আল জামিয়া আল আরাবিয়া দারুল হিদায়া পোরশা

স্থানাঙ্ক: ২৫°০০′৩৭″ উত্তর ৮৮°২৯′৪৭″ পূর্ব / ২৫.০১০৩২৬° উত্তর ৮৮.৪৯৬৪০৮° পূর্ব / 25.010326; 88.496408
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আল জামি'আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা
পোরশা মাদরাসা
আল জামি'আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা
অন্যান্য নাম
পোরশার বড় মাদ্রাসা
ধরনবেসরকারি
স্থাপিত১৯৪৬ (1946)
প্রতিষ্ঠাতাআব্দুল হাই শাহ্ চৌধুরী
ধর্মীয় অধিভুক্তি
ইসলাম
পরিচালকমাওলানা আব্দুল্লাহ শাহ চৌধুরী
প্রথম পরিচালকসালেহ আহমাদ
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ
৬০ জন
প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ
১৮ জন
শিক্ষার্থীপ্রায় ১৭০০ জন
ঠিকানা,
নওগাঁ
,
৬৫৫১
,
২৫°০০′৩৭″ উত্তর ৮৮°২৯′৪৭″ পূর্ব / ২৫.০১০৩২৬° উত্তর ৮৮.৪৯৬৪০৮° পূর্ব / 25.010326; 88.496408
শিক্ষাঙ্গন৯ বিঘা
ভাষাবাংলা, আরবি
প্রথম শিক্ষকসাঈদ আহমাদ (নোয়াখালী)
ওয়েবসাইটhttps://darulhidayah-porsha.com/
মানচিত্র

আল জামি'আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা বাংলাদেশের নওগাঁ জেলায় অবস্থিত একটি কওমি মাদ্রাসা যা 'পোরশার বড় মাদ্রাসা' নামেও পরিচিত।[১] ১৯৪৬ সালে (৭৪ বছর আগে) স্থাপিত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন একটি স্থাপনা। [২][৩] উত্তরবঙ্গে সর্বপ্রথম এই প্রতিষ্ঠানেই 'দরসে নিযামি' শিক্ষাক্রমে পাঠদান এবং 'দাওরায়ে হাদিস' চালু হয়েছিল।[৪][৫]

অবস্থান[সম্পাদনা]

রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত নওগাঁ জেলার পোরশা উপজেলার পোরশা গ্রামে প্রায় বিঘা স্থান জুড়ে এই প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত।[৪][৬][৭]

দারুল হিদায়াহ

ইতিহাস[সম্পাদনা]

আবদুল হাই শাহ নামক এক ব্যক্তি নিজে অর্থায়নে পোরশা উপজেলায় অনেকগুলো শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছিলেন। তিনি পোরশা গ্রামে হাই মাদরাসা নামে একটি ইসলামী ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন যা পরবর্তীতে ব্রিটিশ সরকার সরকারিভাবে আত্তীকরণ করে হাইস্কুলে পরিণত করেছিল।

১৯৪৬ সালে মৌলভি জাফর এবং তার বন্ধু হযরত একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগে নিয়েছিলেন। সেসময় আবদুল হাই শাহ, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির জন্য অনেক পরিনাণ জায়গা ওয়াকফ করে দিয়েছিলেন। হাটহাজারী মাদ্রাসার তৎকালীন মুহতামিম আবদুল ওয়াহহাব এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনার জন্য সালেহ আহমদকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সালেহ আহমদ, সেই ওয়াকফকৃত জমিতে জিল্লুর রহমান নামে এক ব্যক্তির অর্থায়নে একটি ভবন নির্মাণ করেছিলেন এবং তিনিই এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম পরিচালক ছিলেন।

নোয়াখালী জেলার সাঈদ আহমদ (একজন শিক্ষক) দ্বারা প্রাথমিকভাবে কিছু ছাত্রকে নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটির ভবন ও ওয়াকফকৃত জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং ১৯৫৯ সালে দাওরায়ে হাদীস বিভাগ চালু করা হয়েছিল। বাংলাদেশে উত্তরবঙ্গের সর্বপ্রথম এই মাদ্রাসাটিতেই 'দাওরায়ে হাদীস' বিভাগ চালু হয়েছিল এবং প্রথম 'শায়খুল হাদীস' হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেছিলেন চট্টগ্রামের আবদুল হক ইসলামাবাদী। পরবর্তীতে মুফতি রেজাউল হক এই পদগ্রহণ করেন এবং ২০১২ সাল (প্রায় ৫০ বছর) পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানে বুখারী শরিফের দরস (শিক্ষা) প্রদান করেতেন।[৪]

