দুভ্ভুরি সুব্বাম্মা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দুভ্ভুরি সুব্বাম্মা
ভারতের রাজামুন্দ্রি ফ্রিডম পার্কে দুভ্ভুরি সুব্বাম্মার স্মৃতিসৌধ
জন্ম(১৮৮১-১১-১৫)১৫ নভেম্বর ১৮৮১
মৃত্যু৩১ মে ১৯৬৪(1964-05-31) (বয়স ৮২)
জাতীয়তাভারতীয়

দুভ্ভুরি সুব্বাম্মা (১৫ই নভেম্বর ১৮৮১ - ৩১শে মে ১৯৬৪) একজন ভারতীয় স্বাধীনতা কর্মী যিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি মহিলা কংগ্রেস কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।[১] দুভভুরি সুব্বাম্মা ছিলেন অন্ধ্র প্রদেশের প্রথম মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামী। তিনি নারীর ক্ষমতায়ন ও অস্পৃশ্যতা দূরীকরণে কাজ করেছিলেন। আইন অমান্য আন্দোলন এবং লবণ সত্যাগ্রহে অংশগ্রহণের জন্য তাঁকে রাজামুন্দ্রি এবং রায় ভেলোর কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছিল।[২]

জীবনী[সম্পাদনা]

১৮৮০ সালে, অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের পূর্ব গোদাবরী জেলার দক্ষরামে, বৈদিক সম্প্রদায়ের একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে সুব্বাম্মা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পাননি।[১] মাত্র দশ বছর বয়সে, দরিদ্র দুভ্ভুরি ভেঙ্কাইয়ার সঙ্গে তাঁর বাল্যবিবাহ হয়েছিল।[১] কিন্তু অল্প বয়সেই তাঁকে নিঃসন্তান ও নিঃস্ব রেখে তাঁর স্বামী মারা যান। একজন বিশিষ্ট কবি এবং এই অঞ্চলের পণ্ডিত, তিরুপতি ভেঙ্কট শাস্ত্রী সুব্বাম্মার আত্মীয় ছিলেন এবং সুব্বাম্মা তাঁর কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। ভেঙ্কট শাস্ত্রীর অনুপ্রেরণায়, তিনি ধ্রুপদী সাহিত্য পড়া শুরু করেছিলেন। তিনি রামায়ণ, মহাভারত, ভাগবতকে দৃঢ়ভাবে উপলব্ধি করেছিলেন।[৩]

স্বাধীনতা সংগ্রামে ভূমিকা[সম্পাদনা]

স্বামীর মৃত্যুর পর, সুব্বাম্মা সক্রিয়ভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন এবং ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দেন।[১][৪] তিনি আইন অমান্য আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন এবং ভারতে ব্রিটিশ প্রশাসন থেকে সম্পূর্ণ মুক্তির পক্ষে জোরালোভাবে সমর্থন করেছিলেন।

১৯২২ সালে, তিনি মহিলা কংগ্রেস কমিটি গঠন করেন।[৫] ১৯২৩ সালে তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়ায় একটি সভার আয়োজন করেছিলেন, যেখানে কয়েকশ মহিলা স্বেচ্ছাসেবক কাকিনাড়া কংগ্রেস মহাসভায় যোগ দিয়েছিলেন।[৫] সুব্বাম্মা অনেকগুলি অন্ধ্র মহিলা সভা সংগঠিত করেছিলেন যেগুলি জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল ও শিক্ষিত করেছিল। তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে মহিলাদের সমর্থন জোগাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি নারীর ক্ষমতায়নের প্রচারে অন্ধ্র প্রদেশে ব্যাপকভাবে ভ্রমণ করেছিলেন।[৫]

নাদিমপল্লির মতো অন্যান্য সক্রিয় কর্মীদের সাথে একত্রে, সুব্বাম্মা গোটেটি মাণিক্যম্বা, অন্ধ্র মহাসভা, এবং টি. ভারক্ষমাম্মা সংগঠনগুলি প্রতিষ্ঠা করতে সহায়তা করেছিলেন। আইন অমান্য আন্দোলনের পক্ষে কর্মকাণ্ডের কারণে সুব্বাম্মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং রাজামুন্দ্রির কারাগারে এক বছরের জন্য বন্দী করা হয়েছিল। লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি রায় ভেলোর কারাগারে এক বছর কাটিয়েছিলেন।[৬] তিনি জোরালোভাবে অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন এবং ভারত থেকে অস্পৃশ্যতা বিলোপের জন্য কাজ করেছিলেন।[৫]

স্মরণ[সম্পাদনা]

রাজমুন্দ্রির ফ্রিডম পার্কে তাঁকে স্মরণে করে একটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে।[৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Basu, Amrita; Editor, Amrita Basu (২০১১)। Women's Movements in the Global Era (ইংরেজি ভাষায়)। Read How You Want। আইএসবিএন 9781458781826 
  2. "AP postal dept honours Duvvuri Subbamma"। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  3. "How Duvvuri Subbamma invoked patriotism in people through her fiery speeches"। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  4. Thakur, Bharti (২০০৬)। Women in Gandhi's Mass Movements (ইংরেজি ভাষায়)। Deep & Deep Publications। আইএসবিএন 9788176298186 
  5. Ray, Bharati (১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৫)। Women of India: Colonial and Post-colonial Periods (ইংরেজি ভাষায়)। SAGE Publications India। আইএসবিএন 9788132102649 
  6. Naidu, Ch M. (১ জানুয়ারি ১৯৮৬)। Salt Satyagraha in the Coastal Andhra (ইংরেজি ভাষায়)। Mittal Publications। 
  7. "Unsung and unhonoured"The Hans India। ১৫ আগস্ট ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৭