কুড়মালি ভাষা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কুড়মালি ভাষা
মাতৃভাষী

৫,৫৫,৬৯৫ জন। এই জনগণনায় বাংলা, ওড়িয়া এবং হিন্দিভাষীদের সাথে কিছু কুড়মালিভাষীকে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
দেবনাগরী, বাংলা, ওড়িয়া, অসমিয়া, কৈথি, চিসই
সরকারি অবস্থা
সরকারি ভাষা
 ভারত
ভাষা কোডসমূহ
আইএসও ৬৩৯-৩দুইয়ের মধ্যে এক:
kyw – কুড়মালি
tdb – পাঁচপরগনিয়া
গ্লোটোলগkudm1238  (কুড়মালি)[১]
panc1246  (পাঁচ পরগনিয়া)[২]
ভারতের কুড়মালি-ভাষী অঞ্চল

কুড়মালি (দেবনাগরী: कुड़मालि, বাংলা: কুর্মালী, কুড়মালি, ওড়িয়া: କୁଡ଼ମାଲି/କୁର୍ମାଲି, kur(a)mālī) বিহারি ভাষাদলের অধীনস্থ একটি ইন্দো-আর্য শ্রেণীভুক্ত ভাষা[৩][৪][৫] যদিও আধুুনিক গবেষকদের একাংশ গবেষক মনে করেন, মুল কুড়মালি ভাষার উৎস আর্য, দ্রাবিড়, এমনকি মুন্ডা অস্ট্রিক কোনো ভাষা পরিবারের মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যায় না।[৬][৫][৭] পূর্ব ভারতে ব্যবহৃত এই ভাষাটি ঝাড়খণ্ড, উড়িষ্যা, বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কুড়মি মাহাতো সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্কিত। মূলত কুড়মি মাহাতো সম্প্রদায়ের মাতৃভাষা কুড়মালি ভাষা হলেও ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলের বিশেষ করে পুরুলিয়া জেলার আড়সা, ঝালদা, জয়পুরবাঘমুণ্ডি এবং ঝাড়খণ্ড রাজ্যে গোপ, মুচি, গড়াই, লোহার, ডম, ঘাসি, কুমহার, জলহা মুসলিম প্রভৃতি সম্প্রদায়ের মাতৃভাষাও কুড়মালি ভাষা। এছাড়াও মহারাষ্ট্র, আসাম, বাংলাদেশনেপালেও অত্যল্প পরিমানে কুড়মি মাহাতো জনগোষ্ঠীর মধ্যে কুড়মালি ভাষার প্রচলন রয়েছে। কুড়মি মাহাতোরা, মাহাতো, মোহান্ত এবং মহন্ত নামেও পরিচিত যাদের অত্যল্প পরিমাণ মহারাষ্ট্র, আসাম, বাংলাদেশ ও নেপালেও বসবাস করেন।[৮][৯][১০][১১] চা বাগানের শ্রমিক হিসেবে এসব অঞ্চলের কুড়মি সম্প্রদায়ের আসামে আগমন ঘটলে সেখানকার চা বাগান ও অন্যান্য অঞ্চলে এ ভাষা ছড়িয়ে পড়ে।[১২] কুড়মালি ভাষাটি চর্যাপদে ব্যবহৃত ভাষার নিকটতম রূপ হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন। চর্যাপদের ভাষা সাধারণ কুড়মিরা ব্যবহার করে এবং বুঝতে পারেন। এটি ছিল কুড়মালি ভাষার আঞ্চলিক রূপ।[১৩][১৪][১৫][১৬][১৭]

ভৌগোলিক বিস্তৃতি[সম্পাদনা]

১৯৯১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ভারতে ১৮ লক্ষ কুড়মালি ঠার ভাষা-ভাষী।[১৮] ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ভারতে ৪,২৫,৯২০ জন কুড়মালি ঠার ভাষা-ভাষী।[১৯] ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ভারতে ৩,১১,১৭৫ জন কুড়মালি ঠার ভাষা-ভাষী (বেশিরভাগই পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, আসাম এবং মহারাষ্ট্র থেকে) এবং ২,৪৪,২৯০ জন পাঁচ-পরগনিয়া ভাষা-ভাষী (বেশিরভাগই ঝাড়খণ্ড থেকে), এবং নেপালে ২৩০ জন।[১০] মোট ৫৫৫,৬৯৫ জন কুুড়মালি ভাষা-ভাষী ভারতে[৮][১০][২০] উল্লেখ্য, কুড়মালি ঠার এবং পাঁচ-পরগনিয়া উভয়ই কুড়মালি ভাষার উপভাষা। দক্ষিণ-পূর্ব ঝাড়খণ্ডের সরাইকেল্লা খরসোয়া, পূর্ব সিংভূম, পশ্চিম সিংভূমরাঁচি জেলা এবং উত্তর-পূর্ব উড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জ, কেন্দুঝর, যাজপুর, সুন্দরগড় জেলা উপরন্তু পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামপশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় কুড়মালি ভাষা ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও মহারাষ্ট্র, আসাম, বাংলাদেশনেপালেও অত্যল্প পরিমানে কুড়মালি ভাষা প্রচলিত রয়েছে।[৮]

Grierson's linguistic map of East Chota Nagpur, 1903

ময়ূরভঞ্জের কুড়মালি উপ কথ্যভাষা[সম্পাদনা]

ময়ূরভঞ্জ অঞ্চলের কুড়মালি উপ কথ্যভাষার সাথে মানভূমের কুড়মালি ঠারের সাথে অনেকটাই মিল পাওয়া যায়।[২১]

কুড়মালি সাহিত্য[সম্পাদনা]

সাধারণত, কুড়মালি সাহিত্যকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:[২২](pp86)[১১] (ক) কুড়মালি লোকসাহিত্য এবং (খ) কুড়মালি লিখিত সাহিত্য।

লোক সাহিত্য[সম্পাদনা]

সেসব সাহিত্যকে লোকসাহিত্যে রাখা হয়েছে, যাদের উৎপত্তি, কাল-নির্ধারণ বা রচয়িতা সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট অনুমান করা সম্ভব নয়। এই সাহিত্য রাঢ় সভ্যতার উন্নত ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান ও সাহিত্যের একটি সংকলন, যা বংশ পরম্পরায় কুড়মালি-ভাষী লোকেদের উত্তরাধিকারসূত্রে লোক-কাহিনী, লোক-গান ইত্যাদিতে রয়েছে। কুড়মালি লোক-সাহিত্যের যে উপকরণ পাওয়া যায়, সেগুলোকে আমরা মোটামুটিভাবে পাঁচটি শ্রেণীতে রাখতে পারি:[২৩]

