আতিক মসজিদ, আওজিলা

স্থানাঙ্ক: ২৯°০৭′৩৯″ উত্তর ২১°১৭′২৮″ পূর্ব / ২৯.১২৭৪৬৪° উত্তর ২১.২৯১০১৬° পূর্ব / 29.127464; 21.291016
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আতিক মসজিদ, আওজিলা
عتیق مسجد
মসজিদের বাইরের অংশ গ. ১৯৮৪
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিইসলাম
শাখা/ঐতিহ্যসুন্নি ইসলাম
অবস্থান
অবস্থানআওজিলা, লিবিয়া
আতিক মসজিদ, আওজিলা লিবিয়া-এ অবস্থিত
আতিক মসজিদ, আওজিলা
লিবিয়ায় অবস্থান
স্থানাঙ্ক২৯°০৭′৩৯″ উত্তর ২১°১৭′২৮″ পূর্ব / ২৯.১২৭৪৬৪° উত্তর ২১.২৯১০১৬° পূর্ব / 29.127464; 21.291016
স্থাপত্য
ধরনমসজিদ
প্রতিষ্ঠার তারিখ১২শ শতাব্দী
উপাদানসমূহমাটির ইট
চুনাপাথর

আতিক মসজিদ [ক] (এছাড়াও মহান মসজিদ বা আল-কবির মসজিদও বলা হয়) (আরবি: عتیق مسجد) হলো পূর্ব লিবিয়ার সাইরেনাইকা অঞ্চলের সাহারা মরুভূমির আওজিলার মরুদ্যান গ্রামের একটি মসজিদ। সম্প্রদায়টি ধ্রুপদী সভ্যতা থেকে এখানে এসেছে। সপ্তম শতাব্দীতে আরবে আসার পর থেকে আওজিলার জীবনে ইসলাম সর্বদা একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে আসে। এই মসজিদটি ১২শ শতাব্দীতে নির্মাণ করা হয়। এতে এই অঞ্চলের প্রাচীনতম মাটির ইট এবং চুনাপাথর দিয়ে তৈরি অস্বাভাবিক শঙ্কুযুক্ত গম্বুজ রয়েছে যা আলো এবং বায়ুচলাচল সরবরাহ করে।

অবস্থান[সম্পাদনা]

এই মসজিদটি আওজিলা শহরের মরু রাস্তা থেকে ২৫০ কিলোমিটার (১৬০ মাইল) উত্তর-পশ্চিমের আজদাবিয়া এবং ৬২৫ কিলোমিটার (৩৮৮ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বের কুফরা শহরের মধ্যে অবস্থিত। বর্তমানে, জালুর সংযুক্ত মরূদ্যান থেকে আওজিলা শহর বিচ্ছিন্ন।[১] মরুদ্যানটি উচ্চ মানের খেজুর উত্পাদন করে।[২] মরুদ্যানের লোকেরা প্রধানত "বার্বার" এবং কেউ কেউ এখনও বার্বার-মূল ভাষায় কথা বলে। ২০০৫ সাল পর্যন্ত আওজিলা ভাষা অত্যন্ত বিপন্ন অবস্থায় ছিল।[৩] মসজিদটি আওজিলার পুরাতন শহর এলাকায় অবস্থিত।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

মুহাম্মদের ৬৩২ সালে মৃত্যুর পরপরই আরবরা "বাইজেন্টাইন" সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে এবং খুব দ্রুত সিরিয়া, পারস্য এবং মিশর জয় করে। তারা ৬৪৩ সালে আলেকজান্দ্রিয়া দখল করার পর আফ্রিকার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূল বরাবর ভেসে যায় এবং পর্যায়ক্রমে ৬৪৪ সালে সাইরেনাইকা, ৬৪৬ সালে ত্রিপোলি এবং ৬৬৩ সালে ফেজান দখল করে।[৪] "সিদি 'আব্দুল্লাহ ইবনে সা'দ ইবনে আবি আস-সারহ" আওজিলার আশেপাশের অঞ্চলসমূহ জয় করেন।[২] আওজিলায় ৬৫০ সালের দিকে তাঁর সমাধি স্থাপন করা হয়।[৫][খ]

