উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ
নুয়ুংমা
ত্রিপুরার রাজকীয় প্রাসাদের অভিমুখ
মানচিত্র
স্থাপিত১৯০১ (1901)
অবস্থানআগরতলা, ত্রিপুরা, ভারত
ধরনরাজ্য জাদুঘর
স্থপতিস্যার আলেক্সান্ডার মার্টিন (মার্টিন অ্যান্ড বার্ন কোং)
তিপ্রা রাজ্য
ত্রিপুরার ইতিহাসের অংশ
মহা মাণিক্যআনু. ১৪০০–১৪৩১
প্রথম ধর্ম মাণিক্য১৪৩১–১৪৬২
প্রথম রত্ন মাণিক্য১৪৬২–১৪৮৭
প্রতাপ মাণিক্য১৪৮৭
প্রথম বিজয় মাণিক্য১৪৮৮
মুকুট মাণিক্য১৪৮৯
ধন্য মাণিক্য১৪৯০–১৫১৫
ধ্ব্জ মাণিক্য১৫১৫–১৫২০
দেব মাণিক্য১৫২০–১৫৩০
প্রথম ইন্দ্র মাণিক্য১৫৩০–১৫৩২
দ্বিতীয় বিজয় মাণিক্য১৫৩২–১৫৬৩
অনন্ত মাণিক্য১৫৬৩–১৫৬৭
প্রথম উদয় মাণিক্য১৫৬৭–১৫৭৩
প্রথম জয় মাণিক্য১৫৭৩–১৫৭৭
অমর মাণিক্য১৫৭৭–১৫৮৫
প্রথম রাজধর মাণিক্য১৫৮৬–১৬০০
ঈশ্বর মাণিক্য১৬০০
যশোধর মাণিক্য১৬০০–১৬২৩
অন্তর্বতীকাল১৬২৩–১৬২৬
কল্যাণ মাণিক্য১৬২৬–১৬৬০
গোবিন্দ মাণিক্য১৬৬০–১৬৬১
ছত্র মাণিক্য১৬৬১–১৬৬৭
গোবিন্দ মাণিক্য১৬৬১–১৬৭৩
রাম মাণিক্য১৬৭৩–১৬৮৫
দ্বিতীয় রত্ন মাণিক্য১৬৮৫–১৬৯৩
নরেন্দ্র মাণিক্য১৬৯৩–১৬৯৫
দ্বিতীয় রত্ন মাণিক্য১৬৯৫–১৭১২
মহেন্দ্র মাণিক্য১৭১২–১৭১৪
দ্বিতীয় ধর্ম মাণিক্য১৭১৪–১৭২৫
জগৎ মাণিক্য১৭২৫–১৭২৯
দ্বিতীয় ধর্ম মাণিক্য১৭২৯
মুকুন্দ মাণিক্য১৭২৯–১৭৩৯
দ্বিতীয় জয় মাণিক্যআনু. ১৭৩৯–১৭৪৪
দ্বিতীয় ইন্দ্র মাণিক্যআনু. ১৭৪৪–১৭৪৬
দ্বিতীয় উদয় মাণিক্যআনু. ১৭৪৪
দ্বিতীয় জয় মাণিক্য১৭৪৬
তৃতীয় বিজয় মাণিক্য১৭৪৬–১৭৪৮
লক্ষ্মণ মাণিক্য১৭৪০/১৭৫০-এর দশক
অন্তর্বর্তীকাল১৭৫০-এর দশক–১৭৬০
কৃষ্ণ মাণিক্য১৭৬০–১৭৮৩
দ্বিতীয় রাজধর মাণিক্য১৭৮৫–১৮০৬
রাম গঙ্গা মাণিক্য১৮০৬–১৮০৯
দুর্গা মাণিক্য১৮০৯–১৮১৩
রাম গঙ্গা মাণিক্য১৮১৩–১৮২৬
কাশী চন্দ্র মাণিক্য১৮২৬–১৮২৯
কৃষ্ণ কিশোর মাণিক্য১৮২৯–১৮৪৯
ঈশান চন্দ্র মাণিক্য১৮৪৯–১৮৬২
বীর চন্দ্র মাণিক্য১৮৬২–১৮৯৬
বীরেন্দ্র কিশোর মাণিক্য১৯০৯–১৯২৩
বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্য১৯২৩–১৯৪৭
কিরিত বিক্রম কিশোর মাণিক্য১৯৪৭–১৯৪৯
১৯৪৯–১৯৭৮ (নামমাত্র)
কিরিত প্রদ্যুৎ মাণিক্য১৯৭৮–বর্তমান (নামমাত্র)
ত্রিপুরা রাজতন্ত্রের তথ্য
মাণিক্য রাজবংশ (রাজকীয় পরিবার)
আগরতলা (রাজ্যের রাজধানী)
উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ (রাজকীয় বাসভবন)
নীরমহল (রাজকীয় বাসভবন)
রাজমালা (রাজকীয় কালপঞ্জি)
ত্রিপুরা বুরঞ্জী (কালপঞ্জি)
চতুর্দশ দেবতা (পারিবারিক দেবতা)

উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ (ত্রিপুরী: নুয়ুংমা) হল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত একটি জাদুঘর ও ত্রিপুরা রাজ্যের প্রাক্তন প্রাসাদ। প্রাসাদটি ১৮৯৯ থেকে ১৯০১ সালের মধ্যে মহারাজা রাধা কিশোর মাণিক্য দেব বর্মন দ্বারা নির্মিত হয়েছিল এবং এটি ইউরোপীয় শৈলী দ্বারা অনুপ্রাণিত বাগান দ্বারা বেষ্টিত দুটি হ্রদের তীরে অবস্থিত। ১৯৪৯ সালের অক্টোবরে ভারতে ত্রিপুরার একীভূত হওয়ার আগ পর্যন্ত এটি শাসক মাণিক্য রাজবংশের বাড়ি ছিল। ১৯৭২-৭৩ সালে ত্রিপুরা সরকার রাজপরিবারের কাছ থেকে প্রাসাদটি ২৫ লাখ রুপিতে কিনেছিল এবং জুলাই ২০১১ পর্যন্ত রাজ্য বিধানসভার দপ্তর ছিল। উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ এখন একটি রাজ্য যাদুঘর ও এটি প্রাথমিকভাবে উত্তর-পূর্ব ভারতে বসবাসকারী সম্প্রদায়ের জীবনধারা, শিল্পকলা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং উপযোগী কারুশিল্প প্রদর্শন করে, সাথে এখানে প্রচুর পাথরের ভাস্কর্য, মানিক্য রাজবংশের মুদ্রা এবং কিছু অন্যান্য নিদর্শন রয়েছে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ত্রিপুরা প্রাচীন ভারতের প্রাচীনতম রাজকীয় রাজ্যগুলির একটি বলে দাবি করা হউ। ত্রিপুরার রাজকীয় বংশ শুরু হয়েছিল মহারাজা মহা মাণিক্যের রাজত্বকালে, যিনি ১৪০০ খ্রিস্টাব্দে মুকুট লাভ করেছিলেন ও মানিক্যের রাজকীয় উপাধিতে প্রথম শাসক ছিলেন। উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ রাজা ঈশান চন্দ্র মাণিক্য (১৮৪৯-১৮৬২) দ্বারা ১৮৬২ সালে আগরতলা থেকে ১০ কিমি (৬ মা) দূরে নির্মিত হয়। এটি ১৮৯৭ সালের ১২ জুন আসামের ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছিল।[১] মহারাজা রাধা কিশোর মাণিক্য ১৮৯৯-১৯০১ সালে আগরতলা শহরের কেন্দ্রস্থলে তৎকালীন ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রাসাদটি পুনর্নির্মাণ করেছিলেন। এটি মার্টিন অ্যান্ড বার্ন কোং দ্বারা টিনটিনের ফারাওয়ের চুরুটের প্রাসাদের অনুকরণে নির্মিত।[২][তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

প্রাসাদের দিকে যাওয়ার প্রধান পথ

রাজ্য বিধানসভা ভবন হিসাবে[সম্পাদনা]

১৯৪৯ সালে ভারতের সাথে ত্রিপুরা রাজ্যের একীভূত হওয়ার পর রাজকীয় সম্পত্তি জাতীয়করণ করা হয়। প্রাসাদের চারপাশের এলাকা সহ মূল ভবনটি ১৯৭২-৭৩ সালে ত্রিপুরা সরকার রাজপরিবারের কাছ থেকে কিনেছিল।[২] এটি ২০১১ সালের জুলাই পর্যন্ত ত্রিপুরা বিধানসভার ভবন ছিল, তারপর বিধানসভা একটি নতুন স্থানে স্থানান্তরিত হয় যা আগরতলা থেকে ৬ কিমি (৩.৭ মা) উত্তরে অবস্থিত।[৩]

রাজ্য জাদুঘর হিসাবে[সম্পাদনা]