১. কুড়মালি লোক গান,

২. কুড়মালি লোককাহিনী,

৩. কুড়মালি লোক-নাট্য,

৪. কুড়মালি প্রবাদ, এবং

৫. কুড়মালি-ধাঁধাঁ

কুড়মালি লোকগীতি [২২](pp86)

কুড়মালি ভাষায় প্রচুর লোকগীতি রয়েছে। আজও মানুষের মুখে মুখে এই সব গানগুলো বেঁচে আছে। গানগুলো খুব মধুর এবং হৃদয়স্পর্শী। কুড়মালি গানের ঐতিহ্য অতি প্রাচীন। গান ও নাচ ছাড়া কোনো অনুষ্ঠানই এই সংস্কৃতিতে পূর্ণতা পায় না। বেশিরভাগ গানই নাচের গান। সুর, তাল, রাগের মাধ্যমেই গানের পার্থক্য ও বিশেষত্ব বোঝা যায়। কুড়মালি লোকগীতি কুড়মালি সাংস্কৃতিক জীবনের প্রতিটি দিক, বৈচিত্র্যময় দৃষ্টিভঙ্গি এবং বহুমাত্রিক চিন্তাকে স্পর্শ করে।

কুড়মালি লোকগানের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল অধিকাংশ গানই প্রশ্নোত্তর আকারে। এটি ছড়া ও আইনের নিয়ম থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। এর নিজস্ব ছন্দ রয়েছে যা গীতিমূলক। শৈলীগত উপাদান শুধুমাত্র গান গ্রহণ দ্বারা স্বীকৃত করা যেতে পারে। কোথাও কোথাও অলঙ্কারের ব্যবহার স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়েছে।

কুড়মালি লোকগীতিকে কয়েকটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।[২২](pp86) যেমনঃ (ক) সংস্কার-গীত, (খ) ঋতু-গীত, (গ) দেব-দেবীর গান, (ঘ) শ্রম-গীত, (ঘ) ক্রীড়া-গীত, (চ) জাঁত-গীত, (ছ) প্রবন্ধ গীত ইত্যাদি।

কুড়মালির প্রধান লোকগীতি হল: ঝুমৈর গান, চাঁচর গিত, উধউআ গিত, ঢপ, বিহা গিত, ডমকচ, সারহুল, নটুআ, ডাঁইড়-ধরা, জাউআ-করম, এঢ়েইআ গিত, ডাবকা, বাঁদনা বা অহিরা গান, কুঁআরি-ঝাপান, ইত্যাদি।

সাধারণত কুড়মালির লোকগীতিতে প্রকৃতির চিত্র পর্যাপ্ত পরিমানে পাওয়া যায়। করম গানে অঙ্কুরোদগম, পুনর্বিবাহ, কৃষিকাজ, হাস্য-ব্যঙ্গ, জীবনযাপন পদ্ধতির উল্লেখ আছে। বিয়ের গান কুড়মালি সংস্কৃতি, সামাজিক আচরণ, খাদ্যাভ্যাস, দৈনন্দিন কাজ, জীবনযাত্রার ছাপ প্রতিফলিত করে।

কুড়মালি সমাজে কন্যা শিশুর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। বনের সৌন্দর্য যেমন ফুল, তেমনি ঘরের সৌন্দর্য একটি মেয়ে শিশু। কুড়মালির কুঁআঁরি ঝাপানের গানে জাদুবিদ্যা, তন্ত্র-মন্ত্র ও কুসংস্কারের বর্ণনা পাওয়া যায়। ডাঁইড়ধরা, ঢপ ইত্যাদি গানে উচ্চমানের দার্শনিক অনুভূতি প্রতিফলিত হয়। অন্যদিকে, ডমকচ গানে আবেগ ও সৌন্দর্যের পাশাপাশি হাস্যরসও পাওয়া যায়।

কুড়মালি লোকগাথা [২২](pp88)

কুড়মালিতে প্রচুর লোককাহিনী পাওয়া যায়। সাধারনত, লোক-কাহিনীর মূল উদ্দেশ্য ছিল বিনোদন, কিন্তু দার্শনিক চিন্তা ভাবনার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটি সম্পূর্ণ বিকশিত ভাষার তুলনায় এগুলি কম শিক্ষণীয় নয়। শস্যাগারের কুঁবা বা ধঁধউরাকে ঘিরে শীতের দীর্ঘ রাত কাটানোর জন্য মানুষ রাতে গল্প করে। কুড়মালি লোক-গল্পে অনেক অতিপ্রাকৃত এবং অসম্ভব জিনিস রয়েছে। একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো আমেরিকা, ইউরোপ এবং আমাদের দেশের অন্যান্য লোকভাষায় যেসব লোককাহিনী জনপ্রিয়, সেগুলোও কিছু পার্থক্যসহ কুড়মালিতে পাওয়া যায়। কুড়মালির লোককাহিনীকে তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়:

১.ধর্মীয় লোক-কাহিনী। যেমনঃ 'করম-ধরম', 'তিন ঠাকুরাইন', 'আর-নি-রহম' ইত্যাদি।

২.শিক্ষামূলক লোক-কাহিনী। যেমনঃ বুদ্ধিক-দাম, রাইকস-আর-অমরি, গরখিআ-আর-রাজকুমারি, আঁটকুড়া-রাজা, মুগা-মতি, করম-কাপাড় ইত্যাদি।

৩.বিনোদন কেন্দ্রিক লোক-কাহিনী। যেমনঃ বাঁউনা, বাঁড়ি-সিআর, পুইতু-বুঢ়া, সিআরেক-চউছালি, বেনিআ-আর-বাগাল ইত্যাদি।

এভাবে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, কুড়মালি লোকগীতিতে জীবনের বিভিন্ন দিক বাস্তবসম্মতভাবে চিত্রিত হয়েছে।

কুড়মালি লোক-নাট্য [২২]

ভারতীয় লোকনাট্যের ঐতিহ্য অতি প্রাচীন। যদিও নাটকের সমস্ত উপাদান লোক-নাট্যে পাওয়া যায় না, তবুও নাটকের কিছু কিছু উপাদান অবশ্যই পাওয়া যায়। প্রকৃতপক্ষে, এই লোক-নাট্যগুলিই সাহিত্য নাটকের ভিত্তি, এতে কোন সন্দেহ নেই যে কুড়মালির প্রধান লোক-নাট্যগুলি হল:

(ক) ছৌ নাচ,

(খ) নাটুয়া নৃত্য,

(গ) ডমকচ, এবং

(ঘ) মাছানি নাচ।

ছৌ নৃত্য': এই নৃত্যে, নৃত্যশিল্পী তার মুখে একটি মুখোশ পরেন এবং তার অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তার অনুভূতি প্রকাশ করেন। গানটি প্রথমে গল্পের বিষয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। গানের মাধ্যমে দৃশ্যপটও পাল্টে যায়। এটি একটি মৌসুমী নাচ। কিন্তু, এর ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে, এই নাচ এখন দেশীয় অঙ্গন থেকে বেরিয়ে এসেছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে।

