বিশেষ সমকোণী ত্রিভুজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের ন্যূনতম দুটি সমান বাহু থাকে; এই সংজ্ঞার ভিত্তিতে ত্রিভুজের অয়লার রেখাচিত্রে কিছু বিশেষ সমকোণী ত্রিভুজের অবস্থান দেখানো হয়েছে।

বিশেষ সমকোণী ত্রিভুজ হলো কিছু সাধারণ ধর্মযুক্ত এমনই এক প্রকার সমকোণী ত্রিভুজ, যা ত্রিভুজসম্পর্কিত গণনাকে সহজতর করে, অথবা এটি হলো এমনই এক ত্রিভুজ, যা থেকে ঐ গণনার নিমিত্তে সরল সূত্রাবলী পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, একটি সমকোণী ত্রিভুজের কোণগুলো 45°–45°–90° এর মতো সরল সম্পর্কযুক্ত হতে পারে। এরূপক্ষেত্রে একে "কোণ-ভিত্তিক" সমকোণী ত্রিভুজ বলা হয়। অপরদিকে "বাহু-ভিত্তিক" সমকোণী ত্রিভুজ হলো সেই ত্রিভুজ যার বাহুগুলো পূর্ণ সংখ্যার অথবা অন্য কোন বিশেষ সংখ্যার অনুপাত গঠন করে। যেমন: 3 : 4 : 5 অনুপাতযুক্ত ত্রিভুজ এবং সোনালি অনুপাতযুক্ত ত্রিভুজ হলো বাহু-ভিত্তিক সমকোণী ত্রিভুজ। এসব বিশেষ সমকোণী ত্রিভুজের কোণগুলোর সম্পর্ক অথবা বাহুগুলো অনুপাত জানা থাকলে, জ্যামিতিক সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে উচ্চতর কোন পদ্ধতির প্রয়োগ না করেই বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের পরিমাণ দ্রুত ও সহজে গণনা করা যায়।

কোণ-ভিত্তিক[সম্পাদনা]

একক বৃত্তে অন্তর্লিখিত কোণ-ভিত্তিক বিশেষ সমকোণী ত্রিভুজগুলো সহজলভ্য অর্থাৎ এগুলোকে সহজেই এঁকে দেখানো যায়। অধিকন্তু, 30 ও 45 ডিগ্রি কোণের গুণিতক ত্রিকোণমিতিক ফাংশনগুলোও এই ত্রিভুজগুলোর মাধ্যমে সহজে মনে রাখা যায়।

"কোণ-ভিত্তিক" বিশেষ সমকোণী ত্রিভুজগুলো যেসব কোণ দ্বারা গঠিত তাদের পারস্পারিক সম্পর্কের মাধ্যমেই এরা (ত্রিভুজগুলো) বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। এই ত্রিভুজগুলোর বৈশিষ্ট্য এই যে, এদের বৃহত্তর কোণটি, যার মান 90 ডিগ্রি বা +π/ রেডিয়ান অর্থাৎ এক সমকোণ, তা ত্রিভুজটির অপর দুটি কোণের সমষ্টির সমান।

সাধারণত একক বৃত্তের ভিত্তি থেকে অথবা অন্য কোনো জ্যামিতিক পদ্ধতিতে বাহুগুলোর দৈর্ঘ্যের অনুমান করা হয়। এই পদ্ধতিটি 30°, 45° এবং 60° কোণের ত্রিকোণমিতিক ফাংশনগুলোর মান দ্রুত বের করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে।

নিম্নরূপ সাধারণ ত্রিকোণমিতিক ফাংশনগুলোর গণনার সুবিধার্থে বিশেষ ত্রিভুজসমূহ ব্যবহার করা হয়ে থাকে:

ডিগ্রি রেডিয়ান গ্রেডিয়ান ঘূর্ণন sin cos tan cot
0 0g 0 +/ = 0 +/ = 1 0 অসংজ্ঞায়িত
30° +π/ +৩৩/g +/১২ +/ = +/ +/ +/
45° +π/ 50g +/ +/ = +/ +/ = +/ 1 1
60° +π/ +৬৬/g +/ +/ +/ = +/ +/
90° +π/ 100g +/ +/ = 1 +/ = 0 অসংজ্ঞায়িত 0
45°–45°–90°
30°–60°–90°

