পারমাণবিক শক্তিধর দেশের তালিকা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
একটি পারমাণবিক শক্তি স্থাপনা, ক্যাটেনম, ফ্রান্স। ফ্রান্স তার বিদ্যুতের ৮০% পারমাণবিক শক্তি থেকে উৎপাদন করে।[১]

পারমাণবিক শক্তি পরমাণুর তেজস্ক্রিয়তা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনের একটি প্রক্রিয়া। যখন কোন তেজস্ক্রিয় পদার্থ যেমন ইউরেনিয়াম-২৩৫ (ইউরেনিয়ামের একটি আইসোটোপ) কে নিউট্রন দ্বারা আঘাত করা হয় তখন তেজস্ক্রিয় পদার্থে পারমাণবিক শৃংখল বিক্রিয়া (nuclear chain reaction) শুরু হয়। এই প্রক্রিয়াকে বলে পারমাণবিক বিযোজন (Nuclear fission)। শৃংখল বিক্রিয়ার ফলে প্রচুর তাপ নির্গত হয়, যা পানিকে ফুটিয়ে বাস্প উৎপন্ন করে। উদ্ভূত বাস্প বাস্পীয় টারবাইন চালাতে ব্যবহৃত হয়।

যদিও পারমাণবিক শক্তি অনেক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করে, কিন্ত বর্জ্য ও পারমাণবিক ঝুঁকির কারণে প্রায়শই এই শক্তি বিতর্কিত থেকেছে। ফলত বিভিন্ন দেশ পারমাণবিক শক্তি নিয়ে বিভিন্ন মত পোষন করে; কিছু দেশ যেমন ফ্রান্স তাদের শক্তির ৮০% পারমাণবিক চুল্লি থেকে সংগ্রহ করে, আবার কিছু দেশ যেমন ইতালি তাদের সকল পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্র নিস্ক্রিয় করছে বা করার পদক্ষেপ নিয়েছে।

নিম্নে উল্লিখিত দেশ ছাড়াও কিছু দেশ, যেমন অস্ট্রেলিয়া, এর গবেষণার জন্য পারমাণবিক চুল্লী রয়েছে, কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের কোন পরিকল্পনা নেই; কেবলমাত্র বাণিজ্যিক চুল্লীর তালিকা যা ইন্টারন্যাশনাল এটমিক এনার্জি এজেন্সি (International Atomic Energy Agency) তে তালিকাভুক্ত আছে তা নিম্নে দেয়ে হয়েছে। তালিকাটি প্রথমত চুল্লীর সংখ্যা, দ্বিতীয়ত মেগাওয়াট শক্তির পরিমাণ অনুসারে সাজানো হয়েছে। তীর্যক লেখাগুলো তুলনা করার জন্য যোগ করা হয়েছে।

পৃথিবী জুড়ে পারমাণবিক শক্তির বর্তমান অবস্থা। গাঢ় সবুজ চিহ্নিত দেশগুলোর চুল্লী আছে ও আরো নতুন চুল্লী তৈরি করছে। হালকা সবুজ দেশগুলো তাদের প্রথম চুল্লী বানাচ্ছে। গাঢ় হলুদ চিহ্নিত দেশগুলো নতুন চুল্লী বানানোর কথা চিন্তা করছে, হালকা হলুদ চিহ্নিত দেশগুলো তাদের প্রথম চুল্লীর কথা চিন্তাভাবনা করছে। নীল চিহ্নিত দেশগুলোর চুল্লী আছে কিন্তু তারা নতুন চুল্লী বানাচ্ছে না অথবা চুল্লী নিস্ক্রিয় করছে। হালকা নীল চিহ্নিত দেশগুলো চুল্লী নিস্ক্রিয় করার কথা চিন্তা করছে। লাল চিহ্নিত দেশগুলো তাদের সকল চুল্লী নিস্ক্রিয় করেছে

তালিকা[সম্পাদনা]

দেশ চুল্লীর সংখ্যা [২] উৎপাদিত শক্তি
মেগাওয়াট [১]
পারমাণবিক কর্মকান্ডের অবস্থা [১] তৈরি করছে পরিকল্পনা করেছে প্রস্তাব করেছে
বিশ্ব ৪৪২ ৩৭১১৫২২ ২৭ ৩৮ ১১৫
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ১৪৭ ১৩০,২৬৭
যুক্তরাষ্ট্র ১০৩ ৯৮,১৪৫ ১৩
ফ্রান্স ৫৯ ৬৩,৩৬৩
জাপান ৫৫ ৪৭,৫৯৩
চীন ১০ ৪৫,৫১৮ ১৯
রাশিয়া ৩১ ২১,৭৪৩
যুক্তরাজ্য ২৩ ১১,৮৫২ স্থির (Stable)
দক্ষিণ কোরিয়া ২০ ১৬,৮১০
কানাডা ১৮ ১২,৫৯৯
জার্মানি ১৭ ২০,৩৩৯ চিন্তাভাবনা করছে
ইউক্রেন ১৫ ১৩,১০৭
সুইডেন ১০ ৮,৯১০ চিন্তাভাবনা করছে
ভারত ২২ ৭,৩৮০ ২৪
স্পেন ৭,১২১ স্থায়ী [৩]
বেলজিয়াম ৫,৮২৪ বাদ দেয়ার চিন্তা করছে
তাইওয়ান (চীন) ৪,৮৮৪
চেক প্রজাতন্ত্র ৩,৩৬৮
স্লোভাকিয়া ২,৪৪২
সুইজারল্যান্ড ৩,২২০ স্থির
বুলগেরিয়া ২,৭২২
ফিনল্যান্ড ২,৬৭৬
হাঙ্গেরী ১,৭৫৫ স্থির
ব্রাজিল ১,৯০১
দক্ষিণ আফ্রিকা ১,৮৪২ ২৪
মেক্সিকো ১,৩১০
আর্জেন্টিনা ৯৩৫
পাকিস্তান ৪২৫
লিথুয়ানিয়া ১,১৮৫ [a]
স্লোভেনিয়া ৬৫৬ স্থির
রোমানিয়া ৬৫৫
নেদারল্যান্ড ৪৪৯ স্থির
আর্মেনিয়া ৩৭৬
ইরান
উত্তর কোরিয়া [b]
বাংলাদেশ
তুরস্ক
ইন্দোনেশিয়া
ভিয়েতনাম
মিশর
ইসরায়েল
পোল্যান্ড 1[৪]

টীকা[সম্পাদনা]

  1. a One of the conditions of Lithuania's entry into the European Union was that the Ignalina Nuclear Power Plant, Lithuania's only nuclear plant, be closed on safety grounds. As a result, Lithuania has proposed a replacement to be built on the same site.[৫]
  2. b North Korea has four incomplete reactors, but work on these was suspended under the U.S.-North Korea Agreed Framework. However, work resumed on the Yongbyon Nuclear Scientific Research Center on 12 December 2002, despite South Korean, Japanese and American claims that the plant would also be used to build nuclear weapons.[৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]