নটুআ নাচঃ এটি কুড়মালির একটি অতি প্রাচীন নৃত্য। গানের মাধ্যমে গল্পের পরিচয় ঘটে। এটি বীর রসের নৃত্য। নর্তকী তার শরীরকে রঙিন ফিতা দিয়ে সাজায় এবং হাতে ঢোল ও তলোয়ার নিয়ে নাচে। তার ভঙ্গি যুদ্ধ পরিস্থিতির। এই নাচ দেখে একজন অপরিচিত দর্শক এটাকে রাজস্থানী রাজপুতদের নাচের সাথে তুলনা করতে পারেন।

ডমকচ নাচ: এটি বিবাহ উপলক্ষে পরিবেশিত একটি নৃত্য। বর যখন বিয়ে করতে যায়, তখন নারীরা পুরুষের পোশাক পরে নাচে। কখনও তারা বিয়ের অভিনয় করে, আবার কখনও তারা অন্য কোনো গল্পের সঙ্গে সম্পর্ক করে অভিনয় করে। গানগুলো প্রশ্নোত্তর আকারে, যাকে আমরা কথোপ-কথন শৈলী বলতে পারি।

মাছানি নাচ: এই লোকনৃত্যে নারী-পুরুষ উভয়েই অংশ নেয়। গানের মাধ্যমে একে অপরকে প্রশ্ন করে। গান তার গল্প। এই নাচের দৃশ্যও বদলে যায়। গল্পটি ব্যঙ্গাত্মক শৈলী বলা হয়েছে।

কুড়মালি প্রবাদ (প্রবচন) [২৩][২৪][২২](pp89)

যে কোন ভাষার সাহিত্য সেই সমাজের দর্পণ। প্রবাদ-প্রবচন হল সেই সমাজের অভিব্যক্তি ও দিক-নির্দেশনা, জাতির নীতি-নৈতিকতা, রীতিনীতি, জীবন-দর্শন, হাস্যরস, জীবনযাত্রা, ব্যবসা ইত্যাদি। ঝাড়খণ্ডের কুড়মিদের প্রধান পেশা কৃষি। কুড়মালি প্রবাদে কৃষির সম্পর্ক স্পষ্টভাবে দেখা যায়। এই প্রবাদগুলি প্রধানত ভালো ফসলের লক্ষণ, ধ্বংসের কারণ, সুযোগ এবং পরিস্থিতিকে নির্দেশ করে। এই সব ছাড়াও, এটি হাস্যরস, কটাক্ষ, চ্যালেঞ্জ, সতর্কতা, তথ্য, প্রবাদের মাধ্যমে গুপ্ত বিষয়গুলি শেখায়। নীতি-নৈতিকতা, রীতিনীতি, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক, দার্শনিক, সাংস্কৃতিক জীবনের অভিব্যক্তি কুড়মালি প্রবাদে পাওয়া যায়।

১.ধর্ম সম্পর্কিত। যেমনঃ “জেঞ করেই পুইন, সেঞ হেই ঢিপা সুইন”।

২.নীতি সম্পর্কিত। যেমনঃ "হেঁঠ মুঁড়িআ, বেড়ে এঁড়িআ"।

৩.কৃষি সম্পর্কিত। যেমনঃ "আমে বান, তেঁতইরে টান"।

৪.পুষ্টি সম্পর্কিত। যেমনঃ "এক বহুঞ ঠাকুর, দুই বহুঞ কুকুর, তিন বহুঞ ভালেই ভাকার-ভুকুর"।

৫.শিক্ষা সংক্রান্ত সম্পর্কিত। যেমনঃ "নদি ধারেক চাস, মিছাই করেই আস"।

৬.সমালোচনা সম্পর্কিত। যেমনঃ “সুমেক ধন সইতানে খাই, বাঁচেই জেঞ আদালত জাই”।

৭.সূচনা সম্পর্কিত। যেমনঃ "সরাবনেক গাছি আর বাছি, ডাগুঁআ জেনিক ঘার আর দামড়া গরুক হার"।

৮.অর্থ সম্পর্কিত। যেমনঃ "মাছেক মাঞেক পুতেক সক, আধা সাঁপ আধা বঁক"।

৯.কটাক্ষ সম্পর্কিত। যেমনঃ "কাকর বিদাই, আর দুইঅ গড়ে আলতা"।

১০.সংস্কৃতি সম্পর্কিত। যেমনঃ "হাঁড়ি কিনথিন ঠঁকিকে, আর কেনিআই করথিন দেখিকে"।

১১.জাতি সম্পর্কিত। যেমনঃ "বাঁস বনে ডম কানা, ঘাসিঞ খজেই কমনি, আর চাসাঞ খজেই ডিমনি।"

ধাঁধা সম্পর্কিত [১১][২২](pp90)[২৪]

কুড়মালি লোকভাষায় ধাঁধার সমৃদ্ধ ভাণ্ডার রয়েছে। গ্রামবাসীরা কৃষি কাজ থেকে মুক্ত হন এবং সন্ধ্যায় গ্রামের কিছু লোক এক জায়গায় জড়ো হন, প্রবীণরা তাদের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। এর পাশাপাশি শিশু-কিশোররা একে অপরকে বিভিন্ন ধরনের হেঁয়ালি জিজ্ঞেস করে আনন্দ দেয়। এটি শুধুমাত্র মানুষের জ্ঞানকে বিনোদন ও সমৃদ্ধ করে না, বরং যুক্তির ক্ষমতা সম্পন্ন শিশুদের সুস্থ মানসিক বিকাশের দিকে নিয়ে যায়। কুড়মালি ভাষার কিছু প্রধান ধাঁধা হল নিন্মরূপ।

১.উপরে ডুংরি পিলেই গাছ, বিন বাতাসে হিলেই গাছ। (উত্তর: নাক, লেজ)।

২.লক-লক ডাঁড়ি, চক-চক পাত, খাইতকে মধুরস উলগেইতকে কাপাস। (উত্তর: আঁখ বাড়ি, গুড়বাড়ি)।

৩.উলুক ঘড়া ঢুলুক চাপেই, কাঠ খাইকে সিন্দুর হাগেই। (উত্তর: আইগ)।

৪.সির রে সিটকা, ভুঁইএঁ পটকা। (উত্তর: সিঘন, নেটা)।

৫.ডুড়কু উপর ভুটকু নাচেই। (উত্তর: টেঁইগলা, টাঁগা)।

৬.ডুবি ডুবি জাই, পুঁছে চারা খাই। (উত্তর: সুই)

লিখিত সাহিত্য[সম্পাদনা]

