কারবালার লড়াই (২০০৩)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কারবালার লড়াই
মূল যুদ্ধ: ইরাক যুদ্ধের আক্রমণ পর্যায়
তারিখ২৩ মার্চ – ৬ এপ্রিল ২০০৩
অবস্থান
ফলাফল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজয়[১]
বিবাদমান পক্ষ
 ইরাক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী
রাদ আল-হামদানি
রিয়াদ হোসেন নয়েরি
ফায়েক আবদুল্লাহ মিকবাস
কর্নেল হাসানি
ডেভিড পেট্রিয়াস
জড়িত ইউনিট
ফেদায়িন সাদ্দাম
সিরীয় ভাড়াটে সেনা[১]
৩য় পদাতিক বিভাগ
১ম সাঁজোয়া বিভাগ
১০১তম এয়ারবর্ন বিভাগ
চার্লি কোম্পানি, ১-৪১তম পদাতিক রেজিমেন্ট
৭০তম আর্মার রেজিমেন্ট
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
১৭০–২৬০ জন নিহত[২] ১৩–২১ জন নিহত[১]
১ টি এম১ আব্রামস ট্যাঙ্ক নিষ্ক্রিয়
১ টি এম২এ২ ব্র্যাডলি ধ্বংস
১ টি ইউএস নেভি এফএ-১৮ একটি স্বপক্ষের প্যাট্রিয়ট ব্যাটারি দ্বারা গুলিবিদ্ধ[৩][৪][৫]
১ টি ইউএইচ-৬০ ব্ল্যাক হুক অন্ধকারে বিভ্রান্তির কারণে বিধ্বস্ত হয়[৬]
২০০৮ সালে কারবালা

কারবালার লড়াই ছিলো ইরাকি বাহিনীদের থেকে শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার উদ্দেশ্যে ২০০৩-এর ইরাক আক্রমণের সময় সংঘটিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি লড়াই। বাগদাদের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় শহরটি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং যার ফলে দুই দিনব্যাপী অনিয়মিত বাহিনীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মাধ্যমে মার্কিন বাহিনীদের উপর শহরটি শত্রুমুক্ত করার দায়িত্ব পড়ে।[৭]

শহরটি উপেক্ষার ঘটনা[সম্পাদনা]

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩য় পদাতিক বিভাগের নেতৃত্বাধীন দলটি ৩১ মার্চ তারিখে কারবালা এলাকায় পৌঁছায়। শহিরের দক্ষিণপূর্ব দিকে প্রজাতান্ত্রিক গার্ড বাহিনীর সাথে লড়াই করার পর,[২] মার্কিন বাহিনী শহরটি উপেক্ষা করে বাগদাদের দিকে কারবালা গ্যাপের মধ্যস্থলে আক্রমণ করে। শহরটি শত্রুমুক্ত করার দায়িত্ব ২য় ব্যাটালিয়ন সমর্থিত ১০১তম এয়ারবর্ন ডিভিশন, চার্লি কোম্পানি সমেত ৭০তম আর্মার রেজিমেন্ট, ১ম ব্যাটালিয়ন, ৪১তম পদাতিক রেজিমেন্ট, ১ম সাঁজোয়া ডিভিশন এদের উপর অর্পণ করা হয়।[৮] ২ এপ্রিলে একটি মার্কিন ইউএইচ-৬০ ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার কারবালার নিকট ভূপাতিত হয়। সাতজন সেনা নিহত এবং চারজন সেনা আহত হয়। প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুসারে ব্ল্যাকহককে গুলি করে ভূপাতিত করার উল্লেখ থাকলেও পরবর্তীতে সেনাবাহিনী জানায় ঘটনাটি দুর্ঘটনাবশত ঘটেছিলো।[৯][১০]

কারবালা দখল[সম্পাদনা]

১০১তম এয়ারবর্ন বিভাগ শহরের উপকণ্ঠগুলোয় অবস্থিত তিনটি ল্যান্ডিং জোন দখলের উদ্দেশ্যে হেলিকপ্টার বহনকারী বাহিনী ব্যবহার করার পরিকল্পনা করে (কোডনাম স্প্যারো, ফিঞ্চ ও রবিন) এবং পরে সেসব বাহিনীর সাথে সমন্বয় করার জন্য এম১ আব্রামস ট্যাঙ্ক এবং এম২ ব্র‍্যাডলি লড়াকু যানবাহন যুক্ত বাহিনী ব্যবহার করে।[১]

শহরের চারদিকে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলার পরে ৫ এপ্রিল সকাল ১১টায় ১০১তম এয়ারবর্ন কারবালা শত্রুবাহিনী মুক্ত করার কাজ শুরু করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নির্দিষ্টকৃত ল্যান্ডিং জোনে নামার উদ্দেশ্যে ৫০২তম পদাতিক রেজিমেন্টের তিনটি ব্যাটালিয়ন বহনকারী ২৩ টি ইউএউচ-৬০ ব্ল্যাকহক ও ৫ টি সিএইচ-৪৭ চিনুক হেলিকপ্টার আক্রমণ শুরু করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