ভূমিকম্পের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধ করার জন্য জাদুঘরটিকে সিসমিক রেট্রোফিটিং দেওয়া হয়েছিল,[৪][৫] ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩-এ ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি মহম্মদ হামিদ আনসারি এই জাদুঘরটির উদ্বোধন করেছিলেন।

জাদুঘরের ইতিহাসের প্রথম দিকে উজ্জয়ন্ত প্রাসাদের নাম পরিবর্তন করে ত্রিপুরা রাজ্য জাদুঘর করার রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত পদক্ষেপ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। তিপ্রার আদিবাসী জাতীয়তাবাদী পার্টি (আইএনপিটি) উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারিকে চিঠি দিয়ে প্রতিবাদ করে যে জাদুঘরের নামটি এই অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করা উচিত।[৬][৭] ত্রিপুরার নামমাত্র রাজা প্রদ্যুৎ বিক্রম কিশোর দেব বর্মন বলেন, "প্রাসাদটি একটি ঐতিহাসিক স্থান। এটি শুধুমাত্র পূর্ববর্তী রাজপরিবারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত নয়, এটি শুধুমাত্র সরকারের অন্তর্গত নয়। এটি ত্রিপুরার অন্তর্গত এবং সরকারের কেউ হঠাৎ করে এর নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না"।[৮] সরকার উজ্জয়ন্ত প্রাসাদের আসল নাম রাখার ও জাদুঘর চত্বরে মহারাজ রাধা কিশোর মানিক্যের মূর্তি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়।[৯]

প্রাসাদের একটি মনোরম দৃশ্য।

নকশা[সম্পাদনা]

উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ প্রাঙ্গন প্রায় ১ কিমি (২৫০ একর) এলাকা জুড়ে রয়েছে ও এতে সিংহাসন কক্ষ, দরবার হল, পাঠাগার এবং অভ্যর্থনা হলের মতো পাবলিক রুম রয়েছে।[১০] এর ভবন ও ভিত্তি আগরতলার প্রাণকেন্দ্রে ৮০০ একর (৩.২ কিমি) জুড়ে রয়েছে। নিওক্লাসিক্যাল এই প্রাসাদটির নকশা করেছিলো মার্টিন অ্যান্ড বার্ন কোম্পানির স্যার আলেকজান্ডার মার্টিন। দোতলা প্রাসাদটিতে তিনটি বড় গম্বুজ রয়েছে, যার মধ্যে ৮৬ ফু (২৬ মি) উচ্চতা বিশিষ্ট গম্বুজটি উচ্চতম যা একটি চারতলা কেন্দ্রীয় টাওয়ারের উপরে অবস্থিত। এর স্থাপত্যে মুঘল, রোমান এবং ব্রিটিশ প্রভাবের মিশ্রণ দেখা যায়।[২] বাগানের দুপাশে দুটি বড় কৃত্রিম পুকুর রয়েছে যা পুল এবং ফোয়ারা দিয়ে সজ্জিত।

লক্ষ্মী নারায়ণ, উমা-মহেশ্বরী, দুর্গা এবং জগন্নাথকে উৎসর্গ করা উজ্জয়ন্ত প্রাসাদের সংলগ্ন স্থানগুলো বেশ কয়েকটি হিন্দু মন্দির দখল করে আছে।[১০]

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Historic Earthquakes"Earthquake.usgs.gov। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৬ 
  2. Sujit Chakraborty (২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩)। "Tripura's royal mansion to house northeast's biggest museum"Newindianexpress.com। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১৬ 
  3. "Tripura Assembly building inaugurated"Telegraphindia.com। ২৩ জুলাই ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৬ 
  4. Supratim Bhowmik। "Retrofitting of heritage building "Ujjayanta Palace" in Agartala – a case study"Academia.edu। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৬ 
  5. "Northeast India's biggest museum to open on Sep 25"Firstpost.com। ২৭ আগস্ট ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৬ 
  6. Sekhar Datta (২০ সেপ্টেম্বর ২০১৩)। "History finds royal quarters"Telegraphindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৬ 
  7. Press Trust of India (১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩)। "Tribals protest renaming of Tripura palace"business-standard.com। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১৬ 
  8. K Anurag (২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩)। "Tripura govt relents to mass protests against renaming of palace"Rediff.com। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৬ 
  9. "Tripura museum to retain name of Ujjayanta Palace"The Times of India। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৬ 
  10. "Ujjayanta Palace, Agartala"gobibo.com। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৬