45°–45°–90°, 30°–60°–90° এবং সমবাহু/সমকোণী (60°–60°–60°) এই তিন ধরনের ত্রিভুজসমূহ হলো সমতলীয় মোবিয়স ত্রিভুজ। এর অর্থ হলো, এরা এদের বাহুগুলোর গাণিতিক প্রতিফলনের মাধ্যমে সমতলের উপর টালির মতো নকশা তৈরি করে।

45°–45°–90° কোণের ত্রিভুজ[সম্পাদনা]

45°–45°–90°কোণের সেট স্কয়ার
45°–45°–90° কোণের একটি ত্রিভুজের বাহুগুলোর দৈর্ঘ্য।

সমতলীয় জ্যামিতি অনুসারে, কোন বর্গের যে কর্ণই টানা হোক না কেন, তা থেকে একটি ত্রিভুজ পাওয়া যাবে, যার কোণ তিনটির সমষ্টি হবে সর্বোচ্চ 180° বা π রেডিয়ান এবং অনুপাতটি হবে 1 : 1 : 2। উপরন্তু এই কোণগুলোর মান হবে যথাক্রমে 45° (অর্থাৎ +π/), 45° (অর্থাৎ +π/), এবং 90° (অর্থাৎ +π/)। এই ত্রিভুজের বাহুগুলোর অনুপাত হবে 1 : 1 : , যা সরাসরি পিথাগোরাসের উপপাদ্যকে অনুসরণ করে।

সকল প্রকার সমকোণী ত্রিভুজের ক্ষেত্রে অতিভুজ ও অপর বাহু দুটির সমষ্টির যে অনুপাত পাওয়া যাবে তা কেবল 45°–45°–90° ডিগ্রি কোণের ত্রিভুজেই সর্বনিম্ন হবে এবং এটি হবে +/.[১]:p.২৮২,p.৩৫৮। আবার, সমকোণী ত্রিভুজগুলোর সমকোণ থেকে অতিভুজের উপর অঙ্কিত লম্ব ও অপর বাহু দুটির সমষ্টির যে অনুপাতগুলো পাওয়া যাবে, তাদের মধ্যে যেটি বৃহত্তম হবে, সেটিও এই 45°–45°–90° কোণের ত্রিভুজেই পাওয়া যাবে এবং এই বৃহত্তম অনুপাত হবে +/[১]:p.২৮২

ইউক্লিডীয় জ্যামিতি অনুসারে, কোনো সমকোণী ত্রিভুজকে সমদ্বিবাহু হতে হলে তা কেবল কেবল এই 45°–45°–90° ত্রিভুজেরই পক্ষে সম্ভব। তবে, গোলীয়অধিবৃত্তীয় জ্যামিতিতে অসীম সংখ্যক ভিন্ন ভিন্ন আকারের সমকোণী সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ পাওয়া যায়।

30°–60°–90° কোণের ত্রিভুজ[সম্পাদনা]

30°–60°–90° কোণের সেট স্কয়ার
30°–60°–90° কোণযুক্ত ত্রিভুজের বাহুগুলোর দৈর্ঘ্য।

30°–60°–90° কোণের ত্রিভুজ হলো সেই ত্রিভুজ যার কোণগুলোর অনুপাত হবে 1 : 2 : 3 এবং এদের মান হবে যথাক্রমে 30° (+π/), 60° (+π/), and 90° (+π/)। এই ত্রিভুজের বাহুগুলোর অনুপাত হবে 1 :  : 2।

ত্রিকোণমিতি থেকে এর স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। এর জ্যামিতিক প্রমাণ হলো:

ABC সমদ্বিবাহু ত্রিভুজটি আঁকা যাক, যার প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য 2 একক এবং M হলো BC বাহুর মধ্যবিন্দু। A থেকে M বিন্দুতে AM লম্বটি টানা হলে 30°–60°–90° কোণযুক্ত ACM ত্রিভুজটি গঠিত হয়, যার অতিভুজের দৈর্ঘ্য 2 এবং ভূমি MC-এর দৈর্ঘ্য হয় 1।
ত্রিভুজটির অপর বাহু AM-এর দৈর্ঘ্য হবে , যা পিথাগোরাসের উপপাদ্য থেকে সরাসরি পাওয়া যায়।