এলজেড স্প্যারোর ৩য় ব্যাটালিয়ন, ৫০২তম পদাতিক শহরে ঢোকার পরপরই তীব্র অসংগঠিত প্রতিরোধের শিকার হয়। দক্ষিণে এজেড রবিনে ২/৫০২ রাস্তা ধরে ধরে যাচ্ছিল এবং তারা স্কুলগুলোতে অনেক লুকানো অস্ত্র উপাদান দেখতে পায়। এছাড়াও তারা একটি সন্দেহভাজন বিদ্রোহী প্রশিক্ষণ শিবির শনাক্ত করে। রাতের নামার আগে ২/৫০২ তাদের উপর অর্পিত ৩০টি সেক্টরের ১৩টি পরিষ্কার করে। এলজেড ফিঞ্চ থেকে ১/৫০২ দক্ষিণপূর্ব দিকে যাওয়ার সময় অনেক অস্ত্র ভাণ্ডারের সন্ধান পায়। অভিযানটি পরিচালনার সময় হেলিকপ্টার গানশিপের এয়ার সাপোর্ট বেশি ব্যবহার করা হয়েছিলো। সাথে আর্টিলারি সাপোর্টও ব্যবহার করা হয়। সাপোর্টিং আর্টিলারি থেকে স্ক্রিন পদাতিক বাহিনী পর্যন্ত কারবালার রাস্তায় ১০০টিরও বেশি ধোঁয়া বিশিষ্ট শেল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। একই সময় ২/৭০ আর্মার্ড রেজিমেন্ট এবং সি কোং ১/৪১ ইন (যান্ত্রিক) কারবালায় পৌঁছে লড়াইয়ে লিপ্ত হয় ফলে একজন নিহত হয়।[১]

পরবর্তী দিন, ইউনিটগুলো নিজেদের সেক্টর শত্রুমুক্ত করতে শুরু করে। ৬ এপ্রিল বিকাল ৫টা নাগাদ প্রতিরোধ থেমে যেতে শুরু করর। ৫:৩০-এ ২/৭০ ১ম সাঁজোয়া বিভাগের সদস্যরা সাদ্দাম হুসাইনের একটি বৃহৎ মূর্তি ভেঙ্গে ফেলে।[১]

কারবালায় ভূমিকা পালনের জন্য, ৩য় ব্যাটালিয়ন, ৫০২তম পদাতিক এবং ১০১তম এয়ারবর্ন বিভাগকে সাহসী ইউনিট পুরস্কার দেওয়া হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. James Dietz। "Fedayeen Saddam"। Strike on Karbala। ১৯ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১২ 
  2. "Wages of War – Appendix 1. Survey of reported Iraqi combatant fatalities in the 2003 war | Commonwealth Institute of Cambridge"। ২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০২১ 
  3. "On April 2 a navy FA-18 was shot down west of Karbala, Iraq." Leave No Man Behind: The Saga of Combat Search and Rescue, George Galdorisi, Thomas Phillips, p. 519, Zenith Imprint, 2008
  4. "The plane from the aircraft carrier USS Kitty Hawk in the Persian Gulf went down just before midnight Wednesday while on a bombing mission near Karbala, a city 50 miles south of Baghdad where fighting raged between U.S. forces and the Republican Guard. A search team was immediately launched. Other aircraft reported seeing surface-to-air missiles and anti-aircraft fire in the area where the plane disappeared, said Lt. Brook DeWalt, a spokesman for the Kitty Hawk ... Iraqi television broadcast pictures Thursday of what it said was the wreckage and Iraqi Information Minister Mohammed Saeed Al-Sahaf claimed the aircraft was shot down by the Saddam Fedayeen, Iraq's paramilitary force." Two Aircraft Down Over Iraq/
  5. "Blue-On-Blue! The story of the U.S. Navy F/A-18 that was shot down by a U.S. Army PAC-3 Patriot missile battery during OIF"। ৭ মার্চ ২০১৮। 
  6. "ARMY AIR CREWS: UH-60 Black Hawk Crewmembers Line of Duty Deaths" 
  7. Dwyer, Jim (৬ এপ্রিল ২০০৩)। "A NATION AT WAR: In the Field | 101ST AIRBORNE DIVISION; In Karbala, G.I.'s Find Forsaken Iraqi Armor and Pockets of Resistance"New York Times 
  8. "2nd BATTALION 70th ARMOR "IRON TIGERS"" 
  9. https://accesswdun.com/print/2004/4/172437
  10. "ARMY AIR CREWS: UH-60 Black Hawk Crewmembers Line of Duty Deaths" 

আরো পড়ুন[সম্পাদনা]