র যা ১৮০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উৎক্ষেপণের পর মাঝপথে গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে ফলে আক্রমণেরর জন্য যুদ্ধ জাহাজকে অবস্থান পরিবর্তন করতে হয় না। বিমানবিধ্বংসী অস্ত্র হিসেবে এতে রয়েছে ৮টি এফএম-৯০ ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, যা ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটি নৌ-কামান ও টর্পেডো বহন করে।

বানৌজা বঙ্গবন্ধুতে ১টি হ্যাঙ্গার আছে যা অগাস্টা-ওয়েস্টল্যান্ড এডব্লিউ১০৯ পাওয়ার হেলিকপ্টার বহন করে থাকে।

অভিযান[সম্পাদনা]

এই যুদ্ধজাহজের প্রাথমিক ও মূল দায়িত্ব হচ্ছে দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা তত্ত্বাবধায়ন ও নিরাপত্তা দেয়া। এছাড়াও জাহাজটি বাংলাদেশের নৌ সীমান্তে নৌ-সন্ত্রাস, প্রাকৃতিক দূষণচোরাচালান রোধেও কাজ করে থাকে। প্রয়োজনে এটি অনুসন্ধান এবং উদ্ধার কাজের দায়িত্ব পালনেও সক্ষম।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. http://www.kalerkantho.com/print_edition/index.php?view=details&archiev=yes&arch_date=30-10-2012&type=gold&data=news&pub_no=1046&cat_id=1&menu_id=43&news_type_id=1&index=43#.VJlu5RsFM[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  3. "Bangladesh begins Malaysian plane search"ঢাকা ট্রিবিউন। ১৫ মার্চ ২০১৪। ১৫ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৪ 
  4. "বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ বিমানটির সন্ধান মেলেনি"দৈনিক জনকণ্ঠ। ২০ মার্চ ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]