কুড়মালি ভাষার উৎপত্তি নিয়ে গবেষকদের মধ্যে নানা মতভেদ রয়েছে। কুড়মালি ভাষার প্রথম লিখিত সাহিত্য চর্যাপদকেই ধরা হয়। কুড়মালি ভাষার সাথে চর্যাপদের সাদৃশ্য রয়েছে।[১৩][১৪][১৫] মালদহের গৌড় কলেজের বাংলার অধ্যাপক ক্ষিতীশ মাহাতোর দাবি, চতুর্দশ শতকে বড়ু চণ্ডীদাসের ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’-এ কুড়মালি শব্দ এবং ধ্বনিতত্ত্বরূপতত্ত্বের লক্ষণ স্পষ্ট ভাবে রয়েছে।[১৪][২৫] দরবারি সাহিত্যের উদ্ভবকে মধ্যযুগ (১৭৫০-১৮৫০) থেকে বিবেচনা করা যেতে পারে। ১৪৮৫ খ্রিস্টাব্দের দিকে, ঝাড়খণ্ড অঞ্চলে চৈতন্য মহাপ্রভুর গমনের ফলে, বৈষ্ণবধর্ম ছড়িয়ে পড়ে। তৎকালীন কবিরা রামায়ণ ও মহাভারতের গল্প-বস্তু নিয়ে গান রচনা করেছিলেন। রাম-কৃষ্ণকে নিজের নায়ক মনে করে, তাদের বিনোদনকে সূক্ষ্ম ছন্দে রচনা করে গানের রূপ দিয়েছেন।

বরজুরাম, নরোত্তমা, গৌরাঙ্গীয়া, দুর্যোধন, পীতাম্বর, দিনা তাঁতি, রামকৃষ্ণ, বিনন্দিয়া সিং প্রমুখ মধ্যযুগের কুড়মালি লোককবিদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিলেন। এ যুগের কবিদের রচনায় বক্তৃতা, ছন্দ ও পদ্যের পরিসংখ্যানের সচেতন ব্যবহার ছিল।[২২](pp91)[১১]

কুড়মালি লোকসাহিত্যঝুমুর গানের ধারাটিও যথেষ্ট সমৃদ্ধ। এই সব এলাকায় ঝুুমুর গানের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। কুড়মালি ভাষায় লিখিত সাহিত্যের সংখ্যা অপ্রতুল। গত তিন দশক ধরে অবশ্য বেশ কিছু সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছে।[২৫]

ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কুড়মালি ভাষার অবদান[সম্পাদনা]

কুড়মালি ভাষা সামাজিক অনুষ্ঠানে, যেমন বিবাহ অনুষ্ঠান, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ইত্যাদি। আরো যেমন 'ঝারনি মন্ত্র’ কুড়মালি ভাষায় মন্ত্রমুগ্ধ। বিভিন্ন উৎসবের গান, যেমন ‘টুসু গিত’, ‘বাঁদনা গিত’, ‘করম গিত’ ইত্যাদি কুড়মালি ভাষায় গাওয়া হয়।[২৬][১৪]

কুড়মালি ভাষার গঠন[সম্পাদনা]

কুড়মালি বাক্যে কর্তা, কর্ম, ক্রিয়ার অবস্থান বাংলা, হিন্দি ইত্যাদি ভারতীয় ভাষার মতই। তবে কুড়মালি ভাষার কর্তার লিঙ্গ, বচন, পুরুষ ও কর্ম অনুসারে গঠিত হয়। কুড়মালি ভাষার এই বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে ইথিওপিয়াআরবের ভাষার সাথে সাদৃশ্য রয়েছে।[২৪](pp38)

সংখ্যা[সম্পাদনা]

কুড়মালি ভাষার মৌলিক সংখ্যাগুলি হলঃ[২২][৫]

বাংলা প্রাচীন কুড়মালি বর্তমান কুড়মালি
এঁড়ি এক
দড়ি/দুঁহুঁ দুই
ঘুরৈন তিন
চাইল/গনডা চাইর
চমপা পাঁচ
ঝেইগ
সুতইল সাত
আঠই আঠ
নমি
১০ বাঁড়ি দস
২০ খঁড়ি/খনডি কুড়ি
৪০ মন দুই কুড়ি

কুড়মালি ভাষার সর্বনাম[সম্পাদনা]

কুড়মালি ভাষায় সর্বনামের রূপঃ[১১][১৪][২২][২৪]

আমি=মঞ, আমরা=হামরা, আমার=মর/হামর, আমাকে=মকে/হামকে, আমিই=মঞে/হামিএঁ, তুমি=তঞ, তোমরা=তহরা, তোমার=তর, তোমাকে=তকে, সে=অঞ, তাহার=অকর, তাহাকে=অকে, তাহারা=অখরা, তাহাদের=অখরাক তাহারাকে=অখরাকে, তুই=তঞ, তোমার=তর, তোমাকে=তকে, তুমিই=তঁঞে, তোমাদেরকে=তরাকে, তোমরাই=তরাই, আপনি=‌তহরা, আপনারা=তহরা, আপনার=তহর, আপনাদের=তহরাক, আপনাদেরকে=তহরাকে, উনি=অরা, উনার=অরাক, উনারা=অরা, উনাকে=অরাকে, উনাদেরকে=অরাকে, কে=কন্, কার=কাকর, কারা=কাখরা, কাদের=কাখঅর, কাদেরকে=কাখরাকে, যে=জেঞ/জন, যারা=জাখরা, যাদের=জাখরাক, যাদেরকে=জাখরাকে, কি=কিনা, ইত্যাদি।

আপনি (সম্মান সূচক) সূচক সর্বনাম পদে এক বচন ও বহু বচনের শব্দের রূপ একই থাকে।

নামকরণ[সম্পাদনা]

কুড়মালি ভাষা কুড়মি মাহাতো জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা হওয়ার কারণে কুড়মালি ভাষা নামকরণ করা হয়েছে।[২২][২১][৮][২৪]

বাংলাদেশে কুড়মালি ভাষা[সম্পাদনা]

কুড়মালি ভাষায় প্রথম উপন্যাস 'কারাম'।[২৩] কুড়মালি ভাষা সংস্কৃতি নিয়ে উপন্যাসটি লিখেছেন কুড়মালি ভাষার লেখক ও গবেষক উজ্জল মাহাতো। তিনিই প্রথম কুড়মালি ভাষা ও সাহিত্যকে তার লেখনির মাধ্যমে তুলে ধরার প্রয়াস করেন। কুড়মি মাহাতো জনগোষ্ঠির ভাষা ও সংস্কৃতিতে উপন্যাস ‘কারাম’ সুদূরপ্রসারি প্রভাব ফেলে। সেইসাথে কুড়মালি ভাষা ও সংস্কৃতিকে পরিচিতি তথা এক ধাপ এগিয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সম্প্রতি লেখক ও গবেষক উজ্জল মাহাতো’র প্রকাশিত হয় 'কঁআথুয়েঁনঃ মাহাতো ডিকশনারি' নামের কুড়মালি ভাষায় রচিত আরো একটি গ্রন্থ।[২৩] এই গ্রন্থটি ‘কুড়মালি ভাষার দলিল’ হিসাবে আক্ষা পায়। এই গ্রন্থে সংযুক্ত করা হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ। এটি ভিন্ন ভাষায় ১৩ তম এবং ক্ষুদ্র নৃ তাত্ত্বিক ভাষায় প্রথম অনুবাদ সহ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের কুড়মালি ভাষার অনুবাদ।[২৭]