30°–60°–90° কোণের ত্রিভুজ হলো একমাত্র সমকোণী ত্রিভুজ যার কোণগুলো সমান্তর প্রগমনভুক্ত। এর প্রমাণ সহজ এবং তা এভাবে দেওয়া যায়: যদি α, α + δ এবং α + 2δ কোণ তিনটি সমান্তর প্রগমনভুক্ত হয়, তাহলে এদের সমষ্টি হবে, 3α + 3δ = 180°। উভয়পক্ষকে 3 দ্বারা ভাগ করে দেখা যায় যে, α + δ কোণটি অবশ্যই 60° হবে। এখন, α + 2δ কোণটি এক সমকোণ বা 90° হলে অবশিষ্ট কোণটি (α) হবে 30°।

বাহু-ভিত্তিক[সম্পাদনা]

কোন সমকোণী ত্রিভুজের বাহু তিনটির দৈর্ঘ্য পূর্ণ সংখ্যা হলে এই সংখ্যা তিনটিকে একত্রে পিথাগোরাসীয় ত্রয়ী বলা হয়।[২] কোন সমকোণী ত্রিভুজের বাহু তিনটি পিথাগোরাসীয় ত্রয়ীর অন্তর্ভুক্ত হলেই যে ডিগ্রি এককে এর সব কোণের মান মূলদ সংখ্যা হবে তা কিন্তু নয়। এটি নিভেনের উপপাদ্যকে অনুসরণ করে। সে যাই হোক, পিথাগোরাসীয় ত্রয়ীগুলো মনে রাখা সহজ হওয়ায় এবং এইসব ত্রয়ীর গুণিতকগুলোও একই সম্পর্কযুক্ত হওয়ায় এগুলো খুবই উপকারী। ইউক্লীডের সূত্রের মাধ্যমে পিথাগোরাসীয় ত্রয়ী বের করা যায়। এই সূত্রানুযায়ী, ত্রিভুজের বাহুগুলো অবশ্যই নিচের অনুপাতটি মেনে চলবে:

m2n2 : 2mn : m2 + n2

যেখানে m এবং n হলো যেকোনো ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা এবং m > n

সাধারণ পিথাগোরাসীয় ত্রয়ী[সম্পাদনা]

নিম্নোক্ত অনুপাতযুক্ত পিথাগোরাসীয় ত্রয়ীসহ কিছু পিথাগোরাসীয় ত্রয়ীর সাথে আমরা খুবই পরিচিত:

3: 4 :5
5: 12 :13
8: 15 :17
7: 24 :25
9: 40 :41

3 : 4 : 5 ত্রিভুজ হলো একমাত্র সমকোণী ত্রিভুজ যার বাহুগুলো সমান্তর প্রগমনভুক্ত। যেসব ত্রিভুজের বাহু তিনটির দৈর্ঘ্য এবং ক্ষেত্রফল পূর্ণসংখ্যা তাদেরকে হিরোনিয়ান ত্রিভুজ বলা হয়। তাই সুস্পষ্টতই, পিথাগোরাসীয় ত্রয়ীভিত্তিক সকল ত্রিভুজই হিরোনিয়ান ত্রিভুজ।

