রামেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রামেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়
রামেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়
জন্ম(১৯২৫-০২-০৮)৮ ফেব্রুয়ারি ১৯২৫
মৃত্যু২১ নভেম্বর ১৯৪৫(1945-11-21) (বয়স ২০)
জাতীয়তাভারতীয়
পরিচিতির কারণভারতীয় বিপ্লবী

রামেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায় (৮ ফেব্রুয়ারি ১৯২৫ - ২১ নভেম্বর ১৯৪৫) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী। তিনি ১৯৪২ সালে ভারত ছাড় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।[১]

২২ নভেম্বর ১৯৪৫ স্থানীয় খবরকাগজে ছাপা ছাত্র শহীদ রামেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি।

১৯৪৫ সালের নভেম্বর মাসে, ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিচার শুরু হয়। এতে সারা ভারত জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। কলকাতায়, ছাত্ররা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়। ২১ নভেম্বর, ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে উদ্বুদ্ধ ছাত্রসমাজ আজাদ হিন্দ ফৌজের মুক্তির দাবিতে কলকাতায় শোভাযাত্রা বের করলে, তাতে অংশগ্রহণ করেন রামেশ্বর। সন্ধ্যা ৬টায় গুলি চালায় পুলিশ। কলকাতার ধর্মতলা ষ্ট্রীটে রক্তাক্ত দেহে লুটিয়ে পড়ে ছাত্র রামেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ও মজদুর নওজোয়ান আবদুস সালাম।[২] আহত হন ৫২ জন।[৩]

তার মৃত্যুর পর কলকাতার রাস্তায় বিশাল মিছিলের আয়োজন করা হয়। ২২ নভেম্বর কলকাতায় দুই মাইল দীর্ঘ একটি মিছিলের আয়োজন করা হয়। এতে কমপক্ষে ২,৫০০০ জন ছাত্র অংশ নেয় এবং সমগ্র শহর হরতাল দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়।[৪] "দিল্লি চলো" ও "লাল কিল্লা তোর দো" স্লোগানের সাথে ধ্বনিত হয় "রামেশ্বর ব্যানার্জী জিন্দাবাদ"।[৫] প্রাথমিকভাবে ডালহৌসি চত্বর দিয়ে মিছিল করতে না দেওয়া হলেও, মিছিলকারীরা সেখান দিয়ে প্যারেড করতে সক্ষম হয়। ঔপনিবেশিক সরকারের পুলিশ, বেশ কয়েকবার নিরস্ত্র যুবকদের উপর গুলি ছালায়। এতে ১৩ জন ছাত্র নিহত এবং অন্তত ১২৫ জন আহত হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন শিক্ষাবিদ জ্যোতির্ময় গঙ্গোপাধ্যায়। ২১ থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশের নৃশংসতায় কমপক্ষে ৫০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয় এবং ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়।

রামেশ্বরকে স্মরণ করে কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী লিখেছিলেন:[৩][৬]

মৃত্যুকে তুমি উপহাস করে

করেছো জয়

রক্তস্নানের মধ্যে হয়েছে অরুণোদয়,

প্রাণ সমুদ্রে এনেছো বন্যা কি দুর্জয়।

জন্ম[সম্পাদনা]

রামেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ঢাকার বাঘড়াতে। তার পিতার নাম শৈলেন্দ্রমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৬৭১, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গন, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪, পৃষ্ঠা ১৯৪।
  3. অমলেশ ত্রিপাঠী (১৯৯০)। স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস, ১৮৮৫-১৯৪৭। আনন্দ পাবলিশার্স। আইএসবিএন 978-81-7066-237-2 
  4. সরকার, তানিকা; বন্দ্যোপাধ্যায়, শেখর (২০১৭-০৭-১৪)। Calcutta: The Stormy Decades (ইংরেজি ভাষায়)। রুটলেজ। আইএসবিএন 978-1-351-58171-4 
  5. মুখার্জী, বিথিকা (২০০২)। My Days with Sri Ma Anandamayi (ইংরেজি ভাষায়)। ইন্ডিকা বুকস। আইএসবিএন 978-81-86569-27-6 
  6. রায়, প্রকাশ (২০২১)। বিস্মৃত বিপ্লবী দ্বিতীয় খণ্ডচেন্নাই: নোশনপ্রেস চেন্নাই তামিলনাড়ু। পৃষ্ঠা ১২–১৫। আইএসবিএন 978-1-63832-700-4