কুড়মালি ভাষায় প্রথম নাটক হটংটয়া[২৮]। নাটকটি রচনা ও পরিচালনা করেন দেবা মাহাতো ও রবীন্দ্র নাথ মাহাতো[২৯]

কুড়মালি ভাষায় অনেক ঝুমুর, গান, বিবাহ গীত, বিভিন্ন পরব এর অনেক গীত গেয়েছেন পরেশ মাহাতো। বাংলাদেশে একমাত্র পরেশ মাহাতোই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এই সব পারফর্ম করে থাকেন।[২৯]

কুড়মালি ভাষায় চলচ্চিত্র[সম্পাদনা]

কুড়মালি ভাষায় প্রথম চলচ্চিত্র হলো 'ডেথ সার্টিফিকেট'। যা পরিচালনা করেন রাজাদিত্য ব্যানার্জি।[৩০]

কুড়মালি ভাষার বৈচিত্র্য[সম্পাদনা]

কুড়মালি ভাষাভাষীরা পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিস্তৃত, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশার প্রান্তিক অঞ্চলে। এই রাজ্যগুলি বেশিরভাগই ঝাড়খণ্ডী বাংলা, নাগপুরি এবং ওড়িয়া ভাষাভাষীদের অধ্যুষিত অঞ্চল। এবং তাই, স্থানীয় দ্বান্দ্বিক পরিবর্তন এবং ভাষা পরিবর্তন এই এলাকায় লক্ষ্য করা যায়। যেহেতু, ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলের কুড়মিরা নিজেদেরকে কুড়মালি ভাষার বক্তা হিসেবে পরিচয় দেন; কিন্তু বাংলা প্রশাসনিক অঞ্চলে বহুকাল ধরে বসতির কারণে, তাদের ভাষা পশ্চিমবঙ্গের মানভূম উপভাষার দিকে ক্রমশই চলে যাচ্ছে। যেমনটি উত্তর ওড়িশায় বাংলাওড়িয়া সংমিশ্রণে হয়েছিল।[২৬]

কুড়মালি ভাষার সাথে ৬১%–৮৬% আভিধানিক মিল রয়েছে পাঁচপরগনিয়া ভাষার সাথে, ৫৮%–৭২% খোর্ঠা ভাষার সাথে, ৫১%–৭৩% নাগপুরী ভাষার সাথে (সাদ্রির সাথে), ৪৬%–৫৩% ওড়িয়া ভাষার সাথে, ৪১%–৫৫% বাংলা ভাষার সাথে, ৪৪%–৫৮% হিন্দি ভাষার সাথে সাদৃশ্য রয়েছে।[৮] তাই পাঁচপরগনিয়া কুড়মালি ভাষার একটি প্রধান বৈচিত্র্য হিসাবে বিবেচিত হয়, আবার কখনও কখনও এটি একটি স্বতন্ত্র ভাষা হিসাবে অভিমত প্রকাশ করে। একইভাবে কুড়মালি ভাষায় ঝাড়খণ্ডী বাংলা ভাষার ব্যাপক প্রভাবের কারণে (যেহেতু এই ভাষার বক্তারা আঞ্চলিক আধিপত্যের ভাষায় স্থানান্তরিত হওয়ার প্রক্রিয়াধীন), অনেক ভাষাবিদ একে ঝাড়খণ্ডী বাংলা হিসেবে বিবেচনা করেছেন এবং কখনও কখনও এটি মানভূমি উপভাষা হিসাবে গুচ্ছবদ্ধ হয়।[৩১] এটাও সত্য যে ভাষাটি খোর্ঠা ভাষার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ।[৩২]

এটা বিশ্বাস করা হয় যে, কুড়মালি ভাষার প্রাথমিক রূপটি কুড়মি মাহাতো জনগোষ্ঠীর আদি জন্মভূমি ছোটনাগপুর মালভূমি(রাঢ়) অঞ্চল বা বৃহত্তর ঝাড়খণ্ডে এই ভাষায় কথা বলা হত। কিন্তু, এখন এটি ঝাড়খণ্ডের নাগপুরি (সাদরি) ভাষা দ্বারাও প্রভাবিত। যদিও ভাষাটি এখন অনেকটাই ইন্দো-আর্য প্রকৃতির হয়ে গেছে, তবে এর কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমনঃ আভিধানিক আইটেম, ব্যাকরণগত উপাদান এবং বিভাগ যা ইন্দো-আর্য ভাষা পরিবার বা দ্রাবিড় ভাষা পরিবার বা এমনকি মুন্ডা ভাষা পরিবারেও পাওয়া যায় না। সুতরাং, এটা বিশ্বাস করা হয় যে, কুড়মালি ভাষা প্রাচীন যুগে এক সময় একটি সম্পূর্ণ পৃথক ভাষা পরিবারের ভাষা ছিল। কিন্তু, আর্য ভাষার সংস্পর্শে দীর্ঘকাল ধরে কুড়মি মাহাতো জনগোষ্ঠীর বসতি থাকার কারণে, ধীরে ধীরে মূল ভাষা অনেকটাই পরিত্যাগ করে এবং প্রাচীন মুল ভাষার বহু উপস্তর বহন করে চলেছে ও ক্রমশই আর্য ভাষার আর্য রূপের দিকে চলে যাচ্ছে কুড়মালি ভাষা।[৩৩][৩৪][২৪] EGIDS-এর স্তর, যা ইউনেস্কোর বিপন্ন ভাষা শ্রেণী স্তরের "ভালনারেবল" এবং "ডেফিনিটেলি এন্ডাঞ্জারড"-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কিন্তু, কুড়মালি এথনোলগ কুড়মালি ভাষাকে 6a (প্রবলভাবে) স্তরে এবং এর বৈচিত্র্য পাঁচপরগনিয়া (ঝাড়খণ্ডে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত) EGIDS-এর 3 (বাণিজ্য) স্তরে স্কেল করেছে এবং উভয়ই ইউনেস্কোর বিপন্ন শ্রেণী ভাষা স্তরের "নিরাপদ" মর্যাদার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।[৮]