কার্যক্রম[সম্পাদনা]

প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব তত্ত্বাবধানে প্রায় ১,৫০০[৫] বিঘা ভূমি সম্পদ আছে এবং সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বছরে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় হয়। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে শুধুমাত্র আবাসিক ছাত্রই ছিল ১,১০০ জন।[২][৩]

প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ভূমি থেকে প্রাপ্ত অর্থ ও এলাকার সর্বসাধারণের আর্থিক সহযোগিতায় মাদ্রাসার প্রায় ৫৭ জন শিক্ষক ও ১৮ জন কর্মচারীর[৫] বেতনভাতা এবং অন্যান্য ব্যয় বহন করা হয়।[২]

বিভাগসমূহ[সম্পাদনা]

মোট ৮ টি বিভাগে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সেগুলো হলঃ[৫]

  • নজরানা (মকতব) বিভাগ
  • হিফ্জ খানা বিভাগ
  • কের’আত খানা বিভাগ
  • কিতাব খানা বিভাগ
  • তাফসীর বিভাগ
  • আদব বিভাগ
  • উলূমুল হাদীস বিভাগ
  • ইফ্তা বিভাগ

শিক্ষা বোর্ড[সম্পাদনা]

১৯৯৮ সালে মাদ্রাসা শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য নওগাঁ এবং নওগাঁর পার্শ্ববর্তী এলাকার সকল কওমী মাদ্রাসা নিয়ে একটি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড গঠন করা হয় যা ইত্তেফাকুল মাদারিস আল আরাবিয়া আল কওমিয়া, নওগাঁ, বাংলাদেশ নামে পরিচিত।

বোর্ডটির প্রধান কার্যালয় ছিল এই মাদ্রাসাটি। এই বোর্ডের আওতাভুক্ত মাদ্রাসাগুলো প্রধান কার্যালয়ে; মাদ্রাসা শিক্ষার মানোন্নয়ন, মাদ্রাসার সার্বিক উন্নতি ও ছাত্র-শিক্ষকদের সর্বপ্রকার সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এই বোর্ডের মাধ্যমে অধীনস্থ মাদ্রাসাগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনাও করা হয়।[৪][৫]

ফান্ড সমূহ[সম্পাদনা]

মোট ৪ টি ফান্ড বিদ্যমান। সেগুলো হলঃ[৫]

  • চাঁদা ফান্ড
  • ছদকা ফান্ড
  • মসজিদ ফান্ড
  • উন্নয়ন প্রকল্প

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. গোলাম ছরোয়ার, মুহাম্মদ (নভেম্বর ২০১৩)। "বাংলা ভাষায় ফিকহ চর্চা (১৯৪৭-২০০৬): স্বরূপ ও বৈশিষ্ঠ্য বিচার"ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ৩১৩। ২৭ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২১ 
  2. মুহম্মদ আজাদ, আবুল কালাম (১০ মে ২০১৩)। "শতবর্ষের আতিথেয়তা"প্রথম আলো। ২০২০-০৬-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৬ 
  3. রানা, বাবুল আখতার (১০ আগস্ট ২০১৬)। "শত বছরের মুসাফিরখানা"বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৬ 
  4. মুজিব, তারিক (২০১৯-০৯-২৩)। "পোরশা মাদরাসা : উত্তরবঙ্গে ইলমি ঐতিহ্যের অনন্য প্রতিষ্ঠান"ইসলাম টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৬ 
  5. "পোরশা মাদ্রাসার ছাত্রাবাস"জাতীয় তথ্য বাতায়ন। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. "পোরশা মাদ্রাসার শাইখুল হাদিসকে লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ"দৈনিক যুগান্তর। ২৩ অক্টোবর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৬ 
  7. সাইয়েদ, আহসান (২০০৬)। বাংলাদেশে হাদীছ চর্চা উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ। সেগুনবাগিচা, ঢাকা: অ্যাডর্ন পাবলিকেশন্স। পৃষ্ঠা ৯৯। আইএসবিএন 9842000184 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]