আতিক মসজিদের ছাদ

সপ্তম শতাব্দীতে প্রবর্তিত হওয়ার পর, মরুদ্যানের লোকদের জীবনে ইসলাম সর্বদা একটি বড় প্রভাব ফেলে। আরব ইতিহাসবিদ আল-বাকরি বলেন, ১১ শতকের মধ্যে মরুদ্যানের চারপাশে বেশ কয়েকটি মসজিদ ছিল। একসময়কার ঘুমন্ত গ্রামটিতে ১৯৬০-এর দশক থেকে তেল শিল্প বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।[৬] ১৯৬৮ সাল নাগাদ, গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় ২০০০ জনে উন্নীত হয় এবং ১৯৮২ সাল নাগাদ, তা প্রায় ৪০০০-এর উপরে বেড়েছিল--যা বারোটি মসজিদ দ্বারা সমর্থিত।[৭]

কাঠামো[সম্পাদনা]

আতিকের গ্রেট মসজিদটি এই অঞ্চলের প্রাচীনতম মসজিদ।[৮] বর্তমান ভবনটি ১২ শতকে নির্মিত হয়। এটি ১৯৮০ এর দশকে পুনরুদ্ধার করা হয়।[১] মরুদ্যানটি ২০০৬ সালের ২৯ মার্চ সূর্যগ্রহণ দেখার জন্য গন্তব্য হিসেবে ব্যবহার করা হতো। দর্শনার্থীদের জন্য প্রস্তুতির জন্য মসজিদটি পুনরায় সংস্কার করা হয়।

মসজিদের বেষ্টনীর প্রধান প্রবেশপথের দুই পাশে একটি করে তালগাছের চৌকি রয়েছে।[৯] অস্বাভাবিক মাটির তৈরি ইটের ভবনটি ৪০০ বর্গমিটার (৪,৩০০ বর্গফু্ট) এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এছাড়া, মাটির ইট ও চুনাপাথর দিয়ে তৈরি ২১টি শঙ্কুযুক্ত গম্বুজ দ্বারা ছাদযুক্ত করে নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি গম্বুজে ছোট দরজা আছে যাতে দালানে আলো প্রবেশ করতে পারে।[১] গম্বুজগুলো মসজিদের অভ্যন্তরকে শীতল রাখে, যা একধরনের প্রাকৃতিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে।

দেয়ালগুলো ৪০ সেন্টিমিটার (১৬ ইঞ্চি) পুরু। এতে নয়টি দরজা আছে, যেগুলো দিয়ে ভবনের অভ্যন্তরে যাওয়া যায়। মসজিদে অনেকগুলো স্তম্ভ এবং খিলান ব্যবহার করার কারনে এটি অনেক প্রশস্ত হয়েছে এবং এগুলো মসজিদে হালকা, শীতল ও শান্ত পরিবেশ তৈরি করে।[১] মিহরাবের পাশে মিম্বারের জন্য একটি বিচ্ছিন্ন কুলুঙ্গি রয়েছে, যেখানে ইমাম দাঁড়িয়ে থাকেন। আরব এবং পূর্ব আফ্রিকার মসজিদগুলোতে একই রকম মিম্বার কুলুঙ্গি রয়েছে। যা ইঙ্গিত করে যে, মসজিদ নির্মাতারা ইসলামের ইবাদি স্কুল অনুসরণ করেন।[১০]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসুত্র[সম্পাদনা]

টীকা
  1. "আতিক মসজিদ" অর্থ "পুরনো মসজিদ"।
  2. আবদুল্লাহ ইবনে সাদে'র মূল সমাধিতে একটি আধুনিক কাঠামো পুনঃস্থাপন করা হয়।[১]
উদ্ধৃতি
  1. Ham 2007, পৃ. 132।
  2. Awjila: Libyan Tourism
  3. Batibo 2005, পৃ. 77।
  4. Falola, Morgan এবং Oyeniyi 2012, পৃ. 14।
  5. Mason 1974, পৃ. 396।
  6. Mason 1982, পৃ. 323।
  7. Mason 1982, পৃ. 322।
  8. Awjila: MVM Travel
  9. Atiq Mosque: Atlas Obscura
  10. Petersen 2002, পৃ. 166।
উৎস