কুড়মালি ভাষার আঞ্চলিক বৈচিত্র্য [২০]
English ধলভূম কুড়মালি (ঝাড়খণ্ড) ময়ূরভঞ্জ কুড়মালি (ওড়িশা) মানভূম কুড়মালি (পশ্চিমবঙ্গে)
He likes it. অঞ ইটা পসঁন্দ করত। উ ইটা পসঁন্দ করে। অঞ ইটা পসঁনদ্ করেই।
One person is sitting. এক লক বইস্যে আছে। এক লক বসিঞছ্যে। এক লক গবচলাহে।
Invite all of them. অখরাক সভকে নেউতা দে দেও। অরা সভকে নেউতা দিয়েন দেও। অখরাকে সভেকাইকে নেউতা দেই দেলিঅন।
The tree comes out from the seed. মুজি লেই গাচ হেইক। মুজি লেই গাচ হয়। বিহিন লেই গাচ হেউএইক।
Cows are grazing in the field. গরুগিলা বাইদে চরঅহথ। গরুগিলা বাইদে চরছেন। গরুগিলা বাইদে চরঅহথ।
You are not going to school. তঞ ইসকুলে নি জাইস। তুঞ ইসকুলে নাই জাইস। তঞ ইসকুলে নিঁহি জাইস।
He did not do the work. অঞ কামটা নি করলাক। উ কামটা নাই কৈরল্য। অঞ কামটা নিঁহিঁ কললাক।
Go to my house. মর ঘারকে জাহঁ। হামি ঘরকে জাছি। মঞ ঘার জাহঁ।

শিক্ষা[সম্পাদনা]

কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কুড়মালি ভাষায় পড়াশোনা করা হয়।

বাণিজ্যিক ভাষা[সম্পাদনা]

বাণিজ্যিক উপভাষা হল ব্যবসা এবং ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য ব্যবহৃত লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কাবিশেষ। ঝাড়খণ্ডের রাঁচি জেলার বুন্ডু, তামাড়, সিল্লি, সোনাহাতু, অর্কি এবং আঙ্গারা ব্লকে যোগাযোগের সাধারণ ভাষা পাঁচপরগনিয়া ব্যবহার করা হয়।

পঞ্চকোট রাজপরিবার ও কুড়মালি ভাষা[সম্পাদনা]

ঝাড়খণ্ডের ইতিহাস এবং পশ্চিমবঙ্গের একটি বড় অংশ পঞ্চকোটের ইতিহাস ছাড়া বোঝা যাবে না। ইতিহাসের অনেক আকর্ষণীয়, বিরল এবং বাস্তব রহস্য লুকিয়ে আছে পঞ্চকোটে। অনেক ঐতিহাসিক ও গবেষক যুগে যুগে এর সন্ধান ও উন্মোচনের কাজ করেছেন। ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা, আসাম সহ দেশের আরও অনেক রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা কুড়মিদের মাতৃভাষা কুড়মালির অনেক ঐতিহাসিক তথ্যও পঞ্চকোটে লুকিয়ে আছে। এর থেকে স্পষ্ট যে, কুড়মালি ভাষার ইতিহাস অনেক বেশি প্রাচীন। এটা বিশ্বাস করা হয় যে কুড়মালি ভাষার দরবারী সাহিত্য পঞ্চকোট যুগ থেকে শুরু হয়েছিল। সিসাই কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডঃ এন. কে. সিং-এর মতে, পঞ্চকোট রাজ পরিবারে কুড়মালি ভাষাকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল এবং কুড়মালি ভাষা ছিল পঞ্চকোট রাজের সরকারী ভাষা। ডঃ এন. কে. সিং-এর কথার সমর্থন রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন প্রধান ডঃ বীর বীরোত্তম তাঁর বিখ্যাত বই 'ঝাড়খণ্ডের সাংস্কৃতিক ইতিহাস' গ্রন্থে করেছেন। পঞ্চকোট রাজ সম্বন্ধে ডব্লিউ. ডব্লিউ. হান্টার (বাংলার বর্ণনামূলক বিবরণ), এইচ. এইচ. রিসলে (বাংলার উপজাতি ও জাতি), ই. টি. ডাল্টন (বাংলার বর্ণনামূলক নৃততত্ব) প্রমুখ বিখ্যাত বিদ্যান ব্যাক্তিরা অনেক তথ্যই দিয়ে গেছেন। তবে পঞ্চকোট রাজ নিয়ে প্রথম বিস্তারিত গবেষণা করেছিলেন জে. ডি. বেগলার, যিনি ব্রিটিশ আমলে ভারতের সার্ভেয়ার জেনারেল ছিলেন। 1878 সালে কলকাতা থেকে 'এ ট্যুর থ্রু বেঙ্গল প্রভিন্স' নামে তাঁর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। মিঃ ওয়াগলার পঞ্চকোট রাজ এবং এর দূর্গ ও প্রাসাদ সম্পর্কে একটি বিশদ আলোচনা করেছেন। মিঃ বেগলার উল্লেখ করেছেন যে পঞ্চকোট দুর্গের সব দরজায় তাঁর নাম লেখা আছে। পঞ্চকোট দুর্গের দরজাগুলির নাম ছিল : 'দুআইর বাঁধ', 'বাজার বাঁধ দুআইর', 'খড়হি বাড়ি দুআইর' এবং 'আঁখ দুআইর'। ডঃ বীর বীরোত্তম ও ডঃ নন্দকিশোর সিংহ দাবি করেছেন এই সব নাম কুড়মালি ভাষার। শুধু তাই নয়, বেগলার সাহেব দুর্গের সব দরজার দুই পাশে ছয় লাইনের কবিতার মতো কিছু লেখাও দেখেছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি এও বলেছেন যে এই লেখাগুলি তিনি পড়তে সক্ষম হলেও, এর মানে কিছুই বুঝতে পারেন নি। পরে, ড: এন. কে. সিং ও ড: বীর বীরোত্তম এর উপর গভীর গবেষণা চালান এবং একে 'কুড়মালি ভাষা' বলে চিহ্নিত করেন। এছাড়া আরও একটি বিষয় হল, পঞ্চকোট রাজমহলের পূর্ব দিকের একটি মন্দিরের কাঠামো এখনও দুইশত মিটার দূরে দাঁড়িয়ে আছে। তার দরজায় কিছুদিন আগে পর্যন্ত কুড়মালি ভাষায় "জোহার বুড়হাবাবা" লেখা ছিল। স্থানীয় সংবাদ অনুযায়ী কলকাতা থেকে গড়পঞ্চকোটে পিকনিক করতে আসা কিছু যুবক সেই পাথরটি কাটাতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের বিরোধিতার কারণে, তারা তাদের প্রচেষ্টায় সফল হতে পারেনি। পাথরটি এখনও উক্ত স্থানেই রয়েছে, যদিও তা দু টুকরো হয়ে গেছে। পঞ্চকোট রাজ পরিবার থেকে কুড়মালি ভাষার অনেক কবি ও লেখককে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা দেওয়া হয়েছিল। এর প্রমাণ বহু জায়গায় মেলে। এদের মধ্যে সিঁদুরপুর (পুরুলিয়া) গ্রামের শম্ভুনাথ মাহাত, বাংলাদেশের বেনগেড়িয়ার নিবারণ চন্দ্র মাহাত ও খিরু রাজোয়াড়ের নাম উল্লেখযোগ্য। কবি নিবারণ চন্দ্র মাহাতকে পঞ্চকোট রাজ ভরত শেখর (17 শতকের প্রথম দশকে) তাঁর রাজ্যে আশ্রয় দিয়েছিলেন। উনি পঞ্চকোটের সভাকবি রূপে খুব প্রসিদ্ধ ছিলেন। একইভাবে, কুড়মালির আরেক প্রাচীন কবি খিরু রাজোয়াড় রাজা গরুড় নারায়ণের (17 শতকের শেষ দশকের শেষ দশকে) সমসাময়িক কবি ছিলেন। কবি নিবারণ চন্দ্র মাহাত রচিত দুটি মহাকাব্যের সন্ধান পাওয়া গেছে যথা : 'আইনাস' এবং 'বাঘাঞ'। 'আইনাস' কুড়মালি নেগাচার সম্পর্কিত মহাকাব্য। এতে কাব্য আকারে কুড়মি জীবনচর্যার বিভিন্ন রীতির বর্ণনা পাওয়া যায়। 'বাঘাঞ' একটি সামাজিক তথা ঐতিহাসিক মহাকাব্য। এতে, পঞ্চকোট রাজ্যের ইতিহাস এবং বিভিন্ন রাজাদের মহিমা বর্ণনা করা হয়েছে। নিবারণ চন্দ্র মাহাতোর পরিবার পরবর্তীকালে জীবিকার খোঁজে নীল চাষের জন্য ইংরেজদের মাধ্যমে বাংলাদেশে চলে আসে। তাঁর উভয় রচনাই বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছে সংরক্ষিত আছে। কুড়মালি ভাষা ও সাহিত্যের কিছু গবেষক এই দুটি গ্রন্থের প্রকাশনার কাজে কর্মরত আছেন। শম্ভুনাথ মাহাত বিরচিত পাঁচটি রচনা এখনও পর্যন্ত সংগৃহ করা গেছে। পুরুলিয়া জেলার ফুসড়াবাইদ গ্রামের চারিয়ান মাহাত'র বাড়িতে এই পাঁচটি রচনা রাখা ছিল। ওনার বাড়ি তৈরির সময় খনন কার্যের ফলে উদ্ধার হওয়া একটি লোহার বাক্সের মধ্যে এই রচনাগুলি পাওয়া যায়। এর মধ্যে দুটি রচনা "সিবরাম" এবং "সগড়দাগ" খুবই জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে, বাকি তিনটি রচনা ভালো অবস্থায় রয়েছে। এই দুটি গ্রন্থেরও প্রকাশনার কাজে কুড়মালি ভাষাপ্রেমী বেশ কিছু মানুষ প্রয়াসরত আছেন। "সিবরাম" একটি সমসাময়িক গল্প সংকলন। যদিও "সগড়দাগ" একটি ঐতিহাসিক মহাকাব্য। এ ছাড়া বাকি তিনটি রচনাও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মহাকাব্য। খিরু রাজোয়াড়ের বই 'ধঁধউরা' কথাও উল্লেখযোগ্য। এটিও একটি মহাকাব্য এবং এটি পুরুলিয়ায় তাঁর পরিবারের কাছে রাখা আছে। যাইহোক, শুধু কুড়মালিই নয়, পঞ্চকোট রাজ পরিবার অনেক বাঙালি কবি ও সাহিত্যিকদেরও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাও দিয়ে ছিল। কুড়মালি ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশে পঞ্চকোট রাজ পরিবারের অবদান অনন্য এবং এটা অস্বীকার বা উপেক্ষা করা যায় না।[৩৮][৩৯][৪০]