প্রাচীন মিশরে 3 : 4 : 5 ত্রিভুজটির সম্ভাব্য ব্যবহার, সেই সঙ্গে এ ধরনের ত্রিভুজ বের করার ক্ষেত্রে গিঁটযুক্ত দড়ি ব্যবহার করা হতো কি না তার অনুমান এবং সে সময়ে পিথাগোরাসের উপপাদ্যটি জানা ছিল কি না সেই প্রশ্নটি নিয়ে বহু বিতর্ক হয়েছে।[৩] সর্বপ্রথম ইতিহাসবিদ মরিৎস ক্যান্টর এ ব্যাপারে ১৮৮২ সালে অনুমান করেন।[৩] প্রাচীন মিশরে যে সমকোণকে সঠিকভাবে বের করা হয়েছিল, যা পরিমাপ করতে সে সময়ে ওখানকার জরিপকারীরা দড়ির ব্যবহার করতো[৩], প্লুতার্ক যা মিশরীয়দের 3 : 4 : 5 ত্রিভুজের ওপর অভিভূত হয়ে যাওয়া হিসেবে তার আইসিস অ্যান্ড ওসাইরিস-এ[৩] (১০০ খৃস্টাব্দের আশেপাশে লেখা) উল্লেখ করেছেন তা আমরা জানি। এছাড়াও ১৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মিশরের মধ্য রাজ্যের সময়কার বার্লিন প্যাপিরাস ৬৬১৯ নামক নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, "১০০ বর্গ এককের একটি ক্ষেত্র দুটি ছোট বর্গের ক্ষেত্রের (সমষ্টির) সমান, যেখানে একটি বাহু অপর বাহুর ½ + ¼ অংশ"।[৪] তবে গণিতের ইতিহাসবিদ রজার এল কুক ক্যান্টরের বিপক্ষে গিয়ে বলেছেন যে, "পিথাগোরাসের উপপাদ্য না জেনেই এমন পরিস্থিতির প্রতি কেউ আগ্রহী হয়ে উঠবে তা কল্পনা করা কঠিন ব্যাপার।"[৩] ত্রিভুজের বাহুর দৈর্ঘ্য বের করার কাজে ঠিক এই উপপাদ্যটিই যে ব্যবহার করা হতো, ৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কোন মিশরীয় বইয়ে তেমনটা উল্লেখ নেই বলে তিনি লিখেছেন। তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, এর চেয়েও সরলতর একাধিক পদ্ধতি রয়েছে যা দিয়ে সমকোণ গঠন করা যায়। ক্যান্টরের অনুমানকে অনিশ্চিত উল্লেখ করে কুক উপসংহার টেনেছেন এই বলে: তিনি (ক্যান্টর) ধারণা করেছেন যে, প্রাচীন মিশরীয়রা খুব সম্ভবত পিথাগোরাসের উপপাদ্যটি জানত, কিন্তু "সমকোণ গঠনের কাজে তারা যে এই উপপাদ্যটি ব্যবহার করত, এমন কোন প্রমাণ নেই।"[৩]

নিচের সকল অনুপাত ক্ষুদ্রতম আকারের পিথাগোরসীয় ত্রয়ী। সমকোণ-সংলগ্ন বাহুদুটির দৈর্ঘ্য 256 এর কম এমন সমকোণী ত্রিভুজই এই তালিকায় রয়েছে। সর্বাপেক্ষা ছোট পাঁচটি ত্রয়ীকে ক্ষুদ্রতম আকারে উপরের তালিকায় ইতিপূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে।

11: 60 :61     
12: 35 :37
13: 84 :85
15: 112 :113
16: 63 :65
17: 144 :145
19: 180 :181
20: 21 :29
20: 99 :101
21: 220 :221
24: 143 :145     
28: 45 :53
28: 195 :197
32: 255 :257
33: 56 :65
36: 77 :85
39: 80 :89
44: 117 :125
48: 55 :73
51: 140 :149
52: 165 :173     
57: 176 :185
60: 91 :109
60: 221 :229
65: 72 :97
84: 187 :205
85: 132 :157
88: 105 :137
95: 168 :193
96: 247 :265
104: 153 :185
105: 208 :233
115: 252 :277
119: 120 :169
120: 209 :241
133: 156 :205
140: 171 :221
160: 231 :281
161: 240 :289
204: 253 :325
207: 224 :305

প্রায়-সমদ্বিবাহু পিথাগোরাসীয় ত্রয়ী[সম্পাদনা]

