মিজানুর রহমান শামীম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

মিজানুর রহমান শামীম

বিপি, ওএসপি, এনডিসি, পিএসসি
জন্ম১৮ জানুয়ারি ১৯৬৮
মাদারীপুর জেলা
আনুগত্য বাংলাদেশ
সেবা/শাখাবাংলাদেশ সেনাবাহিনী,
বাংলাদেশ আনসার,
গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী
কার্যকাল১৯৮৬-বর্তমান
পদমর্যাদা লেফটেন্যান্ট জেনারেল
ইউনিটপদাতিক কর্পস
নেতৃত্বসমূহ২৬ বীর
৫৯ ইস্ট বেঙ্গল
আর্মি সিকিউরিটি ইউনিট
১১১ পদাতিক ব্রিগেড
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের পরিচালক
বাংলাদেশ আনসারগ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক
যুদ্ধ/সংগ্রামসেক্টর কমান্ডার -ইরাক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন
কন্টিনজেন্ট সদস্য -হাইতিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন
পুরস্কারবীর প্রতীক
অসামান্য সেবা পদক
মাতৃশিক্ষায়তনঢাকা কলেজ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্
সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ
জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজ

মিজানুর রহমান শামীম (জন্ম ১৮ জানুয়ারি ১৯৬৮) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন লেফট্যানেন্ট জেনারেল যিনি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের বর্তমান প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও)। পার্বত্য চট্টগ্রামে অপারেশন পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।[১][২]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

মিজানুর রহমান শামীম ১৮ জানুয়ারি ১৯৬৮ সালে মাদারীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তিনি ঢাকা কলেজে লেখাপড়া করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ডিগ্রী ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমডিএস ডিগ্রী লাভ করেন। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে তিনি এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্ থেকে মাস্টার্স অব ফিলোসফি ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি মিরপুরের ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ থেকে স্টাফ কোর্স এবং জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজ থেকে এনডিসি কোর্স সম্পন্ন করেন।[১][২]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

মিজানুর রহমান শামীম ১৭তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সে ১৪ জানুয়ারি ১৯৮৬ তারিখে বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমীতে যোগদান করেন। তিনি ২৫ ডিসেম্বর ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবানে কাউন্টার ইন্সারজেন্সী অপারেশনে নিয়োজিত ১১ ইস্ট বেঙ্গলে যোগ দেন।[১][২]

তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কমান্ড এবং স্টাফ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি অপারেশন নাফ রক্ষায় সদর দপ্তর ৪৪ পদাতিক ব্রিগেডে জেনারেল স্টাফ অফিসার গ্রেড-৩, পার্বত্য চট্টগ্রামে অপারেশন দাবানলে সদর দপ্তর ২৪ পদাতিক ডিভিশনে জেনারেল স্টাফ অফিসার গ্রেড-৩, অপারেশন উত্তরণে সদর দপ্তর ৩০৫ পদাতিক ব্রিগেডে ডিএএএন্ডকিউএমজি এবং সেনাসদরে সামরিক গোয়েন্দা পরিদপ্তরে ২বার জেনারেল স্টাফ অফিসার গ্রেড-২ ও জেনারেল স্টাফ অফিসার গ্রেড-১ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১][২]

তিনি দুইটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন যথাক্রমে ২৬ বীর এবং ৫৯ ই বেংগল এবং আর্মি সিকিউরিটি ইউনিট কমান্ড করেন। তিনি ব্রিগেড কমান্ডার হিসেবে ১১১ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ড করেন এবং বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের চেয়ারম্যান ও ৮টি স্কুল ও কলেজের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১][২]

তিনি জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের পরিচালক ছিলেন। তিনি ১৯ পদাতিক ডিভিশনে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ও ঘাটাইল এরিয়ায় এরিয়া কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১][২]

৯ আগস্ট ২০২০ সাল থেকে ১৯শে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আনসারগ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[৩][৪]

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন[সম্পাদনা]

শামীম যুদ্ধ বিধ্বস্ত হাইতিতে ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কন্টিনজেন্ট সদস্য এবং ২০০২ সালে ইরাকে অবজারভার এবং সেক্টর কমান্ডার হিসেবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। শান্তিরক্ষী হিসেবে তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি হাইতিতে ‘‘ফোর্স কমান্ডারের প্রশংসাপত্র’’ এবং ইরাকে ‘‘মিশন প্রধানের প্রশংসাপত্র’’ লাভ করেন।[১]

সম্মাননা[সম্পাদনা]

মিজানুর রহমান শামীম পার্বত্য চট্টগ্রামে কর্মরত থাকাকালীন অসংখ্য অভিযানে নেতৃত্ব দেন। তিনি ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০ সালে একটি টহল দলের নেতৃত্ব দিয়ে অভিযান পরিচালনা করে অস্ত্র-গোলাবারুদসহ বিপুল পরিমানে সামগ্রী উদ্ধার করেন। স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে বীর প্রতীক ভূষিত করা হয়।[১][২]

সেনাবাহিনীতে দায়িত্বপালনকালীন অপারেশন, প্রশিক্ষণ ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে অবদান রাখায় ২০১৯ সালে ‘‘অসামান্য সেবা পদকে’’ ভূষিত করা হয়।[১][২]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

মিজানুর রহমান শামীমের স্ত্রী রেহানা পারভীন মুক্তি। এই দম্পতির এক পুত্র শাদমানুর রহমান অর্ণব সেনাবাহিনীতে কর্মরত ও এক কন্যা মাসতুরা তাসফিয়া অর্পা।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "মহাপরিচালক মহোদয়ের জীবন বৃত্তান্ত"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। Archived from the original on ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  2. "বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক"ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার আনসার ভিডিপি স্কুল এন্ড কলেজ। Archived from the original on ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  3. "ঢাকা মহানগর আনসারের প্রথম সমাবেশ"দৈনিক যুগান্তর। ১ জানুয়ারি ২০২২। Archived from the original on ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  4. "বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালকের শ্রদ্ধা"দৈনিক প্রথম আলো। ২৫ আগস্ট ২০২০। Archived from the original on ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২