ভাষা ব্যবহারকারী জনগোষ্ঠী[সম্পাদনা]

কুড়মালি ভাষা পূর্ব ভারতের প্রাচীন জনগোষ্ঠী কুড়মি মাহাতো জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা। এছাড়াও কুড়মালি ভাষার স্থানীয় ব্যবহারকারী জনগোষ্ঠী। দ্য পিপল অফ ইন্ডিয়ার মতে, কুড়মালি ভাষা মাতৃভাষা হিসাবে ১০টি সম্প্রদায় ব্যবহার করেন, যার মধ্যে দুটি তফশিলি উপজাতি এবং তিনটি তফশিলি জাতি রয়েছে। ভূমিজ, হো, খাড়িয়া, লোহার, মাহালি, মুন্ডা সম্প্রদায়ের মতো আদিবাসীদের দ্বারা দ্বিভাষিক হিসেবে ব্যবহার করেন। কুমহার, তাঁতি, জলহা মুসলিম, ধোবা, কামার, গড়াই, নাপিত, গোয়ালা, ঘাসি, বাউড়ি, রাজোয়ার, ডোম, রাউতিয়া ইত্যাদি সম্প্রদায় কুড়মালি ভাষায় কথা বলেন ।[৪১][৪২][৪৩][৪৪]