সমকোণযুক্ত সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের সকল বাহুর দৈর্ঘ্য মূলদ সংখ্যা হতে পারে না। এর কারণ হলো, সমকোণী সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের অতিভুজ এবং অপর যেকোনো বাহুর অনুপাত হলো :1, আর কে দুটি মূলদের অনুপাত আকারে প্রকাশ করা অসম্ভব। তাসত্ত্বেও, অসীম সংখ্যক প্রায়-সমদ্বিবাহু সমকোণী ত্রিভুজের অস্তিত্ব বিদ্যমান। এরা এমনই সমকোণী ত্রিভুজ যাদের প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য মূলদ সংখ্যা এবং এদের অ-অতিভুজীয় বাহুদ্বয়ের (সমকোণ-সংলগ্ন বাহুদ্বয়) দৈর্ঘ্যের অন্তরফলের মান এক।[৫][৬] নিচের পুনরাবৃত্তিমূলক প্রক্রিয়ায় এ ধরনের প্রায়-সমদ্বিবাহু সমকোণী ত্রিভুজ বের করা যেতে পারে:

a0 = 1, b0 = 2
an = 2bn−1 + an−1
bn = 2an + bn−1

এখানে, an হলো অতিভুজের দৈর্ঘ্য এবং n = 1, 2, 3, ....

একইভাবে,

যেখানে, {x, y} হলো পেল সমীকরণ x2 − 2y2 = −1 এর সমাধান। এখানে y হলো অতিভুজ এবং একইসাথে y যে 1, 2, 5, 12, 29, 70, 169, 408, 985, 2378... ইত্যাদি পেল সংখ্যা হবে সেই অদ্ভুত শর্তটিও মেনে চলে। পেল সংখ্যার এই অনুক্রমটি দ্য অন-লাইন এনসাক্লোপিডিয়া অব ইন্টিজার সিকুয়েন্সেস-এ (OEIS) A000129 নামে রাখা হয়েছে। সে যাই হোক, সর্বাপেক্ষা ক্ষুদ্র প্রায়-সমদ্বিবাহু পিথাগোরাসীয় ত্রয়ীগুলোর কয়েকটি নিম্নরূপ:[৭]

3 : 4 : 5
20 : 21 : 29
119 : 120 : 169
696 : 697 : 985
4,059 : 4,060 : 5,741
23,660 : 23,661 : 33,461
137,903 : 137,904 : 195,025
803,760 : 803,761 : 1,136,689
4,684,659 :  4,684,660  : 6,625,109

এর বিকল্প হিসেবে, একই ধরনের ত্রিভুজ বর্গীয় ত্রিকোণ সংখ্যা থেকেও প্রতিপাদন করা যেতে পারে।[৮]

সমান্তর ও গুণোত্তর প্রগমন[সম্পাদনা]

কেপলার ত্রিভুজ হলো এমন এক প্রকার সমকোণী ত্রিভুজ যার বাহুগুলোর ওপর অঙ্কিত বর্গগুলোর ক্ষেত্রফলগুলো একটি গুণোত্তর প্রগমন গঠন করে এবং এই ত্রিভুজের বাহুগুলোও গুণোত্তর প্রগমন গঠন করে। উপরন্তু এই প্রগমন দুটির উভয়েই সোনালি অনুপাতের সাথে বিশেষভাবে সম্পর্কযুক্ত।

কেপলার ত্রিভুজ হলো সেই সমকোণী ত্রিভুজ যার বাহু তিনটি একটি গুণোত্তর প্রগমনের অন্তর্ভুক্ত। কোন কেপলার ত্রিভুজের বাহুগুলো a, ar, ar2 গুণোত্তর প্রগমনটির মাধ্যমে গঠিত হলে এর সাধারণ অনুপাতকে r-কে r = φ আকারে লেখা যায়, যেখানে φ হলো সোনালি অনুপাত। এ কারণে, কেপলার ত্রিভুজের বাহুগুলো 1 : φ : φ অনুপাতটি এবং এই ত্রিভুজের বাহুগুলোর ওপর অঙ্কিত বর্গগুলো 1 : φ : φ2 অনুপাতটি গঠন করে। ফলস্বরূপ, কেপলার ত্রিভুজের বাহুগুলো অবশ্যই গুণোত্তর প্রগমনভুক্ত হবে এই শর্তাধীনে কেপলার ত্রিভুজের আকৃতি একটি স্কেল ফ্যাক্টর পর্যন্ত অনন্যভাবে নির্ধারিত। স্কেল ফ্যাক্টর হলো একই আকৃতির কিন্তু ভিন্ন আকারের পৃথক পৃথক বস্তু বা ছবির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ বা ক্ষেত্রফলের অথবা অন্য কোনো মাত্রাগত অনুপাত।

