রূপা ভবানী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

মাতা রূপা ভবানী (আনু. ১৬২১ – আনু. ১৭২১ জন্ম নাম: অলক্ষেশ্বরী) একজন কাশ্মীরি ছিলেন।[১] তিনি ছিলেন ১৭ শতকের একজন হিন্দু সাধু, তিনি বর্তমান কাশ্মীর অঞ্চলে বসবাস করতেন। তিনি ছিলেন ১৭ শতকের দ্বিতীয় মহান মরমী কবি। জীবনে অনেক উত্থান-পতনের অভিজ্ঞতা তাঁর ছিল। পার্থিব কষ্ট তাঁকে আধ্যাত্মিক জীবনের পথ দেখিয়েছিল। তাঁর আধ্যাত্মিক 'গুরু' ছিলেন তাঁর পিতা পন্ডিত মাধব জু ধর, তিনি তাঁকে যোগের রহস্য ও অনুশীলনে দীক্ষিত করেছিলেন। তিনি কাশ্মীরি ভাষাকে সমৃদ্ধ গূঢ় অর্থপূর্ণ কবিতা উপহার দিয়েছেন। তাঁর কবিতায় আমরা কাশ্মীরি শৈববাদ এবং ইসলামী সুফিবাদ উভয়ের প্রভাব দেখতে পাই।[২]

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

রূপা ভবানী ছিলেন পণ্ডিত মাধব জু ধরের কন্যা। মাধব জু ১৭ শতকের গোড়ার দিকে খানকাহ-ই-শোকতা, নওয়াকাদলের (বর্তমানে শ্রীনগর) বাসিন্দা ছিলেন। তিনি মেয়েকে যোগ অনুশীলনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।[৩]

মৌখিক এবং লিখিত কিংবদন্তি অনুসারে মাধব জু ধর ছিলেন মাতা শারিকার (কালী) একজন প্রবল ভক্ত। তিনি প্রতিদিন হরি পর্বতে তাঁর মন্দিরে প্রার্থনা করতে যেতেন। শারিকা দেবী মাধব জু ধরের প্রার্থনায় সন্তুষ্ট হলে মাধব জু একটি কন্যা প্রার্থনা করেছিলেন। এরপর ১৬২১ সালে জ্যেঠ মাসে (জ্যৈষ্ঠ) পূর্ণিমার দিন জু-এর স্ত্রী অলক্ষেশ্বরীর জন্ম দেন। তাঁর জন্মের সঠিক বছর আনুমানিক ১৬২০ এবং ১৬২৪ সালের মধ্যে কোন একটি বছর হতে পারে। অলক্ষেশ্বরী ঈশ্বর এবং আধ্যাত্মিকতার সাধনায় তাঁর পিতাকে অনুসরণ করেছিলেন।

স্নেহ এবং শ্রদ্ধার সাথে বেড়ে ওঠা, রূপা ভবানী পণ্ডিত হীরানন্দ সাপ্রু নামে একজন বিদগ্ধ যুবককে বিবাহ করেছিলেন। অল্প বয়সে খুব আড়ম্বর এবং জাঁকজমকের সাথে তাঁদের বিবাহ হয়েছিল। কিংবদন্তি শোনা যায় মাতা শ্রী রূপা ভবানী পণ্ডিত হিরানন্দকে এবং সেই সঙ্গে নিজের শ্বশুর বাড়ি পরিত্যাগ করেছিলেন। তাঁরা তাঁর আধ্যাত্মিক মনের সাথে মিলিত হতে পারেননি এবং তাঁর ধ্যানের মন্ত্রগুলি, যেগুলি তিনি তাঁর বাবার কাছে শিখেছিলেন, সেগুলিকে মেনে নিতে পারেন নি।[৪]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

অল্প বয়সে বিয়ের পরও, তিনি প্রায়ই মধ্যরাতে সাধনা করতে হরি পর্বতে যেতেন। এটি তাঁর সম্বন্ধে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছিল। তাঁর শাশুড়ি ও স্বামী তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন। শেষ পর্যন্ত, তিনি ঈশ্বরের সাধনা করার জন্য শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে চলে যান।

রূপা ভবানী জম্মু ও কাশ্মীরের লার এবং ভাস্কুরার গান্দেরবাল জেলার চশমে শাহবি, মানিগামে নির্জনে তাঁর সাধনা করেছিলেন। সাফা কাদালে তাঁর জন্মস্থান সহ এই স্থানগুলি এখন রূপা ভবানী অস্থাপনা নামে বিখ্যাত।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

মাতা রূপা ভবানী ১৭২১ খ্রিস্টাব্দে মাঘ কৃষ্ণপক্ষের সপ্তমীর দিন মারা যান।[২] এই দিনটি সাহেব সপ্তমী নামে পরিচিত এবং কাশ্মীরের হিন্দুরা পালন করেন।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Rupa Bhawani"। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০১২ 
  2. "Rupa Bhawani"। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  3. "Saints and Sages: Rupa Bhawani"koausa.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-২০ 
  4. "Mata Rupa Bhawani The mystic saint"। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২