ঝুমৈর গান, বাঁদনা গিত, টুসু গিত, করম গিত বা জাউআ গিত, চাঁচর গিত প্রভৃতি বিভিন্ন উৎসবে কুড়মালি ভাষায় করা হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "কুড়মালি"গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট। 
  2. হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "পাঁচ পরগনিয়া"গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট। 
  3. https://www.ethnologue.com/language/kyw/
  4. Fayez, S. M., & Rajiv Ranjan Mahto. (2021). A Sociolinguistic Study of Kudmali in Jharkhand. Aligarh Journal of Linguistics, 11(ISSN: 2249-1511), 117–132.
  5. KIRITI MAHATO (২০২২-০৭-২২)। Sindhu Sabhyatar Bhasha O Kudmali 
  6. Paudyal, Netra P.; Peterson, John (২০২০-০৯-০১)। "How one language became four: the impact of different contact-scenarios between "Sadani" and the tribal languages of Jharkhand"Journal of South Asian Languages and Linguistics (ইংরেজি ভাষায়)। 7 (2): 327–358। আইএসএসএন 2196-078Xডিওআই:10.1515/jsall-2021-2028 
  7. Alam, Qaiser Zoha (১৯৯৬)। Language and Literature: Divers Indian Experiences (ইংরেজি ভাষায়)। Atlantic Publishers & Dist। আইএসবিএন 978-81-7156-586-3 
  8. "Kudmali | Ethnologue Free"Ethnologue (Free All) (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-১২ 
  9. প্রতিনিধি। "মাহাতোদের মাতৃভাষা ও সংস্কৃতিচর্চায় কুড়মালি পাঠশালার উদ্বোধন"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-০১ 
  10. "National Population and Housing Census 2011 (National Report)" (পিডিএফ)cbs.gov.np। Kathmandu, Nepal: Government of Nepal National Planning Commission Secretariat। নভেম্বর ২০১২। ১৮ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-৩১ [পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন]
  11. N. C. Keduar (২০১৬)। कुड़माली भाषा शिक्षण एवं साहित्य 
  12. "World Tribal Day: আদিবাসীরা হিন্দু নয়, ধর্ম আর রাজনীতির আগ্রাসনের শিকার তারা" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৮-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-১৯ 
  13. Basu, Sajal (১৯৯৪)। Jharkhand movement: ethnicity and culture of silence – Sajal Basu – Google Booksআইএসবিএন 9788185952154। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১২ 
  14. মাহাতো, কিরীটি (২০১৩)। ঝুমুর ও চর্যাপদ। রামকৃষ্ণপুর, পুরুলিয়া, পশ্চিমবঙ্গ: মুলকি কুড়মালি ভাখি বাইসি। পৃষ্ঠা ভূমিকা অংশ। 
  15. Kiriti Mahato and Dr. Miriya Malik (২০২২-০৮-১১)। Adicharyapada 
  16. Indian Defence Review (ইংরেজি ভাষায়)। Lancer International। ১৯৯৫। 
  17. Folklore (ইংরেজি ভাষায়)। Editorial Reencuentro.। ১৯৮৫। 
  18. SINGH (RETD), WG CDR GYANESHWAR (২০২০-১১-২৫)। Historical Perspective of Kurmali Language (হিন্দি ভাষায়)। Blue Rose Publishers। 
  19. "Census of India: Abstract of speakers' strength of languages and mother tongues –2001"web.archive.org। ২০২২-০৪-১৫। Archived from the original on ২০২২-০৪-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-১২ 
  20. "Wayback Machine" (পিডিএফ)web.archive.org। ২০২২-০৪-১৯। Archived from the original on ২০২২-০৪-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-১২ 
  21. Grierson, George Abraham (১৯২৮)। "Linguistic Survey of India"Nature121 (3055): 173। এসটুসিআইডি 4079658ডিওআই:10.1038/121783a0বিবকোড:1928Natur.121..783T 
  22. Dr. H. N. Singh (২০১০)। कुरमाली साहित्य : विविध संदर्भ 
  23. Keduar, N. C. (২০১৬)। कुड़माली भाषा शिक्षण एवं साहित्य (হিন্দি ভাষায়) (2nd সংস্করণ)। Ranchi: Shivangan Publication। পৃষ্ঠা 4। আইএসবিএন 9788193221587 টেমপ্লেট:Questionable source
  24. কুড়মালি বেউরা (ভাঁউঅর)। পদদলচন মাহাত। নিখরনে: দিপংকর মাহাতঅ। দহরি ছাপান: পুরুলিআ। পঁথি মেলা: ২০১৭। (কুড়মালি ভাষায়)
  25. গুপ্ত, কিংশুক। "দেড় কোটি মানুষের ভাষা কুড়মালির স্বীকৃতি নেই আজও"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-১২ 
  26. "Wayback Machine" (পিডিএফ)web.archive.org। ২০২২-০১-২১। Archived from the original on ২০২২-০১-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-১২ 
  27. "কুড়মালি ভাষায় ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ | কালের কণ্ঠ"Kalerkantho। ২০২১-০৩-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-১৯ 
  28. [১]
  29. ভট্টাচার্য, তুষ্টি (২০২০-১২-২৪)। "বাংলার দলিত সাহিত্যের ধারা: শেষ পর্ব"BanglaLive (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-১৯ 
  30. "Rajaditya Banerjee wins big with Death Certificate"The Times of India। ২০২০-০৫-১৫। আইএসএসএন 0971-8257। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২৫ 
  31. Sengupta, Nirmal (১৯৮২)। Fourth World Dynamics, Jharkhand (ইংরেজি ভাষায়)। Authors Guild Publications। 
  32. Paudyal, Netra P.; Peterson, John (২০২০-০৯-০১)। "How one language became four: the impact of different contact-scenarios between "Sadani" and the tribal languages of Jharkhand"Journal of South Asian Languages and Linguistics (ইংরেজি ভাষায়)। 7 (2): 327–358। আইএসএসএন 2196-078Xডিওআই:10.1515/jsall-2021-2028 
  33. Paudyal, Netra P.; Peterson, John (২০২০-০৯-০১)। "How one language became four: the impact of different contact-scenarios between "Sadani" and the tribal languages of Jharkhand"Journal of South Asian Languages and Linguistics (ইংরেজি ভাষায়)। 7 (2): 327–358। আইএসএসএন 2196-078Xডিওআই:10.1515/jsall-2021-2028 
  34. KIRITI MAHATO (২০২২-০৭-২২)। Sindhu Sabhyatar Bhasha O Kudmali 
  35. "PG TRL, KURMALI, SEM-II, CC-2, कुड़माली डमकच गीत - Kolhan University"www.kolhanuniversity.ac.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০২২ 
  36. "আনন্দবাজার পত্রিকা - পুরুলিয়া"archives.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১০ 
  37. amaderbharat.com (২০২২-০৯-০৫)। "ঝাড়গ্রামের সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবনের উদঘাটন করলেন মুখ্যমন্ত্রী"AmaderBharat.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১০ 
  38. डॉ एन के सिंह, पथे चलाक लेहा नमस्कार, हिन्दी ग्रथ अकादमी, पटना, 1962, पृष्ठ-7-8।
  39. डाॅ वीर वीरोत्तम, झारखंड का सांस्कृतिक इतिहास, पृष्ठ: 98 -517।
  40. दीपक रंजन, प्रभात खबर, झारखंड, 16/06/2023।
  41. Singh, K. S. (১৯৯২)। People of India (ইংরেজি ভাষায়)। Anthropological Survey of India। আইএসবিএন 978-81-85579-09-2 
  42. Saha, Atanu (২৮ জুলাই ২০১৮)। "Census and the Aspects of Growth and Development of Bangla vs. Bangla-Hindi Bilingualism-With Special Focus on West Bengal" 
  43. "OLAC resources in and about the Kudmali language"www.language-archives.org। ২৪ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০২১ 
  44. Minz, Diwakar; Hansda, Delo Mai (২০১০)। Encyclopaedia of Scheduled Tribes in Jharkhand (ইংরেজি ভাষায়)। Gyan Publishing House। আইএসবিএন 978-81-7835-121-6