3–4–5 ত্রিভুজটি হলো সেই অনন্য সমকোণী ত্রিভুজ (স্কেলিং-এর সাপেক্ষে) যার বাহুগুলো সমান্তর প্রগমনের অন্তর্ভুক্ত।[৯]

সুষম বহুভুজের বাহু[সম্পাদনা]

কংগ্রুয়েন্ট বৃত্তে অন্তর্লিখিত পঞ্চভুজ, ষড়ভুজ ও দশভুজের বাহুগুলো একটি সমকোণী ত্রিভুজ গঠন করে।

একক বৃত্তে অন্তর্লিখিত একটি সুষম দশভুজের বাহুর দৈর্ঘ্যকে a = 2 sin +π/১০ = +−১ + / = +/φ ধরা যাক, যেখানে φ হলো সোনালি অনুপাত। আরও ধরা যাক, b = 2 sin +π/ = 1 হলো একক বৃত্তে অন্তর্লিখিত একটি সুষম ষড়ভুজের বাহুর দৈর্ঘ্য এবং c = 2 sin +π/ = হলো একক বৃত্তে অন্তর্লিখিত একটি সুষম পঞ্চভুজের বাহুর দৈর্ঘ্য। এখন এই বাহুগুলো থেকে আমরা পাব, a2 + b2 = c2, যা পিথাগোরাসের উপপাদ্যের গাণিতিক রূপ। সুতরাং এই বাহু তিনটি একটি সমকোণী ত্রিভুজের বাহুত্রয়কে নির্দেশ করছে।[১০] একই ধরনের ত্রিভুজ একটি সোনালি আয়তক্ষেত্রের অর্ধাংশও গঠন করে। এছাড়া, c দৈর্ঘ্যের বাহুযুক্ত সুষম আইসোহেড্রনের মধ্যেও এই ত্রিভুজটি পাওয়া যেতে পারে: (যেখানে,) আইসোহেড্রনটির যেকোনো শীর্ষবিন্দু V থেকে এই শীর্ষবিন্দুর প্রতিবেশী পাঁচটি তল পর্যন্ত ক্ষুদ্রতম রেখাংশের দৈর্ঘ্য হবে a, এবং এই রেখাংশের প্রান্তবিন্দুগুলো শীর্ষবিন্দু V এর যেকোনো প্রতিবেশীর সাথে যুক্ত হয়ে a, b এবং c বাহুযুক্ত সমকোণী ত্রিভুজের শীর্ষবিন্দুগুলোই গঠন করে।[১১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Posamentier, Alfred S., and Lehman, Ingmar. The Secrets of Triangles. Prometheus Books, 2012.
  2. Weisstein, Eric W। "Rational Triangle"MathWorld 
  3. Cooke, Roger L. (২০১১)। The History of Mathematics: A Brief Course (2nd সংস্করণ)। John Wiley & Sons। পৃষ্ঠা 237–238। আইএসবিএন 978-1-118-03024-0 
  4. Gillings, Richard J. (১৯৮২)। Mathematics in the Time of the Pharaohsবিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন। Dover। পৃষ্ঠা 161 
  5. Forget, T. W.; Larkin, T. A. (১৯৬৮), "Pythagorean triads of the form x, x + 1, z described by recurrence sequences" (পিডিএফ), Fibonacci Quarterly, 6 (3): 94–104 .
  6. Chen, C. C.; Peng, T. A. (১৯৯৫), "Almost-isosceles right-angled triangles" (পিডিএফ), The Australasian Journal of Combinatorics, 11: 263–267, এমআর 1327342 .
  7. (ওইআইএস-এ ক্রম A001652)
  8. Nyblom, M. A. (১৯৯৮), "A note on the set of almost-isosceles right-angled triangles" (পিডিএফ), The Fibonacci Quarterly, 36 (4): 319–322, এমআর 1640364 .
  9. Beauregard, Raymond A.; Suryanarayan, E. R. (১৯৯৭), "Arithmetic triangles", Mathematics Magazine, 70 (2): 105–115, এমআর 1448883, ডিওআই:10.2307/2691431 .
  10. Euclid's Elements, Book XIII, Proposition 10.
  11. nLab: pentagon decagon hexagon identity

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]